ড: ইউনুসের সামনে যে চ্যালেঞ্জ-!

- প্রকাশের সময় : ০১:২৩:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
- / ৪৮ বার পঠিত
সাঈদ তারেক: প্রধান উপদেষ্টার কথায় বিএনপি সন্তুষ্ট না। তারা চাইছে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন, প্রফেসর সাহেব সে ব্যপারে কোন কথা দেননি। সাফাই বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেছেন তবে তা কোনক্রমেই সামনের বছরের জুনের ওদিকে যাবে না। তার আগেও হয়ে যেতে পারে। ভাল কথা। আগেই যদি হয় তাহলে জুনের কথা বলা হচ্ছে কেন! নজরুল সাহেবের সাফাই- সংষ্কার কাজ শেষ করতে নাকি ও পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। আরও একটা যুক্তি দিয়েছেন, স্বৈরাচারের বিচারটা না করে গেলে লোকে কি বলবে!
দু’টোই একেবারে ছেলেভুলানো যুক্তি। সংষ্কার করতে বছর দুইবছর লাগে না। মির্জা ফখরুল বলেছেন সংষ্কার প্রস্তাবের অনেকগুলোর সাথে তারা একমত। ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠকে তাদের দিক থেকে বিষয়গুলো ফাইনাল হতে পারে। যে কয়টা সুপারিশের সাথে প্রধান প্রধান দলগুলো একমত হবে সেগুলোর ব্যাপারে অধ্যাদেশ জারী করে দিলেই হয়। এক সপ্তাহের কাজও না। এগুলো তো আইনগত বৈধতা পাবে পরের নির্বাচিত সংসদে। যে সব সুপারিশের ব্যাপারে ঐকমত্য হবে না সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে পরের সংসদের ওপর। এর বাইরে তো কিছু নেই। প্লেইন এ্যান্ড সিম্পল! সিভিল সোসাইটি যদি জনমত গড়ে তুলতে পারে, নির্বাচিত সরকারের ওপর তা চাপ হিসেবে কাজ করবে। বিএনপি যদি বলে আমরা এই এই প্রস্তাবের সাথে একমত এই এইগুলো মানি না। এখন বিএনপিকে গোনায় ধরা হলে তাদের মতামত মেনে নিতে হবে। নইলে সরকার যেভাবে চাইবে- নিজেদের মত করে অধ্যাদেশ জারী করে দেবে। অংশবিশেষ অথবা সবগুলো নিয়ে। কেউ মানলে মানবে, না মানলে মানবে না! এর জন্য এত গাবগ্যাজাগেজি মিটিং সিটিং ফিটিংয়ের তো দরকার নেই! মাত্র কয়েক সপ্তাহের কাজ। এই কাজ করতে জুন পর্যন্ত যেতে হবে কেন!
আসিফ নজরুল সাহেবের বক্তব্যে এক ধরনের চাতুরির ভাব প্রকাশ পেয়েছে। স্বৈরাচারের বিচারটাও তাদেরকে করে দিয়ে যেতে হবে! নিজেই আবার বললেন- শেখ হাসিনার আমলে জামায়াত নেতাদেরকে হত্যার যে বিচার করা হয়েছিল তা সম্পন্নে সময় লেগেছিল আড়াই বছর। আট মাস হয়ে গেছে, এনারা এখন পর্যন্ত তদন্তই শেষ করতে পারেননি। এক শেখ হাসিনার নামেই দুই শ’র ওপরে মামলা। আড়াই বছর করে হলে কয় শ’ বছর লাগবে! উনাদেরকে মামলার কাজ শেষ করে যেতে হবে, একটার বিচারও যদি করতে হয় তাও তো আড়াই বছর! তাহলে তো সামনের বছরের জুনেও হচ্ছে না!
