নিউইয়র্ক ১০:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিয়ানীবাজার সমিতির সঙ্কট নিরসনে তিন দফা দাবী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:০১:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭
  • / ৬৬৬ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলাবাসীদের অন্যতম সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইনক’র আসন্ন নির্বাচনের ভোটার রেজিষ্ট্রেশনকে কেন্দ্র করে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসী। অভ্যন্তরীণভাবে এই সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হলেও ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সৃষ্ট সঙ্কটের অবসান হয়নি। সমিতির বর্তমান কার্যকরী কমিটির দাবী তারা গঠনতন্ত্র মেনেই সংগঠন পরিচালনা করছেন। অপরদিকে একটি পক্ষ বর্তমান কমিটি গঠনতন্ত্র মেনে চলছেন না বলে অভিযোগ করছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উভয়ই পক্ষই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ সহ মুরব্বীদের হস্তক্ষেপ কামনা করে সৃষ্ট সঙ্কটের সমাধান কামনা করেছেন।
এদিকে বিয়ানীবাজার সমিতিতে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে বিয়ানীবাজারবাসীদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবী জানানো হয়েছে। ‘সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়। অপরদিকে সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি মাসুদুল হক ছানু ও সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান রুহুল জানিয়েছেন, গত ৩০ জুলাই সমিতির বিধি মোতাবেক ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন পর্যন্ত ১২৫৬জন ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। পাশাপাশি সমিতির নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ও ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। খবর ইউএনএ’র।
অপরদিকে একটি পত্রিকায় সমিতির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ করেছেন সমিতির অন্যতম সদস্য আবুল হোসে। ইউএনএ প্রতিনিধিকে তিনি বরেন, ‘আমাকে জড়িয়ে প্রকাশিত খবর সত্য নয়, আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই’। তিনি বলেন, ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন কর্মকর্তাদের অব্যবস্থাপনা দেখে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহে রাখতেই ‘প্রয়োজনীয় কাগজ’ নিয়ে তা ফটোকপি করে ফেরৎ দেই।
উল্লেখ্য, সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রদত্ত সমিতির আগামী দ্বি-বার্র্ষিক (২০১৮-২০১৯) নির্বাচনের জন্য রেজিষ্টেশনকৃত ১২৫৬জন ভোটারের মধ্যে আজীবন সদস্য ৭৯৫জন, বয়স্ক সদস্য/সদস্য ৭৯৫জন আর সাধারণ সদস্য/সদস্য ৪০২জন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ২৪ সেপ্টেম্বর। আর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল মোতাবেক ওজনপার্কের মতিন স্পাইসি এন্ড সুইটস রেষ্টুরেন্টে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার (বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা) এবং মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই ২৭ আগষ্ট রোববার (সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০টা) এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাস (সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা)। নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি)-এ প্রধান নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পারন করছেন আব্দুস শহীদ। কমিশনের সদস্যগণ হচ্ছেন: সামছুল আলম (বেবুল), মিসবাহ আহমেদ, ময়েজ উদ্দিন আমদ ও কমর উদ্দিন।
সাংবাদিক সম্মেলন: বিয়ানীবাজার সমিতিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ‘সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী’র ব্যানারে গত ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সঙ্কট নিরসনে তিন দফা দাবী উত্থাপন করা হয়েছে। সিটির ওজনপার্কস্থ রোজ গার্ডেন রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক উপদেষ্টা একলিমুজ্জামান নুনু ও সাবেক সহ সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সহ আব্দুস সামাদ ও মিসবাহ আবদীন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম, আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হাফিজ লোদী সহ আরো উপস্থিত ছিলেন আবুল হোসেন, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল মতিন, আব্দুল হাছিব, আব্দুস সামাদ, নূরুল ইসরাম খান, মোস্তফা আহমদ, কামাল চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খসরুজ্জামান খসরু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রস্থ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি প্রবাসে একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বৃহৎ সংগঠন হিসেবে সুপরিচিত। সংগঠনটির জন্মের পর থেকে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের বাইরেও দেশের যে কোন বড় বন্যা কিংবা প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়াও শিক্ষা, সমাজ উন্নয়ন ও মানবসেবামূলক কর্মকা-ে বেশ কিছু অবদান রেখেছে যা সমাজে উদাহরণ স্বরূপ হয়ে আছে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের