নিউইয়র্ক ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সম্পাদকীয় : রোহিঙ্গা প্রশ্নে ত্রিদেশীয় বৈঠক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩১ বার পঠিত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ১৯ জানুয়ারী ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। প্রকৃতপক্ষে চীনের মধ্যস্থতায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গত ৯ জানুয়ারী; কিন্তু মিয়ানমার সেটা পিছিয়ে দিয়েছে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন-এই ত্রিদেশীয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের খবরটি ইতিবাচক বৈকি। বিশেষত চীন একটি অংশীদার দেশ হওয়ায় অনুষ্ঠেয় বৈঠকটিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইতিবাচক অগ্রগতি আশা করা যেতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার টালবাহানা করে আসছে শুরু থেকেই।
এটা এমন এক টালবাহানা যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কেও তারা উপেক্ষা করছে। কিন্তু আমরা মনে করি, মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রে চীন যদি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে, তাহলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকবে। এই বিবেচনায় ১৯ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সীমাহীন উদাসীনতা অথবা ঢিলেমি প্রদর্শন করে আসছে। প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারকে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা। কিন্তু মিয়ানমারের গতি এতই ধীর যে, তারা এ পর্যন্ত ৪২ হাজার রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাই-বাছাই করেছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যের অধিবাসী বলে স্বীকার করেছে, বাকি ১৪ হাজারের কোনো তথ্য মিয়ানমারের তথ্যভান্ডারে নেই বলে জানিয়েছে দেশটি। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের আন্তরিকতা নেই বললেই চলে।
১৯ জানুয়ারীর বৈঠকটির জন্য আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। এ বৈঠকে যদি ফলপ্রসূ কোনো সিদ্ধান্ত না হয়, তাহলে মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প থাকবে না। একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া গেছে যে, জাতিসংঘ কিংবা অন্যান্য শক্তিধর রাষ্ট্রের চেয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র চীনেরই। চীন যদি বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা উপলব্ধি করে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে সমস্যার সমাধান হতে বেশি দেরি হবে না।
আমাদের উচিত হবে, এ লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও জোরদার করা। আমরা আশা করি, ১৯ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন এমন এক ভূমিকা গ্রহণ করবে, যাতে মিয়ানমার তার বর্তমান একগুঁয়েমি পরিহার করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্মত হবে।
মিয়ানমারের প্রতিবেশী এবং একটি শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে চীন তার ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করলে আমরা দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব বটে।

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

সম্পাদকীয় : রোহিঙ্গা প্রশ্নে ত্রিদেশীয় বৈঠক

প্রকাশের সময় : ১২:৩১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ১৯ জানুয়ারী ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। প্রকৃতপক্ষে চীনের মধ্যস্থতায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গত ৯ জানুয়ারী; কিন্তু মিয়ানমার সেটা পিছিয়ে দিয়েছে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন-এই ত্রিদেশীয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের খবরটি ইতিবাচক বৈকি। বিশেষত চীন একটি অংশীদার দেশ হওয়ায় অনুষ্ঠেয় বৈঠকটিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইতিবাচক অগ্রগতি আশা করা যেতে পারে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার টালবাহানা করে আসছে শুরু থেকেই।
এটা এমন এক টালবাহানা যে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কেও তারা উপেক্ষা করছে। কিন্তু আমরা মনে করি, মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রে চীন যদি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে, তাহলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকবে। এই বিবেচনায় ১৯ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সীমাহীন উদাসীনতা অথবা ঢিলেমি প্রদর্শন করে আসছে। প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারকে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা। কিন্তু মিয়ানমারের গতি এতই ধীর যে, তারা এ পর্যন্ত ৪২ হাজার রোহিঙ্গার পরিচয় যাচাই-বাছাই করেছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যের অধিবাসী বলে স্বীকার করেছে, বাকি ১৪ হাজারের কোনো তথ্য মিয়ানমারের তথ্যভান্ডারে নেই বলে জানিয়েছে দেশটি। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের আন্তরিকতা নেই বললেই চলে।
১৯ জানুয়ারীর বৈঠকটির জন্য আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। এ বৈঠকে যদি ফলপ্রসূ কোনো সিদ্ধান্ত না হয়, তাহলে মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প থাকবে না। একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া গেছে যে, জাতিসংঘ কিংবা অন্যান্য শক্তিধর রাষ্ট্রের চেয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র চীনেরই। চীন যদি বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা উপলব্ধি করে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে সমস্যার সমাধান হতে বেশি দেরি হবে না।
আমাদের উচিত হবে, এ লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও জোরদার করা। আমরা আশা করি, ১৯ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে চীন এমন এক ভূমিকা গ্রহণ করবে, যাতে মিয়ানমার তার বর্তমান একগুঁয়েমি পরিহার করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্মত হবে।
মিয়ানমারের প্রতিবেশী এবং একটি শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে চীন তার ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করলে আমরা দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব বটে।