নিউইয়র্ক ০৭:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তীব্র গরমের রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৮৭ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক : দেশে এবার গরমের তীব্রতা অনেক বেশি। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে সূর্যের তাপ। তীব্র গরমে নেই স্বস্তি, সূর্যের খরতাপে মানুষ দিশেহারা এবং জনজীবন বিপর্যস্ত। ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা। ৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কাটাচ্ছে ঢাকাবাসী। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। সূর্যের প্রখর তাপ সাথে ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত গ্রাম-গঞ্জ ও নগরজীবন। পাশাপাশি দিবা-রাত্রি বৃষ্টির দেখা নেই। হঠাৎ করে আশ্বিনের তীব্র গাঁ জ্বলা গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শ্রমজীবী দিনমজুর, শিশু ও বয়স্ক মানুষ। সূর্যের প্রখর তাপ শরীরের উপরে বেশিক্ষণ পড়লে তা আমাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তাপ ত্বক, চোখ এবং পরিপাকতন্ত্রসহ পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে। গরম থেকে রেহাই পেতে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি আর শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহারের প্রবণতা যেন বেড়ে যায়। পরিবেশের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার কারণে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ও সংক্রমণ বেশি হয়।

যার ফলে গরমে কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় যেমন –

১. ড্রিহাইড্রেশন : আপনার হঠাৎ প্রচুর তৃষ্ণাবোধ, মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে আসা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, হাত-পা ঝিনঝিন ইত্যাদি হচ্ছে। বুঝতে পারছেন না সমস্যা টা কোথায়! আপনার যদি এ লক্ষণ গুলো দেখা যায় তাহলে বুঝবেন আপনি ড্রিহাইড্রেশনে ভুগছেন। গরম কালে প্রায় ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। আমরা যে পরিমাণ পানি খাই তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি যখন শরীর থেকে বের হয়ে যায় তখন ডিহাইড্রেশন হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম, জ্বর, ডায়রিয়া ইত্যাদির কারণেও ড্রিহাইড্রেশন হয়। অর্থাৎ শরীরে পানিশূন্যতার কারণে ড্রিহাইড্রেশন হয়। ড্রিহাইড্রেশন দেখা দিলে করণীয় হলো- সর্বপ্রথম বেশি বেশি পানি পান করা। আপনি যদি বেশি দুর্বল বোধ করেন তাহলে দ্রুত শরীরের ভারসাম্য ঠিক করতে- ফলের রস, লেবুর সরবত, স্যালাইন, ডাবের পানি খেতে পারেন। তবে ড্রিহাইড্রেশনে সব ধরনের তরল খাওয়া যাবে না যেমন- চা, কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় তরল, উচ্চ লবণ এবং উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, এগুলো আপনার তৃষ্ণা এবং শরীরের তাপমাত্রা কে আরো বাড়িয়ে দেয়। ড্রিহাইড্রেশন এড়াতে বেশি বেশি পানি এবং তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, নিয়মিত গোসল করতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

২. হাইপারথার্মিয়া : হাইপারথার্মিয়া হল দেহের অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা। এমন অবস্থায় শরীর পরিবেশগত তাপ এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। হিট স্ট্রোক, হিট ক্র্যাম্প, হিট এক্সোশন ইত্যাদি সাধারণত হাইপারথার্মিয়ার বিভিন্ন রূপ। গরমের দিনে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বোধ করা, ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া ইত্যাদি হাইপারথার্মিয়ার লক্ষণ। হাইপারথার্মিয়া হলে যা খাবেন- প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার যেমন- তেঁতুলের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি, কাঁচা আমের শরবত ইত্যাদি খেতে হবে। দেহের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখতে হবে এবং সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। মিষ্টি আলু, পালং শাক, আলু, টমেটো, বিট, কমলা লেবু, পেস্তা, কিশমিশ প্রভৃতি খাবারেও উপস্থিত থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সোডিয়াম ও পটাশিয়াম।