যেকোন দুর্যোগে সরকারের রাষ্ট্রীয় তহবিলেও বড় অঙ্কের অর্থ সাহায্য দিয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এই সংগঠনটি। এই সংগঠনে বিগত দিনগুলিতে যোগ্যতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক গুণী ব্যক্তিবর্গ। যাদের অনেকে এখন আঞ্চলিকতার সীমা পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি বা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের মত সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন বা আজও দিয়ে যাচ্ছেন। তারমধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ না করলেই না হয়। তাঁরা হচ্ছেন বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ, সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: গত ৩০ জুলাই বিয়ানীবাজার সমিতির ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন নির্ধারিত ছিল। আমরা অত্যন্ত পরিতাপ এবং ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করতে চাই যে, এই ভোটার রেজিষ্টেশনের নামে বর্তমান কার্যকরী কমিটি যে ছলচাতুরী এবং  অগঠনতান্ত্রিক পন্থার আশ্রয় গ্রহণ করেছে এতে সংগঠনের ঐক্য, সংহতি এবং স্বচ্ছতা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়েছে। এহেন কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে বিয়ানীবাজার সমিতির মত একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের ভামূর্তিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে বলে সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী মনে করেন। সংগঠনকে কুক্ষিগত করে রাখার জন্য এই স্বার্থান্বেষী মহল ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের দিন এমন কোন হীন পন্থা নেই যেটা তারা অবলম্বন করে নাই। ভোট রেজিষ্ট্রেশনে আগ্রহী জনগণকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। ভোট রেজিষ্ট্রেশনে সংহগঠনের কোন নিয়মনীতি মেনে চলা হয় নাই। নিজেদের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিবর্গকে সদস্য ফি ব্যতিরেকেই রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়,  যা সম্পূর্ণ  গঠনতন্ত্র বিরোধী।  আর্থিক  এই  অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে বিয়ানীবাজারবাসী প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করলে সংগঠনের কর্তা ব্যক্তিরা কোন সদউত্তর দিতে পারেননি। অনেকেই আবার নির্ধারিত ফি জমা দিয়েও রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেননি। অর্থাৎ এক কথায় বলা চলে সম্পূর্ণ রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি এক ধরনের প্রহসনে পরিণত হয়েছিল বলে সবার নিকট প্রতীয়মান হয়েছে। নিয়মনীতি বিবর্জিত এবং অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণের এক পর্যায়ে ভোটার ফি গ্রহণের ব্যপারটি চ্যালেঞ্জ করলে সভাপতি একপক্ষ কর্তৃক তাদের কাছে ইতিমধ্যেই ৪০,০০০ (চলিশ হাজার) ডলার ডিপোজিট আছে বলে জানান। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজারের বিশিষ্ট মুরব্বী একলিমুজ্জামান নুনু সমঝোতার স্বার্থে তাদের কাছে সংরক্ষিত টাকা দেখানোর অনুরোধ করলে সমিতির সভাপতি মাসুদুল হক ছানু সংরক্ষিত অর্থ দেখাতে ব্যর্থ হন। আমাদের কাছে এই বক্তব্যের সমর্থনে যথাযথ প্রমানাদী সংরক্ষিত আছে। আমরা সাধারণ বিয়ানীবাজারবাসী মনে করি সংগঠনের ঐক্য, শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে নি¤œলিখিত দাবীগুলির যথাযথ বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
১.অনতিবিলম্বে এই অস্বচ্ছ, অগঠনতান্ত্রিক ভোটার রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ ঘোষনা, ২. যেহেতু বর্তমান কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের পক্ষপাত, অদক্ষতা ও অসচ্ছতা দৃষ্টিকল্পের ভাবে সবার নিকট প্রতিয়মান হয়েছে। তাই আমরা মনে করি বিয়ানীবাজারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে ভোটার রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া তদারকীর দায়িত্ব দেয় এবং সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন হলে জরুরী সভা আহবান করে বর্তমান সংকট থেকে সংগঠনকে উদ্ধার করার জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবীর পাশাপাশি বিয়ানীবাজার সমিতির অতীত ঐতিহ্য বজায় রাখার স্বার্থে বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ, নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ ও বিয়ানীবাজারের সকল মুরব্বীয়ান এবং আপামর বিয়ানীবাজারবাসীকে সংগঠনের এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসার জন্য বিনীত আহবান জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নেতৃবৃন্দ বলেন, সমিতির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ গঠনতন্ত্র নয়, তাদের মনমতো করে সংগঠন পরিচালনা করছেন। যার ফলে সমিতিতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তারা গঠনতন্ত্র লংঘন করছেন এবং মিডিয়ায় প্রদত্ত বিবৃতিতে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, আমরা সংগঠনের স্বার্থে সমিতির উপদেষ্টা আর মুরব্বিদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করছি তারা সুষ্ঠু সমাধান দেবেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, প্রয়োজন হলে সমিতির স্বার্থ রক্ষায় আইনের আশ্রয় নেয়া হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

বিয়ানীবাজার সমিতির সঙ্কট নিরসনে তিন দফা দাবী

প্রকাশের সময় : ১০:০১:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলাবাসীদের অন্যতম সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউএসএ ইনক’র আসন্ন নির্বাচনের ভোটার রেজিষ্ট্রেশনকে কেন্দ্র করে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসী। অভ্যন্তরীণভাবে এই সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হলেও ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সৃষ্ট সঙ্কটের অবসান হয়নি। সমিতির বর্তমান কার্যকরী কমিটির দাবী তারা গঠনতন্ত্র মেনেই সংগঠন পরিচালনা করছেন। অপরদিকে একটি পক্ষ বর্তমান কমিটি গঠনতন্ত্র মেনে চলছেন না বলে অভিযোগ করছেন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উভয়ই পক্ষই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ সহ মুরব্বীদের হস্তক্ষেপ কামনা করে সৃষ্ট সঙ্কটের সমাধান কামনা করেছেন।
এদিকে বিয়ানীবাজার সমিতিতে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে বিয়ানীবাজারবাসীদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবী জানানো হয়েছে। ‘সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়। অপরদিকে সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি মাসুদুল হক ছানু ও সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান রুহুল জানিয়েছেন, গত ৩০ জুলাই সমিতির বিধি মোতাবেক ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন পর্যন্ত ১২৫৬জন ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন। পাশাপাশি সমিতির নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী তফসিল ও ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। খবর ইউএনএ’র।
অপরদিকে একটি পত্রিকায় সমিতির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ করেছেন সমিতির অন্যতম সদস্য আবুল হোসে। ইউএনএ প্রতিনিধিকে তিনি বরেন, ‘আমাকে জড়িয়ে প্রকাশিত খবর সত্য নয়, আমি এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই’। তিনি বলেন, ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন কর্মকর্তাদের অব্যবস্থাপনা দেখে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহে রাখতেই ‘প্রয়োজনীয় কাগজ’ নিয়ে তা ফটোকপি করে ফেরৎ দেই।
উল্লেখ্য, সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রদত্ত সমিতির আগামী দ্বি-বার্র্ষিক (২০১৮-২০১৯) নির্বাচনের জন্য রেজিষ্টেশনকৃত ১২৫৬জন ভোটারের মধ্যে আজীবন সদস্য ৭৯৫জন, বয়স্ক সদস্য/সদস্য ৭৯৫জন আর সাধারণ সদস্য/সদস্য ৪০২জন। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ২৪ সেপ্টেম্বর। আর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল মোতাবেক ওজনপার্কের মতিন স্পাইসি এন্ড সুইটস রেষ্টুরেন্টে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ২২ আগষ্ট মঙ্গলবার (বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা) এবং মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাই ২৭ আগষ্ট রোববার (সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০টা) এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাস (সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৮টা)। নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি)-এ প্রধান নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পারন করছেন আব্দুস শহীদ। কমিশনের সদস্যগণ হচ্ছেন: সামছুল আলম (বেবুল), মিসবাহ আহমেদ, ময়েজ উদ্দিন আমদ ও কমর উদ্দিন।
সাংবাদিক সম্মেলন: বিয়ানীবাজার সমিতিতে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ‘সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী’র ব্যানারে গত ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সমিতির সঙ্কট নিরসনে তিন দফা দাবী উত্থাপন করা হয়েছে। সিটির ওজনপার্কস্থ রোজ গার্ডেন রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক উপদেষ্টা একলিমুজ্জামান নুনু ও সাবেক সহ সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সহ আব্দুস সামাদ ও মিসবাহ আবদীন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম, আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হাফিজ লোদী সহ আরো উপস্থিত ছিলেন আবুল হোসেন, নিজাম উদ্দিন, আব্দুল মতিন, আব্দুল হাছিব, আব্দুস সামাদ, নূরুল ইসরাম খান, মোস্তফা আহমদ, কামাল চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খসরুজ্জামান খসরু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রস্থ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি প্রবাসে একটি ঐতিহ্যবাহী এবং বৃহৎ সংগঠন হিসেবে সুপরিচিত। সংগঠনটির জন্মের পর থেকে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের বাইরেও দেশের যে কোন বড় বন্যা কিংবা প্রাকৃতিক দূর্যোগ ছাড়াও শিক্ষা, সমাজ উন্নয়ন ও মানবসেবামূলক কর্মকা-ে বেশ কিছু অবদান রেখেছে যা সমাজে উদাহরণ স্বরূপ হয়ে আছে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের যেকোন দুর্যোগে সরকারের রাষ্ট্রীয় তহবিলেও বড় অঙ্কের অর্থ সাহায্য দিয়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এই