নিউইয়র্ক ১১:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

স্বাগত প্রেসিডেন্ট বাইডেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০
  • / ৭৩ বার পঠিত

আহবাব চৌধুরী খোকন: অবশেষ শ্বাস রুদ্ধকর অপেক্ষার অবসান হলো। আমেরিকান জনগনের দেওয়া ঐতিহাসিক রায়ে দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন যথাক্রমে জোসেফ আর বাইডেন ও কমালা হারিস। এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোন নির্বাচন যে নির্বাচনে সর্বচ্চো সংখ্যক ভোটার ভোট প্রদান করেছেন। গত ৭ নভেম্বর শনিবার ভোর পর্যন্ত বাইডেনের সংগ্রহে ছিল ২৫৩ ইলেকটোরাল ভোট। জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৭০। এই সময় পেনসিলভানিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জয় নিশ্চিত হলে বাইডেন-এর সংগ্রহে যোগ হয় ২০ ইলেক্টরাল ভোট। আর তাতেই বিজয় নিশ্চিত হয় বাইডেনের। পরবর্তীতে অঙ্গরাজ্য নেভাদাতে জয়ী হলে বাইডেন-কমালা শিবিরে যোগ হয় আরো ৬টি ভোট। তিনটি রাজ্যের গণনা শেষ হলে ইলেক্টরাল ভোটের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারনা করা যাচ্ছে ।আমি এই প্রবাস জীবনে যত নির্বাচন দেখেছি এবারের মত উত্তেজনা কোন নির্বাচনে দেখিনি । নির্বাচন বলতে আমি যে অভিজ্ঞতা দেশ থেকে অর্জন করেছি এখানে তার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশে নির্বাচন বলতে ঠান ঠান উত্তেজনা, মিছিল-মিটিং, পোষ্টারিং, রেষ্টুরেন্ট ও বাজারে চায়ের আড্ডা। কেন্দ্র দখল, জাল ভোটের প্রতিযোগিতা, বোমা ও ককটেলের শব্দ, পুলিশের লাটিচার্জ এবং অসংখ্য মানুষের জীবনহানী। আর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাদের পছন্দসই প্রার্থীকে নিরবে-নিবৃত্তে ভোট দিয়ে থাকেন। ভোট কেন্দ্রের বাইরে থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই এখানে ভোট হচ্ছে। কিন্তু এবার ছিলো ব্যতিক্রম। এবারই প্রথম লক্ষ্য করলাম জনগণ উৎসব আমেজে ভোট দিচ্ছে। ভোট গণনার দাবীতে রাজপথে মিছিল হয়েছে। আবার বিজয়ের সংবাদে রাজপথে উৎসবে অংশ নিচ্ছে।
আহবাব চৌধুরী খোকন