৩. হিট স্ট্রেস : অতিরিক্ত গরম বা রোদের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে শরীরে অস্বস্তি লাগার পাশাপাশি মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, তৃষ্ণা, মাথা ব্যথাও দেখা যেতে পারে। হিট স্ট্রেস হচ্ছে আপনার শরীরের এমন একটি অবস্থা যখন গরমে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে আর ঘামের মাধ্যমে শরীরকে ঠান্ডা করতে অক্ষম হন। এর ফলে হিট স্ট্রোকের মতো মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। আপনি যখন হিট স্ট্রেস অনুভব করবেন তখন শীতল কোন জায়গায় অবস্থান করুন এবং বিশ্রাম নিন। শরীর হাইড্রেড করতে ডাবের পানি বা স্যালাইন খান। এসময় শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এই গরমের মাঝে হিট স্ট্রেস থেকে বাঁচতে তরল খাবার গ্রহণ, কলা, বিভিন্ন ফলের রস ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে।

৪. হিট স্ট্রোক : আপনার তীব্র গরমে কি মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি , অবসাদ ও দুর্বলতা বোধ , মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, দৃষ্টিবিভ্রম, বিভ্রান্তি, অশান্তি, ইত্যাদি হয়? সাবধান! এগুলো হিট স্ট্রোকের লক্ষণ। যার কারণে মৃত্যুও হতে পারে। অতিরিক্ত গরমের কারণে হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। শিশু, বয়স্ক মানুষ, দিনমজুর বা যারা সরাসরি রোদে পরিশ্রম করে তাদের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। হিট স্ট্রোক মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। মূলত শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে এবং ঘাম বা অন্য উপায়ে তাপ কমানো না গেলে অর্থাৎ আমাদের শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে তখন হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোকে দেহের তাপমাত্রা ১০৪° ফারেনহাইটের বেশি হয়। হিট স্ট্রোকে করণীয়- প্রথমেই রোগীর শরীর ঠাণ্ডা করতে হবে এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যেতে হবে। তারপরে অবস্থা অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। হিট স্ট্রোক এড়াতে প্রচুর পানি এবং তরল খাবার খেতে হবে যেমন- তেঁতুলের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি, কাঁচা আমের শরবত ইত্যাদি। ডাবের পানি আমাদের শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখে। তাই গরমে ডাবের পানি খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অতিরিক্ত ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন এবং ভোরে হাঁটার চেষ্টা করুন।

৫. ঘামাচি : গরমকালে ঘামাচি হওয়া অতি সাধারণ লক্ষণ। ঘামাচির অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ঘামানো। শিশু বা বড় সবারই ঘামাচি হতে পারে। ঘামাচি দূর করতে ঘামাচি পাউডার ব্যবহারের পাশাপাশি ঢিলে পোশাক পরিধান করতে হবে। কিন্তু আপনি কি জানেন খাদ্যের মাধ্যমেও ঘামাচি প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করা যায়? ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার- তৈলাক্ত মাছে প্রাপ্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটগুলো ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করেন তবে এই চর্বিগুলি ত্বকের জ্বলন হ্রাস করে। সামুদ্রিক মাছ, ইলিশ, রূপচাঁদা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, মাছের ডিম ইত্যাদি ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন-ই এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন-সি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-হিস্টামিনের মতো কাজ করে যাতে তাপের প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করতে বা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়া- আপেল, গাজর, পালংশাক, ব্রকলি, কুমড়ো, তরমুজ, আম, পেঁপে, ডুমুর, বিটরুট ইত্যাদি উপকারী খাবার লিভারকে পরিষ্কার করে, যা ত্বকের নিরাময়ে সহায়তা করে। প্রচুর পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে।

