নিউইয়র্ক ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

স্বৈরসন্ত্রাস থেকে মবসন্ত্রাস : মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৯ বার পঠিত

সাঈদ তারেক: কি বিভৎস্য! কি ভয়াবহ! কি নৃশংস! একদল উন্মত্ত পশু হিংস্র হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে কবর থেকে এক লোকের লাশ তুলে আনলো. রাস্তায় ফেলে তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলো! চার পাশে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে সেই বর্বরতার দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলো আরও কতগুলো দ্বিপদ জন্তু! এরা নাকি তৌহিদী জনতা! কেমন তৌহিদী জনতা, যারা মনুষ্যত্ব বিবেকবোধ কবর দিয়ে পশু হয়ে ওঠে! মানুষ দুরের কথা, একটা মরা কুকুরকেও পথে পেলে আমরা তা মাটিতে পুতে ফেলি। আর এই জানোয়ারগুলা একটা মরা মানুষকে কবর থেকে তুলে এনে জ্বালিয়ে দিলো! ইসলামের নামে! এই নাকি ওদের কাছে ইসলাম! আফগানিস্তানের তালিবানী শাষনে কি কখনও এমন ঘটনা ঘটে! কারা এইসব বর্বরতার দীক্ষাগুরু! কারা মানুষকে জানোয়ার হওয়ার শিক্ষা দেয়!
লোকটার নামের সাথেই পাগল বা পাগলা শব্দটা জুড়ে দেওয়া আছে। তার অর্থ মানুষ তাকে এক ধরনের পাগল বলেই জানে। তার এই পাগলামী যে গতকালই প্রকাশ পেয়েছে তা না। এই লোক মারাও গেছে দুই মাস আগে। বয়ষ্ক লোক। দীর্ঘদিন ধরেই তার নিজস্ব একটা মতবাদ প্রচার করে আসছে। সেটা যে কেউ করতেই পারে। এটাকে কেউ পাগলামিও মনে করতে পারে। মীর্জা আহমদ কাদিয়ানী বা আবুল আলা মওদুদী যখন ভিন্ন মাজহাব ঘোষনা করেছিলেন তখনও তাদেরকে নানা অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। ইসলামে এমন মতবাদ অসংখ্য। চার খলিফার শাসনকাল শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তিনটা প্রধান মতবাদের উদ্ভব ঘটে। সুন্নি শিয়া খারেজী। সুন্নীরা আবার প্রধান চার ভাগে বিভক্ত। হানাফি মালিকি সাফিয়িয়ি হানবেলী। শিয়ারা চৌদ্দ ভাগ। খারেজীরাও বর্তমানে দুই ভাগ। সুন্নীদের মধ্যে সুফিবাদ একটা অন্যতম স্কুল অফ থট। এরা ৪৫ ভাগ। এছাড়া সুন্নীদের মধ্যে আছে দেওবন্দী ওহাবী বেরেলভী আহমদীয়া মাইজভান্ডারি জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কয়েকটা প্রধান গোষ্ঠী। মুসলমানদের প্রাচীন মতবাদসমূহের মধ্যে যেগুলোর উল্লেখ পাওয়া যায়- ইবাদী, আশারী (প্রবর্তন ১০ম শতকে), মাতুরিদি (প্রবর্তন ১০শতকে), মুতাজিলী (৮ম শতক), মুরজিয়া, কাদিরীয়া, জাবিরীয়া, জামিইয়া, বাতিনীয়া। আরও আছে ইসমাইলী, বাহাই, কুর্দী প্রমুখ গোষ্ঠী। প্রত্যেকেই মনে করে যার যার মতবাদ বা মাজহাব সঠিক। তারপরও দেড় হাজার বছর ধরে মুসলমানরা যার যার বিশ্বাষ এবং আকিদা নিয়েই বসবাস করছে। নবী করীম (স:) এর ওফাতের পর এবং মধ্যযুগে মতভেদের কারনে নিজেদের মধ্যে খুনাখুনি করেছে, দিনশেষে মুসলমান বলেই নিজেদেরকে দাবী করেছে।