জামায়াত নেতা যথার্থই বলেছেন। জুন-জুলাইয়ে আমাদের দেশে সাধারনত: কোন জাতীয় নির্বাচন হয় না। বর্ষাবাদল শুরু হয়ে যায়। এ পরীক্ষা ও পরীক্ষা। তার মতে সামনের রমজানের আগে অর্থাৎ ফেব্রæয়ারীর মধ্যে নির্বাচন করা যেতে পারে। মির্জা ফখরুলের আশংকা ডিসেস্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকট বাড়বে। অর্থনৈতিক সংকট কি দাঁড়াবে বলতে পারবো না, আমি কোন অর্থনীতিবিদ নই, তবে রাজনৈতিক সংকট যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নির্বাচনের জন্য দলগুলো আন্দোলন শুরু করলে তা সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃস্টি করবে। না পারবে হজম করতে, না পারবে দমন করতে। সামাজিক অস্থিরতা এখনই চরমে। অফিসে-আদালতে অপ্রতিরোধ্য ঘুষ-দূর্নীতি, সারা দেশে বেশুমার চাঁদাবাজী-দখল, তোলাবাজী, তুচ্ছ কারনে মাইরপিট খুনাখুনি, মবোক্রাসী তথাকথিত তৌহিদী জনতার দাপট সামনে আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। কারন এসব প্রতিরোধে সরকারের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। পুলিশ কোন মব মোকাবিলা করতে যায় না। সাহস পায় না। আস্থার সংকট। এসব সমস্যার অনেকগুলোই রাজনৈতিক। এই সরকার কোন রাজনৈতিক সরকার নয়, বিধায় তাদের কোন পলিটিক্যাল অর্গান বা ফ্রন্ট নেই। রাজনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করতে হয় রাজনৈতিকভাবে, এদের সেই মেকানিজম নেই। ফলে সংকট বাড়বে বৈ কমার কোন কারন দেখি না।
প্রফেসর সাহেব একজন ভাল মানুষ। বিশ্বব্যপী পরিচিতি। সবাই তাকে সম্মান করে। কোন সন্দেহ নেই, সে সময় মতো এসে হাল ধরায় দেশটা রক্ষা পেয়েছে। আট মাসে তিনি অনেক অনিয়ম রুখে দিতে পেরেছেন। তার ইতিবাচক প্রভাব মানুষ অনুভব করছে। আরও কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন, বাস্তবায়িত হলে দেশ এগিয়ে যাবে সন্দেহ নেই। তার মানে এই না যে, এই কাজের জন্য তাকে অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থেকে যেতে হবে। বা নির্বাচন না দিয়ে, বা নানা ছুতোনাতায় নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস তার ভেতরে এমন কোন লোভ এখনও জাগে নাই। তবে সব সরকার প্রধানের বেলায়ই যা হয়, আশেপাশে কিছু চামচা চাটুকার ধান্ধাবাজ সুযোগ সন্ধানী জুটে যায়। উনাকেই দরকার উনি ছাড়া উপায় নেই, উনার কোন বিকল্প নেই- এমন হাইপ তৈরী করে সরকার প্রধানের ঘাড়ে চেপে বসে! তিরাশি দিনের বাদশা খন্দকার মোশতাক বন্দনায়ও তখন একদল লোককে হুমড়ি খেয়ে পড়তে দেখা গেছিলো। মোশতাক সাহেব বিদঘুটে এক ধরনের টুপী পরতেন। এই চামচারা মোশতাককে বুঝিয়ে সেই টুপীকে জাতীয় টুপী ঘোষনা করিয়েছিল। সেই টুপীর বন্দনায় প্রভাবশালী পত্রিকার পাতায় বিশেষ সম্পাদকীয়ও প্রকাশ করা হয়েছিল! ওয়ান ইলেভেনের সময় তো কিছু লোককে দেখা যেতো অজু করে মঈনউদ্দিনের নাম উচ্চরণ করতে। শেখ হাসিনার সময় বুলিই ছিল গনতন্ত্রের দরকার নাই, আমরা চাই উন্নয়ন। এখনও প্রফেসর সাহেবের আশেপাশে এমন কিছু ধান্ধাবাজ জুটে গেছে বলে অনুমিত হয়। এরা তার মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খেয়ে চলেছে। এরাই চাইছে তাকে ধরে রেখে যতদিন পারা যায় ক্ষমতার হালুয়ারুটী এস্তেমাল করে যেতে। এরাই সারা দেশে হাইপ তুলেছে নির্বাচনের দরকার নাই, প্রফেসর সাহেবই দুই/পাঁচ বছর চালিয়ে যান।
সোস্যাল মিডিয়ায়ও কিছু লোককে দেখা যায় আগে সংষ্কার পরে নির্বাচন বলে ক্যাম্পেইন চালাতে। এদের কিছু আছে ইন্নোসেন্ট অবজার্ভার। রাজনৈতিক দলগুলোর অতীত পারফরমেন্সে হতাশ, কেউ ক্ষোভ থেকে কেউ সদিচ্ছা থেকে এমন বলেন। কিছু আছে রাষ্ট্র রাজনীতি সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান। শুভ চিন্তা থেকে হয়তো বলে নির্বাচন দরকার নেই, ইউনুস সাহেবই থাকুন। কিন্তু প্রফেসর সাহেব নিশ্চয়ই নিজের অবস্থা অবস্থান সম্পর্কে উদাসীন বা অজ্ঞাত নন। ভোট না দিয়ে ছল বল কৌশল খাটিয়ে কতদিন ক্ষমতা ধরে রাখা যাবে সে ব্যপারে নিশ্চয়ই উনার হুঁশ আছে। প্রধান প্রধান দলগুলোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে বা তাদের সাথে নির্বাচন দেওয়া না দেওয়া নিয়ে দ্বন্ধে জড়িয়ে নিজের মানসম্মান ভাবমূর্তি খোয়ানোটা তার কতটুকু উচিত হবে, নিশ্চয়ই ভেবে দেখবেন বলে আমার বিশ্বাস। চ্যালাচামুন্ডা চামচা, মতলববাজ ধান্ধাবাজ ক্ষমতার মজা পেয়ে যাওয়া আশেপাশের বুদ্ধিদাতাদের প্রভাব কাটিয়ে উঠে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারাটাই এখন তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
একটি সম্ভাবনার অগস্ত্য যাত্রা!
