নিউইয়র্ক ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

হাড়ক্ষয় জনিত হাঁটুর ব্যথায় পিআরপি থেরাপি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪২ বার পঠিত

হাঁটুর ব্যথা বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস চিকিৎসায় পিআরপি থেরাপি | ছবি: সংগৃহীত

হককথা ডেস্ক : হাড়ক্ষয় জনিত হাঁটুর ব্যথা বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস হলো এক ধরনের ক্ষয়কারী অস্থিসন্ধির রোগ যা অন্তর্নিহিত হাড় ভেঙে যাওয়ার ফলে হয়। এ রোগটি বিশ্বে অক্ষমতার চতুর্থ প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়। সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল সন্ধিতে ব্যথা এবং শক্ত হওয়া। বয়সজনিত হাঁটুর ব্যথা চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে পিআরপি থেরাপি। অস্টিওআর্থ্রাইটিস অফ নী (Knee) প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসকেরা হাঁটু ব্যথার দীর্ঘস্থায়ী উপশম হতে দেখা গেছে।

পিআরপি থেরাপি কি?
পিআরপি হলো প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা, যা রক্তের বিশেষ প্রক্রিয়াজাত অংশবিশেষ। বলা হয়, এতে যেসব উপাদান থাকে, তা নতুন কোষ তৈরির পাশাপাশি পুরোনো কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে এবং এরই ভিত্তিতে এটি মানবদেহের বিভিন্ন অংশের, যেমন ত্বক, চুল, অস্থিসন্ধি, মাংসপেশির আঘাত, টেন্ডনের আঘাত, পুরোনো ক্ষতের চিকিৎসায় উপকার করে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর নিজ শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে সেন্ট্রিফিউজ মেশিনের মাধ্যমে প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা প্রস্তুত করা হয়। এরপর হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। এর আগে

পিআরপি থেরাপি কিভাবে কাজ করে?
রক্তকণিকা প্লেটিলেট মূলত রক্তজমাট বাধঁতে ভুমিকা রাখে। এছাড়া কোন কাঁটাছেড়া বা আঘাতে শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষতস্থানে প্লেটিলেট পৌঁছে বিভিন্ন গ্রোথ ফ্যাক্টর নিঃসরণ করে। এভাবে মানব দেহের সহজাত ক্ষয়পূরণ প্রক্রিয়ায় প্লেটিলেট অংশ নেয়। একারণে সাম্প্রতিককালে টেন্ডন, লিগামেন্ট ও অস্থিসন্ধির বিভিন্ন আঘাতে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে প্ল্যাটিলেট রিচ প্লাজমা ব্যবহৃত হয়।

পিআরপি তৈরির প্রক্রিয়া ও প্রয়োগ পদ্ধতি
সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মত রক্ত সংগ্রহ করে সেন্ট্রিফিউজ মেশিনের মাধ্যমে লোহিত ও শ্বেত রক্তকণিকা থেকে প্লেটিলেট ও প্লাজমা আলাদা করা হয়। এরপর অস্টিওআর্থ্রাইটিক হাঁটুর ব্যথা স্থানে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পিআরপি দেয়া হয়। থেরাপির ছয় সপ্তাহের মাঝে রোগীর হাঁটু ব্যথা কমে আসে এবং পূর্বের চেয়ে অধিক কর্মক্ষম হয়ে থাকে। যে সকল রোগীর ক্ষেত্রে পিআরপি কার্যকর হয় তাদের দুবার থেকে ছয়বার থেরাপি প্রয়োজন পরে। থেরাপির পর ফিজিক্যাল থেরাপি দেওয়া হলে অধিকতর ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিসে পিআরপি প্রাথমিক চিকিৎসা নয়। অন্যান্য নিয়মিত চিকিৎসার পরেও যাদের ব্যথা থাকে তাদের জন্য পিআরপি হাঁটুতে স্টেরয়েড, হায়ালুরনিক এসিড ইঞ্জেকশন এমনকি হাঁটুর অস্থিসন্ধি প্রতিস্থাপনের বিকল্প হতে পারে।

দক্ষ চিকিৎসকের অধীনে পিআরপি চিকিৎসা নিরাপদ। যেহেতু রোগীর নিজ দেহের রক্ত নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে পিআরপি থেরাপি দেয়া হয় সেহেতু এলার্জিক রিএকশন বা অন্যান্য সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকে।

পিআরপি থেরাপি কেবল অস্টিও আর্থ্রাইটিসেই নয়, লাম্বার ডিস্ক সম্পর্কিত ব্যথা, রোটেটর কাফ ইনজুরি, টেনিস এলবো, এংকেল স্প্রেইন, একিলিস টেন্ডিনাইটিস, প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস, কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম, স্যাকরো ইলিয়াক জয়েন্ট পেইনে দেওয়া যেতে পারে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

