নিউইয়র্ক ০৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আবারো নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৪৯৩ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সদস্য/সদস্যবৃন্দের ব্যানারে ব্রকলীনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যায় ও বিরূপ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করে কমিশনের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
গত ২১ অক্টোবর রাতে রাধুঁনী রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডা. এনামুল হক। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আবু নাসের, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাষ্টিবোর্ড সদস্য আলী ইমাম শিকদার ও কাজী আজহারুল হক মিলন, সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন (নয়ন), সিনিয়র সহ সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ সভাপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মদ রেজাউল করীম (সগীর), সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, ‘নয়ন-আলী’ পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাকসুদুল হক চৌধুরী, ঢাবি এলামনাই এসোসিয়েশন-এর সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আহসান হাবিব, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আশরাফ উদ্দিন, মাহফুজুল মাওলা নান্নু, আহসান উল্লাহ বাচ্চু, ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল মালেক, আরিফুর রহমান, সালেহ আহমেদ মানিক, ইউনুস সরকার, মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, আবদুল মালেক, এডভোকেট কামরুজাজামান, কাজী কামাল, গোলাম রব্বানী সুমন, কাউসার চৌধুরী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের ব্রুকলীন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সরকার।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সহ সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী আহসান হাবিব, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক পদপ্রার্থী শেখ হায়দার আলী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আবুল কাশেম চৌধুরী, সাহিত্য সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হাসান (জিলানী), কার্যকরী সদস্য পদপ্রার্থী সাঈদুর আর খান (ডিউক) প্রমুখ। সমাবেশে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের কর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তি সহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা আদালত কতৃক নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিতাদেশের ওপর বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আবেদন খারিজের পর বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যানারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২১ অক্টোবরের নির্বাচনের উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা আপীল খারিজ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যানারে তড়িঘড়ি করে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তারা বলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন, অমূলক এবং বাংলাদেশ সোসাইটির ২৭,৫১০ জন ভোটারদের সাথে প্রতারণার শামিল।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, ‘রব-রুহুল প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আজিমুর রহমান বোরহান, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশনাদের সাথে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের আজ্ঞাবহ এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে এ কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে।
তারা বলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ তার বক্তব্যে মাননীয় বিচারককে নিয়ে যে ঔদ্ধত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তা সত্যিই দু:খজনক। বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি একজন বিচারককে পাগল কিংবা পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত বলে মন্তব্য করে এদেশের পুরো বিচার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশী কমিউনিটিকে অসম্মানিত করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বক্তারা বিষয়টি আদালতের নজরে আনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা মনে করি মামলার একজন বিবাদীর এধরনের বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে। আমরা কামাল সাহেবের এই বক্তব্য প্রত্যাহারের জোর দাবী এবং তার বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বক্তারা বলেন, ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের মামলার অন্যতম বিবাদী সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার নামে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, যা আদালত অবমাননার শামিল।
সমাবেশে আবু নাসের বলেন, আজ আমাদের প্রতিবাদ সভা করার কথা নয়, আনন্দ সমাবেশ করার কথা। আজ আপনারা যাদের মামলাবাজ বলছেন, তারা মামলাবাজ নয়। তারা যদি সত্যই মামলাবাজ হতো তাহলে ৩১ হাজার ডলার খরচ করে ভোটারদের কাছে চিঠি পাঠাতো না।
আলী ইমাম শিকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং কামাল আহমেদ ষড়যন্ত্র করে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন তারাই বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের গঠনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। তারা ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সম্মানিত সদস্য হওয়ায় আমরা তাদের সমর্থন করি। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
কাজী আজহারুল হক মিলন বলেন, জনি সাহেব মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান পদটি চিরস্থায়ী। চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই তিনি স্থির করে রেখেছিলেন ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ‘নয়ন-আলী’কে ফেল করাবেন। তার সে স্বপ্ন কোন দিন পূরণ হবে না।
কাজী আশরাফ হোসেন (নয়ন) নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আমাদের যেভাবে হেনেস্থা করেছেন, তাতে আমাদের দুই ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে আপাতত তারা জয়ী হয়েছেন বলে আমি মনে করি।