আমাদের দেশে বা ভারতবর্ষে ইসলাম এসেছে বাইরে থেকে। ধর্ম প্রচার ব্যবসা বা দেশজয়ের উদ্দেশ্যে আগত মুসলমানদের সংখ্যা ছিল নেহায়েতই কম। এখানে ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়েছে ধর্মান্তর বৈবাহিক বা জন্মসূত্রে। ধর্মপ্রচারে বহিরাগতরা কোন জবরদস্তি করে নাই বা স্থানীয় ধর্ম বিশ্বাসীদেরকে নির্মূলের পথেও যায় নাই, বরঞ্চ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি অবলম্বন করায় খুব তাড়াতাড়ি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে যেতে পেরেছে। ফলে ইসলামী সংষ্কৃতি বা বহিরাগত সংষ্কৃতির সাথে স্থানীয় সংষ্কৃতির মেলবন্ধনে এ অঞ্চলে একটা ভিন্ন সংষ্কৃতি গড়ে উঠেছে। তারই ধারা আমরা বহন করে চলেছি এই বাংলায়ও। এখানকার মুসলমানরা এটাকেই তাদের সংষ্কৃতি মানে। এতে পীর ফকির আছে তাদের মাজার আছে, বাউল আছে ভাটিয়ালি আছে। মুর্শিদী আছে জারী গান আছে। নাটক সিনেমা আছে ভাষ্কর্য আছে। চাইলেই এই সংষ্কৃতি থেকে মুসলমানদেরকে বের করে আনা যাবে! হ্যাঁ, যাবে। মোটিভিশনের মাধ্যমে। তার জন্য সময় লাগবে। যদি কোন সম্প্রদায় মনে করে এই মুসলমানদেরকে আরবী পোশাক পড়তে হবে আরবী ভাষায় কথা বলতে হবে আরবী খানা খেতে হবে, বাংগালী সংষ্কৃতির নাম নিশানা মুছে ফেলা হবে, বা বাঙালী মুসলমানদেরকে হাজার বছরের সংষ্কৃতির ধারা থেকে বের করে আনতে হবে- তা কি মেরে কেটে! মব সন্ত্রাস করে! মাজার ভেঙ্গে! পীরের আস্তানা গুড়িয়ে দিয়ে! ক’দিন পর পর তথাকথিত তৌহিদী জনতার সাইনবোর্ডের আড়ালে নিজেদের গোষ্ঠী মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে!
কারা গোয়ালন্দের ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি। কার নেতৃত্বে ঘটেছে সেই রাজনৈতিক নেতার নাম পরিচয়ও মিডিয়ায় এসেছে। সরকারও জানে। কিছুই করবে না। হম্বিতম্বিই সার! কারন এই বর্বরতা যারা চালিয়েছে তারাই সরকার চালায়। প্রফেসর সাহেব যেন এখানে এক অসহায় কলুর বলদ! এই ঘটনার পরপর সারা দেশ যখন শিউড়ে উঠেছে সোস্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়, তখন কিছু কামিনাকে দেখা গেল ঘটনার জাস্টিফিকেশনে নুরাল পাগলার নানা কিচ্ছাকাহিনী প্রকাশ করছে, তার চরিত্র নিয়েও কটাক্ষ করছে। এই বদ-বাহিনীকে আমি চিনি। এরা একটা বিশেষ দলের প্রপাগান্ডা সেলের সদস্য। এরা আ করলেই বুঝে যাই কি বলতে চায়। লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়ে, ভাল জ্ঞানবুদ্ধি রাখে, তারপরও যখন পৈচাশিক কোন ঘটনার পক্ষে সাফাই গায়, জাস্টিফাই করতে নানা কুযুক্তি আনে- বুঝতে কষ্ট হয় না কি পরিমান মগজ ধোলাই এদের করা হয়েছে! ছেলেগুলোর জন্য দু:খ হয়। এরাই দেশে ইসলাম কায়েম করবে! এভাবেই! মেরেকেটে! জোর জবরদস্তি করে! উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনা কায়েম করেছিলো স্বৈরসন্ত্রাস, আর এখন যদি ইসলামের নামে মবসন্ত্রাস কায়েম করা হয়, তফাৎ কি হলো! একই মুদ্রার এ পিঠ ওপিঠ!
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

স্বৈরসন্ত্রাস থেকে মবসন্ত্রাস : মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ!