আগেই ধারণা করা গিয়েছিল আমেরিকান জনগণ এবার একটি পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে। এবারের নির্বাচনে জো বাইডেনই হতে হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কথাবার্তা এবং আচার-আচারণ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলেছিল। বিশেষ করে করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি দেশে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি। হাসপাতাল সমুহে অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভাইরাস প্রতিরোধ কোন পূর্ব প্রস্তুতি না নেওয়া এবং ভ্যাকসিন, মার্কস ও করোনা প্রতিরোধ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনভিপ্রেত আচার আচরণ ভালো চোখে দেখেনি আমেরিকান জনগন। তাছাড়া অভিবাসন বিরোধী নতুন কালা কানুন প্রবর্তন এবং মিডিয়ার সাথে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নামিয়েছে।
জো বাইডেনের পুরো নাম জোসেফ রবিনেট বাইডেন। জন্ম ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর পেনসিলভেনিয়ার স্ক্রানটনে। বাবা জোসেফ বাইডেন সিনিয়র এবং মা মিসেস ক্যাথরিন ইউজেনিয়া ফিনেগান। বাইডেন শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন ডেলাওয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে। তিনি পরবর্তীতে সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ডেলাওয়ারের নিউ ক্যাসল কাউন্টির কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হওয়ায় মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়স প্রথম সিনেটর নির্বাচিত হয়ে পর পর ছয় বার সিনিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার সময় কালে তিনি টানা আট বছর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন । অপরদিকে নব নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল হ্যারিসের পিতা স্ট্যানফোর্ড ইউনির্ভাসির অধ্যাপক ডোনাল্ড জে হ্যারিস একজন জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত এবং মা শ্যামলা গোপালন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান একজন ক্যান্সার গবেষক এবং নাগরিক অধিকার কর্মী। কমালা হ্যারিস আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন হেস্টিংসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এবং কাজ শুরু করেন আইনজীবী হিসেবে। তিনি এক সময় ক্যালিফোর্নিয়ার এ্যাটর্নি জেনারেল হন এবং দু’বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি ক্যালিফোর্নি য়ার জুনিয়র সিনেটর নির্বাচিত হন। কমালা বিবাহিত। তার স্বামী ডগলাস এমহফ-ও একজন আইনজীবী এবং তিনি দুই সন্তানের জননী।
এই নির্বাচনে জোসেফ বাইডেন যথেষ্ট আস্থা ও দৃঢতার সাথে প্রতিটি পদক্ষেপ মোকাবেলা করলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সব সময় মারমুখী দেখা গেছে। যা তার নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত করতে কাজ করেছে। ফলে দেখা গেছে অনেক রেজিষ্টার্ড রিপাবলিকানকে জো বাইডেনকে ভোট দিতে। এবারের নির্বাচনে উল্লেখ্যোগ্য পরিমান ভোটার ডাকযোগে যেমন ভোট প্রদান করেছেন তেমনি আগাম ভোট প্রদানের সংখ্যা ও ছিল অনেক। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রদান করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী ও স্বাধীন এবারের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের হুমকি এবং প্রচন্ড চাপের মধ্যেও নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অসংলগ্ন কথাবার্তায় নির্বাচনী কর্মকর্তা তো দূরে থাক অনেক রিপাবলিকান পার্টির নেতারাও সমর্থন করেনি। ফলে এই নির্বাচনে কারো কোন হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
জো বাইডেন অভিজ্ঞ এবং ক্লিন আমেজের রাজনীতিবিদ ও সিনেটর হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে সমাদৃত। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামী ২০ জানুয়ারী তিনি বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী এই দেশের ৪৬তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। এমন এক সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন যখন করোনাভাইরাসের ধাক্কায় গোঠা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিপর্যস্থ ও টালমাটাল। ব্যবস্থা বাণিজ্য স্থবির, সৃষ্টি হয়েছে স্মরণ কালের ভয়াবহতম বেকারত্ব। বেড়েছে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও আনএমপন্টয়েন্ট রেইট। এমন সময়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে তিনি কতটা ভূমিকা রাখতে পারবেন সময়ই বলে দেবে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন ও কমালা হ্যারিসকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং কামনা করছি তাদের সফলতা।
লেখক: সংগঠক ও কলাম লেখক, নিউইয়র্ক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

স্বাগত প্রেসিডেন্ট বাইডেন

প্রকাশের সময় : ০২:০৯:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০

আহবাব চৌধুরী খোকন: অবশেষ শ্বাস রুদ্ধকর অপেক্ষার অবসান হলো। আমেরিকান জনগনের দেওয়া ঐতিহাসিক রায়ে দেশটির ৪৬তম প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন যথাক্রমে জোসেফ আর বাইডেন ও কমালা হারিস। এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোন নির্বাচন যে নির্বাচনে সর্বচ্চো সংখ্যক ভোটার ভোট প্রদান করেছেন। গত ৭ নভেম্বর শনিবার ভোর পর্যন্ত বাইডেনের সংগ্রহে ছিল ২৫৩ ইলেকটোরাল ভোট। জয়ের জন্য প্রয়োজন ২৭০। এই সময় পেনসিলভানিয়ায় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জয় নিশ্চিত হলে বাইডেন-এর সংগ্রহে যোগ হয় ২০ ইলেক্টরাল ভোট। আর তাতেই বিজয় নিশ্চিত হয় বাইডেনের। পরবর্তীতে অঙ্গরাজ্য নেভাদাতে জয়ী হলে বাইডেন-কমালা শিবিরে যোগ হয় আরো ৬টি ভোট। তিনটি রাজ্যের গণনা শেষ হলে ইলেক্টরাল ভোটের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারনা করা যাচ্ছে ।আমি এই প্রবাস জীবনে যত নির্বাচন দেখেছি এবারের মত উত্তেজনা কোন নির্বাচনে দেখিনি । নির্বাচন বলতে আমি যে অভিজ্ঞতা দেশ থেকে অর্জন করেছি এখানে তার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশে নির্বাচন বলতে ঠান ঠান উত্তেজনা, মিছিল-মিটিং, পোষ্টারিং, রেষ্টুরেন্ট ও বাজারে চায়ের আড্ডা। কেন্দ্র দখল, জাল ভোটের প্রতিযোগিতা, বোমা ও ককটেলের শব্দ, পুলিশের লাটিচার্জ এবং অসংখ্য মানুষের জীবনহানী। আর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাদের পছন্দসই প্রার্থীকে নিরবে-নিবৃত্তে ভোট দিয়ে থাকেন। ভোট কেন্দ্রের বাইরে থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই এখানে ভোট হচ্ছে। কিন্তু এবার ছিলো ব্যতিক্রম। এবারই প্রথম লক্ষ্য করলাম জনগণ উৎসব আমেজে ভোট দিচ্ছে। ভোট গণনার দাবীতে রাজপথে মিছিল হয়েছে। আবার বিজয়ের সংবাদে রাজপথে উৎসবে অংশ নিচ্ছে।
আহবাব চৌধুরী খোকন

