বিশ্বের প্রথম ভার্চুয়াল ‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা’ শুরু

- প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ৯০ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি: ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহানের জন্ম শতবার্ষিকীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে ‘যত বই তত প্রাণ’ শ্লোগান নিয়ে নিউইর্য়কে শুরু হয়েছে ১০ দিনব্যাপি ‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা-২০২০’। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ২৯তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার উদ্বোধন করেন ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম। গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার নিউইয়র্ক সময় সন্ধ্যা ৯টা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা) মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে তিনি ১০ দিনব্যাপী বিশ্বের প্রথম ভার্চুয়াল বাংলা বইমেলার উদ্বোধন করেন। সংশ্রিস্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বইমেলা চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার পর্যন্ত। সোমবার থেকে শুক্রবার প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত ১২টা (নিউইয়র্ক সময়) পর্যন্ত চলবে প্রতিদিনের অনুষ্ঠান। শনি ও রোববারের অনুষ্ঠান চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা (নিউইয়র্ক সময়) পর্যন্ত।
এদিকে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের প্রথম বাংলা ভার্চুয়াল বইমেলায় বাংলাদেশের ২১টি ও পশ্চিমবঙ্গের ৪টিসহ মোট ২৫টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। বইমেলার ১০দিন আন্তর্জাতিক মূল্যের ৫০ ভাগ হ্রাসকৃত মূল্যে পৃথিবীর সকল দেশের মানুষ বই ক্রয় করতে পারবেন।
বইমেলার উদ্বোধনের পরে ভার্চুয়াল এই বইমেলায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন করেন গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র সমন্বয়ক কবি কামাল চৌধুরী, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিজ্ঞানী-মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম শাহ আলম সরোয়ার, ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, লেখক-সম্পাদক আবুল হাসনাত, বাচিক শিল্পী ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বুক সেলারস এন্ড পাবলিশার্স গিল্ড এর সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভুঁইয়া ও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফেরদৌস সাজেদিন ও শিশু সাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ডা. দীপু মনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত মুক্তধারার এই বইমেলা শুধু আমেরিকা নয়, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীর বাঙালীদের অতি প্রিয় অনুষ্ঠান। এই বইমোলা আরো আরো যুগ-যুগ বেঁচে থাকুক। বাঙাীল সংস্কৃতির বিকাশে মুক্তধারার ফাউন্ডেশনের অবদানের কথা জাতি স্মরণ করবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত এই বইমেলার মাধ্যমে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন অন্ধকারচ্ছন্ন পৃথিবীতে আলোর রেখা উন্মোচন করে দিয়েছে। ভার্চুয়ালি এই বইমেলা করে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন সারা পৃথিবীর বাঙালীদের একই সূতোয় গেঁথেছেন। আগামি ১০দিন পৃথিবীর বাঙালীরা এই মেলার মাধ্যমে জাতির জনককে স্মরণ করবেন, তাঁর লেখা বইগুলো পৃথিবীর সকল মানুষের হাতের কাছে পৌঁছে গেলো।
কবি কামাল চৌধুরী বলেন, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের জাতির পিতাকে নিবেদিত এই অনুষ্ঠান জাতি দীর্ঘদিন মনে রাখবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠাতে শুরুতে ২৯তম বইমেলার আহবায়ক ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ মুজিব বর্ষে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাবার নিমিত্তে আমেরিকার ইউনাইটেড পোস্টাল সার্ভিস কর্তৃক বাংলাদেশের জাতির পিতার ছবি সম্বলিত মাসব্যাপী স্মারক ডাকচিহ্ন প্রকাশ, ১৭ মার্চকে আন্তর্জাতিক বঙ্গবন্ধু দিবস ঘোষণা এবং নিউইয়র্ক ষ্টেট কর্তৃক ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ড ডে ঘোষণাসহ গত ৫ বছর ধরে বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরেন।
এক ঘন্টার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এম শাহ আলম সরোয়ার, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ, বুক সেলারস এন্ড পাবলিশার্স গিল্ড এর সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। সমাপনী বক্তব্য রাখের মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফেরদৌস সাজেদীন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরের পর্বে ছিল ‘আমার বঙ্গবন্ধু’। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কবি শঙ্খ ঘোষ এর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাঁর লেখা অপ্রকাশিত কবিতা। পাঠ করেন ডা. ফারুক আজম। এরপর ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণের স্মৃতিচারণ ও কবিতা পাঠ। এই পর্ব সঞ্চালনা করেন বিশ্বজিত সাহা। রাত ১০ টা ৪৫ মিনিটে ছিল জাতির জনকের প্রতি নিবেদিত গানের অনুষ্ঠান মৃত্যুহীন প্রাণ। পরিবেশনায় ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। পরে অনুষ্ঠিত হয় জাতির পিতার স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠান ‘বঙ্গবন্ধু, স্মৃতি ও চেতনায়’। অংশগ্রহণে ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী ও রাজনীতিবিদ তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ড. নূরুন নবী। বঙ্গবন্ধুর উপর লেখা রতন সাহার গান শিল্পী হিমাংশু গোস্বামীর কন্ঠে পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ১০দিন্যবাপী বইমেলার প্রথম দিনের সমাপ্তি ঘটে।
‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা-২০২০’ দ্বিতীয় দিন রোববার-এর অনুষ্ঠান শুরু হয় নিউইয়র্ক সময় রাত ১০টা (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা)। এদিন শিশু-কিশোর মেলার আহবায়ক সেমন্তী ওয়াহেদ-এর তত্বাবধানে আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ শিশু কিশোর মেলা।
‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা-২০২০’ এর প্রতিদিনের অনুষ্ঠান সরাসরি দেখার জন্য রয়েছে http://https://www.nyboimela.org ও https://www.facebook.com/nyboimela.
নিউইয়র্ক বইমেলার ওয়েবসাইট উদ্বোধন
অপরদিকে ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত ২৯তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ওয়েব সাইট গত ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় (নিউইয়র্ক সময় ৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা) উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।