প্রকাশের সময় : ০৩:০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাঈদ তারেক: কি বিভৎস্য! কি ভয়াবহ! কি নৃশংস! একদল উন্মত্ত পশু হিংস্র হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়ে কবর থেকে এক লোকের লাশ তুলে আনলো. রাস্তায় ফেলে তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলো! চার পাশে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে সেই বর্বরতার দৃশ্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলো আরও কতগুলো দ্বিপদ জন্তু! এরা নাকি তৌহিদী জনতা! কেমন তৌহিদী জনতা, যারা মনুষ্যত্ব বিবেকবোধ কবর দিয়ে পশু হয়ে ওঠে! মানুষ দুরের কথা, একটা মরা কুকুরকেও পথে পেলে আমরা তা মাটিতে পুতে ফেলি। আর এই জানোয়ারগুলা একটা মরা মানুষকে কবর থেকে তুলে এনে জ্বালিয়ে দিলো! ইসলামের নামে! এই নাকি ওদের কাছে ইসলাম! আফগানিস্তানের তালিবানী শাষনে কি কখনও এমন ঘটনা ঘটে! কারা এইসব বর্বরতার দীক্ষাগুরু! কারা মানুষকে জানোয়ার হওয়ার শিক্ষা দেয়!
লোকটার নামের সাথেই পাগল বা পাগলা শব্দটা জুড়ে দেওয়া আছে। তার অর্থ মানুষ তাকে এক ধরনের পাগল বলেই জানে। তার এই পাগলামী যে গতকালই প্রকাশ পেয়েছে তা না। এই লোক মারাও গেছে দুই মাস আগে। বয়ষ্ক লোক। দীর্ঘদিন ধরেই তার নিজস্ব একটা মতবাদ প্রচার করে আসছে। সেটা যে কেউ করতেই পারে। এটাকে কেউ পাগলামিও মনে করতে পারে। মীর্জা আহমদ কাদিয়ানী বা আবুল আলা মওদুদী যখন ভিন্ন মাজহাব ঘোষনা করেছিলেন তখনও তাদেরকে নানা অপবাদ দেওয়া হয়েছিল। ইসলামে এমন মতবাদ অসংখ্য। চার খলিফার শাসনকাল শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তিনটা প্রধান মতবাদের উদ্ভব ঘটে। সুন্নি শিয়া খারেজী। সুন্নীরা আবার প্রধান চার ভাগে বিভক্ত। হানাফি মালিকি সাফিয়িয়ি হানবেলী। শিয়ারা চৌদ্দ ভাগ। খারেজীরাও বর্তমানে দুই ভাগ। সুন্নীদের মধ্যে সুফিবাদ একটা অন্যতম স্কুল অফ থট। এরা ৪৫ ভাগ। এছাড়া সুন্নীদের মধ্যে আছে দেওবন্দী ওহাবী বেরেলভী আহমদীয়া মাইজভান্ডারি জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কয়েকটা প্রধান গোষ্ঠী। মুসলমানদের প্রাচীন মতবাদসমূহের মধ্যে যেগুলোর উল্লেখ পাওয়া যায়- ইবাদী, আশারী (প্রবর্তন ১০ম শতকে), মাতুরিদি (প্রবর্তন ১০শতকে), মুতাজিলী (৮ম শতক), মুরজিয়া, কাদিরীয়া, জাবিরীয়া, জামিইয়া, বাতিনীয়া। আরও আছে ইসমাইলী, বাহাই, কুর্দী প্রমুখ গোষ্ঠী। প্রত্যেকেই মনে করে যার যার মতবাদ বা মাজহাব সঠিক। তারপরও দেড় হাজার বছর ধরে মুসলমানরা যার যার বিশ্বাষ এবং আকিদা নিয়েই বসবাস করছে। নবী করীম (স:) এর ওফাতের পর এবং মধ্যযুগে মতভেদের কারনে নিজেদের মধ্যে খুনাখুনি করেছে, দিনশেষে মুসলমান বলেই নিজেদেরকে দাবী করেছে।
