নিউইয়র্ক ০৭:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী ঝুঁকিপূর্ণ!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩৯:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪
  • / ১২৬ বার পঠিত

(ব্রিটিশ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, যা এখানে তুলে ধরা হলো। অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু)
গত বাংলাদেশে কী ঘটবে সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আমি আগের চেয়ে দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করছি যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে এখন আর স্বাভাবিকভাবে দেশ পরিচালনার কোনো উপায় নেই। আমি কেন এই কথা বলছি?
(ক) আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অন্তত ১৫৫ জন নিহত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে। তবে স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, প্রকৃত সংখ্যা এর বহুগুণ বেশি হতে পারে। শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থকদের কাছে ‘কোটা’ ইস্যু এখন আর আন্দোলনের প্রধান বিষয় নয়; বরং ইস্যু দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র কর্তৃক বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা।
(খ) আওয়ামী লীগ সরকার এখন তাদের ক্ষমতায় থাকার মূল যুক্তি হারিয়ে ফেলেছে। রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা ছাড়া জনগণকে তাদের জীবন চলতে দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে সরকার। জনগণের একটি বড় অংশ হয়তো আওয়ামী লীগকে তেমন পছন্দ করে না, যারা জনগণের বাক স্বাধীনতা, সমাবেশ করার স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচক। দলটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুমতি দিতে পারতো, কিন্তু জনগণ ২০১৫ সালে বিরোধী দলের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতার কারণে আওয়ামী লীগ যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনেছিল, তারা এসবের প্রশংসা করেছিল। তবে, এখন এটা স্পষ্ট, আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারবে না এবং সেজন্য তারা ক্ষমতায় থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হারিয়েছে।
(গ) গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল থেকে সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। সম্ভবত এটি করা হয়েছে:
** হত্যা এবং পুলিশি সহিংসতার ছবি অনলাইনে শেয়ার করা বন্ধ করতে;
** অনলাইন মিডিয়া ওয়েবসাইট থেকে খবর পেতে মানুষকে ঠেকাতে;
** ছাত্রদের বিক্ষোভ সংগঠিত হতে বাধা সৃষ্টি করতে। অবশ্য সরকার খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট আটকে রাখতে পারবে না, কারণ দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল।
(ঘ) তাহলে ভেবে দেখুন, ইন্টারনেট সংযোগ আবার চালু হওয়ার পর কি ঘটবে! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন নিউজ মিডিয়া সাইটগুলোতে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ঝড় বইতে শুরু করবে। পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিওসহ হত্যা ও সহিংসতার কঠোর সমালোচনাপূর্ণ পোস্টের প্লাবন বয়ে যেতে পারে। সরকারের জন্য এ পরিস্থিতি অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াবে।
ডেভিড বার্গম্যান