আব্দুর রহীম হাওলাদার বলেন, ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা না হলেও আজ আমাদের মামলাবাজ বলা হচ্ছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল যদি সত্যই মামলাবাজ হতো তাহলে নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে ৩১ হাজার ডলার খরচ করে ভোটারদের ঘরে ঘরে চিঠি পাঠাতো না। তিনি বলেন, কমিশন ২ জন সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্যের নির্বাচনে অংশগ্রহণের মনোনয়ন বৈধ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দু’সদস্য প্রার্থী ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন, কার্যকরী পরিষদ ও ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের মাধ্যমে সামাধানের চেষ্টা করেও সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দীকির অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে ক্ষুব্ধ দুই সদস্য প্রার্থী আর কোন উপায়-অন্ত খুঁজে না পেয়ে অন্য একজন সাধারণ সদস্যকে নিয়ে মাননীয় আদালতের শরনাপন্ন হন। মাননীয় আদালত তাদের আবেদনের যৌক্তিকতা বুঝতে পেরে তাদের নাম নির্বাচনী ব্যালটে ‘কেন সংযুক্ত করা হবে না’ এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য মহিউদ্দীন দেওয়ানের নাম ব্যালট থেকে ‘কেন বাদ দেয়া হবে না’ মর্মে শোকজ করে ২১ অক্টোবরের নির্বাচনী কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বি ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের সভা থেকে তার বিরুদ্ধে মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা ওসমান চৌধুরীর এটর্নীর টেক্সট মেসেজ পেয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে তিনি এবং ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন ওইদিন কোর্টে যান। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম ওসমান চৌধুরীর এটর্নীর টেক্সট মেসেজ পেয়ে সোসাইটির প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারীও কোর্টে যাবেন। কোর্টে গিয়ে জানতে পারি ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের দুই সদস্য প্রার্থী যথাক্রমে আলী আকবর ও জেড আর চৌধুরী এবং সোসাইটির সদস্য শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সুপ্রীম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তখন জেড আর চৌধুরীকে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ মামলা সম্পর্কে পূর্বে আমি কিছুই জানতাম না।
মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি একটি সামাজিক সংগঠন। একজন আরেকজনকে অসম্মান করা সামাজিক সংগঠনের কাজ নয়। তিনি সংশ্লিষ্টদের তীর্যক ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থেকে যার যার এজেন্ডা মোতাবেক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আবারো নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

হককথা ডেস্ক: বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সদস্য/সদস্যবৃন্দের ব্যানারে ব্রকলীনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ এবং নির্বাচন কমিশনের অন্যায় ও বিরূপ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনা করে কমিশনের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
গত ২১ অক্টোবর রাতে রাধুঁনী রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডা. এনামুল হক। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আবু নাসের, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাষ্টিবোর্ড সদস্য আলী ইমাম শিকদার ও কাজী আজহারুল হক মিলন, সোসাইটির সভাপতি প্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন (নয়ন), সিনিয়র সহ সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রহীম হাওলাদার, সহ সভাপতি পদপ্রার্থী মোহাম্মদ রেজাউল করীম (সগীর), সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, ‘নয়ন-আলী’ পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাকসুদুল হক চৌধুরী, ঢাবি এলামনাই এসোসিয়েশন-এর সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আহসান হাবিব, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আশরাফ উদ্দিন, মাহফুজুল মাওলা নান্নু, আহসান উল্লাহ বাচ্চু, ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল মালেক, আরিফুর রহমান, সালেহ আহমেদ মানিক, ইউনুস সরকার, মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, আবদুল মালেক, এডভোকেট কামরুজাজামান, কাজী কামাল, গোলাম রব্বানী সুমন, কাউসার চৌধুরী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের ব্রুকলীন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সরকার।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সহ সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী আহসান হাবিব, জন সংযোগ ও প্রচার সম্পাদক পদপ্রার্থী শেখ হায়দার আলী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আবুল কাশেম চৌধুরী, সাহিত্য সম্পাদক পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হাসান (জিলানী), কার্যকরী সদস্য পদপ্রার্থী সাঈদুর আর খান (ডিউক) প্রমুখ। সমাবেশে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের কর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তি সহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা আদালত কতৃক নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিতাদেশের ওপর বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আবেদন খারিজের পর বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যানারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২১ অক্টোবরের নির্বাচনের উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা আপীল খারিজ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যানারে তড়িঘড়ি করে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তারা বলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তা সম্পুর্ণ ভিত্তিহীন, অমূলক এবং বাংলাদেশ সোসাইটির ২৭,৫১০ জন ভোটারদের সাথে প্রতারণার শামিল।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, ‘রব-রুহুল প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আজিমুর রহমান বোরহান, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশনাদের সাথে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের বিরুদ্ধে অসত্য, বানোয়াট বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের আজ্ঞাবহ এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তাই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে এ কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে।
