নিউইয়র্ক ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্রে চালকের আসনে ট্রাম্প

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৫৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১১ বার পঠিত

হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ডনাল্ড জন ট্রাম্প।
এবারই প্রথম নয়। ২০১৭-২০২১ মেয়াদে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই মেয়াদকালে তার কর্মকান্ড নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। আচার-আচরেণের কারণে নিজ দেশেই ট্রাম্প কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। তার নেওয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে বিশ্বনেতাদের মনে এক ধরনের সন্দেহ আছে।
ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। অভিযোগ আছে নির্বাচনের ফল পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারী জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার দিন মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্প সমর্থকেরা। তিনি হোয়াইট হাউসে বক্তৃতায় তার সমর্থকদের মিছিল নিয়ে ক্যাপিটল হিলের দিকে যেতে বলেছিলেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কের একটি আদালত ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগে করা একটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তারপরও মার্কিন জনগণ এবার তাকেই বেছে নিয়েছে। নাগরিকদের ভোটই শেষ কথা। তিনি আরেক দফা যুক্তরাষ্ট্রের চালকের আসনে বসছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির নারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প। মাঝে জো বাইডেনের কাছে হারেন। এবার ডেমোক্রেটিক পার্টির নারী প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করলেন। রিপাবলিকানরা এবার মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ তো নিচ্ছেই, প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসেও আধিপত্য অর্জন করেছে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমেরিকার জনগণের জন্য এটি চমৎকার জয়। এটা আমাদের আমেরিকাকে আবারও মহান করার সুযোগ দেবে।’
মার্কিন মুলুকের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বিশ্বজোড়া। কেউ পছন্দ করুক আর না করুক, বিশ্বের মোড়লের আসনে আসীন হয়ে আছে আমেরিকা। দেশটির নীতি বিশ্বের অনেক কিছুকে প্রভাবিত করে, অনেক কিছুকে ওলটপালট করে দেয়। পশ্চিমা বিশ্ব আমেরিকার নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সেটা জানবার আগ্রহ যেমন বিশ্ববাসীর থাকে, তেমন দেশটিতে প্রেসিডেন্ট বদলালে পৃথিবীতে কী পরিবর্তন আসবে সেটাও মানুষ জানতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট বদলেছে। এতে পৃথিবীতে আসলে কি পরিবর্তন হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় যেই আসুন না কেন তাতে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি বদলায় না। হয়তো আচরণগত পরিবর্তন হবে। ট্রাম্প বলেছেন, তার কাছে আমেরিকাই প্রাধান্য পাবে। এই ভাষ্য বিশ্ববাসীকে খুব বেশি আশান্বিত করতে পারছে না।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কি উন্নতি হবে? মনে হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেনের চেয়ে বরং তিনি আরও কট্টর ইসরায়েল সমর্থক। কাজেই মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কী হবে সেটা একটা প্রশ্ন। অনেকের ধারণা, বাইডেন প্রশাসনের মতো উজার করে ইউক্রেনকে সহায়তা দেবেন না ট্রাম্প। তাতে কি যুদ্ধের অবসান হবে? কেউ কেউ মনে করছেন, ট্রাম্পের মেয়াদে হঠাৎ করে যুদ্ধের অবসান হতে পারে। তবে সেটা হলে রাশিয়ার বিজয় হবে। রাশিয়ার বিজয় দেখতে পশ্চিমারা কতটা প্রস্তুত সেটা একটা প্রশ্ন।
বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নির্বাচনের প্রভাব কী হবে সেটা নিয়ে অনেকের ভাবনা আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেসিডেন্ট বদলানোতে হয়তো আচরণগত পরিবর্তন আসবে, কিন্তু মার্কিন নীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না।
আমরা চাই, পৃথিবীতে যুদ্ধ বন্ধ হোক, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। আমরা আশা করব, শান্তির জন্য বিশ্ববাসীর গভীর আকাক্সক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নেতৃত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হবে। (সংবাদ)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

