ভেদাভেদ ভুলে ফ্যাসিবাদের পতনে সর্বাত্মক লড়াইয়ের আহবান
- প্রকাশের সময় : ০৬:৫৪:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
- / ৪৯ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : ১৬জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজে সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবদুল আউয়াল ঠাকুর, বিএফইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বিএফইউজের প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, ডিইউজের সহ সভাপতি রফিক মোহাম্মদ ও রাশেদুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন, বিএফইউজের সাবেক সহকারী মহাসচিব আহমেদ মতিউর রহমান, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম, কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম, জনকল্যাণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন রাজ্জাক, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক রফিক লিটন, দফতর সম্পাদক ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, সদস্য এম মোশাররফ হোসেন, তালুকদার রুমি, ফখরুল ইসলাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মো: শহিদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, কার্যনির্বাহী সদস্য এইচ এম আল আমিন প্রমুখ।
আলোচনা সভায় এম আবদুল্লাহ প্রশ্ন রেখে বলেন, কয়টি সংবাদমাধ্যম কালো দিবসের খবর ছেপেছে? ইত্তেফাকসহ যারা এই দিবসের ভিক্টিম ছিলো, পত্রিকার মালিকানা হারিয়েছিল, তারা কেনো এ দিবসটি পালন এমনকি একটু স্মরণ পর্যন্ত করে না? এই দিবস যারা পালন করে তাদের নিউজও ছাপে না। তিনি বলেন, ১৫ আগষ্টের ট্রাজেডির পর ইত্তেফাক লিখেছিল ‘দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির উচ্ছেদ হয়েছে’। সেদিন নিউজে লেখা হয়েছিলো ‘জাতির বৃহত্তর স্বার্থে শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতাচ্যুত করে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার গঠন’। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমানের স্ব-পরিবারে হত্যার কথা পর্যন্ত লেখা হয়নি। কিন্তু আজ তারা ১৫ আগষ্ট কান্নার রোল ফেল, কিন্তু ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস পালন করে না। আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।
বিএফইউজে সভাপতি সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই সংগ্রামে শামিল হওয়ার আহবান জানান। নুরুল আমিন রোকন বলেন, বাকশালের সময় শুধু সংবাদপত্র না, গোটা জাতির উপর অন্ধকার নেমে এসেছিলো। সেই সময় মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাটুকু ছিলো না। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়ির সাথে তুলনা করা হয়েছিলো। সেই অন্ধকার থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মুক্ত করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আজকে আবার অঘোষিত বাকশাল গঠন করে রাষ্ট্র শাসন পরিচালনা করা হচ্ছে। বিচারবিভাগকে সম্পূর্ণরূপে দলীয়করণ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার একটিই উপায়, সেটা হলো রাজপথে আন্দোলন। আমাদের মনে রাখতে হবে কোনো ফ্যাসিস্ট আন্দোলন ছাড়া বিতাড়িত হয় না।
এম এ আজিজ বলেন, প্রেসক্লাবের জমি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান, এই যে বিল্ডিং এটাও দিয়ে গেছেন বেগম খালেদা জিয়া। অর্থাৎ সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য যা যা করা দরকার তা করেছে বিএনপি। তিনি বলেন, বিএনপি দূর্নীতিবাজ দল না। দূর্নীতির ট্রেন্ট চালু করেছে আওয়ামী লীগ। আজ ১৫বছর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। তাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারে না। কেউ কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে অঙ্গহারা। শহিদুল ইসলাম বলেন, বাকশালের সময় সকল পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে গণতন্ত্রকে কবরে পাঠানো হয়েছিলো। ঠিক এখন আবার সেই আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরেছে। তারা এবার সংবাদমাধ্যম সেই হারে বন্ধ না করলেও তা নিয়ন্ত্রণ করছে। মানে পত্রিকা আছে কিন্তু স্বাধীনভাবে লেখার অধিকার নেই।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ১৬ জুন শুধু সংবাদপত্রের জন্য না, এদেশের মানুষের জন্য কালো দিবস। ৭২-৭৫এর সময় গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরা হয়েছিলো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি মাত্র ১টাকার বিনিময়ে আজকের এই জাতীয় প্রেসক্লাবের জমিটি দিয়ে গিয়েছিলেন।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, অতীতে ঐক্যবদ্ধভাবে সংবাদ পত্রের কালো দিবস পালন করা হতো। কিন্তু সাংবাদিকদের সুবিধাভোগী একটি অংশ এখন আর এই দিবস পালন করে না। কারণ এই দিবস পালন করলে তৎকালিন সরকারের সমালোচনা করতে হবে। তাই এখন যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চায় তারাই শুধু এই দিবসটি পালন করে।