সাংবাদিকের উপর হামলায় কাহার লাভ?
- প্রকাশের সময় : ০১:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৩
- / ১১০ বার পঠিত
শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করিয়া পুলিশের সঙ্গে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষের তথ্য ও ছবি সংগ্রহকালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কর্মীগণ যে হামলার শিকার হন. উহা ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়। রবিবার সমকালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, উক্ত হামলায় অন্তত ২১ সাংবাদিক আহত হইয়াছেন, যাহাদের মধ্যে অন্তত একজন, যিনি শনিবার পুলিশের টিয়ার শেলের আঘাতে আহত; পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান। আমরা এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করিতেছি এবং তাঁহার পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানাই।
জানা গিয়াছে, সাংবাদিক পরিচয় জানার পরও হামলাকারীরা সাংবাদিকগণের বহনকারী গাড়ি ও সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং মোবাইল ফোন ছিনাইয়া লয়। আমরা জানি না, সংবাদকর্মীগণের উপর হামলাকারীদের এহেন আক্রমণের কারণ কী; তবে আক্রান্তগণের দায়িত্ব পালনে বাধাদানের বিষয় এখানে সুস্পষ্ট। যে কোনো খবর সংগ্রহ করিয়া উহা জনসাধারণকে জানানো একজন সংবাদকর্মীর দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া এই দেশে প্রধানত সরকার ও শাসক দলের পক্ষ হইতে সংবাদকর্মীগণ প্রায়শ হেনস্তা ও নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু সাংবাদিকগণের উপর শনিবারের হামলা সমগ্র সংবাদমাধ্যমের জন্যই নূতন এক উদ্বেগ সৃষ্টি করিয়াছে। উহা হইলÑ এখন হইতে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের খবর সংগ্রহকালেও সংবাদকর্মীগণ নির্ভয় থাকিতে পারিবেন না। সংবাদমাধ্যমের জন্য এহেন প্রতিকূলতা কাহারও জন্য শুভ হইতে পারে না।
এই কথা সত্য, দেশের সাংবাদিকতায় সকলেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখিতে পারেন নাই। দলীয় আনুগত্যে অনেকে সাংবাদিকতার দায়িত্ব ভুলিয়াছেন। অনেক সময় সাংবাদিকদের করা ভিডিও প্রতিপক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হইয়াছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে যাঁহারা দায়িত্ব পালন করেন, তাঁহাদের দায় এই ব্যাপারে অতি সামান্য। তাঁহাদেরকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকারে পরিণত করা কেবল অপরাধই নয়, আত্মঘাতীও বটে। দিনের শেষে, সাংবাদিকের উপর হামলা মতপ্রকাশের অধিকার তথা রাজনীতির অধিকারকেই আরও সংকুচিত করিবে। (দৈনিক সমকাল)