যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সমাচার : পুরোনো বিরোধ নতুন করে

- প্রকাশের সময় : ১১:৫৯:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ৫০ বার পঠিত
বিশেষ প্রতনিধি: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পুরোনো বিরোধ নতুন করে জেগে উঠেছে। সংগঠনের নেতৃত্বের কোন্দল, দ্বিধা-বিভক্তি, বহিস্কার প্রভৃতি ঘটনা নতুন করে দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান আর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ নেতৃত্বধীন কমিটির বৈধতা নিয়ে। ক্ষমতাসীন দল হলেও দলীয় নেতা-কর্মীদের বিভেদ-বিভক্তি কম তো দূরের কথা, তা যেনো বড়েই চলেছে। গেলো সপ্তাহে সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার অভিযোগে সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলীকে বহিস্কার করা হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে নতুন করে পুরনো বিভেদ-বিভক্তি জেগে উঠেছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক পদ থেকে মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনিকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া, বিভ্রান্তমুলক, আদর্শচূত ও একটি বিশেষ মহলের উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (ক) ধারা মোতাবেক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীকে স্বপদ বা দায়িত্ব (দপ্তর সম্পাদক এর পদ) থেকে কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক বহিস্কার করা হয়েছে। এ বহিস্কারাদেশ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখ থেকে বলবৎ বলে পরিগণিত হবে সংগঠনের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ স্বাক্ষরিত পত্রে (সূত্রঃ প্রে/রি/১০/২০২০, তারিখঃ ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং) জানানো হয়েছে।
মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী
এদিকে মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী তার বহিষ্কারের খবরে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে বলেছেন-‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির পক্ষে কাউকে বহিষ্কার বা আবিষ্কার করার কোন এখতিয়ার নাই’। তিনি বলেছেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির পক্ষে কাউকে বহিষ্কার বা আবিষ্কার করার কোন এখতিয়ার নাই। এছাড়াও কমিটির কাউকেই দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অব্যাহতি দিতে হলে কার্যকরী কমিটির সভায় অনুমোদন নিয়ে নূন্যতম দু’সপ্তাহ সময় দিয়ে কারণ দর্শাও নোটিশ দিতে হয়। জবাবে সন্তুষ্ট না হলে যে কোন শাস্তির জন্যে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে তা কার্যকরী কমিটির অনুমোদনের ও সিদ্ধান্তে জন্যে অপেক্ষা করতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উক্ত সময়ের মধ্েয কোনো সিদ্ধান্ত না হলে তা আপনাআপনি বাতিল হয়ে যায়। এটাই গঠনতন্ত্রের নিয়ম।’ তিনি দাবী করেন যে, ১৫ আগষ্ট স্মরণে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সভায় আমার বক্তব্যে ‘কোনভাবেই যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি ভাইকে ছোট বা চক্রান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।’
অপরদিকে গত সপ্তাহে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা, বাকসু’র সাবেক জিএস ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেছেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত।’। তিনি বলেছেন- ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপকে তার সূইটে ডেকে উপস্থিত সকলের সামনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্তির কথা জানান। সেকারনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজিত গণসম্বর্ধনা সভায় তিনি নিজেই সভাপতিত্ব করেন এবং বিলুপ্ত কমিটির সভপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে দর্শকসারীতে বসিয়ে রাখেন। আওয়ামী লীগের কনভেনশন বা প্রথা অনুযায়ী উর্ধ্বতন কমিটির সভাপতি নি¤œতর কোন কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করলে নি¤œতর কমিটি অটোমেটিক্যাালী বিলুপ্ত হয়ে যায়। সুতারাং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোন কমিটি নেই।’
ড. সিদ্দিকুর রহমান
এব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সাথে রোববার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটি বহাল আছে বলেই আমরা কেন্দ্রের নির্দেশে তাকে (মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী) বহিস্কার করেছি। এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়। আর আমরা যা করছি তা কেনেন্দ্রর নির্দেশেই করছি। তাই কে কি বললো তা নিয়ে ভাবনার কিছু নেই।
কি বলেছিলেন মোহাম্মদ আলী
৭৫-এর ১৫ আগষ্ট স্মরণে আয়োজিত ‘জাতীয় শোক দিবস’-এর আলোচনায় সঞ্চালক হিসেবে মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেছিলেন- ‘তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, সৈয়দ কামরুজ্জামান যারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসার পরপরই খুব অল্প সময়ের মধ্যে একটি ষড়যন্ত্রকারী গ্রæপ বঙ্গবন্ধুকে একটু মিজগাইড করেন………..। লক্ষ্যনীয় বিষয় জানা যায় যে, খুনী খন্দকার মুস্তাক বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি তার সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ট হয়ে বঙ্গবন্ধুকে বিভিন্নভাবে মিজগাইড করেছেন। ছলে, বলে, কৌশলে, বঙ্গবন্ধুকে একা করে ফেলেছিলেন।……………অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কোন না কোন ভাবে এই হাইব্রীড বলি, সুযোগ সন্ধানী বলি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে ষড়যন্ত্রকারী বলি তারা ঘিরে রেখেছে।’