সাকিব দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ : দায় স্বীকার

- প্রকাশের সময় : ১০:৩০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
- / ৪৫০ বার পঠিত
সাকিব আল হাসান। ছবি-সংগৃহীত
হককথা ডেস্ক: ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করায় বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-২০ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোডের তিনটি আইন লঙ্ঘনের অপরাধ সাকিব মেনে নেওয়ার পর এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইসিসি।
আইসিসি তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, শাস্তির ২ বছরের মধ্যে প্রথম এক বছর কোনো ধরণের ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে পারবেন না সাকিব। শাস্তির প্রথম এক বছর আইসিসির কোনো আইন ভঙ্গ না করলে পরের এক বছর তার শাস্তি স্থগিত থাকবে। শাস্তির ২ বছর আইসিসি’র পর্যবেক্ষণে থাকবেন সাকিব। এই সময়ে কোনো আইন ভাঙ্গলে সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থ্যাৎ ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে তাকে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আগামী বছরের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত মাঠের বাইরে থাকতে হবে সাকিবকে। ফলে আগামী বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে পারবেন না তিনি।
আইসিসি জানিয়েছে, ২০১৮ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে তিন বার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। তবে এ বিষয়ে আইসিসিকে কিছু জানাননি তিনি। ২০১৮ সালের জানুয়ারীতে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান সাকিব। পরবর্তীতে সে বছরই আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ-কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ম্যাচের আগেও তাকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন জুয়াড়িরা। আর একবার তার কাছে প্রস্তাব আসে ত্রিদেশীয় সিরিজ অথবা আইপিএলে।
আইসিসির কাছে সকল দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় শাস্তির বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ থাকছে না সাকিবের।
আইসিসি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাকিবের বিরুদ্ধে আইসিসির দুর্নীতি দমন আইনের ২.৪.৪ ধারার অধীনে তিনটি অভিযোগ তোলা হয়েছে।
আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজ ও ২০১৮ সালে আইপিএলের সময় জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের কথা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (এসিইউ) কাছে জানাননি সাকিব।
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজেই তাঁর সঙ্গে জুয়াড়িরা দ্বিতীয়বার যোগাযোগ করলেও সেটি দ্বিতীয়বার এসিইউর কাছে বিস্তারিত জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব।
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের একটি ম্যাচের আগে সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেটিও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
সাকিব আল হাসান সব কটির দায় স্বীকার করে নিয়েছেন এবং আইসিসির দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে দেওয়া সব শাস্তি মেনে নিয়েছেন। যদি নিষেধাজ্ঞার সময় শাস্তির সব বিধিবিধান মেনে চলেন, তবে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন।
এ ব্যাপারে আইসিসির নৈতিকতাবিষয়ক মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল বলেছেন, ‘সাকিব আল হাসান অত্যন্ত অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। সে এ ব্যাপারে অনেকগুলো ক্লাসেই অংশ নিয়েছে এবং এ কোডের অধীনে তার দায়িত্বের কথা জানে। তার উচিত ছিল এসব প্রস্তাবের কথা জানানো। সাকিব সব দায় স্বীকার করে নিয়েছে এবং এ তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছে। সে ভবিষ্যতে আইসিসির সততা বিভাগকে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে। তরুণ ক্রিকেটারদের তার ভুল থেকে শিক্ষা নিতে বলবেন। আমি তার প্রস্তাব গ্রহণ করতে পেরে খুশি।’ (সূত্র: ইত্তেফাক/প্রথম আলো)