নিউইয়র্ক ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ অক্টোবর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭
  • / ৭৮০ বার পঠিত

হককথা রিপোর্ট: ভোয়া (ভয়েস অব আমেরিকা) খ্যাত বিশিষ্ট সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার। ২০১৩ সালের এই দিনে তিনি রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে গিয়াস কামাল চৌধুরী এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি একাধারে সাংবাদিক, সাংবাদিক নেতা, কলামিস্ট ও সংবাদ বিশ্লেষক ছিলেন। রাজনীতিসচেতন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে সাংবাদিক সমাজে তাঁর পরিচিতি ব্যাপক। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী।
পাকিস্তান আমলে গণতান্ত্রিক ও স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে আন্দোলনে অংশ নিয়ে কারাবরণ করেন তিনি। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বদানসহ তিনি বাংলাদেশের হয়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে কূটনীতিকের দায়িত্বও পালন করেন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক পান।
গিয়াস কামাল চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস ফেনী সদর উপজেলার শর্শদীতে। তবে তাঁর জন্ম ১৯৩৯ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রামে। কুমিল্লার বিখ্যাত দারোগা বাড়িতে তাঁর বেড়ে ওঠা। প্রবন্ধিক মোতহের হোসেন চৌধুরী ও সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খশরু ছিলেন তার চাচা। তাঁর মা মুনীর আখতার খাতুন চৌধুরাণী ছিলেন কবি। ‘চির সুমধুর’ নামে তাঁর একটি কবিতা সংকলন রয়েছে।
গিয়াস কামাল চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি নেয়ার পর সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করেন। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার অপরাধে পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও হয়েছেন।
গিয়াস কামাল চৌধুরীর সাংবাদিকতা শুরু হয় ১৯৬৪ সালে, ইত্তেফাক গ্রুপের ‘ঢাকা টাইমস’ পত্রিকায়। পরবর্তী সময়ে তিনি ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকা’র আইন প্রদায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি ভয়েস অব আমেরিকাসহ (ভোয়া) দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন। ১৯৮০-র এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ভয়েস অব আমেরিকায় তাঁর বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকতেন। সর্বশেষ দৈনিক খবরপত্র পত্রিকা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
একাধিক মেয়াদে তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকদের রুটি-রুজির সংগ্রামে গিয়াস কামাল ছিলেন প্রথম কাতারের নেতা। ছিলেন জনদরদী মানুষ। গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি রেখেছেন স্মরণযোগ্য ভূমিকা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণসহ জাতীয় গণতান্ত্রিক ও পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক সাংবাদিক হিসেবে সাংবাদিক সমাজে শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য আজীবন তাঁর কলম সচল রেখেছেন। কারাগারেও যেতে হয়েছে একাধিকবার।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ অক্টোবর

প্রকাশের সময় : ১০:৩৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

হককথা রিপোর্ট: ভোয়া (ভয়েস অব আমেরিকা) খ্যাত বিশিষ্ট সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার। ২০১৩ সালের এই দিনে তিনি রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে গিয়াস কামাল চৌধুরী এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি একাধারে সাংবাদিক, সাংবাদিক নেতা, কলামিস্ট ও সংবাদ বিশ্লেষক ছিলেন। রাজনীতিসচেতন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে সাংবাদিক সমাজে তাঁর পরিচিতি ব্যাপক। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর অনুসারী।
পাকিস্তান আমলে গণতান্ত্রিক ও স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে আন্দোলনে অংশ নিয়ে কারাবরণ করেন তিনি। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বদানসহ তিনি বাংলাদেশের হয়ে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে কূটনীতিকের দায়িত্বও পালন করেন। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক পান।
গিয়াস কামাল চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস ফেনী সদর উপজেলার শর্শদীতে। তবে তাঁর জন্ম ১৯৩৯ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রামে। কুমিল্লার বিখ্যাত দারোগা বাড়িতে তাঁর বেড়ে ওঠা। প্রবন্ধিক মোতহের হোসেন চৌধুরী ও সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খশরু ছিলেন তার চাচা। তাঁর মা মুনীর আখতার খাতুন চৌধুরাণী ছিলেন কবি। ‘চির সুমধুর’ নামে তাঁর একটি কবিতা সংকলন রয়েছে।
গিয়াস কামাল চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি নেয়ার পর সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করেন। ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার অপরাধে পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও হয়েছেন।
গিয়াস কামাল চৌধুরীর সাংবাদিকতা শুরু হয় ১৯৬৪ সালে, ইত্তেফাক গ্রুপের ‘ঢাকা টাইমস’ পত্রিকায়। পরবর্তী সময়ে তিনি ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকা’র আইন প্রদায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি ভয়েস অব আমেরিকাসহ (ভোয়া) দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন। ১৯৮০-র এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ভয়েস অব আমেরিকায় তাঁর বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকতেন। সর্বশেষ দৈনিক খবরপত্র পত্রিকা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
একাধিক মেয়াদে তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকদের রুটি-রুজির সংগ্রামে গিয়াস কামাল ছিলেন প্রথম কাতারের নেতা। ছিলেন জনদরদী মানুষ। গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি রেখেছেন স্মরণযোগ্য ভূমিকা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণসহ জাতীয় গণতান্ত্রিক ও পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমিক সাংবাদিক হিসেবে সাংবাদিক সমাজে শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য আজীবন তাঁর কলম সচল রেখেছেন। কারাগারেও যেতে হয়েছে একাধিকবার।