মহামারিতে রূপ নেবে না এইচএমপিভি
![](https://hakkatha.com/wp-content/uploads/2024/05/hakkathafav.png)
- প্রকাশের সময় : ১১:৫৮:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৩৩ বার পঠিত
চীনে সম্প্রতি দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) শনাক্তের ঘটনা নিয়ে ইন্ডিয়া টুডে সহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম নতুন মহামারির শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এমনকি দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে সেসব প্রতিবেদনগুলোতে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচএমপিভি চেনা ভাইরাস। আর মহামারি বা অতিমারি সৃষ্টি করার মতো সক্ষমতাও এর নেই।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর এ ধরনের সংবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ভারতে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর অনেকেই নতুন মহামারি ও আসন্ন লকডাউনের ভয়ে ভীত। তবে ভয়ের কোনো কারণ দেখছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সৌম্য স্বামীনাথন। তার মতে মহামারি সৃষ্টির জন্য ভাইরাস প্রজাতির যে ধরণের সক্ষমতা প্রয়োজন তা এইচএমপিভির মধ্যে নেই। খুব সম্ভবত এটি নতুন কোনো মহামারি নিয়ে আসছে না।
এইচএমপিভি একটি পরিচিত ভাইরাস। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শ্বাসযন্ত্রে হালকা সংক্রমণ ঘটায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যা বিপজ্জনক কিছু নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সবাইকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে সৌম্য লিখেন, ‘ঠান্ডা লাগলে স্বাভাবিক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মাস্ক পরিধান করা উচিত, হাত ধোয়া উচিত, জনসমাগম এড়িয়ে চলা উচিত। তবে লক্ষণ তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’ কারণ এইচএমপিভি ভাইরাস শিশু, বয়স্ক ও যাদের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা দূর্বল- তাদের গুরুতর শ্বাসজনিত রোগের কারণ হতে পারে। চীনের বর্তমান পরিস্থিতিও সৌম্য স্বামীনাথনের বক্তব্যকেই সমর্থন করে। স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, রাজধানী বেইজিং সহ তিয়াংজিন ও হেবেই শহরে এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ফ্লু মৌসম বিবেচনায় আক্রান্তের সংখ্যা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
এ ছাড়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ও আরএসভির মতো ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরাও হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালে রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। চীনের জনসাধারণও ফ্লু মৌসুমের কারণে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করছে। গণপরিবহনে যাত্রীদের মাস্ক পড়ে ঘুরতে দেখা গেছে। এগুলো কোনোটাই বাড়তি কোনো আতঙ্কের বিষয় নয়। স্ট্রেইট টাইমসের একজন প্রতিবেদক গত সোমবার বেইজিংয়ের দুইটি হাসপাতাল ঘুরে দেখেছেন। রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেলেও হাসপাতালে কোনো বাড়তি চাপ দেখা যায়নি।
এ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো চীনে জরুরি অবস্থার যে সংবাদ প্রচার করেছে- তারও সত্যতা পাওয়া যায়নি। বরঞ্চ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এ সংক্রান্ত পোস্ট করা একটি ভিডিও টুইটারের ফ্যাক্ট চেকে ভুল হিসেবে শনাক্ত হয়।
শীত ও বসন্ত এলেই বিশ্বে এইচএমপিভি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ২০০১ সালে এই ভাইরাস প্রথম শনাক্তে পর প্রতি বছরই আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। বিপরীতে কোভিড-১৯ একেবারে নতুন আবিষ্কৃত ভাইরাস। ২০১৯ এর আগে গবেষকরা এটি চিনতই না। তবে কোভিড-১৯ এর মতোই এইচএমপিভি হাঁচি বা কাশি থেকে নির্গত ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। ফলে সচেতন না হলে আক্রান্ত রোগীকে করমর্দনের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল।