নিউইয়র্ক ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী আর পুত্র-কন্যা সহ রিয়াজ পরিবারে আহাজারী ॥ বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় হাজিরার নির্দেশ : আরেক বাংলাদেশী ডিপোর্টের মুখোমুখী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৭
  • / ১১১৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রাশাসনের অভিবাসন নীতির ‘কড়াকড়ির’র শিকার হয়ে ডিপোর্টের মুখোমুখী হয়েছেন আরেক বাংলাদেশী রিয়াজ তালুকদার। গেলো মাসে পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাংলাদেশী ‘বাবলু শরিফ’ ডিাপোর্ট হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার ডিপোর্টেশনের খড়গ পড়েছে নিউইয়কের কুইন্সে বসবাসকারী বাংলাদেশী ‘রিয়াজ তালুকদার’ পরিবারে। জ্যামাইকার সাটফিন এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ তালুকদারকে ২০ নভেম্বর সোমবার পাসপোর্ট ও বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে ইউএসএ ইমিগ্রেশন ও কাস্টম বিভাগ। এদিকে দীর্ঘ ২৫ বছর অপরদিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রী রেখে মেধাবী দু’সন্তানের জনক ‘রিয়াজ তালুকদার’র দেশত্যাগে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অবিলম্বে এ বিষয়ে কমিউনিটিকে সিটি ও রাজ্য প্রশাসনের সংশ্লিস্ট আইনি বিভাগের সাথে পরামর্শ নেয়াও দাবি উঠেছে।
গেল মাসে পিতাকে হারানোর বেদনায় এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন  বাবুলের আদরের সন্তান সামিহা-সিমরান নামের এই দুই তরুণী। দীর্ঘ ২৫ বছরেও স্বপ্নের সোনার হরিণ ছুঁতে নানা পারার ব্যর্থতায় সবশেষ পরিণতি ছিল দেশত্যাগ। আমেরিকা জন্মগ্রহণকারী দু’কন্যার জনক ‘বাবলু শরিফ’ নব্বই দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের কালো ‘মেঘের ছায়া’ এবার নেমে এসেছে ‘রিয়াজ তালুকদার’ নামের এক বাংলাদেশী পরিবারে। যিনি নব্বই দশকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। দীর্ঘ পথচলায় নানা প্রতিকূলতাও মোকাবেলা করতে হয়েছে তাঁকে। হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনি আর অমিত সম্ভাবনা নিয়ে স্বপ্নের সোনার হরিণের দেশে নিজ হাতে গড়ে তুলিছিলেন একটি সুখের নীড়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস অবশেষে রিয়াজ তালুকদারকেও বরণ করতে হচ্ছে বাবুল শরীফের মতো ভাগ্য।
নিউইয়র্কের কুইন্সের বাসিন্দা তালুকদারকে আগামি ২০ নভেম্বর পার্সপোর্ট ও বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইস।   গ্রীণকার্ডের আসা প্রায় ত্রিশ বছর আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন ‘রিয়াজ তালুকদার’। এরই মধ্যে ১৫ বছরের ‘রাফি আর ১০ বছরের রাদি’ নামক মেধাবি দু’সন্তানের গর্বিত পিতা বনে গেছেন তিনি। জ্যামাইকার সাটপিন ব্লুবার্ডে বসবাসকারি রিয়াজ তালুকদারের স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত। ফলে, মেধাবি এ দু’সন্তারে ভবিষ্য’ নিয়েও এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেবল রিয়াজ তালুকদার কিংবা বাবুল শরীফই নন, নিউইয়র্কে এমন একডজেনর বেশী পরিবার এখন ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সন্তান ও সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত এসব পরিবারের সুরক্ষা কমিউনিটির ঐক্যের পাশাপাশি স্টেট ও সিটি প্রশাসন’সহ মূলধারার মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিও উঠেছে সর্বত্র।
কেবল দীর্ঘ সময়ে বসবাসকারীরাই নন; ডিপোর্টেশনের মুখে পড়ছেন নতুন আসা অনেকেই। ইমিগ্রেন্ট নির্ভর যুক্তরাষ্ট্রই এখন ইমিগ্রেশন বিরোধী নীতিতে, ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো বাংলাদেশীদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম হলেও, যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সীমান্তে আটক হয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ট্রাভেল ডক্যুমেন্ট হস্তান্তর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের বেলায় ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। চলতি বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইমিগ্রেশন বিষয়ক সিনেট সাব কমিটির এক তথ্যে উঠে এসেছে। যাতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের মাস ডিপোর্টেশন সহযোগিতা করছে না প্রায় ২৩টি দেশ। দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন, এরপর কিউবা, হাইতি, ব্রাজিল, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের মত রাষ্ট্র। এসব দেশগুলো তাদের নাগরিকদের গ্রহণে ট্রাম্প প্রশাসনকে অস্বীকৃতি জানায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রী আর পুত্র-কন্যা সহ রিয়াজ পরিবারে আহাজারী ॥ বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় হাজিরার নির্দেশ : আরেক বাংলাদেশী ডিপোর্টের মুখোমুখী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৭

নিউইয়র্ক: প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রাশাসনের অভিবাসন নীতির ‘কড়াকড়ির’র শিকার হয়ে ডিপোর্টের মুখোমুখী হয়েছেন আরেক বাংলাদেশী রিয়াজ তালুকদার। গেলো মাসে পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া বাংলাদেশী ‘বাবলু শরিফ’ ডিাপোর্ট হওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার ডিপোর্টেশনের খড়গ পড়েছে নিউইয়কের কুইন্সে বসবাসকারী বাংলাদেশী ‘রিয়াজ তালুকদার’ পরিবারে। জ্যামাইকার সাটফিন এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ তালুকদারকে ২০ নভেম্বর সোমবার পাসপোর্ট ও বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে ইউএসএ ইমিগ্রেশন ও কাস্টম বিভাগ। এদিকে দীর্ঘ ২৫ বছর অপরদিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রী রেখে মেধাবী দু’সন্তানের জনক ‘রিয়াজ তালুকদার’র দেশত্যাগে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রবাসের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অবিলম্বে এ বিষয়ে কমিউনিটিকে সিটি ও রাজ্য প্রশাসনের সংশ্লিস্ট আইনি বিভাগের সাথে পরামর্শ নেয়াও দাবি উঠেছে।
গেল মাসে পিতাকে হারানোর বেদনায় এভাবেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন  বাবুলের আদরের সন্তান সামিহা-সিমরান নামের এই দুই তরুণী। দীর্ঘ ২৫ বছরেও স্বপ্নের সোনার হরিণ ছুঁতে নানা পারার ব্যর্থতায় সবশেষ পরিণতি ছিল দেশত্যাগ। আমেরিকা জন্মগ্রহণকারী দু’কন্যার জনক ‘বাবলু শরিফ’ নব্বই দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের কালো ‘মেঘের ছায়া’ এবার নেমে এসেছে ‘রিয়াজ তালুকদার’ নামের এক বাংলাদেশী পরিবারে। যিনি নব্বই দশকের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। দীর্ঘ পথচলায় নানা প্রতিকূলতাও মোকাবেলা করতে হয়েছে তাঁকে। হাঁড়ভাঙ্গা খাটুনি আর অমিত সম্ভাবনা নিয়ে স্বপ্নের সোনার হরিণের দেশে নিজ হাতে গড়ে তুলিছিলেন একটি সুখের নীড়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস অবশেষে রিয়াজ তালুকদারকেও বরণ করতে হচ্ছে বাবুল শরীফের মতো ভাগ্য।
নিউইয়র্কের কুইন্সের বাসিন্দা তালুকদারকে আগামি ২০ নভেম্বর পার্সপোর্ট ও বিমানের টিকিট’সহ ফেডারেল প্লাজায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছে ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইস।   গ্রীণকার্ডের আসা প্রায় ত্রিশ বছর আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন ‘রিয়াজ তালুকদার’। এরই মধ্যে ১৫ বছরের ‘রাফি আর ১০ বছরের রাদি’ নামক মেধাবি দু’সন্তানের গর্বিত পিতা বনে গেছেন তিনি। জ্যামাইকার সাটপিন ব্লুবার্ডে বসবাসকারি রিয়াজ তালুকদারের স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত। ফলে, মেধাবি এ দু’সন্তারে ভবিষ্য’ নিয়েও এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেবল রিয়াজ তালুকদার কিংবা বাবুল শরীফই নন, নিউইয়র্কে এমন একডজেনর বেশী পরিবার এখন ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সন্তান ও সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত এসব পরিবারের সুরক্ষা কমিউনিটির ঐক্যের পাশাপাশি স্টেট ও সিটি প্রশাসন’সহ মূলধারার মাধ্যমে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবিও উঠেছে সর্বত্র।
কেবল দীর্ঘ সময়ে বসবাসকারীরাই নন; ডিপোর্টেশনের মুখে পড়ছেন নতুন আসা অনেকেই। ইমিগ্রেন্ট নির্ভর যুক্তরাষ্ট্রই এখন ইমিগ্রেশন বিরোধী নীতিতে, ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো বাংলাদেশীদের সংখ্যা আনুপাতিক হারে কম হলেও, যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সীমান্তে আটক হয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ট্রাভেল ডক্যুমেন্ট হস্তান্তর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের বেলায় ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। চলতি বছরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইমিগ্রেশন বিষয়ক সিনেট সাব কমিটির এক তথ্যে উঠে এসেছে। যাতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের মাস ডিপোর্টেশন সহযোগিতা করছে না প্রায় ২৩টি দেশ। দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন, এরপর কিউবা, হাইতি, ব্রাজিল, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের মত রাষ্ট্র। এসব দেশগুলো তাদের নাগরিকদের গ্রহণে ট্রাম্প প্রশাসনকে অস্বীকৃতি জানায়।