৬. চিকেন পক্স বা জলবসন্ত : জলবসন্ত বা চিকেন পক্স অত্যন্ত সংক্রামক রোগ, যা varicella-zoster ভাইরাস দ্বারা হয়। শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাইরাসটি বেশি সক্রিয় হওয়ায় গরমের দিনে জলবসন্তে আক্রান্তের হার বেশি হয়ে থাকে। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পরে সাধারণত চিকেন পক্সের লক্ষণগুলো ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে দেখা যায় যেমন- শরীর ব্যথা, জ্বর, অত্যন্ত ক্লান্ত লাগা, বিরক্তি বোধ, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ব্যথার সাথে সারা দেহে লাল র‌্যাশ ও গুটি দেখা যায় এবং সেগুলো খুব চুলকায়। চিকেন পক্স হলে হালকা ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। নরম, ঠান্ডা, প্রচুর পরিমাণে পানি এবং অ্যাসিডিক নয় এমন ফল ও সবজি বেশি খেতে হবে। যেমন: আলু সেদ্ধ, মিষ্টি আলু, এভোকেডো, কলা, তরমুজ, বেরি, ব্রোকলি, শসা, পালং শাক, দই, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি। অতিরিক্ত ক্যালোরি, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার চিকেন পক্সের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। জলবসন্তে মশলাদার, নোনতা, অ্যাসিডিক এবং ক্রাঞ্চি খাবারগুলো না খাওয়া উচিত।

৭. টাইফয়েড : গরমের সাথে সাথে টাইফয়েডের প্রকোপও বাড়তে থাকে। টাইফয়েড একটি পানিবাহিত মারাত্মক রোগ যা সালমোনেলা টাইফি নামক জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার টাইফয়েডের জীবাণু ছড়ায়। অনেক জ্বর (১০৪° ফারেনহাইট), মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য এগুলো টাইফয়েডের লক্ষণ। টাইফয়েড জ্বর এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। পাশাপাশি, যেহেতু গরম কাল সেইসাথে দেহের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে রোগী ডিহাইড্রেটেড হয়ে যান। হাইড্রেটেড থাকতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। কম ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। কারণ, উচ্চ ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণে টাইফয়েড জ্বরের কারণে হজমজনিত সমস্যাগুলি আরও খারাপ হতে পারে। রান্না করা নরম শাক-সবজি খেতে হবে। পাকা কলা, বাঙ্গি, সাদা ভাত, পাস্তা, সাদা রুটি, ডিম, দই মুরগি, টার্কি, মাছ ইত্যাদি টাইফয়েড জ্বরের সময় ভাল খাবার। সয়াবিন, বাদাম, বীজ এবং ডিম জাতীয় খাবার ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এসব খাবার টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপকারী কারণ এগুলো দেহে প্রদাহ কমায়। হাই ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার দেহে শক্তি যোগায়। মশলাদার খাবার এবং ফ্যাট বেশি খাবারগুলি হজম করাও কঠিন হতে পারে। এছাড়া কাঁচা শাকসবজি, কাঁচা বেরি, এগুলো না খাওয়াই ভাল।

৮. ফুড পয়জনিং : গরমের আরেকটি সমস্যা হল পেট খারাপ হওয়া বা হজমে সমস্যা হওয়া। আমরা যেসব খাবার খাই তা সবসময় নিরাপদ নাও হতে পারে। দূষিত খাবারে (বাসি ও বাহিরের খাবার) ও পানিতে বিভিন্ন জীবাণু বা ব্যাক্টেরিয়া থাকতে পারে। আমরা যখন এই দূষিত খাবার বা দূষিত পানি গ্রহণ করি তখন আমাদের হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এটাই ফুড পয়জনিং। অস্বস্তি, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, জ্বর জ্বর ভাব বা জ্বর হওয়া, ক্লান্তি বোধ করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণ ঘটে এমন খাবার খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে কখনও কখনও কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হয়। পেটের সমস্যায় বা ফুড পয়জনিং হলে স্যালাইন বা তরল খাবার বেশি খেতে হবে। কলায় প্রচুর পটাশিয়াম আছে যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট প্রতিস্থাপনে সহায়তা করে। টক দই গরমের জন্য ভীষণ উপকারী। টক দই খাবার হজমে সাহায্য করে। ফুড পয়জনিং হলে দুগ্ধজাত খাবার, চা, কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন যুক্ত খাবার রাখুন। যেমন- টাটকা ফল, টাটকা সবজি। বেশি করে সবুজ সবজি , টমেটো, তরমুজ, শশা, আনারস, মিষ্টি আলু এবং সালাদ খেলে পেট সুস্থ থাকবে হজম ভালো হবে। ঘন ঘন ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাদ্য গ্রহণের সাথে সাথে খাবার রান্না ও সংরক্ষণ নিরাপদ রাখার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