(ঙ) গত শুক্রবার রাত থেকে সরকার কারফিউ ঘোষণা করেছে এবং সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামিয়েছে। সেনাবাহিনী কারফিউ জারি করেছে দৃশ্যত কারফিউ লংঘনকারীদের গুলি করে হত্যা করার নির্দেশসহ, যাতে বিচ্ছিন্ন কিছু স্থান ছাড়া কার্যকরভাবে ছাত্রদের বিক্ষোভের পরিসমাপ্তি ঘটানো যায়। কিন্তু এভাবে কতদিন চলা সম্ভব! নিকট ভবিষ্যতেই কোনো এক সময়ে সরকারকে কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যেতে দেবে।
(চ) এবং যখন এটি ঘটবে, তখন ছাত্রদের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত সহিংসতার বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভ নি:সন্দেহে বিশাল আকার নিয়ে পুনরুজ্জীবিত হবে। সরকার যদি পুলিশি সহিংস পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের সুযোগ দেয়, তাহলে বিক্ষোভ প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ তখন আরও অধিক সংখ্যক সাধারণ মানুষ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে এবং তা সামলানো সরকারের সাধ্যাতীত হয়ে পড়বে। সরকার যদি আবারও পুলিশকে ব্যবহার করে তাদের ওপর গুলি চালায়, তাহলে সহিংসতার ধারাবাহিকতা পুনরায় শুরু হবে। সরকার আবারও কারফিউ ঘোষণা করতে এবং সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাতে বাধ্য হবে, যা আর প্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে না।
(ছ) আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করতে যাচ্ছে না। পদত্যাগ করানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো স্বাধীন বা যথেষ্ট শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি সংঘটন নেই। মনে রাখবেন, কর্তৃত্ববাদী ধরনের সরকার তার অবস্থানের জন্য হুমকি হতে পারে এমন যেকোনো শক্তিকে নির্মূল করার জন্য সহিংস নির্মমতার আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য তারা সবকিছু করবে। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র উপায় হতে পারে যদি সেনাবাহিনী কোনো ভূমিকা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এবং আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সেনাবাহিনীকে এধরনের একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য করতে পারে।
(জ) আগের লেখায় যা উল্লেখ করা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধান আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত এবং সরকারকে রক্ষার জন্য তার সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন। তবে ওপরোল্লিখিত যুক্তির সমন্বয়ে একটি অবস্থা সৃষ্টি হবে, যখন সেনাবাহিনী উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে যে, বিশৃঙ্খলা এড়ানোর উদ্দেশ্যে তাকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে এবং এ জন্য প্রয়োজন হবে সরকারকে পদত্যাগ করা, সাময়িকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করা এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করা।
(ঝ) আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা এর আগে অবশ্যই অনেক সংকট কাটিয়ে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রীর একজন সমালোচক আমার কাছে তাকে ‘অবিনাশী তেলাপোকা’ বলে বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এর আগে তাকে কখনও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়নি, এবং এ ধরনের সংকটের পর ক্ষমতায় থাকার জন্য তার প্রয়োজন হবে তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক দক্ষতা প্রদর্শন। পরিহাসের ব্যাপার হলো, এটি সম্পূর্ণভাবে তার নিজের তৈরি করা একটি সংকট।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী ঝুঁকিপূর্ণ!

প্রকাশের সময় : ১২:৩৯:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪

(ব্রিটিশ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির ওপর তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন, যা এখানে তুলে ধরা হলো। অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু)
গত বাংলাদেশে কী ঘটবে সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আমি আগের চেয়ে দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করছি যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে এখন আর স্বাভাবিকভাবে দেশ পরিচালনার কোনো উপায় নেই। আমি কেন এই কথা বলছি?
(ক) আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অন্তত ১৫৫ জন নিহত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে। তবে স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, প্রকৃত সংখ্যা এর বহুগুণ বেশি হতে পারে। শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থকদের কাছে ‘কোটা’ ইস্যু এখন আর আন্দোলনের প্রধান বিষয় নয়; বরং ইস্যু দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র কর্তৃক বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা।
(খ) আওয়ামী লীগ সরকার এখন তাদের ক্ষমতায় থাকার মূল যুক্তি হারিয়ে ফেলেছে। রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা ছাড়া জনগণকে তাদের জীবন চলতে দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে সরকার। জনগণের একটি বড় অংশ হয়তো আওয়ামী লীগকে তেমন পছন্দ করে না, যারা জনগণের বাক স্বাধীনতা, সমাবেশ করার স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচক। দলটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুমতি দিতে পারতো, কিন্তু জনগণ ২০১৫ সালে বিরোধী দলের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতার কারণে আওয়ামী লীগ যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনেছিল, তারা এসবের প্রশংসা করেছিল। তবে, এখন এটা স্পষ্ট, আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারবে না এবং সেজন্য তারা ক্ষমতায় থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হারিয়েছে।
(গ) গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল থেকে সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে। সম্ভবত এটি করা হয়েছে:
** হত্যা এবং পুলিশি সহিংসতার ছবি অনলাইনে শেয়ার করা বন্ধ করতে;
** অনলাইন মিডিয়া ওয়েবসাইট থেকে খবর পেতে মানুষকে ঠেকাতে;
** ছাত্রদের বিক্ষোভ সংগঠিত হতে বাধা সৃষ্টি করতে। অবশ্য সরকার খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য ইন্টারনেট আটকে রাখতে পারবে না, কারণ দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল।
(ঘ) তাহলে ভেবে দেখুন, ইন্টারনেট সংযোগ আবার চালু হওয়ার পর কি ঘটবে! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন নিউজ মিডিয়া সাইটগুলোতে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ঝড় বইতে শুরু করবে। পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিওসহ হত্যা ও সহিংসতার কঠোর সমালোচনাপূর্ণ পোস্টের প্লাবন বয়ে যেতে পারে। সরকারের জন্য এ পরিস্থিতি অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াবে।
ডেভিড বার্গম্যান