আমাদের দেশে বা ভারতবর্ষে ইসলাম এসেছে বাইরে থেকে। ধর্ম প্রচার ব্যবসা বা দেশজয়ের উদ্দেশ্যে আগত মুসলমানদের সংখ্যা ছিল নেহায়েতই কম। এখানে ইসলাম ধর্ম বিশ্বাসীদের সংখ্যা বেড়েছে ধর্মান্তর বৈবাহিক বা জন্মসূত্রে। ধর্মপ্রচারে বহিরাগতরা কোন জবরদস্তি করে নাই বা স্থানীয় ধর্ম বিশ্বাসীদেরকে নির্মূলের পথেও যায় নাই, বরঞ্চ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি অবলম্বন করায় খুব তাড়াতাড়ি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে যেতে পেরেছে। ফলে ইসলামী সংষ্কৃতি বা বহিরাগত সংষ্কৃতির সাথে স্থানীয় সংষ্কৃতির মেলবন্ধনে এ অঞ্চলে একটা ভিন্ন সংষ্কৃতি গড়ে উঠেছে। তারই ধারা আমরা বহন করে চলেছি এই বাংলায়ও। এখানকার মুসলমানরা এটাকেই তাদের সংষ্কৃতি মানে। এতে পীর ফকির আছে তাদের মাজার আছে, বাউল আছে ভাটিয়ালি আছে। মুর্শিদী আছে জারী গান আছে। নাটক সিনেমা আছে ভাষ্কর্য আছে। চাইলেই এই সংষ্কৃতি থেকে মুসলমানদেরকে বের করে আনা যাবে! হ্যাঁ, যাবে। মোটিভিশনের মাধ্যমে। তার জন্য সময় লাগবে। যদি কোন সম্প্রদায় মনে করে এই মুসলমানদেরকে আরবী পোশাক পড়তে হবে আরবী ভাষায় কথা বলতে হবে আরবী খানা খেতে হবে, বাংগালী সংষ্কৃতির নাম নিশানা মুছে ফেলা হবে, বা বাঙালী মুসলমানদেরকে হাজার বছরের সংষ্কৃতির ধারা থেকে বের করে আনতে হবে- তা কি মেরে কেটে! মব সন্ত্রাস করে! মাজার ভেঙ্গে! পীরের আস্তানা গুড়িয়ে দিয়ে! ক’দিন পর পর তথাকথিত তৌহিদী জনতার সাইনবোর্ডের আড়ালে নিজেদের গোষ্ঠী মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে!
কারা গোয়ালন্দের ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি। কার নেতৃত্বে ঘটেছে সেই রাজনৈতিক নেতার নাম পরিচয়ও মিডিয়ায় এসেছে। সরকারও জানে। কিছুই করবে না। হম্বিতম্বিই সার! কারন এই বর্বরতা যারা চালিয়েছে তারাই সরকার চালায়। প্রফেসর সাহেব যেন এখানে এক অসহায় কলুর বলদ! এই ঘটনার পরপর সারা দেশ যখন শিউড়ে উঠেছে সোস্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড়, তখন কিছু কামিনাকে দেখা গেল ঘটনার জাস্টিফিকেশনে নুরাল পাগলার নানা কিচ্ছাকাহিনী প্রকাশ করছে, তার চরিত্র নিয়েও কটাক্ষ করছে। এই বদ-বাহিনীকে আমি চিনি। এরা একটা বিশেষ দলের প্রপাগান্ডা সেলের সদস্য। এরা আ করলেই বুঝে যাই কি বলতে চায়। লেখাপড়া জানা ছেলেমেয়ে, ভাল জ্ঞানবুদ্ধি রাখে, তারপরও যখন পৈচাশিক কোন ঘটনার পক্ষে সাফাই গায়, জাস্টিফাই করতে নানা কুযুক্তি আনে- বুঝতে কষ্ট হয় না কি পরিমান মগজ ধোলাই এদের করা হয়েছে! ছেলেগুলোর জন্য দু:খ হয়। এরাই দেশে ইসলাম কায়েম করবে! এভাবেই! মেরেকেটে! জোর জবরদস্তি করে! উন্নয়নের নামে শেখ হাসিনা কায়েম করেছিলো স্বৈরসন্ত্রাস, আর এখন যদি ইসলামের নামে মবসন্ত্রাস কায়েম করা হয়, তফাৎ কি হলো! একই মুদ্রার এ পিঠ ওপিঠ!
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।