আমাদের স্বাস্থ্যের উপর আবহাওয়া ও পরিবেশের অনেক বড় ভূমিকা আছে। সেই কথা বিবেচনা করে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও সচেতনতা বৃদ্ধি করলে আমরা সহজেই দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারি। এই গরমে দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে এবং পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেলে অনেক সমস্যা থেকেই মুক্ত থাকা যাবে। অর্থাৎ গরমকালের এই সব সমস্যার সমাধানই হতে পারে খাদ্য। তাই পুষ্টিকর খাবার খান ও এই গরমে সুস্থ থাকুন। লেখক : সিনিয়র সাইন্টিস্ট, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি1
সুমি/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

তীব্র গরমের রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায়

প্রকাশের সময় : ০২:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৩

হককথা ডেস্ক : দেশে এবার গরমের তীব্রতা অনেক বেশি। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে সূর্যের তাপ। তীব্র গরমে নেই স্বস্তি, সূর্যের খরতাপে মানুষ দিশেহারা এবং জনজীবন বিপর্যস্ত। ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা। ৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন কাটাচ্ছে ঢাকাবাসী। তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। সূর্যের প্রখর তাপ সাথে ভ্যাপসা গরমে ক্লান্ত গ্রাম-গঞ্জ ও নগরজীবন। পাশাপাশি দিবা-রাত্রি বৃষ্টির দেখা নেই। হঠাৎ করে আশ্বিনের তীব্র গাঁ জ্বলা গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শ্রমজীবী দিনমজুর, শিশু ও বয়স্ক মানুষ। সূর্যের প্রখর তাপ শরীরের উপরে বেশিক্ষণ পড়লে তা আমাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। তাপ ত্বক, চোখ এবং পরিপাকতন্ত্রসহ পুরো শরীরকে প্রভাবিত করে। গরম থেকে রেহাই পেতে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি আর শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহারের প্রবণতা যেন বেড়ে যায়। পরিবেশের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার কারণে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ও সংক্রমণ বেশি হয়।

যার ফলে গরমে কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় যেমন –

১. ড্রিহাইড্রেশন : আপনার হঠাৎ প্রচুর তৃষ্ণাবোধ, মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে আসা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরানো, হাত-পা ঝিনঝিন ইত্যাদি হচ্ছে। বুঝতে পারছেন না সমস্যা টা কোথায়! আপনার যদি এ লক্ষণ গুলো দেখা যায় তাহলে বুঝবেন আপনি ড্রিহাইড্রেশনে ভুগছেন। গরম কালে প্রায় ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। আমরা যে পরিমাণ পানি খাই তার চেয়ে বেশি পরিমাণ পানি যখন শরীর থেকে বের হয়ে যায় তখন ডিহাইড্রেশন হতে পারে। অতিরিক্ত ঘাম, জ্বর, ডায়রিয়া ইত্যাদির কারণেও ড্রিহাইড্রেশন হয়। অর্থাৎ শরীরে পানিশূন্যতার কারণে ড্রিহাইড্রেশন হয়। ড্রিহাইড্রেশন দেখা দিলে করণীয় হলো- সর্বপ্রথম বেশি বেশি পানি পান করা। আপনি যদি বেশি দুর্বল বোধ করেন তাহলে দ্রুত শরীরের ভারসাম্য ঠিক করতে- ফলের রস, লেবুর সরবত, স্যালাইন, ডাবের পানি খেতে পারেন। তবে ড্রিহাইড্রেশনে সব ধরনের তরল খাওয়া যাবে না যেমন- চা, কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় তরল, উচ্চ লবণ এবং উচ্চ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, এগুলো আপনার তৃষ্ণা এবং শরীরের তাপমাত্রা কে আরো বাড়িয়ে দেয়। ড্রিহাইড্রেশন এড়াতে বেশি বেশি পানি এবং তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, নিয়মিত গোসল করতে হবে এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

