বাংলাদেশী শিশুকে স্কুল থেকে সাসপেন্ড
- প্রকাশের সময় : ০৬:৫৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
- / ১০১৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: স্কুলে টয়গান নিয়ে যাওয়ার অপরাধে বাংলাদেশী এক দম্পতির ১১ বছরের শিশুকে তার স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সে পুলিশের নজরদারীতে রয়েছে। কুইন্সের একটি পাবলিক স্কুলে সিক্সথ গ্রেডের ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শিক্ষককে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে। তবে তা অস্বীকার করেছে শিশুটির পরিবার। এদিকে, শিশুরা যেনো টয়গান নিয়ে স্কুলে না যায় সে বিষয়ে অভিভাবকদের আরো সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেমস ও’নীল।
জানা গেছে, ইন্টারনেটে পাওয়া এসব ছবি দেখে যে কেউ আতকে উঠবেন। টয় গান দিয়ে খেলতে খেলতে শিশুদের এমন পরিনতি দু:স্বপ্নের মতো, কেউ কল্পনাও করেননা। কিন্তু এমন দুর্ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়। এসব টয় গান দিয়ে খেলতে খেলতে আমেরিকায় প্রতি বছর গড়ে দুই শ শিশু আহত হয়। এমন কি কখনো কখনো টয়গানের সঙ্গে সত্যিকারের বুলেটকে টয়বুলেট ভেবে শুট করার ঘটনা আছে।
এদিকে গত ৭ জুন জ্যাকস হাইটসে আয়োজিত বাংলাদেশী কমিউনিটির এক টাউন হল মিটিংয়ে নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেমস ও’নীল এক প্রশ্নের উত্তরে শিশুরা যেনো টয়গান নিয়ে স্কুলে না যায় সে বিষয়ে অভিভাবকদের আরো সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন এমন ঘটনা উদ্বেগজনক। এসময় তিনি কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যার নানা প্রশ্নেরও উত্তর দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, স্কুলে বিপদজ্জনক টয়গান নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। কেউ নিয়ে গেলে তা অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। সম্প্রতি কুইন্সে সিক্স গ্রেডের বাংলাদেশী এক শিক্ষার্থী স্কুলে টয়গান নিয়ে গেলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে জুভেনাইল কেস ফাইল করে এবং ডিটেনশনে পাঠায়। ১১ বছরের ওই শিশুর পক্ষে বাবা-মা আইনী লড়াই করছেন।
বাংলাদেশী ওই দম্পতি জানান, তাদের ছেলে ভুল বশত: টয়গান স্কুলে নিয়ে যায়। তবে সে কাউকে শ্যুট করেনি। স্কুলের পড়ালেখায় ভালো হওয়া সত্ত্বেও শিশুটি এবং তার পরিবার এখন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। শিশুরা যেন টয়গান স্কুলে নিয়ে না যায় সেই পরামর্শ দিয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেমস ওনীল।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তামানে এসব বিপদজ্জনক টয়গান শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে ৫ শ গুন বেশি বেড়েছে। তবে শিশুদের হাতে এসব বন্দুক পিস্তলের মতো খেলনা তুলে দেয়া কতটা সুবিবেচনা প্রসূত সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, বন্দুক পিস্তল দিয়ে খেলা শিশুর ভেতর হি¯্রতাকে জাগিয়ে তোলে। আর সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যায়, আমেরিকার বেশ কয়েকটি স্কুলে কিশোর তরুনদের বন্দুক হামলার পেছনে রয়েছে এসব টয়গান দিয়ে খেলার অভিজ্ঞতা হামলাকারীদের উৎসাহিত করে। তাই প্রিয় সন্তানের নিজের নিরাাপত্তা এবং অন্যদের নিরাপত্তার কথা বিচেচনা করে শিশুদের হাতে টয়গান না দেয়ার পরামর্শ রয়েছে।
এব্যাপারে সাউথ এশিয়ান মানবাধিকার সংগঠন ড্রাম-এর অর্গানাইজিং ডিরেক্টর কাজী ফৌজিয়া বলেন, স্কুলে খেলা অস্ত্র নিয়ে ভয়-ভীতির ঘাটনা উদ্বেগজনক। শুধু বাংলাদেশী নয়, অন্যান্য কমিউনিটির শিশুরাও এমন ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন কার্টুন বা ছবি দেখে শিশুরা খেলনা অস্ত্র ব্যবহারে আসক্ত হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, শিশুদের এমন ঘটনার পাশাপাশি যারা এসব কার্টুর বা ছবি করছেন তাদের নিয়ে ভেবে দেখা উচিৎ। কোথা থেকে কেন এমন ঘটনার উদ্ভব তা ভেবে দেখার অবকাশ রাখে। তিনি বলেন, ড্রাম মানবাধিকার বিষয়ক নানা ঘটনার পাশাপাশি শিশুদের নানা অপরাধের ব্যাপারেও কাজ করছে। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)