নতুন কমিটি ঘোষণা : প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি
- প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৯
- / ২৪১ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কুমিল্লাবাসীরা সামাজিক সংগঠন ঘিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একাধিক বিভক্ত সংগঠনের মধ্যে কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ’র ব্যানারে আয়োজিত সংগঠনের নতুন কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেয়া হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন ডা. আলী আহমেদ ও খালেদুর রহমান সবুজ।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের টক অব দ্য টাউন পার্টি হলে গত ৯ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তক্য রাখেন সংগঠনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও নবনির্বাচিত সহ সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী। এরপর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আ.স.ম. খালেদুর রহমান সবুজ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সভাপতি ডা. আলী আহমেদ, সহ সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সভাপতি হাজী খবির উদ্দিন ভূইয়া ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ সরকার। সংবাদ সম্মেলনে নতনি কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১ অক্টোবর কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ ইনক’র কার্যকরী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই দিনেই সোসাইটির সাধারণ সভায় উপস্থিত কুমিল্লাবাসীর উপস্থিতিতে ২০১৯-২১ সালের ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একটি কুচক্রী মহল যারা কুমিল্লাবাসীদের এই সংগঠনকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবতে শুরু করেছিল তারা আরেকটি কমিটি গঠন করেন। সেখানে ভাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়ে তার দুই ভগ্নিপতিকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এ যেন কোন ভগ্নিদায়গ্রস্থ ভাইয়ের দুই বোনের স্বামীদের যৌতুক প্রদান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের আখন্দের সাথে আলোচনা করে ১ অক্টোবর জ্যাকসন হাইটসের তিতাস রেষ্টুরেন্টে কার্যকরী কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের জরুরী সভা আহবান করা হয়। কার্যকরী কমিটির ৫১% সদস্যের সম্মতির ভিত্তিতে প্রয়োজনে একই দিনেই সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত হয়। তারই প্রেক্ষিতে কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ ইনক’র অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজ থেকে সভার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিন কোন এক অজ্ঞাত কারণে বিদায়ী সভাপতি সভার স্থান পরির্বতনের কথা বলে। আমরা স্পষ্ট তাকে জানিয়ে দেই প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সোসাইটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। জবাবে প্রাক্তন সভাপতি অসংলগ্ন ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন, যা প্রকাশের অনুপযোগী। সংগঠনের সভাপতি হিসেবে সাংগঠনিক অজ্ঞতা আর মূর্খতায় বেসামাল আবুল খায়ের আকন্দ নিজেকে বিশাল সা¤্রাজ্যের স¤্রাট ভাবতে শুরু করেছিলেন। কিন্তুকার্যকরী কমিটি আর উপদেষ্টা পরিষদের মুখোমুখি হলেই তাকে জবাবদিহি করতে হবে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সংগঠনের অর্থ আত্মসাত ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তাই কৌশলে সোসাইটির কার্যকরী কমিটির সভাকে পন্ড করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকেন। যদিও তাদের এ চেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১ অক্টোবর কার্যকরী কমিটির ৫১% সদস্যের উপস্থিতিতে সংগঠনের বিদায়ী সভাপতি আবুল খায়ের আখন্দের অনপস্থিতিতে সহ সভাপতি মোহাম্মদ মোমেনের সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়। কার্যকরী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল দুই বছর সংগঠনের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তারই ভায়রা ভাই সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ এইচ. এম. মিজানুর রহমানের সাথে যোগাসাজোশ করে সোসাইটির অর্থ আত্মসাৎ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার আবুল খায়ের আকন্দকে সভাপতি ও এইচ এম মিজানুর রহমানকে কোষাধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয় এবং মোহাম্মদ মোমেনকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দীপক সাহাকে ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ ঘোষণা করা হয়। উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য মো: আব্দুল আলীম মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন এবং তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়। এছাড়া ঐ দিনেই সাধারণ সভা অনুষ্ঠান এবং নতুন কার্যকরী কমিটি গঠনে ৫ সদস্যের তালিকা তৈরী করা হয়। সভায় গঠনতন্ত্র অনুমোদন, সোসাইটির সৃষ্টিলগ্ন থেকে অদ্যাবধি সকল বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার, কার্যকরী কমিটিকে ১৯ থেকে সর্বোচ্চ ২৯ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদ যে কোন বেজোর সংখ্যায় উন্নিত করা। কার্যকরী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাধারন সভায় ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবুল খায়ের আকন্দ গংরা কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ ইনক এর নাম ব্যবহার করে যদি পরবর্তীতে কোন প্রকার বিভ্রান্তিমূলক খবর কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন পোষ্ট প্রদান করা হয় তাহলে আমরা আইনুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবো। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, স¤প্রতি কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ এর নামে কুচক্রী মহলটি বিভ্রান্তিকর সংবাদ ও বিজ্ঞাপন পরিবেশনের মাধ্যমে কুমিল্লাবাসীদের বিভ্রান্ত করছে, সর্বোপরি বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা সোসাইটির ২০১৯-২০২১ সালের জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির কর্মকর্তারা হলেন: সভাপতি- ডা. আলী আহমেদ, সিনিয়র সহ সভাপতি- মো: মনিরুল আলম (দিপু), সহ সভাপতি- সালাউদ্দিন চৌধুরী, মো: কবির হোসেন, এম এ মতিন, ও হাসান কবির সুমন, সাধারণ সম্পাদক- আ স ম খালেদুর রহমান (সবুজ), সহ সাধারণ সম্পাদক- তাছলিমা পাটোয়ারী ও আব্দুল আলীম মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক- সাইদুল ইসলাম রিয়াদ, কোষাধ্যক্ষ- মো: হাবিব উল্লাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- মো: এইচ আর ভূইয়া (আখলাছ), প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক- মো: সালাহ উদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক- মো: নজরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পাদক- মো: আব্দুল কাইয়ুুম মিয়াজী, দপ্তর সম্পাদক- জহিরুল ইসলাম খোকন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- শাহীন আলম, মহিলা সম্পাদক- হাসিনা আক্তার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- গোলাম সাঈদ সিজন, কার্যকরী সদস্য- আব্দুল্লাহ আল রেজা (স্বপন), আবু কাউছার, মিজানুর রহমান, আশরাফুর ইসলাম ভ‚ইয়া (বাবলু), দীপক সাহা ও রোমেল সরকার।
এছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন: প্রধান উপদেষ্টা- মো: মফিজুর রহমান (রুমি), উপদেষ্টা- হাজী পেয়ার আহমদ, মো: আবুল হোসেন, আবুল কালাম ভূইয়া, মোফাজ্জল হোসেন, কাজী আব্দুর রশীদ, বশির আহমদ, আলহাজ নূরুল ইসলাম, মো: জাকির হোসেন (স্বপন) ও ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল লতিফ সরকার।