২. হাইপারথার্মিয়া : হাইপারথার্মিয়া হল দেহের অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা। এমন অবস্থায় শরীর পরিবেশগত তাপ এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। হিট স্ট্রোক, হিট ক্র্যাম্প, হিট এক্সোশন ইত্যাদি সাধারণত হাইপারথার্মিয়ার বিভিন্ন রূপ। গরমের দিনে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বোধ করা, ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া ইত্যাদি হাইপারথার্মিয়ার লক্ষণ। হাইপারথার্মিয়া হলে যা খাবেন- প্রচুর পরিমাণে পানি এবং তরল খাবার যেমন- তেঁতুলের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি, কাঁচা আমের শরবত ইত্যাদি খেতে হবে। দেহের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখতে হবে এবং সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। মিষ্টি আলু, পালং শাক, আলু, টমেটো, বিট, কমলা লেবু, পেস্তা, কিশমিশ প্রভৃতি খাবারেও উপস্থিত থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সোডিয়াম ও পটাশিয়াম।

৩. হিট স্ট্রেস : অতিরিক্ত গরম বা রোদের মধ্যে বেশিক্ষণ থাকলে শরীরে অস্বস্তি লাগার পাশাপাশি মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, তৃষ্ণা, মাথা ব্যথাও দেখা যেতে পারে। হিট স্ট্রেস হচ্ছে আপনার শরীরের এমন একটি অবস্থা যখন গরমে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে আর ঘামের মাধ্যমে শরীরকে ঠান্ডা করতে অক্ষম হন। এর ফলে হিট স্ট্রোকের মতো মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। আপনি যখন হিট স্ট্রেস অনুভব করবেন তখন শীতল কোন জায়গায় অবস্থান করুন এবং বিশ্রাম নিন। শরীর হাইড্রেড করতে ডাবের পানি বা স্যালাইন খান। এসময় শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এই গরমের মাঝে হিট স্ট্রেস থেকে বাঁচতে তরল খাবার গ্রহণ, কলা, বিভিন্ন ফলের রস ইত্যাদি বেশি বেশি খেতে হবে।

৪. হিট স্ট্রোক : আপনার তীব্র গরমে কি মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি , অবসাদ ও দুর্বলতা বোধ , মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, দৃষ্টিবিভ্রম, বিভ্রান্তি, অশান্তি, ইত্যাদি হয়? সাবধান! এগুলো হিট স্ট্রোকের লক্ষণ। যার কারণে মৃত্যুও হতে পারে। অতিরিক্ত গরমের কারণে হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোকের প্রধান কারণ পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন। শিশু, বয়স্ক মানুষ, দিনমজুর বা যারা সরাসরি রোদে পরিশ্রম করে তাদের হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। হিট স্ট্রোক মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। মূলত শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে এবং ঘাম বা অন্য উপায়ে তাপ কমানো না গেলে অর্থাৎ আমাদের শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে তখন হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোকে দেহের তাপমাত্রা ১০৪° ফারেনহাইটের বেশি হয়। হিট স্ট্রোকে করণীয়- প্রথমেই রোগীর শরীর ঠাণ্ডা করতে হবে এবং খোলা বা ফাঁকা স্থানে নিয়ে যেতে হবে। তারপরে অবস্থা অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। হিট স্ট্রোক এড়াতে প্রচুর পানি এবং তরল খাবার খেতে হবে যেমন- তেঁতুলের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি, কাঁচা আমের শরবত ইত্যাদি। ডাবের পানি আমাদের শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখে। তাই গরমে ডাবের পানি খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অতিরিক্ত ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন এবং ভোরে হাঁটার চেষ্টা করুন।