তারা বলেন, সাংবাদিক সম্মেলনে সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ তার বক্তব্যে মাননীয় বিচারককে নিয়ে যে ঔদ্ধত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তা সত্যিই দু:খজনক। বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি একজন বিচারককে পাগল কিংবা পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত বলে মন্তব্য করে এদেশের পুরো বিচার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশী কমিউনিটিকে অসম্মানিত করেছেন। আমরা তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বক্তারা বিষয়টি আদালতের নজরে আনার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা মনে করি মামলার একজন বিবাদীর এধরনের বক্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে। আমরা কামাল সাহেবের এই বক্তব্য প্রত্যাহারের জোর দাবী এবং তার বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বক্তারা বলেন, ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের মামলার অন্যতম বিবাদী সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার নামে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, যা আদালত অবমাননার শামিল।
সমাবেশে আবু নাসের বলেন, আজ আমাদের প্রতিবাদ সভা করার কথা নয়, আনন্দ সমাবেশ করার কথা। আজ আপনারা যাদের মামলাবাজ বলছেন, তারা মামলাবাজ নয়। তারা যদি সত্যই মামলাবাজ হতো তাহলে ৩১ হাজার ডলার খরচ করে ভোটারদের কাছে চিঠি পাঠাতো না।
আলী ইমাম শিকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং কামাল আহমেদ ষড়যন্ত্র করে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন তারাই বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের গঠনতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। তারা ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের সম্মানিত সদস্য হওয়ায় আমরা তাদের সমর্থন করি। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
কাজী আজহারুল হক মিলন বলেন, জনি সাহেব মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান পদটি চিরস্থায়ী। চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই তিনি স্থির করে রেখেছিলেন ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ‘নয়ন-আলী’কে ফেল করাবেন। তার সে স্বপ্ন কোন দিন পূরণ হবে না।
কাজী আশরাফ হোসেন (নয়ন) নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আমাদের যেভাবে হেনেস্থা করেছেন, তাতে আমাদের দুই ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে আপাতত তারা জয়ী হয়েছেন বলে আমি মনে করি।
আব্দুর রহীম হাওলাদার বলেন, ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা না হলেও আজ আমাদের মামলাবাজ বলা হচ্ছে। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল যদি সত্যই মামলাবাজ হতো তাহলে নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে ৩১ হাজার ডলার খরচ করে ভোটারদের ঘরে ঘরে চিঠি পাঠাতো না। তিনি বলেন, কমিশন ২ জন সদস্য প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছেন এবং নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্যের নির্বাচনে অংশগ্রহণের মনোনয়ন বৈধ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দু’সদস্য প্রার্থী ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন, কার্যকরী পরিষদ ও ট্রাষ্টি বোর্ডের সদস্যদের মাধ্যমে সামাধানের চেষ্টা করেও সভাপতি কামাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দীকির অসহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে ক্ষুব্ধ দুই সদস্য প্রার্থী আর কোন উপায়-অন্ত খুঁজে না পেয়ে অন্য একজন সাধারণ সদস্যকে নিয়ে মাননীয় আদালতের শরনাপন্ন হন। মাননীয় আদালত তাদের আবেদনের যৌক্তিকতা বুঝতে পেরে তাদের নাম নির্বাচনী ব্যালটে ‘কেন সংযুক্ত করা হবে না’ এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য মহিউদ্দীন দেওয়ানের নাম ব্যালট থেকে ‘কেন বাদ দেয়া হবে না’ মর্মে শোকজ করে ২১ অক্টোবরের নির্বাচনী কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আব্দুর রহীম হাওলাদার প্রতিদ্বন্দ্বি ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের সভা থেকে তার বিরুদ্ধে মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা ওসমান চৌধুরীর এটর্নীর টেক্সট মেসেজ পেয়ে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে তিনি এবং ট্রাষ্টি বোর্ড সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন ওইদিন কোর্টে যান। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম ওসমান চৌধুরীর এটর্নীর টেক্সট মেসেজ পেয়ে সোসাইটির প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারীও কোর্টে যাবেন। কোর্টে গিয়ে জানতে পারি ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের দুই সদস্য প্রার্থী যথাক্রমে আলী আকবর ও জেড আর চৌধুরী এবং সোসাইটির সদস্য শরিফুল ইসলাম বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক’র নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সুপ্রীম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তখন জেড আর চৌধুরীকে ফোন করে বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ মামলা সম্পর্কে পূর্বে আমি কিছুই জানতাম না।
মোহাম্মদ আলী বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি একটি সামাজিক সংগঠন। একজন আরেকজনকে অসম্মান করা সামাজিক সংগঠনের কাজ নয়। তিনি সংশ্লিষ্টদের তীর্যক ভাষা ব্যবহার থেকে বিরত থেকে যার যার এজেন্ডা মোতাবেক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।