(ঙ) গত শুক্রবার রাত থেকে সরকার কারফিউ ঘোষণা করেছে এবং সেনাবাহিনীকে রাস্তায় নামিয়েছে। সেনাবাহিনী কারফিউ জারি করেছে দৃশ্যত কারফিউ লংঘনকারীদের গুলি করে হত্যা করার নির্দেশসহ, যাতে বিচ্ছিন্ন কিছু স্থান ছাড়া কার্যকরভাবে ছাত্রদের বিক্ষোভের পরিসমাপ্তি ঘটানো যায়। কিন্তু এভাবে কতদিন চলা সম্ভব! নিকট ভবিষ্যতেই কোনো এক সময়ে সরকারকে কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যেতে দেবে।
(চ) এবং যখন এটি ঘটবে, তখন ছাত্রদের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত সহিংসতার বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভ নি:সন্দেহে বিশাল আকার নিয়ে পুনরুজ্জীবিত হবে। সরকার যদি পুলিশি সহিংস পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের সুযোগ দেয়, তাহলে বিক্ষোভ প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ তখন আরও অধিক সংখ্যক সাধারণ মানুষ এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে এবং তা সামলানো সরকারের সাধ্যাতীত হয়ে পড়বে। সরকার যদি আবারও পুলিশকে ব্যবহার করে তাদের ওপর গুলি চালায়, তাহলে সহিংসতার ধারাবাহিকতা পুনরায় শুরু হবে। সরকার আবারও কারফিউ ঘোষণা করতে এবং সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাতে বাধ্য হবে, যা আর প্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে না।
(ছ) আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করতে যাচ্ছে না। পদত্যাগ করানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো স্বাধীন বা যথেষ্ট শক্তিশালী সিভিল সোসাইটি সংঘটন নেই। মনে রাখবেন, কর্তৃত্ববাদী ধরনের সরকার তার অবস্থানের জন্য হুমকি হতে পারে এমন যেকোনো শক্তিকে নির্মূল করার জন্য সহিংস নির্মমতার আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে। ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য তারা সবকিছু করবে। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র উপায় হতে পারে যদি সেনাবাহিনী কোনো ভূমিকা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এবং আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সেনাবাহিনীকে এধরনের একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য করতে পারে।
(জ) আগের লেখায় যা উল্লেখ করা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধান আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত এবং সরকারকে রক্ষার জন্য তার সাধ্যমতো চেষ্টা করবেন। তবে ওপরোল্লিখিত যুক্তির সমন্বয়ে একটি অবস্থা সৃষ্টি হবে, যখন সেনাবাহিনী উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে যে, বিশৃঙ্খলা এড়ানোর উদ্দেশ্যে তাকে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে এবং এ জন্য প্রয়োজন হবে সরকারকে পদত্যাগ করা, সাময়িকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করা এবং একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করা।
(ঝ) আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা এর আগে অবশ্যই অনেক সংকট কাটিয়ে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রীর একজন সমালোচক আমার কাছে তাকে ‘অবিনাশী তেলাপোকা’ বলে বর্ণনা করেছেন। অবশ্য এর আগে তাকে কখনও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়নি, এবং এ ধরনের সংকটের পর ক্ষমতায় থাকার জন্য তার প্রয়োজন হবে তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক দক্ষতা প্রদর্শন। পরিহাসের ব্যাপার হলো, এটি সম্পূর্ণভাবে তার নিজের তৈরি করা একটি সংকট।