নিউইয়র্ক ১১:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৯
  • / ৪৭১ বার পঠিত

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। ফাইল ছবি

হককথা ডেস্ক: উপমহাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) রাত ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি রাজধানী ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক জানিয়েছেন।
ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোশতাক আহমেদ জানান, ঠান্ডা লেগে বুকে কফ জমে যাওয়া এবং ব্যাকবোনে ব্যথা শুরু হওয়ায় গত ১৪ আগস্ট অধ্যাপক মোজাফফরকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সোমবার (১৯ আগষ্ট) তাকে আইসিইউতে নেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বরং অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের জানাজা কোথায় হবে তা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দাফন তার নিজ গ্রামে করা হতে পারে। তবে পারিবারিকভাবে এখনও নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। অধ্যাপক মোজাফফর দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিতসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। এজন্য ঘন ঘন তাকে হাসপাতালে আনতে হয়েছে। এবারের অসুস্থতা ছিল বেশ গুরুতর। বুকে কফ জমে যাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল তার।
সা¤্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনীতিতে কিংবদন্তিতুল্য মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আলহাজ কেয়াম উদ্দিন ভূঁইয়া স্কুলশিক্ষক ছিলেন। মায়ের নাম আফজারুন্নেছা।
মোজাফফর আহমদ হোসেনতলা স্কুল, জাফরগঞ্জ রাজ ইন্সটিটিউশন, দেবিদ্বার রেয়াজউদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া কলেজে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে পড়ালেখা করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ইউনেস্কোর ডিপ্লোমা লাভ করেন। নিজেকে তিনি সবসময় ‘কুঁড়েঘরের মোজাফফর’ বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন।
মোজাফফর আহমদের রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৩৭ সালে। তিনি ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করেছেন।
১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানস্বরূপ সরকার ২০১৫ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করলেও তিনি সবিনয়ে তা ফিরিয়ে দেন।
১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেবিদ্বার আসনে মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রীকে তিনি পরাজিত করেন। ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল আওয়ামী লীগের বিরোধিতা সত্ত্বেও পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৯৫৮ সালে সামরিক শাসক আইয়ুব সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারি করে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তিনি আত্মগোপনে থেকে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন। আট বছর আত্মগোপনে থাকার পর ১৯৬৬ সালে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন তিনি।
১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপের যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং কারাবরণ করেন। তিনি রাওয়ালপিন্ডির গোলটেবিল বৈঠকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে মূল নেতৃত্বের একজন ছিলেন তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। ওই সময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ, সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়নের নিজস্ব ১৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধা গঠনের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
অধ্যাপক মোজাফফর ১৯৭৯ সালে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে ন্যাপ, সিপিবি ও প্রগতিশীল শক্তির প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অধ্যাপক মোজাফফর বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করতে গিয়ে তিনি লেখেন, ‘স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার বন্ধু ছিলেন’।
শেরেবাংলা একে ফজলুল হক সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘তিনিই প্রথম জাতীয় নেতা যাকে বাংলার আমজনতা তাদের আপন লোক ভাবতে পেরেছিলেন।’
মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এ দেশের রাজনীতি বড়লোকের প্রাসাদ থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে নিয়ে আসার ব্যাপারে শেরেবাংলা ফজলুল হকের চেয়ে মওলানা ভাসানীর অবদান কম নয়।’
শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের সাধক হিসেবে মন্তব্য করেন।
আর এ যুগের রাজনীতিবিদ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে রাজনীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে পেটনীতি, ব্যবসা ও দুর্নীতির আড্ডাখানায়। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা প্রায় সবাই নি-বিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। দেশ স্বাধীন হয়েছে ২০ বছর (১৯৯১ সালের লেখা)। এত অল্প সময়ে এত সম্পদ কিছু লোকের হাতে এসেছে তা ভাবতে অবাক লাগে।’ (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই

