নিউইয়র্ক ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান আর নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:২৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩৪ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: বিশিষ্ট সাংবাদিক, আইন বিশেষজ্ঞ ও দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (১১ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার ছোট ভাই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান। আরেক ছোট ভাই সিদ্দিকুর রহমান খান একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক। মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে সাংবদিক মহল সহ সুধী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। তার আগে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, মিজানুর রহমান খান গত ২৭ নভেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৯ জানুয়ারী শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ সময় সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পাঁচ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১০ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে কোভিড-১৯ জোনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে তাকে সবুজ জোনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এত দিন তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তাঁর ফুসফুসের ৯৬ শতাংশ সংক্রমিত। তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারী তার অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস) দেওয়া হয়। তার রক্তচাপও কমে যায়। এর মধ্যেই সোমবার সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশালের বিএম কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি সংবিধান ও আইন নিয়ে লেখালেখি করেন। তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতায় থাকা মিজানুর রহমান খান ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুগান্তর-এর বিশেষ সংবাদদাতা ও সহকারী সম্পাদক ছিলেন। এরপর সমকাল-এর উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। প্রথম আলোয় যোগ দেন ২০০৫ সালের ১ নভেম্বর। সর্বশেষ তিনি দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারের সপক্ষে জনমত গঠনে তিনি ভূমিকা পালন করেন। তিনি বইও লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সংবিধান ও তত্ত¡াবধায়ক সরকার বিতর্ক’ (১৯৯৫), ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের স্বরূপ’ (২০০৩), ‘১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল, মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকান্ড’।
শোকাহত হককথা পরিবার: সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের অকাল মৃত্যুতে হককথা পরিবার শোকাহত। তার অনেক প্রতিবেদন-ই প্রথম আলো’র সৌজন্যে হককথা.কম-এ প্রকাশিত হয়েছে। তার মৃত্যুতে এক শোক বার্তায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন হককথা ও বার্তা সংস্থা ইউএনএ সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ। শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আতœার মাগফেরাত এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদা প্রকাশ করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান আর নেই

প্রকাশের সময় : ০২:২৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১

হককথা ডেস্ক: বিশিষ্ট সাংবাদিক, আইন বিশেষজ্ঞ ও দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (১১ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স ছিল ৫৩ বছর। মৃত্যুকালে তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার ছোট ভাই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান। আরেক ছোট ভাই সিদ্দিকুর রহমান খান একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক। মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে সাংবদিক মহল সহ সুধী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে। তার আগে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, মিজানুর রহমান খান গত ২৭ নভেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৯ জানুয়ারী শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ সময় সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পাঁচ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১০ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে কোভিড-১৯ জোনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে তাকে সবুজ জোনে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এত দিন তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তাঁর ফুসফুসের ৯৬ শতাংশ সংক্রমিত। তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারী তার অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওই দিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস) দেওয়া হয়। তার রক্তচাপও কমে যায়। এর মধ্যেই সোমবার সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশালের বিএম কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি সংবিধান ও আইন নিয়ে লেখালেখি করেন। তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতায় থাকা মিজানুর রহমান খান ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যুগান্তর-এর বিশেষ সংবাদদাতা ও সহকারী সম্পাদক ছিলেন। এরপর সমকাল-এর উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। প্রথম আলোয় যোগ দেন ২০০৫ সালের ১ নভেম্বর। সর্বশেষ তিনি দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারের সপক্ষে জনমত গঠনে তিনি ভূমিকা পালন করেন। তিনি বইও লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সংবিধান ও তত্ত¡াবধায়ক সরকার বিতর্ক’ (১৯৯৫), ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের স্বরূপ’ (২০০৩), ‘১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল, মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকান্ড’।
শোকাহত হককথা পরিবার: সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের অকাল মৃত্যুতে হককথা পরিবার শোকাহত। তার অনেক প্রতিবেদন-ই প্রথম আলো’র সৌজন্যে হককথা.কম-এ প্রকাশিত হয়েছে। তার মৃত্যুতে এক শোক বার্তায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন হককথা ও বার্তা সংস্থা ইউএনএ সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ। শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আতœার মাগফেরাত এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদা প্রকাশ করেন।