করোনাভাইরাস : কানাডায় আতঙ্কিত প্রবাসীদের বিষন্ন ইফতার

- প্রকাশের সময় : ১১:৪৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মে ২০২০
- / ১০৫ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: কানাডায় পবিত্র রমজান মাস শুরু হলেও আগের মতো নেই কোনো আমেজ। একের পর এক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি আর মৃত্যু আতঙ্কিত করে তুলেছে সবাইকে। করোনাভাইরাস সব যেন কেমন এলোমেলো করে দিয়েছে। ভীষণ বিষণ্নতায় দিন কাটছে প্রবাসী বাঙ্গালীদের।
বাংলাদেশের মতো কানাডায় বাঙালীরা ছোলা মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকে। ইফতারের এ আয়োজনে আরও থাকে পেয়াজি, কলা, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর, চিকেন হালিম আর শরবত। বিশেষ খাবার হিসেবে কমলা, আঙুর, আপেলসহ নানা দেশের বৈচিত্রময় ফল থাকে।
কানাডায় বাংলাদেশী হোটেলগুলোতেও বেচাকেনা চলছে তবে তা গত বছরের তুলনায় খুবই কম। আগের সেই জমজমাট ইফতারির কেনাবেচা চোখে পড়ছে না। বাঙালী রেস্টুরেন্টগুলো নিচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার।
ক্যালগেরিতে ইসলামিক সোসাইটি অব ক্যালগেরি কোভিড-১৯ এর এই সময়ে শনিবার ও মঙ্গলবার কিছুসংখ্যক পরিবারকে ইফতারি ডেলিভারি দেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
জানা যায়, কানাডার ক্যালগেরিতে বিএমআইসিসির নিজস্ব একটি মসজিদও রয়েছে। প্রতি বছরের মতো প্রবাসী বাঙালীরা মসজিদটিতে এবার আর আয়োজন করেনি ইফতারের। নারী-পুরুষের পদচারণায় হবে না ইফতার আর তারাবি নামাজ। প্রবাস জীবনে যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে এই সময়টাতে প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হতো একে অপরের সঙ্গে। পরিণত হতো মিলনমেলার।
এশিয়ান এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই মিলে যখন ইফতার করতো তখন যেন মনে হতো একখÐ বাংলাদেশ। গত বছরের স্মৃতিই এবার সবাই রোমন্থন করবে।
কানাডার ক্যালগেরিতে বসবাসরত প্রবাসী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কাদির বললেন, পবিত্র রমজান মাস অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস, এই মাসে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন নাযিল হয়, সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্যে দিয়ে আমরা মাসটি পালন করি। কিন্তু জীবনে এই প্রথম এই মাসটিতে আমরা প্রবাসী বাঙালীরা সবাই মিলে ইফতার করতে পারছি না। পবিত্র এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
ক্যালগেরির সুধীজন আবদুল্লা রফিক বলেন, রমজান মাস এমন একটা মাস, যে মাসে গুনাহ মাফ হয়। আর ইফতারির আগে দোয়া কবুল হয়। আল্লাহ আমাদের এই মহামারীর থেকে মুক্তি দেবে- পবিত্র এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এটাই আমাদের প্রার্থনা।
ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর আহমেদ শাহিন বলেন, আমরা প্রবাসী বাঙালীরা দেশকে ভীষণ মিস করি রমজানের ইফতারের এই সময়টাতে। ছোটবেলায় বাবা-মা-ভাই-বোন আর পরিবারের আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে খুবই উপভোগ করতাম রমজানের ইফতারকে। আজ সবই শুধু স্মৃতি। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে মহামারী এই করোনা থেকে মুক্তি দেবেন, আমাদের গুনাহ মাফ করবেন; এটাই আমাদের প্রার্থনা।