বাংলাদেশে ‘সড়ক-হত্যা’য় যুক্তদের দ্রুত বিচার ও ফাঁসি দাবী
- প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ অগাস্ট ২০১৮
- / ৫৭৯ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশে সড়ক-হত্যায় যুক্ত খুনি ড্রাইভারদের দ্রুত বিচার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবী নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে। সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত সমাবেশটি গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা সড়কে এসব মৃতের মিছিলকে হত্যাকান্ড হিসেবে বিচার করার দাবী জানান।
নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের পদত্যাগ দাবী করা এই সমাবেশের সভাপত্বি করেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ। সাংবাদিক ও নাট্যকার তোফাজ্জল লিটনের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট মুজাহিদ আনসারী, ঢাকার গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি, সম্মিলিত সংস্কৃতি জোট উত্তর আমেরিকার আহ্বায়ক মিথুন আহমেদ এবং নিউইয়র্ক গণজাগরন মঞ্চের অন্যতম সংগঠক গোপাল স্যান্ন্যাল।
সমাবেশে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্রে যে অরাজকতা এবং দুর্নীতি চলছে তা সরকারকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যেনো গাড়ি চালাতে না পারে এবং ফিটনেস ছাড়া যেনো কোনো গাড়ি রাস্তায় না নামতে পারে সে ই ব্যাপারেও সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
মুজাহিদ আনসারি বলেন, জনগণের করের টাকায় বেতনভুক্ত পুলিশ বাহিনী কোনো সময় এই সরকারের পক্ষে থাকতে পারবে না। তারা যে সরকার আসবে সেই সরকারের কাজ করবে, তাই বর্তমান সরকারকে ভাবতে হবে সেই পুলিশকে দিয়ে এই সকল কোমলমতি শিশু-কিশোরদের রক্তাক্ত করা ঠিক হচ্ছে কী না? এসকল প্রতিবাদী সন্তানরা শহীদ সালাম, বরকত এবং জব্বারের উত্তরসূরী। তারা প্রতিবাদ করতে শিখেছে বঙ্গবন্ধু’র থেকে। তাদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত না করে এ সবল হত্যার দ্রুত বিচার করতে হবে।
সৈয়দ জাকির আহমেদ রনি বলেন, বাংলাদেশের সড়কে বাসগুলো ব্যপক প্রতিযোগিতার কারণেই এসব হত্যার হার বেড়ে চলেছে। সড়ক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে। এর কারণ তারা মুনাফার লোভে কোনো আইন-কানুন তোয়াক্কা করছে না। আবার যে সকল দূর্ঘটনা ঘটছে তার বিচার হচ্ছে না। তার সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার অন্যতম কারণ পরিবহন শ্রমিকদের নেতা নৌ মন্ত্রী শাহজাহান খান সব সময় তাদের পক্ষ অবলম্বন করে কথা বলেন এবং সারা দেশে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন। সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে এই লোকটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মিথুন আহমেদ বলেন, যে সকল হত্যাকান্ড হয়েছে সরকার একটি ট্রান্সকম গঠন করে তার বিচার করতে হবে। ৩জন শিশু-কিশোর হত্যা এবং তাদের বিচার চাইতে না দেওয়ার বিষয়টি খুব অমানবিক। আমাদের সব বিষয়ের শেষ আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা আশা করবো শেখ হাসিনা এই বিষয়ে একটি ব্যবস্থা নেবেন।
গোপাল স্যান্নাল বলেন, দেশের প্রতিটি ঘরে যখন একজন করে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাবেন তখন কী সরকারের টনক নড়বে? সরকার কোনো আন্দোলন হলেই তাকে দেশ বিরোধী রাজাকার এবং অন্য অনেক কিছু দিয়ে কোনঠাসা করার অপপ্রসায় চালায়। এসব কোমলমতি সন্তানদের যেনো কোনো কিছু দিয়ে অপবাদ দেওয়া না হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানী ঢাকার হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও নয়জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।