যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে বিল পাস

- প্রকাশের সময় : ১১:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
- / ৬৬ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: মুসলিম অধ্যুষিত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশাধিকার বন্ধে যাতে কেউ ‘বিশেষ নির্বাহী আদেশ’ জারি করতে না পারে, সে জন্য ইউএস কংগ্রেসে একটি বিল পাস হয়েছে। ‘নো ব্যান অ্যাক্ট’ বিলটি বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) প্রতিনিধি পরিষদে ২৩৩-১৮৩ ভোটে পাস হয়। এই বিলের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। তিনি বিলটি পাস করার জন্য সিনেট সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
বিলটি সিনেটে পাস হলে পাঠানো হবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য। তবে তা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সে ক্ষেত্রে পুনরায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে বিলটি পাস করতে হবে কংগ্রেসকে। তাহলেই ট্রাম্পের ভেটো অকার্যকর হয়ে বিলটি আইনে পরিণত হতে পারবে। ট্রাম্প ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, চাদ, উত্তর কোরিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান, মিয়ানমার ও ভেনিজুয়েলার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধের নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন।
মুসলিম অ্যাডভোকেটসের নির্বাহী পরিচালক ফারহানা খেরা বলেন, ‘আজ মিলিয়ন মিলিয়ন আমেরিকান রয়েছেন যারা মুসলিম নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবার ও প্রিয়জনদের থেকে পৃথক হয়েছেন।’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা দেন। তার প্রথম নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, সুদান। এরপরই সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। তবে তার এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন ঝুলে রয়েছে আদালতের নির্দেশে। এদিকে ওষুধের দাম কমানোর লক্ষ্যে শুক্রবার (৪ জুলাই) হোয়াইট হাউসে চারটি নির্বাহী আদেশ সই করেছেন ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ট্রাম্প নির্বাচনের আগে জনপ্রিয়তা বাড়াতেই মার্কিনিদের হাতে কম দামে প্রেসক্রিপশন বা বৈধ ওষুধের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, চারটি আদেশে আমি আজ স্বাক্ষর করছি যেটা প্রেসক্রিপশন বা বৈধ ওষুধের বাজারকে সম্পূর্ণরূপে পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে, অনলাইন ক্লাসে নতুন কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট এক ঘোষণায় জানায়, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী শুধু অনলাইনে পড়ালেখা করতে চাইছেন, নতুন করে তাদের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না।
অপরদিকে নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কার্যনির্বাহী এই আদেশ অনুযায়ী মুসলিম দেশ থেকে অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বিপরীত পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। গত ২০ জুলাই সোমবার মুসলিম সমর্থিত ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জো বাইডেন বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এই মুসলিম অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন তিনি।
বাইডেনের এমজেজ অ্যাকশন সংস্থার আয়োজিত দুই দিনের ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিন হজার মুসলিম-আমেরিকান ভোটার উপস্থিত ছিলেন। বিলটি পাসে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের পরামর্শে আমেরিকান পররাষ্ট্র দফতরের আদেশ প্রয়োজন হবে। এতে নির্দিষ্ট দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেয়া লোকের সংখ্যা সম্পর্কে একটি পাবলিক রিপোর্ট সরবরাহ করা হবে। ডেমোক্র্যাটরা মার্চ মাসের প্রথম দিকে ভোটের জন্য ‘নন ব্যান বিল’ টি হাউস ফ্লোরে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। সূত্র: আল জাজিরা।