নিউইয়র্ক ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

স্বর্গলোকে সুখে থাকুন বাদল দা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২০
  • / ৫১ বার পঠিত

পারভেজ আলম চৌধুরী: ঢাকার ফুটবলের স্বর্ণযুগে বাদল রায়ের আগমন। আমারও এই শহরের আতিথ্য গ্রহণ তার কিছুকাল পরে। বাদল দা তখন কুমিল্লা ছেড়ে ঢাকায় স্থায়ী হয়েছেন। মোহামেডান তার ঠিকানা। ক্লাবের তাঁবু তখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গা ঘেঁষে। এখন যেখানে এনএসসির নতুন ভবন।
মোহামেডানের আক্রমণভাগ তখন ভীষণরকম ধারালো। বাদল দা ও সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে দুই উইঙ্গে গাফফার এবং কোহিনুর। কুড়িগ্রামের কোহিনুরকে বলা হতো স্কুটার। বল নিয়ে সেই যে ছুটতেন, কখনও কখনও মাঠের বাইরে চলে যেতেন। আমি তখন সিনে সাপ্তাহিক চিত্রালীতে ‘ময়দানী হাওয়া’ লিখি। খবরের সুলুকসন্ধানে মোহামেডান, আবাহনী ক্লাবে নিত্য ঢুঁ মারতাম। সে সময় বাদল দা’র সঙ্গে পরিচয়। আমার কলম ঠেলার কাজ শুরুর আগে সাদা-কালো জার্সিতে তার পথচলা শুরু।
আজ বাদল দা’র অন্যলোকে যাত্রার লগ্নে সেসব স্মৃতি ভিড় করছে। আশির দশকের গোড়ার দিকের কথা। গোলাম সারোয়ার টিপুর কোচিংয়ে ‘হিট অ্যান্ড রান’ ফুটবল খেলছে মোহামেডান। খুব সম্ভবত সালটা ১৯৮২। ওই এক মৌসুম মোহামেডানে খেলেছিলেন ভুটানের ফরোয়ার্ড খড়গ বাহাদুর বাসনেত। বাদল দা’র সঙ্গে তার রসায়ন বেশ জমেছিল।
মোহামেডান অন্তঃপ্রাণ ফরোয়ার্ড বাদল রায় শত প্রলোভন সত্তে¡ও সাদা-কালোর মায়া ত্যাগ করেননি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ তখন আবাহনীর সাধারণ সম্পাদক। কম চেষ্টা করেননি তিনি বাদল দা’র গায়ে আকাশি নীল জার্সী পরাতে। অনেক কম পারিশ্রমিকে মোহামেডানে খেলাটাকে শ্রেয় মনে করেছেন এই সুসভ্য, মার্জিত ও রুচিবোধসম্পন্ন মানুষ। এক ক্লাবেই ক্যারিয়ার শেষ করা এমন নিবেদিতপ্রাণ খেলোয়াড় এই কর্পোরেট যুগে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
অসুস্থ ছিলেন অনেকদিন ধরে। অগ্রহায়ণের ‘শীত আসি-আসি’ সন্ধ্যায় কাল সেই দুঃসংবাদ এলো- বাদল দা নেই। বাঙালীর নস্টালজিক মনটা কোথায় যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্ত হওয়ার আগ্রহ এখন কম। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসবার পর ঝাপসা হয়ে এলো হারানো দিন। বুদ্ধিদীপ্ত ফ্লিকে তার নান্দনিক গোল আকাশপ্রদীপের আলোর মতো বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে এত বছর পরও। স্বর্গলোকে সুখে থাকুন বাদল দা। (দৈনিক যুগন্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

স্বর্গলোকে সুখে থাকুন বাদল দা

প্রকাশের সময় : ০২:৪৫:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২০

পারভেজ আলম চৌধুরী: ঢাকার ফুটবলের স্বর্ণযুগে বাদল রায়ের আগমন। আমারও এই শহরের আতিথ্য গ্রহণ তার কিছুকাল পরে। বাদল দা তখন কুমিল্লা ছেড়ে ঢাকায় স্থায়ী হয়েছেন। মোহামেডান তার ঠিকানা। ক্লাবের তাঁবু তখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের গা ঘেঁষে। এখন যেখানে এনএসসির নতুন ভবন।
মোহামেডানের আক্রমণভাগ তখন ভীষণরকম ধারালো। বাদল দা ও সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে দুই উইঙ্গে গাফফার এবং কোহিনুর। কুড়িগ্রামের কোহিনুরকে বলা হতো স্কুটার। বল নিয়ে সেই যে ছুটতেন, কখনও কখনও মাঠের বাইরে চলে যেতেন। আমি তখন সিনে সাপ্তাহিক চিত্রালীতে ‘ময়দানী হাওয়া’ লিখি। খবরের সুলুকসন্ধানে মোহামেডান, আবাহনী ক্লাবে নিত্য ঢুঁ মারতাম। সে সময় বাদল দা’র সঙ্গে পরিচয়। আমার কলম ঠেলার কাজ শুরুর আগে সাদা-কালো জার্সিতে তার পথচলা শুরু।
আজ বাদল দা’র অন্যলোকে যাত্রার লগ্নে সেসব স্মৃতি ভিড় করছে। আশির দশকের গোড়ার দিকের কথা। গোলাম সারোয়ার টিপুর কোচিংয়ে ‘হিট অ্যান্ড রান’ ফুটবল খেলছে মোহামেডান। খুব সম্ভবত সালটা ১৯৮২। ওই এক মৌসুম মোহামেডানে খেলেছিলেন ভুটানের ফরোয়ার্ড খড়গ বাহাদুর বাসনেত। বাদল দা’র সঙ্গে তার রসায়ন বেশ জমেছিল।
মোহামেডান অন্তঃপ্রাণ ফরোয়ার্ড বাদল রায় শত প্রলোভন সত্তে¡ও সাদা-কালোর মায়া ত্যাগ করেননি। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ তখন আবাহনীর সাধারণ সম্পাদক। কম চেষ্টা করেননি তিনি বাদল দা’র গায়ে আকাশি নীল জার্সী পরাতে। অনেক কম পারিশ্রমিকে মোহামেডানে খেলাটাকে শ্রেয় মনে করেছেন এই সুসভ্য, মার্জিত ও রুচিবোধসম্পন্ন মানুষ। এক ক্লাবেই ক্যারিয়ার শেষ করা এমন নিবেদিতপ্রাণ খেলোয়াড় এই কর্পোরেট যুগে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
অসুস্থ ছিলেন অনেকদিন ধরে। অগ্রহায়ণের ‘শীত আসি-আসি’ সন্ধ্যায় কাল সেই দুঃসংবাদ এলো- বাদল দা নেই। বাঙালীর নস্টালজিক মনটা কোথায় যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্ত হওয়ার আগ্রহ এখন কম। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসবার পর ঝাপসা হয়ে এলো হারানো দিন। বুদ্ধিদীপ্ত ফ্লিকে তার নান্দনিক গোল আকাশপ্রদীপের আলোর মতো বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে এত বছর পরও। স্বর্গলোকে সুখে থাকুন বাদল দা। (দৈনিক যুগন্তর)