প্রকাশের সময় : ০৫:১৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৯

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। ফাইল ছবি

হককথা ডেস্ক: উপমহাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) রাত ৭টা ৫০ মিনিটে তিনি রাজধানী ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এদিকে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক জানিয়েছেন।
ন্যাপের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোশতাক আহমেদ জানান, ঠান্ডা লেগে বুকে কফ জমে যাওয়া এবং ব্যাকবোনে ব্যথা শুরু হওয়ায় গত ১৪ আগস্ট অধ্যাপক মোজাফফরকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় সোমবার (১৯ আগষ্ট) তাকে আইসিইউতে নেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বরং অবনতি হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের জানাজা কোথায় হবে তা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। দাফন তার নিজ গ্রামে করা হতে পারে। তবে পারিবারিকভাবে এখনও নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জানা গেছে, তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। অধ্যাপক মোজাফফর দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিতসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। এজন্য ঘন ঘন তাকে হাসপাতালে আনতে হয়েছে। এবারের অসুস্থতা ছিল বেশ গুরুতর। বুকে কফ জমে যাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল তার।
সা¤্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনীতিতে কিংবদন্তিতুল্য মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবিদ্বারের এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আলহাজ কেয়াম উদ্দিন ভূঁইয়া স্কুলশিক্ষক ছিলেন। মায়ের নাম আফজারুন্নেছা।
মোজাফফর আহমদ হোসেনতলা স্কুল, জাফরগঞ্জ রাজ ইন্সটিটিউশন, দেবিদ্বার রেয়াজউদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া কলেজে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে পড়ালেখা করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ইউনেস্কোর ডিপ্লোমা লাভ করেন। নিজেকে তিনি সবসময় ‘কুঁড়েঘরের মোজাফফর’ বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন।
মোজাফফর আহমদের রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৩৭ সালে। তিনি ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করেছেন।
১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানস্বরূপ সরকার ২০১৫ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করলেও তিনি সবিনয়ে তা ফিরিয়ে দেন।
১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে দেবিদ্বার আসনে মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রীকে তিনি পরাজিত করেন। ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল আওয়ামী লীগের বিরোধিতা সত্ত্বেও পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৯৫৮ সালে সামরিক শাসক আইয়ুব সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারি করে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। তিনি আত্মগোপনে থেকে আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন। আট বছর আত্মগোপনে থাকার পর ১৯৬৬ সালে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসেন তিনি।
১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপের যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং কারাবরণ করেন। তিনি রাওয়ালপিন্ডির গোলটেবিল বৈঠকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে মূল নেতৃত্বের একজন ছিলেন তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। ওই সময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ, সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়নের নিজস্ব ১৯ হাজার মুক্তিযোদ্ধা গঠনের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
অধ্যাপক মোজাফফর ১৯৭৯ সালে এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে ন্যাপ, সিপিবি ও প্রগতিশীল শক্তির প্রার্থী হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অধ্যাপক মোজাফফর বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করতে গিয়ে তিনি লেখেন, ‘স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার বন্ধু ছিলেন’।
শেরেবাংলা একে ফজলুল হক সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, ‘তিনিই প্রথম জাতীয় নেতা যাকে বাংলার আমজনতা তাদের আপন লোক ভাবতে পেরেছিলেন।’
মওলানা ভাসানী সম্পর্কে লিখেছেন, ‘এ দেশের রাজনীতি বড়লোকের প্রাসাদ থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে নিয়ে আসার ব্যাপারে শেরেবাংলা ফজলুল হকের চেয়ে মওলানা ভাসানীর অবদান কম নয়।’
শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের সাধক হিসেবে মন্তব্য করেন।
আর এ যুগের রাজনীতিবিদ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে রাজনীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে পেটনীতি, ব্যবসা ও দুর্নীতির আড্ডাখানায়। আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা প্রায় সবাই নি-বিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। দেশ স্বাধীন হয়েছে ২০ বছর (১৯৯১ সালের লেখা)। এত অল্প সময়ে এত সম্পদ কিছু লোকের হাতে এসেছে তা ভাবতে অবাক লাগে।’ (সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)