ওয়েব সিরিজ-১ : যৌনতার পসরা সাজানো ‘ওয়েব নাটক’

- প্রকাশের সময় : ০৮:০০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই ২০২০
- / ৪২০ বার পঠিত
বিনোদন ডেস্ক: তরুণ প্রজন্ম তথা নেটিজেনদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে এখন নেটবিশ্বের ওয়েব সিরিজ। সেই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে নেটফ্লিক্স কিংবা বিদেশের আদলে দেশেও ওয়েব সিরিজি নির্মাণ শুরু হয়েছে। যেখানে সেন্সরের কোনো বালাই নেই, সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনাও নেই। এই সুযোগে যৌনতার পসরা সাজিয়ে নির্মিত হচ্ছে নানামুখী গল্পের ওয়েব সিরিজ। যেখানে বাণিজ্যের স্বার্থে নগ্নতা আর ভায়োলেন্সের উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে।
বুমেরাং সিরিজ-এর একটি দৃশ্য
সম্প্রতি কয়েকটি ওয়েব সিরিজ নিয়ে তুমুল সমালোচনা আর বিতর্কের পর বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে মূলধারার নির্মাতা ও প্রযোজকরা বলছেন, দর্শকদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মমুখী করতেই বিদেশি ওয়েব সিরিজের অনুকরণে কতিপয় নির্মাতা কনটেন্ট তৈরি করছেন। যেসব ওয়েব কনটেন্টে সিনেমার কাটপিসের মতো কিছু দৃশ্য জুড়ে দেয়া হচ্ছে। আর এসব সিরিজ নির্মাণে প্রচলিত নাটকের চেয়ে বাজেট কয়েকগুণ বেশি হওয়ায় জনপ্রিয় ও মূলধারার অভিনয় শিল্পীরাও প্রযোজকের বেঁধে দেয়া শর্ত মেনে ঝুঁকে পড়ছেন সেদিকে।
সদরঘাটের টাইগার-এর একটি দৃশ্য
মূলধারার নির্মাতারা বলছেন, অনলাইন প্লাটফরমে এসব ওয়েব সিরিজের মুক্তির ক্ষেত্রে কোনো সেন্সরশিপ না থাকায় প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। উদ্ভট কাহিনি, আপত্তিকর দৃশ্য, নোংরা সংলাপ বা গালি ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য ব্যবহার ও সেবন করার দৃশ্যে ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ লেখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। অবাধে পরকীয়া, অনৈতিক সম্পর্ক, শয্যাদৃশ্য, পর্নোগ্রাফি ছড়ানো হচ্ছে।
বুমেরাং- এর একটি দৃশ্য
ওয়েব সিরিজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল আলোচনা আর বির্তক উসকে দিয়েছে মূলত নির্মাতা ওয়াহিদ তারিকের ‘বুমেরাং’, সুমন আনোয়ারের ‘সদরঘাটের টাইগার’ আর নির্মাতা শিহাব শাহীনের ‘আগস্ট ১৪’। এসব সিরিজে অভিনয় করেছেন আজাদ আবুল কালাম, মৌটুসী বিশ্বাস, শ্যামল মওলা, হিল্লোল, ইমির মতো অভিনয় শিল্পীরা। রয়েছেন অর্ষা, তাসনুভা তিশা, ফারহানা হামিদ, আবু হুরায়রা তানভীরসহ অনেক জনপ্রিয় তারকাও।
বুমেরাং- এর একটি দৃশ্য
তবে অভিনয় শিল্পীরা কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন। তাদের দাবি, এসব নাটক নয়, ওয়েব সিরিজ। এসব সিরিজে রয়েছে +১৮ গল্প। অর্থাৎ প্রাপ্তবয়স্করা এসব সিরিজ দেখবে। তারা আরো বলছেন, তাদের অভিনীত এসব সিরিজ নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে সাবস্ক্রাইবেশন ফি দিয়ে দেখার কথা ছিল। তবে হঠাৎ করেই ইউটিউবের মতো ওপেন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত হয়েছে।
১৪ আগস্ট- এর একটি দৃশ্য
মূলধারার নির্মাতা ও টিভি প্রযোজকরা বলছেন, নিয়মনীতির বাইরে গিয়ে কিছু প্রযোজক শিল্প-সংস্কৃতির তোয়াক্কা না করে সুড়সুড়ি জাগানো কাজ করছেন। এসব ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছু করার নেই। তারা আরো বলছেন, চলচ্চিত্রে নোংরা সংলাপ, অশ্লীল পোশাক, নকল গল্পের ওপর চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে ওয়েব সিরিজের কোনো সেন্সর নেই। তারই সুযোগ নিচ্ছেন কেউ কেউ। সরকার যেখানে পর্নোগ্রাফি বন্ধে তৎপর, সেখানে ওয়েব সিরিজের নামে এই অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। (দৈনিক ভোরের কাগজ)
বুমেরাং- এর একটি দৃশ্যে অর্ষা-হিল্লোল