৫. ঘামাচি : গরমকালে ঘামাচি হওয়া অতি সাধারণ লক্ষণ। ঘামাচির অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত ঘামানো। শিশু বা বড় সবারই ঘামাচি হতে পারে। ঘামাচি দূর করতে ঘামাচি পাউডার ব্যবহারের পাশাপাশি ঢিলে পোশাক পরিধান করতে হবে। কিন্তু আপনি কি জানেন খাদ্যের মাধ্যমেও ঘামাচি প্রতিরোধ এবং প্রতিকার করা যায়? ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার- তৈলাক্ত মাছে প্রাপ্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটগুলো ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রহণ করেন তবে এই চর্বিগুলি ত্বকের জ্বলন হ্রাস করে। সামুদ্রিক মাছ, ইলিশ, রূপচাঁদা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, মাছের ডিম ইত্যাদি ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন-ই এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন-সি প্রাকৃতিক অ্যান্টি-হিস্টামিনের মতো কাজ করে যাতে তাপের প্রতিক্রিয়া পরিচালনা করতে বা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এছাড়া- আপেল, গাজর, পালংশাক, ব্রকলি, কুমড়ো, তরমুজ, আম, পেঁপে, ডুমুর, বিটরুট ইত্যাদি উপকারী খাবার লিভারকে পরিষ্কার করে, যা ত্বকের নিরাময়ে সহায়তা করে। প্রচুর পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ঘামাচি সারানোর জন্য ত্বক সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে এবং ঘাম শুকাতে হবে।

৬. চিকেন পক্স বা জলবসন্ত : জলবসন্ত বা চিকেন পক্স অত্যন্ত সংক্রামক রোগ, যা varicella-zoster ভাইরাস দ্বারা হয়। শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাইরাসটি বেশি সক্রিয় হওয়ায় গরমের দিনে জলবসন্তে আক্রান্তের হার বেশি হয়ে থাকে। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পরে সাধারণত চিকেন পক্সের লক্ষণগুলো ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে দেখা যায় যেমন- শরীর ব্যথা, জ্বর, অত্যন্ত ক্লান্ত লাগা, বিরক্তি বোধ, ক্ষুধামান্দ্য, মাথা ব্যথার সাথে সারা দেহে লাল র‌্যাশ ও গুটি দেখা যায় এবং সেগুলো খুব চুলকায়। চিকেন পক্স হলে হালকা ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। নরম, ঠান্ডা, প্রচুর পরিমাণে পানি এবং অ্যাসিডিক নয় এমন ফল ও সবজি বেশি খেতে হবে। যেমন: আলু সেদ্ধ, মিষ্টি আলু, এভোকেডো, কলা, তরমুজ, বেরি, ব্রোকলি, শসা, পালং শাক, দই, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি। অতিরিক্ত ক্যালোরি, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার চিকেন পক্সের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। জলবসন্তে মশলাদার, নোনতা, অ্যাসিডিক এবং ক্রাঞ্চি খাবারগুলো না খাওয়া উচিত।

