‘শাহ নেওয়াজ-টুকু’ নেতৃত্তাধীন জেবিবিএ’র অভিষেকে মানুষের ঢল
- প্রকাশের সময় : ০৮:২৮:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮
- / ৫০৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বর্ণাঢ্য আয়োজনে অভিষিক্ত হলেন ‘শাহ নেওয়াজ-টুকু’ নেতৃত্তাধীন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন অব নিউইয়র্ক (জেবিবিএ)-এর নতুন কমিটির (২০১৮-২০২০ সাল) গঠিত কর্মকর্তারা। স্থানীয় বেলোজিনো পার্টি হলে মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) আয়োজিত এই অভিষেক অনুষ্ঠানে দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী সহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। সেই সাথে বাংলাদেশের ‘ব্ল্যাক ডায়মান্ড’ খ্যাত জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন সহ ভারতের বোম্বে থেকে আগত সোহিনী মুখার্জী আর প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী রানো নেওয়াজ, কৃষ্ণা তিথি ও কামরুজ্জামান বকুলের সঙ্গীত সকল দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কাইয়ুম। এছাড়াও গিতা থেকে পাঠ করেন বিধান চন্দ্র পাল। নতুন প্রজন্মের সানিয়া আলম যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশেনের পর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এসময় জেবিবিএ’র নতুন কমিটির কর্মকর্তারা মঞ্চে ছিলেন। পরবর্তীতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম। তারপর নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন সহ সভাপতি মোল্লা মাসুদ। পরবর্তীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী পারভেজ নতুন কমিটির কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন। জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান টুকু বাংলাদেশে অবস্থান করায় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানানো হয়। এসময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য আব্দুল লতিফ ভূইয়া ও মাহবুবুর রহমান এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে মাহবুব এ চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন ও জাকির এইচ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে জেবিবিএ’র নব নির্বাচিত সভাপতি শাহ নেওয়াজ, সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য জাকারিয়া মাসুদ জিকো, আমন্ত্রিত অতিথি নিউইয়র্ক সিটির সাবেক কম্পট্রোলার ও ষ্টেট সিনেটর প্রার্থী জন ল্যু ও সিটি কাউন্সিলম্যান কস্টা। সমগ্র অনুষ্ঠান যৌথভাবে উপস্থাপনায় ছিলেন প্রবাসের বিশিষ্ট উপস্থাপক ও টিভি নিউজ প্রেজেন্টার শামসুন্নার নিম্মি।
অনুষ্ঠানে জেবিবিএ প্রতিষ্ঠা সহ এই সংগঠনের কর্মকান্ডে বিশেষ অবদান ও ভূমিকা রাখার জন্য অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাবেক সভাপতি মরহুম সাঈদ রহমান মান্নান ও মরহুম সদস্য হুমায়ুন কবীর খানকে প্ল্যাক দিয়ে মরোনত্তর সম্মান জানানো হয়। সাঈদ রহমান মান্নানের পক্ষে তার কন্যা মাহী এবং হুমায়ুন কবীর খানের পক্ষে তার স্ত্রী সম্মাননা গ্রহণ করেন।
এছড়াও জাতিসংঘ স্বীকৃত একটি এনজিও ‘ইউনাইটেড ন্যাশন্স ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস’ শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে খানস টিউটোরিয়াল-এর চেয়ারপার্সন নাঈমা খানকে ‘শুভেচ্ছা দূত বা গুড উইল এম্বেসেডর’ মনোনীত করায় নাঈমা খান সহ কমিউনিটিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য জেবিবিএ’রর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম ও নূরুল আমীন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার এবং ‘জ্যাকবস হাইটস এলাকাবাসী’ সংগঠন-কে প্ল্যাক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেবিবিএ’র সভাপতি শাহ নেওয়াজ তার বক্তব্যে জেবিবিএ-কে একটি অরাজনৈতিক এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমরা সকল ব্যবসায়ী মিলেমিলে কাজ করে জেবিবিএ-কে আরো শক্তিশালী করতে চাই, বাংলাদেশী ব্যবসা আর ব্যবসায়ীদের প্রসার ঘটাতে চাই। এজন্য তিনি সংশ্লিস্ট সবার সহযোগিতা কামনা এবং জেবিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অপরাংশের সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলমের বাবা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ’র ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ সহ মরহুম সাঈদ রহমান মান্নান ও ড. মনসুর খান সহ জেবিবিএ’র সদস্য-কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
শাহ নেওয়াজ বলেন, জেবিবিএ’র বিগত কমিটিগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে কোন কার্পণ্য করেনি। জেবিবিএ’র কোন অর্থ তছরুপ হয়নি। গত কমিটি জেবিবিএ’র পূর্ণাঙ্গ হিসাব দিয়েছে। তিনি জ্যাকসন হাইটস মুসলিম সেন্টার প্রতিষ্ঠায় জেবিবিএ’র পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জাকারিয়া মাসুদ জিকো বলেন, আমি ঐক্যবদ্ধ জেবিবিএ’র প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও জেবিবিএ’র ঐক্য ধরে রাখতে পারিনি। মাঝে একবার ঐক্য হলেও জেবিবিএ আবার ভেঙ্গে গেছে। তিনি বলেন, জেবিবিএ’র পাশে ছিলাম, আছি এবং পাশে থাকবো।
জেবিবিএ’র ভাপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম হাসান তার বক্তব্যে সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য উপস্থিত সকল ব্যবসায়ী সহ প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বক্তব্যের চেয়ে শিল্পীদের গান পরিবেশনা মূখ্য থাকায় জেবিবিএ’র অভিষেক অনুষ্ঠানটি ব্যতিক্রমী হয়ে উঠে। সন্ধ্যা ৭টার অনুষ্ঠান পৌনে ৮টার দিকে শুরু হওয়ার পরও মধ্যরাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চললেও এবং দর্শক-শ্রোতাদের চাহিদা থাকার পরও সময় স্বল্পতার জন্য শিল্পীরা বেশী গান গাইতে পারেননি। বিশেষ করে শিল্পী বেবী নাজনীনের গান শোনার জন্য দর্শক-শ্রোতাদের সোচ্চার দাবী লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও শিল্পী কৃষ্ণা তিথি ও কামরুজ্জামান বকুল সদ্য প্রয়াত জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু-কে স্মরণ করে গান পরিবশেন করেন।
জেবিবিএ’র অভিষেক উপলক্ষে ‘বণিক’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। এটি সম্পাদনা করেন সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বেলাল আহমেদ। স্মরণিকায় কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা, ব্যবসায়ীদের তালিকা আর বিজ্ঞাপন স্থান পায়।
জেবিবিএ’র অভিষিক্ত কর্মকর্তারা হলেন: সভাপতি- শাহ নেওয়াজ, সিনিয়র সহ সভাপতি- মাকসুদুর রহমান, সহ সভাপতি- মোল্লা এম এ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক- মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (টুকু), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- এস এম হাসান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ মুনীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- ভিক্টর লিয়াকত এলাহী, দপ্তর সম্পাদক- শাহরিয়ার আরিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- বেলাল আহমেদ, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক- শেখ আলী এবং কার্যকরী পরিষদ সদস্য যথাক্রমে- মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল কাইয়ুম খান, খালেদ আক্তার, মফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ এস হোসেন।
নির্বাচন কমিশনার: পারভেজ কাজী, আব্দুল লতিফ ভূইয়া, নাজিমউদ্দিন আহমেদ, মাহবুবুর রহমান ও রেজা রশীদ।
উপদেষ্টা পরিষদ: মাহাবুব এ চৌধুরী, জাকারিয়া মাসুদ জিকো, তারেক হাসান খান, আনোয়ার হোসেন ও জাকির এইচ মিয়া। ছবি: ইউএনএ