নিউইয়র্ক ০৫:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘সেই তিনি আমার কোলেই ঢলে পড়লেন’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:১১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৪৯৫ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: ‘বুঝতেই পারলাম না এভাবে চলে যাবেন বাচ্চু ভাই।’ কথাটা যিনি বললেন তার নাম রুবেল। আইয়ুব বাচ্চুর সহকারী তিনি। অনবরত কেঁদে চলেছেন। তার কান্না যেন থামার নয়। তার হাতেই যে বাচ্চু ভাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। যারা আইয়ুব বাচ্চুকে চেনেন তারা রুবেলকেও চেনেন। গেল ৮ বছর ধরে বাচ্চুর ছায়াসঙ্গী তিনি। যেখানে গিয়েছেন, সবখানেই ছায়ার মতো দেখা যেত াংবেলকে। তার হাতেই থাকতো বাচ্চুর সারাদিনের কর্মসূচি।
সকাল থেকে রাত, যার সঙ্গে মিশে থাকতেন তার না থাকার শূন্যতাকে মানতেই পারছেন না রুবেল। স্কয়ার হাসপাতালে অনবরত কান্না করেই যাচ্ছেন তিনি। কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমি বুঝতেই পারছি না নিজেকে কীভাবে শান্ত রাখবো। উনি আমার অভিবাবক, উনি আমার বাবার মতো ছিলেন। কতো মানুষ স্বপ্ন দেখেছে আইয়ুব বাচ্চুকে এক নজর দেখবে বলে। আর তিনি আমাকে তার সঙ্গী করে নিয়েছিলেন। কত আদর, স্নেহ দিয়েছেন তিনি আমাকে। সেই তিনি আমার কোলেই ঢলে পড়লেন।
রুবেল আরও বলেন, ‘বাচ্চু ভাই রংপুরে শো করেছেন ১৬ তারিখ। তখন থেকেই বলছিলেন শরীরটা ভালো লাগছে না। তবে এমন খারাপ কিছু সেটা হয়তো তিনিও আন্দাজ করেননি। আজ সকালে হঠাৎ আমাকে ডাকলেন। বললেন শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। হাসপাতালে যাওয়া দরকার। বলতে বলতেই দেখি পড়ে যাচ্ছেন তিনি। ধরতে গেলাম আমার কোলে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরলেন। চুপচাপ। মুখে ফেনা বের হচ্ছিলো। তারপর ধরে ভাইকে নিয়ে হাসপাতাল আসি। ডাক্তাররা বলছেন, বাচ্চু ভাই বাসাতেই মারা গেছিলেন।’
প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রুবেলের কান্না আকাশ ভারী করছিলো। তাকে সান্তনা দেয়া যায় না, সান্তনা দেয়ার নেইও কেউ। আইয়ুব বাচ্চুকে হারানো শোক উপস্থিত সবাইকে পাথর করে রেখেছে।
ডা. মির্জা নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ড্রাইভার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থাতেই পাই।’ পরে ৯ টা ৫৫ মিনিটে তাকে আমরা মৃত ঘোষণা করি।
স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন ১০টা ৫৫ মিনিটে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে জানান। গুণী এই শিল্পীর মৃত্যু খবরে শোকের ছায়া নেমেছে সঙ্গীতাঙ্গনে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘এলআরবি’র দলনেতা ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। ষাটের দশকে চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। ব্যান্ড সঙ্গীতের জনপ্রিয় এই শিল্পী তার বর্ণাঢ্য সংগীত জীবনে সুরের মায়াবী জাদুতে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

‘সেই তিনি আমার কোলেই ঢলে পড়লেন’

প্রকাশের সময় : ০৫:১১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

হককথা ডেস্ক: ‘বুঝতেই পারলাম না এভাবে চলে যাবেন বাচ্চু ভাই।’ কথাটা যিনি বললেন তার নাম রুবেল। আইয়ুব বাচ্চুর সহকারী তিনি। অনবরত কেঁদে চলেছেন। তার কান্না যেন থামার নয়। তার হাতেই যে বাচ্চু ভাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। যারা আইয়ুব বাচ্চুকে চেনেন তারা রুবেলকেও চেনেন। গেল ৮ বছর ধরে বাচ্চুর ছায়াসঙ্গী তিনি। যেখানে গিয়েছেন, সবখানেই ছায়ার মতো দেখা যেত াংবেলকে। তার হাতেই থাকতো বাচ্চুর সারাদিনের কর্মসূচি।
সকাল থেকে রাত, যার সঙ্গে মিশে থাকতেন তার না থাকার শূন্যতাকে মানতেই পারছেন না রুবেল। স্কয়ার হাসপাতালে অনবরত কান্না করেই যাচ্ছেন তিনি। কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমি বুঝতেই পারছি না নিজেকে কীভাবে শান্ত রাখবো। উনি আমার অভিবাবক, উনি আমার বাবার মতো ছিলেন। কতো মানুষ স্বপ্ন দেখেছে আইয়ুব বাচ্চুকে এক নজর দেখবে বলে। আর তিনি আমাকে তার সঙ্গী করে নিয়েছিলেন। কত আদর, স্নেহ দিয়েছেন তিনি আমাকে। সেই তিনি আমার কোলেই ঢলে পড়লেন।
রুবেল আরও বলেন, ‘বাচ্চু ভাই রংপুরে শো করেছেন ১৬ তারিখ। তখন থেকেই বলছিলেন শরীরটা ভালো লাগছে না। তবে এমন খারাপ কিছু সেটা হয়তো তিনিও আন্দাজ করেননি। আজ সকালে হঠাৎ আমাকে ডাকলেন। বললেন শরীরটা খুব খারাপ লাগছে। হাসপাতালে যাওয়া দরকার। বলতে বলতেই দেখি পড়ে যাচ্ছেন তিনি। ধরতে গেলাম আমার কোলে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরলেন। চুপচাপ। মুখে ফেনা বের হচ্ছিলো। তারপর ধরে ভাইকে নিয়ে হাসপাতাল আসি। ডাক্তাররা বলছেন, বাচ্চু ভাই বাসাতেই মারা গেছিলেন।’
প্রিয় মানুষটিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ রুবেলের কান্না আকাশ ভারী করছিলো। তাকে সান্তনা দেয়া যায় না, সান্তনা দেয়ার নেইও কেউ। আইয়ুব বাচ্চুকে হারানো শোক উপস্থিত সবাইকে পাথর করে রেখেছে।
ডা. মির্জা নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ড্রাইভার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা তাকে মৃত অবস্থাতেই পাই।’ পরে ৯ টা ৫৫ মিনিটে তাকে আমরা মৃত ঘোষণা করি।
স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন ১০টা ৫৫ মিনিটে আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে জানান। গুণী এই শিল্পীর মৃত্যু খবরে শোকের ছায়া নেমেছে সঙ্গীতাঙ্গনে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘এলআরবি’র দলনেতা ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। ষাটের দশকে চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। ব্যান্ড সঙ্গীতের জনপ্রিয় এই শিল্পী তার বর্ণাঢ্য সংগীত জীবনে সুরের মায়াবী জাদুতে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে।