নিউইয়র্ক ০৫:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনা : উত্তর আমেরিকায় পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৪১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৮
  • / ১০১৬ বার পঠিত

বিশেষ প্রতিনিধি: যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা আর উৎসবমুখর পরিবেশে প্রিয় বাংলাদেশ, প্রবাস সহ বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সহ উত্তর আমেরিকায় পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে। উত্তর আমেরিকায় মূলত: ২১ আগস্ট মঙ্গলবার ঈদুল আযহা পালিত হলেও কোথাও কোথাও ২২ আগষ্ট বুধবারও ঈদ পালিত হয়েছে। এদিকে, লোকাল ও গ্লোবাল মুনসাইটিং মতাদর্শের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে লোকাল মুনসাইটিং মতাদর্শের অনুসারীরা পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করে ২২ আগস্ট বুধবার। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব পালন উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত মুসলমানগণ এদিন স্বপরিবারে নিকটস্থ মসজিদ ও খোলা মাঠে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঈদ জামাতে যেতে পারায় প্রবাসীদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলসমূহে ঈদের দিন ছুটি থাকলেও সেটি কাজে লাগলো না এবার ‘সামার ভেকেশান’-এ ঈদ হওয়ায়। সর্বত্রই শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চমৎকার আবহাওয়া থাকায় নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় অনেক খোলা মাঠে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এবার অধিকাংশ ঈদ জামায়াত সকাল ৮ থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ জামাতগুলোতে নামে প্রবাসীদের ঢল। মুসল্লীদের মুখে মুখে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাললাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মসজিদ আর ঈদগাহ প্রাঙ্গণ।
নিউইয়র্কে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কুইন্সে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর আয়োজনে। স্থানীয় থমাস হাই স্কুল খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত এ ঈদ জামায়াতে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লী অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানান। অন্যান্য বৃহৎ জামাতগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদ, জ্যাকসন হাইটসে নিউইয়র্ক ঈদ গাঁহ, ওজোনপার্কে মসজিদ আল আমান, এস্টোরিয়ায় আল আমিন মসজিদ, ব্রুকলীনে বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার ও বায়তুল জান্নাহ মসজিদের ব্যবস্থাপনায়।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি): নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের পরিচালনায় অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর উদ্যোগে স্থানীয় জ্যামাইকার থমাস হাই স্কুলে মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লী একত্রে ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এই জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন হাফিজ মোজাহিদুল ইসলাম। জেএমসি আয়োজিত ঈদুল আযহার নামাজের আগে নিউইয়র্কের লেফটেন্ট গভর্ণর ক্যাথি হোকুল, নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেটর টনি এভেলা, ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন, সাবেক নিউইয়র্ক সিটি কম্প্রট্রোলার জন ল্যু, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কাটস, সিটি কাউন্সিলম্যান কষ্টা ডি কনস্ট্যান্টিনিডিস ও ডেনিক মিলার সহ মূলধারার রাজনীতিক ও জেএমসি পরিছালনা কমিটির সভাপতি খাজা মিজান হাসান প্রমুখ উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এই পর্ব পরিচালনা করেন জেএমসি’র সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
মসজিদ মিশন মসজিদ: জ্যামাইকার বাংলাদেশ মিশন (হাজী ক্যাম্প) মসজিদে গত ২১ আগষ্ট জামাইকা মসজিদ মিশন সেন্টারে বরাবরের মত ৪টি ঈদুল আজহার জামাত আনুষ্ঠত হয়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওললানা রফিকুল ইসলাম। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের ২য় জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা মানজুরুল করিম। সকাল ৮:৪৫মিনিটের ৩য় জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা ফয়সল নেওয়াজ এবং সকাল ১০টার ৪র্থ জামাতের ইমামতি করেন হাফেজ তানভির।
দারুস সালাম মসজিদ: জ্যামাইকা দারুস সালাম মসজিদের উদ্যোগে ঈদের ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদের ভিতরে। প্রথম জামাত সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ জামাত সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত ছাড়া সকল জামাতেই মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়।
রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টার: জ্যামাইকাস্থ রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ৪৮ স্কুলের খেলার মাঠে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের ১টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল।
মদিনা মসজিদ: ম্যানহাটানের মদিনা মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ সংলগ্ন ওজোন রোড পার্কে।
নিউইয়র্ক ঈদগাহ: নিউইয়র্ক ঈদগাহের উদ্যোগে ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায়। সকাল ৭টায়, ৮টায়, ৯টায়, ১০টায় এবং সকাল ১১টায় ঈদের জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ঈদ জামাতে নিউইয়র্ক ঈদগাহর প্রতিষ্ঠাতা ইমাম কাজী কায়্যূম সহ অন্যন্যরা পর্যায়ক্রমে ইমামতি করেন। মূলধারার রাজনীতিকরা মুসলমানদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে নিউইয়র্ক ঈদগায় এসে হাজির হন। বিপুল সংখ্যক পুরুষ, মহিলা ও ছোট্টমনিদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত।
জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টার: বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টারের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় ৭৩ স্ট্রিট ও রোজভেল্ট এবং ৪১ এভিনিউর মধ্যে সকাল ৮টা ৩০মিনিটে।
মসজিদ আবু হুরায়রা: জ্যাকসন হাইটসের মসজিদ আবু হুরায়রা’র উদ্যোগে সকাল ৯ টায় জ্যাকসন হাইটসের ৭৯ স্ট্রিট (বিটুইন নর্দান বুলেভার্ড ও ৩৪ এভিনিউ)-এর রোরি স্ট্যাংটোন ফিল্ডে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা ছাড়াও শিশুদের জন্য ছিল বিশেষ ঈদ উপহার সামগ্রী।
আহলুল বাইত মিশন: উডসাইডস্থ আহলুল বাইত মিশনের উদ্যোগে ৫৪-২৫ রুজভেল্ট এভিনিউর খোলা মাঠে ঈদ উল আযহার জামাত সকাল ৮:৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ নামাজে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন প্রধান ঈমাম মুফতি সাঈদ আনসারুল করিম আল আহাজারি।
ইস্ট এলমহাস্ট জামে মসজিদ এন্ড মুসলিম সেন্টার: ইস্ট এলমহাস্ট জামে মসজিদ এন্ড মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ১২৭ স্কুলের খেলার মাঠে ঈদুল আজহার বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়।
বাংলাবাজার জামে মসজিদ: নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় মসজিদের নিকটবর্তী খোলা মাঠে (আইএস ১০৬ প্লে গ্রাউন্ড) বিশাল জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এই জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম ইয়াহইয়া। নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন সিংগেরকাচ আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এ কে এম আবদুন নুর। জামাতের আগে বাংলাবাজার জামে মসজিদ ও স্টারলিং বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিন মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, সকলের সহযোগিতায় মসজিদটি ব্যাংক ঋৃণ মুক্ত হয়েছে। কিন্তু কর্জে হাসানা মুক্ত তথা সম্পূর্ণ ঋৃণমুক্ত করতে বর্তমানে আরো ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদটিকে সম্পূর্ণ ঋৃণ মুক্ত করতে সবার সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন। আলহাজ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বর্তমানে এ মসজিদে জুমার নামাজে দু’টি পৃথক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তার পরও স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লীদের বাইরে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। ক্রমবর্ধমান মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদটিকে আরো বৃহৎ পরিসরে গড়ে তোলার জরুরী হয়ে পড়েছে। এজন্য সকলের আর্থিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। ঈদের নামাজ শেষে নিরব রেস্টুরেন্ট এবং খলিল বিরিয়ানী হাউজের পক্ষ থেকে ঈদের সেমাই ও দই এবং মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মুসল্লীদের মাঝে পানি বিতরণ করা হয়।
নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ: নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৯টায় ব্রঙ্কসের ওভাল পার্কে বিশাল জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের খতীব মাওলানা মাসহুদ ইকবাল জামাতে ইমামতি করেন।
পার্কচেস্টার জামে মসজিদ: ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদের উদ্যোগে ঈদের দুটো জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ ও সংলগ্ন রাস্তায় সকাল ৮টা এবং সকাল ৯টা টায়। দ্বিতীয় জামাতে মসজিদের তৃতীয় তলায় মহিলারা নামাজ আদায় করেন। ১ম জামাতে ইমামতি খুৎবা পাঠ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।
আল আমিন মসজিদ: এস্টোরিয়ার আল আমিন মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ সংলগ্ন ৩৬ স্ট্রিট ও ৩৬ এভিনিউতে।
এস্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদ: এস্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় ৩১ স্ট্রিটের ডিটমার্স এবং ২১ এভিনিউর মধ্যে।
ব্রুকলীন বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে এবং সকাল ৯টায় ঈদের দুটো জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও কুইন্সের জ্যামাইকার আল আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে স্থানীয় সুসান বি এন্থনী স্কুল মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদ, হিলসাইড ইসলামিক সেন্টার, ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদ, মসজিদ আবু হুরায়রা, মোহাম্মদী সেন্টার, ওজনপার্কের আল আমান জামে মসজিদ, দারুস সুন্নাহ জামে মসজিদ, আল ফোরকান জামে মসজিদ, ব্রুকলীনের বাংলাদেশ মসুলিম সেন্টার, বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ, আসসাফা মসজিদ, আমেরিকান মুসলিম সেন্টার, গাউছিয়া মসজিদ, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টার, ব্রঙ্কস মুসলিম সেন্টার প্রভৃতি মসজিদের উদ্যোগে ঈদুল আযহার একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নিউইয়র্কে আরো বেশ ক’টি ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন মসজিদে।
এদিকে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোরিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, এরিজোনাসহ প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা এলাকার মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার ও খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ঈদের দিন সকাল বেলায় মুসলিম পরিবারের সদস্যরা নানা রঙের পাজামা পাঞ্জাবি, শাড়ী, সালওয়ার কামিজ পরে নিকটস্থ মসজিদ কিংবা খোলা মাঠে হাজির হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। প্রায় ২৭ শতাধিক মসজিদ ছাড়াও খোলা মাঠ, কমিউনিটি সেন্টারে এবং বিলাসবহুল হোটেলের বলরুমে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ পোষাক পরিধান করে একত্রে বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর ঈদের নামাজ আদায়ের বিষয়টি ভীন দেশীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। ঈদের জামায়াত গুলোতে স্থানীয় রাজনীতিক, সমাজসেবী, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ প্রবাসের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
ঈদের নামাজে কমিউনিটি, দেশ, জাতি ও বিশ্ব মানবতার কল্যাণ সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া মুনাজাত করা হয়। পরে একে অন্যের সাথে আলিঙ্গনের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় তৈরী হয় ভিন্ন এক আমেজ।
নামাজ শেষে কেউ কেউ চলে যান কোরবানির পশু জবাই করতে খামারে বা হালাল স্লটার হাউজে। অনেকে আবার ঈদের নামাজ আদায় করেই চলে যান কাজে। অধিকাংশ প্রবাসী অবশ্য আগে থেকেই স্থানীয় গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্টে কোরবানীর অর্ডার দিয়ে রাখেন। সুবিধামত সময়ে গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্ট থেকে প্রবাসীরা তাদের পশু কোরবানীর মাংস নিয়ে যান। তবে গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্ট অধিকাংশ কোরবানীর মাংস সরবরাহ করে ঈদের পরদিন। প্রবাসীরা গরু ও খাশী কুরবানি দেন। কিন্তু দেশের মতো পশু কিনে নিজ বাড়িতে নিয়ে কোরবানি করার সুযোগ না থাকায় উৎসবের ঘাটতির কথা জানালেন কেউ কেউ। তারা জানালেন, দেশের মতো ঈদের আনন্দ পাওয়া যায় না প্রবাসে। অনেকে আবার সুন্দর পরিবেশে পবিত্র ঈদ উল আযহার নামাজ আদায় করতে পেরে ভীষণ খুশী। বললেন, অনেকটা দেশের মতই লাগছে।
তবে দেশে থাকা মা-বাবা, পরিবারকে খুব করে মনে পড়ার কথা জানালেন তারা। ঈদের নামাজ শেষে ঘরে ফিরেই ফোনে বাংলাদেশে স্বজনদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির ব্যবস্থাপনা এবং সিটি প্রশাসনের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল উল্লেখ করার মত। প্রায় প্রতিটি জামাতের আশপাশেই ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশেষ পুলিশি টহলও লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের নামাজ আদায়ের স্থানগুলোর আশপাশের রাস্তায় ফ্রি গাড়ী পার্কিং থাকায় দূর দূরান্ত থেকে নির্বিঘেœ বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লী সপরিবারে ঈদের নামাজে শরীক হন।
অপরদিকে এবছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ প্রবাসী স্বজনের সাথে ঈদ করার জন্যে বাংলাদেশে গেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তাদের প্রায় সকলেই ঈদুল আযহার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরবেন জানা গেছে। নিউইয়র্কের স্কুলগুলোতে এখনো সামার ভ্যাগেশন চলছে। আসছে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে স্কুলগুলো খুলবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনা : উত্তর আমেরিকায় পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত

প্রকাশের সময় : ০২:৪১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অগাস্ট ২০১৮

বিশেষ প্রতিনিধি: যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা আর উৎসবমুখর পরিবেশে প্রিয় বাংলাদেশ, প্রবাস সহ বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সহ উত্তর আমেরিকায় পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে। উত্তর আমেরিকায় মূলত: ২১ আগস্ট মঙ্গলবার ঈদুল আযহা পালিত হলেও কোথাও কোথাও ২২ আগষ্ট বুধবারও ঈদ পালিত হয়েছে। এদিকে, লোকাল ও গ্লোবাল মুনসাইটিং মতাদর্শের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে লোকাল মুনসাইটিং মতাদর্শের অনুসারীরা পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করে ২২ আগস্ট বুধবার। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব পালন উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত মুসলমানগণ এদিন স্বপরিবারে নিকটস্থ মসজিদ ও খোলা মাঠে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঈদ জামাতে যেতে পারায় প্রবাসীদের মধ্যে বাড়তি উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলসমূহে ঈদের দিন ছুটি থাকলেও সেটি কাজে লাগলো না এবার ‘সামার ভেকেশান’-এ ঈদ হওয়ায়। সর্বত্রই শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চমৎকার আবহাওয়া থাকায় নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় অনেক খোলা মাঠে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এবার অধিকাংশ ঈদ জামায়াত সকাল ৮ থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ জামাতগুলোতে নামে প্রবাসীদের ঢল। মুসল্লীদের মুখে মুখে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাললাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মসজিদ আর ঈদগাহ প্রাঙ্গণ।
নিউইয়র্কে ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কুইন্সে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর আয়োজনে। স্থানীয় থমাস হাই স্কুল খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত এ ঈদ জামায়াতে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লী অংশ নেন বলে আয়োজকরা জানান। অন্যান্য বৃহৎ জামাতগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদ, জ্যাকসন হাইটসে নিউইয়র্ক ঈদ গাঁহ, ওজোনপার্কে মসজিদ আল আমান, এস্টোরিয়ায় আল আমিন মসজিদ, ব্রুকলীনে বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার ও বায়তুল জান্নাহ মসজিদের ব্যবস্থাপনায়।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি): নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের পরিচালনায় অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর উদ্যোগে স্থানীয় জ্যামাইকার থমাস হাই স্কুলে মাঠে সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লী একত্রে ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এই জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন হাফিজ মোজাহিদুল ইসলাম। জেএমসি আয়োজিত ঈদুল আযহার নামাজের আগে নিউইয়র্কের লেফটেন্ট গভর্ণর ক্যাথি হোকুল, নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেটর টনি এভেলা, ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন, সাবেক নিউইয়র্ক সিটি কম্প্রট্রোলার জন ল্যু, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মেলিন্ডা কাটস, সিটি কাউন্সিলম্যান কষ্টা ডি কনস্ট্যান্টিনিডিস ও ডেনিক মিলার সহ মূলধারার রাজনীতিক ও জেএমসি পরিছালনা কমিটির সভাপতি খাজা মিজান হাসান প্রমুখ উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এই পর্ব পরিচালনা করেন জেএমসি’র সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
মসজিদ মিশন মসজিদ: জ্যামাইকার বাংলাদেশ মিশন (হাজী ক্যাম্প) মসজিদে গত ২১ আগষ্ট জামাইকা মসজিদ মিশন সেন্টারে বরাবরের মত ৪টি ঈদুল আজহার জামাত আনুষ্ঠত হয়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওললানা রফিকুল ইসলাম। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের ২য় জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা মানজুরুল করিম। সকাল ৮:৪৫মিনিটের ৩য় জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা ফয়সল নেওয়াজ এবং সকাল ১০টার ৪র্থ জামাতের ইমামতি করেন হাফেজ তানভির।
দারুস সালাম মসজিদ: জ্যামাইকা দারুস সালাম মসজিদের উদ্যোগে ঈদের ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদের ভিতরে। প্রথম জামাত সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ জামাত সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাত ছাড়া সকল জামাতেই মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা হয়।
রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টার: জ্যামাইকাস্থ রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ৪৮ স্কুলের খেলার মাঠে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের ১টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল।
মদিনা মসজিদ: ম্যানহাটানের মদিনা মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ সংলগ্ন ওজোন রোড পার্কে।
নিউইয়র্ক ঈদগাহ: নিউইয়র্ক ঈদগাহের উদ্যোগে ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায়। সকাল ৭টায়, ৮টায়, ৯টায়, ১০টায় এবং সকাল ১১টায় ঈদের জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এখানে ঈদ জামাতে নিউইয়র্ক ঈদগাহর প্রতিষ্ঠাতা ইমাম কাজী কায়্যূম সহ অন্যন্যরা পর্যায়ক্রমে ইমামতি করেন। মূলধারার রাজনীতিকরা মুসলমানদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে নিউইয়র্ক ঈদগায় এসে হাজির হন। বিপুল সংখ্যক পুরুষ, মহিলা ও ছোট্টমনিদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত।
জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টার: বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টারের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় ৭৩ স্ট্রিট ও রোজভেল্ট এবং ৪১ এভিনিউর মধ্যে সকাল ৮টা ৩০মিনিটে।
মসজিদ আবু হুরায়রা: জ্যাকসন হাইটসের মসজিদ আবু হুরায়রা’র উদ্যোগে সকাল ৯ টায় জ্যাকসন হাইটসের ৭৯ স্ট্রিট (বিটুইন নর্দান বুলেভার্ড ও ৩৪ এভিনিউ)-এর রোরি স্ট্যাংটোন ফিল্ডে ঈদের বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা ছাড়াও শিশুদের জন্য ছিল বিশেষ ঈদ উপহার সামগ্রী।
আহলুল বাইত মিশন: উডসাইডস্থ আহলুল বাইত মিশনের উদ্যোগে ৫৪-২৫ রুজভেল্ট এভিনিউর খোলা মাঠে ঈদ উল আযহার জামাত সকাল ৮:৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। ঈদ নামাজে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন প্রধান ঈমাম মুফতি সাঈদ আনসারুল করিম আল আহাজারি।
ইস্ট এলমহাস্ট জামে মসজিদ এন্ড মুসলিম সেন্টার: ইস্ট এলমহাস্ট জামে মসজিদ এন্ড মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে পিএস ১২৭ স্কুলের খেলার মাঠে ঈদুল আজহার বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়।
বাংলাবাজার জামে মসজিদ: নিউইয়র্কে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার জামে মসজিদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় মসজিদের নিকটবর্তী খোলা মাঠে (আইএস ১০৬ প্লে গ্রাউন্ড) বিশাল জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এই জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম ইয়াহইয়া। নামাজ শেষে বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন সিংগেরকাচ আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এ কে এম আবদুন নুর। জামাতের আগে বাংলাবাজার জামে মসজিদ ও স্টারলিং বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলহাজ গিয়াস উদ্দিন মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, সকলের সহযোগিতায় মসজিদটি ব্যাংক ঋৃণ মুক্ত হয়েছে। কিন্তু কর্জে হাসানা মুক্ত তথা সম্পূর্ণ ঋৃণমুক্ত করতে বর্তমানে আরো ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদটিকে সম্পূর্ণ ঋৃণ মুক্ত করতে সবার সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন। আলহাজ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বর্তমানে এ মসজিদে জুমার নামাজে দু’টি পৃথক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তার পরও স্থান সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লীদের বাইরে জুমার নামাজ আদায় করতে হয়। ক্রমবর্ধমান মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদটিকে আরো বৃহৎ পরিসরে গড়ে তোলার জরুরী হয়ে পড়েছে। এজন্য সকলের আর্থিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। ঈদের নামাজ শেষে নিরব রেস্টুরেন্ট এবং খলিল বিরিয়ানী হাউজের পক্ষ থেকে ঈদের সেমাই ও দই এবং মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মুসল্লীদের মাঝে পানি বিতরণ করা হয়।
নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ: নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৯টায় ব্রঙ্কসের ওভাল পার্কে বিশাল জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের খতীব মাওলানা মাসহুদ ইকবাল জামাতে ইমামতি করেন।
পার্কচেস্টার জামে মসজিদ: ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদের উদ্যোগে ঈদের দুটো জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ ও সংলগ্ন রাস্তায় সকাল ৮টা এবং সকাল ৯টা টায়। দ্বিতীয় জামাতে মসজিদের তৃতীয় তলায় মহিলারা নামাজ আদায় করেন। ১ম জামাতে ইমামতি খুৎবা পাঠ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।
আল আমিন মসজিদ: এস্টোরিয়ার আল আমিন মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদ সংলগ্ন ৩৬ স্ট্রিট ও ৩৬ এভিনিউতে।
এস্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদ: এস্টোরিয়া ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদের উদ্যোগে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় ৩১ স্ট্রিটের ডিটমার্স এবং ২১ এভিনিউর মধ্যে।
ব্রুকলীন বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে এবং সকাল ৯টায় ঈদের দুটো জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও কুইন্সের জ্যামাইকার আল আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে স্থানীয় সুসান বি এন্থনী স্কুল মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদ, হিলসাইড ইসলামিক সেন্টার, ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদ, মসজিদ আবু হুরায়রা, মোহাম্মদী সেন্টার, ওজনপার্কের আল আমান জামে মসজিদ, দারুস সুন্নাহ জামে মসজিদ, আল ফোরকান জামে মসজিদ, ব্রুকলীনের বাংলাদেশ মসুলিম সেন্টার, বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ, আসসাফা মসজিদ, আমেরিকান মুসলিম সেন্টার, গাউছিয়া মসজিদ, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার ইসলামিক সেন্টার, ব্রঙ্কস মুসলিম সেন্টার প্রভৃতি মসজিদের উদ্যোগে ঈদুল আযহার একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া নিউইয়র্কে আরো বেশ ক’টি ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন মসজিদে।
এদিকে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোরিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, এরিজোনাসহ প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা এলাকার মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার ও খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
ঈদের দিন সকাল বেলায় মুসলিম পরিবারের সদস্যরা নানা রঙের পাজামা পাঞ্জাবি, শাড়ী, সালওয়ার কামিজ পরে নিকটস্থ মসজিদ কিংবা খোলা মাঠে হাজির হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। প্রায় ২৭ শতাধিক মসজিদ ছাড়াও খোলা মাঠ, কমিউনিটি সেন্টারে এবং বিলাসবহুল হোটেলের বলরুমে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ পোষাক পরিধান করে একত্রে বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর ঈদের নামাজ আদায়ের বিষয়টি ভীন দেশীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। ঈদের জামায়াত গুলোতে স্থানীয় রাজনীতিক, সমাজসেবী, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ প্রবাসের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
ঈদের নামাজে কমিউনিটি, দেশ, জাতি ও বিশ্ব মানবতার কল্যাণ সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া মুনাজাত করা হয়। পরে একে অন্যের সাথে আলিঙ্গনের মাধ্যমে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় তৈরী হয় ভিন্ন এক আমেজ।
নামাজ শেষে কেউ কেউ চলে যান কোরবানির পশু জবাই করতে খামারে বা হালাল স্লটার হাউজে। অনেকে আবার ঈদের নামাজ আদায় করেই চলে যান কাজে। অধিকাংশ প্রবাসী অবশ্য আগে থেকেই স্থানীয় গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্টে কোরবানীর অর্ডার দিয়ে রাখেন। সুবিধামত সময়ে গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্ট থেকে প্রবাসীরা তাদের পশু কোরবানীর মাংস নিয়ে যান। তবে গ্রোসারী ও রেষ্টুরেন্ট অধিকাংশ কোরবানীর মাংস সরবরাহ করে ঈদের পরদিন। প্রবাসীরা গরু ও খাশী কুরবানি দেন। কিন্তু দেশের মতো পশু কিনে নিজ বাড়িতে নিয়ে কোরবানি করার সুযোগ না থাকায় উৎসবের ঘাটতির কথা জানালেন কেউ কেউ। তারা জানালেন, দেশের মতো ঈদের আনন্দ পাওয়া যায় না প্রবাসে। অনেকে আবার সুন্দর পরিবেশে পবিত্র ঈদ উল আযহার নামাজ আদায় করতে পেরে ভীষণ খুশী। বললেন, অনেকটা দেশের মতই লাগছে।
তবে দেশে থাকা মা-বাবা, পরিবারকে খুব করে মনে পড়ার কথা জানালেন তারা। ঈদের নামাজ শেষে ঘরে ফিরেই ফোনে বাংলাদেশে স্বজনদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির ব্যবস্থাপনা এবং সিটি প্রশাসনের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল উল্লেখ করার মত। প্রায় প্রতিটি জামাতের আশপাশেই ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিশেষ পুলিশি টহলও লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের নামাজ আদায়ের স্থানগুলোর আশপাশের রাস্তায় ফ্রি গাড়ী পার্কিং থাকায় দূর দূরান্ত থেকে নির্বিঘেœ বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লী সপরিবারে ঈদের নামাজে শরীক হন।
অপরদিকে এবছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ প্রবাসী স্বজনের সাথে ঈদ করার জন্যে বাংলাদেশে গেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তাদের প্রায় সকলেই ঈদুল আযহার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরবেন জানা গেছে। নিউইয়র্কের স্কুলগুলোতে এখনো সামার ভ্যাগেশন চলছে। আসছে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে স্কুলগুলো খুলবে।