হাড়ক্ষয় জনিত হাঁটুর ব্যথায় পিআরপি থেরাপি

প্রকাশের সময় : ০৬:১০:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩

হককথা ডেস্ক : হাড়ক্ষয় জনিত হাঁটুর ব্যথা বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস হলো এক ধরনের ক্ষয়কারী অস্থিসন্ধির রোগ যা অন্তর্নিহিত হাড় ভেঙে যাওয়ার ফলে হয়। এ রোগটি বিশ্বে অক্ষমতার চতুর্থ প্রধান কারণ বলে মনে করা হয়। সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল সন্ধিতে ব্যথা এবং শক্ত হওয়া। বয়সজনিত হাঁটুর ব্যথা চিকিৎসায় নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে পিআরপি থেরাপি। অস্টিওআর্থ্রাইটিস অফ নী (Knee) প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসকেরা হাঁটু ব্যথার দীর্ঘস্থায়ী উপশম হতে দেখা গেছে।

পিআরপি থেরাপি কি?
পিআরপি হলো প্লাটিলেট রিচ প্লাজমা, যা রক্তের বিশেষ প্রক্রিয়াজাত অংশবিশেষ। বলা হয়, এতে যেসব উপাদান থাকে, তা নতুন কোষ তৈরির পাশাপাশি পুরোনো কোষগুলোকে উজ্জীবিত করে এবং এরই ভিত্তিতে এটি মানবদেহের বিভিন্ন অংশের, যেমন ত্বক, চুল, অস্থিসন্ধি, মাংসপেশির আঘাত, টেন্ডনের আঘাত, পুরোনো ক্ষতের চিকিৎসায় উপকার করে থাকে। এক্ষেত্রে রোগীর নিজ শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে সেন্ট্রিফিউজ মেশিনের মাধ্যমে প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা প্রস্তুত করা হয়। এরপর হাঁটুর অস্থিসন্ধিতে প্লেটিলেট রিচ প্লাজমা বা পিআরপি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। এর আগে

পিআরপি থেরাপি কিভাবে কাজ করে?
রক্তকণিকা প্লেটিলেট মূলত রক্তজমাট বাধঁতে ভুমিকা রাখে। এছাড়া কোন কাঁটাছেড়া বা আঘাতে শরীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্ষতস্থানে প্লেটিলেট পৌঁছে বিভিন্ন গ্রোথ ফ্যাক্টর নিঃসরণ করে। এভাবে মানব দেহের সহজাত ক্ষয়পূরণ প্রক্রিয়ায় প্লেটিলেট অংশ নেয়। একারণে সাম্প্রতিককালে টেন্ডন, লিগামেন্ট ও অস্থিসন্ধির বিভিন্ন আঘাতে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে প্ল্যাটিলেট রিচ প্লাজমা ব্যবহৃত হয়।

পিআরপি তৈরির প্রক্রিয়া ও প্রয়োগ পদ্ধতি
সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মত রক্ত সংগ্রহ করে সেন্ট্রিফিউজ মেশিনের মাধ্যমে লোহিত ও শ্বেত রক্তকণিকা থেকে প্লেটিলেট ও প্লাজমা আলাদা করা হয়। এরপর অস্টিওআর্থ্রাইটিক হাঁটুর ব্যথা স্থানে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পিআরপি দেয়া হয়। থেরাপির ছয় সপ্তাহের মাঝে রোগীর হাঁটু ব্যথা কমে আসে এবং পূর্বের চেয়ে অধিক কর্মক্ষম হয়ে থাকে। যে সকল রোগীর ক্ষেত্রে পিআরপি কার্যকর হয় তাদের দুবার থেকে ছয়বার থেরাপি প্রয়োজন পরে। থেরাপির পর ফিজিক্যাল থেরাপি দেওয়া হলে অধিকতর ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

অস্টিওআর্থ্রাইটিসে পিআরপি প্রাথমিক চিকিৎসা নয়। অন্যান্য নিয়মিত চিকিৎসার পরেও যাদের ব্যথা থাকে তাদের জন্য পিআরপি হাঁটুতে স্টেরয়েড, হায়ালুরনিক এসিড ইঞ্জেকশন এমনকি হাঁটুর অস্থিসন্ধি প্রতিস্থাপনের বিকল্প হতে পারে।

দক্ষ চিকিৎসকের অধীনে পিআরপি চিকিৎসা নিরাপদ। যেহেতু রোগীর নিজ দেহের রক্ত নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে পিআরপি থেরাপি দেয়া হয় সেহেতু এলার্জিক রিএকশন বা অন্যান্য সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকে।

পিআরপি থেরাপি কেবল অস্টিও আর্থ্রাইটিসেই নয়, লাম্বার ডিস্ক সম্পর্কিত ব্যথা, রোটেটর কাফ ইনজুরি, টেনিস এলবো, এংকেল স্প্রেইন, একিলিস টেন্ডিনাইটিস, প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস, কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম, স্যাকরো ইলিয়াক জয়েন্ট পেইনে দেওয়া যেতে পারে। সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

হককথা/নাছরিন