যুক্তরাষ্ট্রে চালকের আসনে ট্রাম্প

প্রকাশের সময় : ১০:৫৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪

হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ডনাল্ড জন ট্রাম্প।
এবারই প্রথম নয়। ২০১৭-২০২১ মেয়াদে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই মেয়াদকালে তার কর্মকান্ড নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। আচার-আচরেণের কারণে নিজ দেশেই ট্রাম্প কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। তার নেওয়া কিছু পদক্ষেপের কারণে বিশ্বনেতাদের মনে এক ধরনের সন্দেহ আছে।
ট্রাম্পের মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। অভিযোগ আছে নির্বাচনের ফল পরিবর্তনের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারী জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ঘোষণার দিন মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্প সমর্থকেরা। তিনি হোয়াইট হাউসে বক্তৃতায় তার সমর্থকদের মিছিল নিয়ে ক্যাপিটল হিলের দিকে যেতে বলেছিলেন। সম্প্রতি নিউইয়র্কের একটি আদালত ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগে করা একটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তারপরও মার্কিন জনগণ এবার তাকেই বেছে নিয়েছে। নাগরিকদের ভোটই শেষ কথা। তিনি আরেক দফা যুক্তরাষ্ট্রের চালকের আসনে বসছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির নারী প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান ট্রাম্প। মাঝে জো বাইডেনের কাছে হারেন। এবার ডেমোক্রেটিক পার্টির নারী প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করলেন। রিপাবলিকানরা এবার মার্কিন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ তো নিচ্ছেই, প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসেও আধিপত্য অর্জন করেছে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমেরিকার জনগণের জন্য এটি চমৎকার জয়। এটা আমাদের আমেরিকাকে আবারও মহান করার সুযোগ দেবে।’
মার্কিন মুলুকের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ বিশ্বজোড়া। কেউ পছন্দ করুক আর না করুক, বিশ্বের মোড়লের আসনে আসীন হয়ে আছে আমেরিকা। দেশটির নীতি বিশ্বের অনেক কিছুকে প্রভাবিত করে, অনেক কিছুকে ওলটপালট করে দেয়। পশ্চিমা বিশ্ব আমেরিকার নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে কে প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সেটা জানবার আগ্রহ যেমন বিশ্ববাসীর থাকে, তেমন দেশটিতে প্রেসিডেন্ট বদলালে পৃথিবীতে কী পরিবর্তন আসবে সেটাও মানুষ জানতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট বদলেছে। এতে পৃথিবীতে আসলে কি পরিবর্তন হবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় যেই আসুন না কেন তাতে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি বদলায় না। হয়তো আচরণগত পরিবর্তন হবে। ট্রাম্প বলেছেন, তার কাছে আমেরিকাই প্রাধান্য পাবে। এই ভাষ্য বিশ্ববাসীকে খুব বেশি আশান্বিত করতে পারছে না।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কি উন্নতি হবে? মনে হয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেনের চেয়ে বরং তিনি আরও কট্টর ইসরায়েল সমর্থক। কাজেই মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কী হবে সেটা একটা প্রশ্ন। অনেকের ধারণা, বাইডেন প্রশাসনের মতো উজার করে ইউক্রেনকে সহায়তা দেবেন না ট্রাম্প। তাতে কি যুদ্ধের অবসান হবে? কেউ কেউ মনে করছেন, ট্রাম্পের মেয়াদে হঠাৎ করে যুদ্ধের অবসান হতে পারে। তবে সেটা হলে রাশিয়ার বিজয় হবে। রাশিয়ার বিজয় দেখতে পশ্চিমারা কতটা প্রস্তুত সেটা একটা প্রশ্ন।
বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নির্বাচনের প্রভাব কী হবে সেটা নিয়ে অনেকের ভাবনা আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেসিডেন্ট বদলানোতে হয়তো আচরণগত পরিবর্তন আসবে, কিন্তু মার্কিন নীতিতে খুব বেশি পরিবর্তন হবে না।
আমরা চাই, পৃথিবীতে যুদ্ধ বন্ধ হোক, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। আমরা আশা করব, শান্তির জন্য বিশ্ববাসীর গভীর আকাক্সক্ষা যুক্তরাষ্ট্রের আগামী নেতৃত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হবে। (সংবাদ)