সংগঠনটি। এই সংগঠনে বিগত দিনগুলিতে যোগ্যতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক গুণী ব্যক্তিবর্গ। যাদের অনেকে এখন আঞ্চলিকতার সীমা পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি বা জালালাবাদ এসোসিয়েশনের মত সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন বা আজও দিয়ে যাচ্ছেন। তারমধ্যে কয়েকজনের নাম উল্লেখ না করলেই না হয়। তাঁরা হচ্ছেন বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সভাপতি কামাল আহমেদ, সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু এবং জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়: গত ৩০ জুলাই বিয়ানীবাজার সমিতির ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের শেষ দিন নির্ধারিত ছিল। আমরা অত্যন্ত পরিতাপ এবং ক্ষোভের সাথে উল্লেখ করতে চাই যে, এই ভোটার রেজিষ্টেশনের নামে বর্তমান কার্যকরী কমিটি যে ছলচাতুরী এবং  অগঠনতান্ত্রিক পন্থার আশ্রয় গ্রহণ করেছে এতে সংগঠনের ঐক্য, সংহতি এবং স্বচ্ছতা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়েছে। এহেন কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে বিয়ানীবাজার সমিতির মত একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের ভামূর্তিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছে বলে সচেতন বিয়ানীবাজারবাসী মনে করেন। সংগঠনকে কুক্ষিগত করে রাখার জন্য এই স্বার্থান্বেষী মহল ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের দিন এমন কোন হীন পন্থা নেই যেটা তারা অবলম্বন করে নাই। ভোট রেজিষ্ট্রেশনে আগ্রহী জনগণকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়। ভোট রেজিষ্ট্রেশনে সংহগঠনের কোন নিয়মনীতি মেনে চলা হয় নাই। নিজেদের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিবর্গকে সদস্য ফি ব্যতিরেকেই রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়,  যা সম্পূর্ণ  গঠনতন্ত্র বিরোধী।  আর্থিক  এই  অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে বিয়ানীবাজারবাসী প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ প্রকাশ করলে সংগঠনের কর্তা ব্যক্তিরা কোন সদউত্তর দিতে পারেননি। অনেকেই আবার নির্ধারিত ফি জমা দিয়েও রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারেননি। অর্থাৎ এক কথায় বলা চলে সম্পূর্ণ রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়াটি এক ধরনের প্রহসনে পরিণত হয়েছিল বলে সবার নিকট প্রতীয়মান হয়েছে। নিয়মনীতি বিবর্জিত এবং অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণের এক পর্যায়ে ভোটার ফি গ্রহণের ব্যপারটি চ্যালেঞ্জ করলে সভাপতি একপক্ষ কর্তৃক তাদের কাছে ইতিমধ্যেই ৪০,০০০ (চলিশ হাজার) ডলার ডিপোজিট আছে বলে জানান। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজারের বিশিষ্ট মুরব্বী একলিমুজ্জামান নুনু সমঝোতার স্বার্থে তাদের কাছে সংরক্ষিত টাকা দেখানোর অনুরোধ করলে সমিতির সভাপতি মাসুদুল হক ছানু সংরক্ষিত অর্থ দেখাতে ব্যর্থ হন। আমাদের কাছে এই বক্তব্যের সমর্থনে যথাযথ প্রমানাদী সংরক্ষিত আছে। আমরা সাধারণ বিয়ানীবাজারবাসী মনে করি সংগঠনের ঐক্য, শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি এবং স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে নি¤œলিখিত দাবীগুলির যথাযথ বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
১.অনতিবিলম্বে এই অস্বচ্ছ, অগঠনতান্ত্রিক ভোটার রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন ভোটার রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ ঘোষনা, ২. যেহেতু বর্তমান কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালনে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের পক্ষপাত, অদক্ষতা ও অসচ্ছতা দৃষ্টিকল্পের ভাবে সবার নিকট প্রতিয়মান হয়েছে। তাই আমরা মনে করি বিয়ানীবাজারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে ভোটার রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া তদারকীর দায়িত্ব দেয় এবং সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজন হলে জরুরী সভা আহবান করে বর্তমান সংকট থেকে সংগঠনকে উদ্ধার করার জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবীর পাশাপাশি বিয়ানীবাজার সমিতির অতীত ঐতিহ্য বজায় রাখার স্বার্থে বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ, নির্বাচন কমিশনের সদস্যবৃন্দ ও বিয়ানীবাজারের সকল মুরব্বীয়ান এবং আপামর বিয়ানীবাজারবাসীকে সংগঠনের এই দুঃসময়ে এগিয়ে আসার জন্য বিনীত আহবান জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নেতৃবৃন্দ বলেন, সমিতির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ গঠনতন্ত্র নয়, তাদের মনমতো করে সংগঠন পরিচালনা করছেন। যার ফলে সমিতিতে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তারা গঠনতন্ত্র লংঘন করছেন এবং মিডিয়ায় প্রদত্ত বিবৃতিতে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, আমরা সংগঠনের স্বার্থে সমিতির উপদেষ্টা আর মুরব্বিদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করছি তারা সুষ্ঠু সমাধান দেবেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, প্রয়োজন হলে সমিতির স্বার্থ রক্ষায় আইনের আশ্রয় নেয়া হবে।