৭. টাইফয়েড : গরমের সাথে সাথে টাইফয়েডের প্রকোপও বাড়তে থাকে। টাইফয়েড একটি পানিবাহিত মারাত্মক রোগ যা সালমোনেলা টাইফি নামক জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। দূষিত পানি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার টাইফয়েডের জীবাণু ছড়ায়। অনেক জ্বর (১০৪° ফারেনহাইট), মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য এগুলো টাইফয়েডের লক্ষণ। টাইফয়েড জ্বর এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। পাশাপাশি, যেহেতু গরম কাল সেইসাথে দেহের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে রোগী ডিহাইড্রেটেড হয়ে যান। হাইড্রেটেড থাকতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। কম ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। কারণ, উচ্চ ফাইবার জাতীয় খাবার গ্রহণে টাইফয়েড জ্বরের কারণে হজমজনিত সমস্যাগুলি আরও খারাপ হতে পারে। রান্না করা নরম শাক-সবজি খেতে হবে। পাকা কলা, বাঙ্গি, সাদা ভাত, পাস্তা, সাদা রুটি, ডিম, দই মুরগি, টার্কি, মাছ ইত্যাদি টাইফয়েড জ্বরের সময় ভাল খাবার। সয়াবিন, বাদাম, বীজ এবং ডিম জাতীয় খাবার ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এসব খাবার টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপকারী কারণ এগুলো দেহে প্রদাহ কমায়। হাই ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার দেহে শক্তি যোগায়। মশলাদার খাবার এবং ফ্যাট বেশি খাবারগুলি হজম করাও কঠিন হতে পারে। এছাড়া কাঁচা শাকসবজি, কাঁচা বেরি, এগুলো না খাওয়াই ভাল।

৮. ফুড পয়জনিং : গরমের আরেকটি সমস্যা হল পেট খারাপ হওয়া বা হজমে সমস্যা হওয়া। আমরা যেসব খাবার খাই তা সবসময় নিরাপদ নাও হতে পারে। দূষিত খাবারে (বাসি ও বাহিরের খাবার) ও পানিতে বিভিন্ন জীবাণু বা ব্যাক্টেরিয়া থাকতে পারে। আমরা যখন এই দূষিত খাবার বা দূষিত পানি গ্রহণ করি তখন আমাদের হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এটাই ফুড পয়জনিং। অস্বস্তি, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, জ্বর জ্বর ভাব বা জ্বর হওয়া, ক্লান্তি বোধ করা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি সাধারণত সংক্রমণ ঘটে এমন খাবার খাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে কখনও কখনও কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হয়। পেটের সমস্যায় বা ফুড পয়জনিং হলে স্যালাইন বা তরল খাবার বেশি খেতে হবে। কলায় প্রচুর পটাশিয়াম আছে যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট প্রতিস্থাপনে সহায়তা করে। টক দই গরমের জন্য ভীষণ উপকারী। টক দই খাবার হজমে সাহায্য করে। ফুড পয়জনিং হলে দুগ্ধজাত খাবার, চা, কফি বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন যুক্ত খাবার রাখুন। যেমন- টাটকা ফল, টাটকা সবজি। বেশি করে সবুজ সবজি , টমেটো, তরমুজ, শশা, আনারস, মিষ্টি আলু এবং সালাদ খেলে পেট সুস্থ থাকবে হজম ভালো হবে। ঘন ঘন ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাদ্য গ্রহণের সাথে সাথে খাবার রান্না ও সংরক্ষণ নিরাপদ রাখার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।

আমাদের স্বাস্থ্যের উপর আবহাওয়া ও পরিবেশের অনেক বড় ভূমিকা আছে। সেই কথা বিবেচনা করে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও সচেতনতা বৃদ্ধি করলে আমরা সহজেই দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারি। এই গরমে দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে এবং পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খেলে অনেক সমস্যা থেকেই মুক্ত থাকা যাবে। অর্থাৎ গরমকালের এই সব সমস্যার সমাধানই হতে পারে খাদ্য। তাই পুষ্টিকর খাবার খান ও এই গরমে সুস্থ থাকুন। লেখক : সিনিয়র সাইন্টিস্ট, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি1
সুমি/হককথা