আগেই ধারণা করা গিয়েছিল আমেরিকান জনগণ এবার একটি পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে। এবারের নির্বাচনে জো বাইডেনই হতে হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কথাবার্তা এবং আচার-আচারণ যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলেছিল। বিশেষ করে করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের মত একটি দেশে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি। হাসপাতাল সমুহে অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভাইরাস প্রতিরোধ কোন পূর্ব প্রস্তুতি না নেওয়া এবং ভ্যাকসিন, মার্কস ও করোনা প্রতিরোধ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনভিপ্রেত আচার আচরণ ভালো চোখে দেখেনি আমেরিকান জনগন। তাছাড়া অভিবাসন বিরোধী নতুন কালা কানুন প্রবর্তন এবং মিডিয়ার সাথে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ধ্বস নামিয়েছে।
জো বাইডেনের পুরো নাম জোসেফ রবিনেট বাইডেন। জন্ম ১৯৪২ সালের ২০ নভেম্বর পেনসিলভেনিয়ার স্ক্রানটনে। বাবা জোসেফ বাইডেন সিনিয়র এবং মা মিসেস ক্যাথরিন ইউজেনিয়া ফিনেগান। বাইডেন শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন ডেলাওয়ার ইউনিভার্সিটি থেকে। তিনি পরবর্তীতে সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন। রাজনৈতিক উত্থান শুরু হয় ডেলাওয়ারের নিউ ক্যাসল কাউন্টির কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হওয়ায় মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়স প্রথম সিনেটর নির্বাচিত হয়ে পর পর ছয় বার সিনিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামার সময় কালে তিনি টানা আট বছর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন । অপরদিকে নব নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কামাল হ্যারিসের পিতা স্ট্যানফোর্ড ইউনির্ভাসির অধ্যাপক ডোনাল্ড জে হ্যারিস একজন জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত এবং মা শ্যামলা গোপালন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান একজন ক্যান্সার গবেষক এবং নাগরিক অধিকার কর্মী। কমালা হ্যারিস আইন শাস্ত্রে ডিগ্রি নেন হেস্টিংসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এবং কাজ শুরু করেন আইনজীবী হিসেবে। তিনি এক সময় ক্যালিফোর্নিয়ার এ্যাটর্নি জেনারেল হন এবং দু’বছর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তিনি ক্যালিফোর্নি য়ার জুনিয়র সিনেটর নির্বাচিত হন। কমালা বিবাহিত। তার স্বামী ডগলাস এমহফ-ও একজন আইনজীবী এবং তিনি দুই সন্তানের জননী।
এই নির্বাচনে জোসেফ বাইডেন যথেষ্ট আস্থা ও দৃঢতার সাথে প্রতিটি পদক্ষেপ মোকাবেলা করলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সব সময় মারমুখী দেখা গেছে। যা তার নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত করতে কাজ করেছে। ফলে দেখা গেছে অনেক রেজিষ্টার্ড রিপাবলিকানকে জো বাইডেনকে ভোট দিতে। এবারের নির্বাচনে উল্লেখ্যোগ্য পরিমান ভোটার ডাকযোগে যেমন ভোট প্রদান করেছেন তেমনি আগাম ভোট প্রদানের সংখ্যা ও ছিল অনেক। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রদান করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী ও স্বাধীন এবারের নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্পের হুমকি এবং প্রচন্ড চাপের মধ্যেও নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অসংলগ্ন কথাবার্তায় নির্বাচনী কর্মকর্তা তো দূরে থাক অনেক রিপাবলিকান পার্টির নেতারাও সমর্থন করেনি। ফলে এই নির্বাচনে কারো কোন হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
জো বাইডেন অভিজ্ঞ এবং ক্লিন আমেজের রাজনীতিবিদ ও সিনেটর হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে সমাদৃত। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে আগামী ২০ জানুয়ারী তিনি বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী এই দেশের ৪৬তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিতে যাচ্ছেন। এমন এক সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন যখন করোনাভাইরাসের ধাক্কায় গোঠা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বিপর্যস্থ ও টালমাটাল। ব্যবস্থা বাণিজ্য স্থবির, সৃষ্টি হয়েছে স্মরণ কালের ভয়াবহতম বেকারত্ব। বেড়েছে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও আনএমপন্টয়েন্ট রেইট। এমন সময়ে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে তিনি কতটা ভূমিকা রাখতে পারবেন সময়ই বলে দেবে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন ও কমালা হ্যারিসকে স্বাগত জানাচ্ছি এবং কামনা করছি তাদের সফলতা।
লেখক: সংগঠক ও কলাম লেখক, নিউইয়র্ক।