হককথা ডেস্ক: সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে শাহ পরান থানায় ধর্ষিতার স্বামী মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় সাইফুরের রুম থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি লম্বা দা, একটি ছুরি ও দুটি জিআই পাইপ উদ্ধার করা হয়। রাত ২টার দিকে নগরীর শাহপরাণ থানা পুলিশ এমসি কলেজের নতুন ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঐ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও সাইফুর অবৈধভাবে ছাত্রাবাসে অবস্থান করছিলেন। সে তার সহযোগীদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাস, টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় ছিনতাই, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাইফুরের বিরুদ্ধে। রাতে বন্ধ ছাত্রাবাসে নিয়মিত জুয়া ও মাদকের আসর বসাতেন এমন অভিযোগও রয়েছে।
এদিকে ক্যাম্পাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধর্ষকদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বিক্ষোভে উত্তাল সিলেটের এমসি কলেজ
এদিকে ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাস। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদ ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে ক্যাম্পাস সংলগ্ন সিলেট-তামাবিল সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এসময় তারা ধর্ষকদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন ¯েøাগান দেন। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার কলেজটির ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। ওই তরুণীকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের স্বামী বাদী হয়ে শাহ পরান থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সাইফুর রহমান (২৮), রবিউল ইসলাম (২৫), অর্জুন লস্কর (২৫) ও তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮)। এদের মধ্যে অর্জুন ও তারেক (২৮) বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী বলে জানা গেছে। আসামিদের মধ্যে সাইফুরের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের দিরাইয়ে, মাছুমের কানাইঘাটে, অর্জুনের জকিগঞ্জে, রনির হবিগঞ্জে এবং তারেকের বাড়ি সুনামগঞ্জে। (সূত্র: দৈনিক মানবজমিন)