শিক্ষক মানুষ। কিন্তু কাজটা তিনি ঠিক করেন নি। ছেলেদেরকে শিক্ষায়তনে ফেরত না পাঠিয়ে রাজনীতির ময়দানে ঠেলে দেওয়াটা খুবই অনৈতিক একটা কাজ হয়েছে। কোনক্রমেই তা শিক্ষকসূলভ হয়নি। ছেলেরা একটা অসাধ্য সাধন করেছে, সে জন্য সবসময় জাতি তাদেরকে স্মরণ করবে। এই বয়সে সবারই রোমান্টিসিজম কাজ করে। দেশ নিয়ে তাদেরও ভাবনা থাকবে, কিছু একটা করার অদম্য স্পৃহা কাজ করবে। কিন্তু বোঝানো উচিত ছিল, কখন কোনটা। বলা যেতো, লেখাপড়া শেষ না করে অশিক্ষিত অসংষ্কৃত হয়ে রাজনীতিতে ঢুকলে শেষ পর্যন্ত টোকাই বা টাউট বাটপারের খাতায় নাম চলে যায়।
কিন্তু দায়িত্বটা পেয়ে তিনি এতটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন ওদেরকে নিজের নিয়োগকর্তা বলে তুলে ধরলেন। ঠিক আছে। ছাত্ররাই প্রথম তার নাম প্রস্তাব করেছিল। এদের থেকে দুইজনকে উপদেষ্টা একজনকে বিশেষ সহকারি বানালেন। একেবারে ছাত্র থেকে সরাসরি মন্ত্রী- ব্যপারটা দৃস্টিকটু ঠেকলেও মানুষ মেনে নিয়েছিল। কিন্তু লেখাপড়া ফেলে রেখে রাজনীতি করতে পাঠানো, দল বানিয়ে নেতা হতে উদ্বুদ্ধ করা, ক্ষমতায় গিয়ে মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখানো- ব্যপারটা খুবই বাজে হয়ে গেছে। রাজনীতি বিষয়কে এত ছেলের হাতের মোয়া ভাবাটা একেবারেই ঠিক হয়নি।
আমাদের দেশে বড় বড় সব আন্দোলন ছাত্ররাই করেছে। কিন্তু আন্দোলনের পরপরই জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সফল হয়েছে এমন নজীর খুব একটা নেই। ছাত্রাবস্থায় আমরা স্বাধীনতার আন্দোলন করেছি মুক্তিযুদ্ধ করেছি, কিন্তু যুদ্ধশেষে যার যার ক্লাশরুমে ফিরে গেছি। যাদের সে সময়ের মধ্যে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছিলো তাদের কেউ কেউ রাজনীতির খাতায় নাম লিখিয়েছে। ’৯০এর আন্দোলনের মাধ্যমে উঠে আসা ছাত্রনেতা যারা তাৎক্ষণিক রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিল দুই একজন বড়জোর এমপি বা মন্ত্রী হতে পেরেছিল, জাতীয় নেতৃত্বের পর্যায়ে কখনও পৌঁছাতে পারেনি। শাহবাগের জামাত নিধন মঞ্চের নেতারা রাস্তায় রাস্তায় ঘুড়তে ঘুড়তে এখন হারিয়ে গেছে। ’১৮এর কোটা সংষ্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কয়েকটা ছেলে উঠে এসেছিল। জাতীয় নেতৃত্বের যোগ্যতায় এখনও তারা কৈশোর উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
রাজনীতি এত সোজা না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা সাহায্য সহযোগীতা বা চোর ডাকাত লুটেরাদের টাকায় কিছুদিন শো শা পোজপাজ করা যায় তাতে রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে না। সরকারি আশীর্বাদ উঠে যাওয়ায় ওয়ান ইলেভেন আমলের কিংস পার্টি হঠাৎ গায়েব হয়ে গেছিলো। ছাত্ররা তরুন যুবকদের অগ্রসর অংশ। তারাই এক সময় নেতৃত্ব দেবে। তবে তার জন্য তাদেরকে তৈরী হতে হয়। অন্তত: লেখাপড়াটা শেষ করতে হয়। নিজের অবস্থান সংহত করতে হয়। তার আগেই তাদের ভেতর ক্ষমতার লিপ্সা জাগিয়ে তোলা কোন সুবিবেচনাপ্রসূত কাজ হয়নি। এখনই এমপি হতে হবে, মন্ত্রী হতে হবে, রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ে নিতে হবে- এই তাল যারা দিয়েছেন তারা আসলে ছেলেগুলোর ভবিষ্যৎ শেষ করে দিয়েছেন।
দুই মাসও হয়নি, এখনই হতাশার সুর। এর মধ্যে নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে। সেটাই স্বাভাবিক। দিন যত যাবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে হতাশা আরও বাড়বে। শেষে এ দল, ও দলের পেছনে ঘুড়ে দুই একটা সীট চেয়েও যখন কনফার্মেশন পাওয়া যাবে না, চোর-লুটেরারা যখন টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেবে তখন দোকানের ঝাপও নমিয়ে ফেলতে হবে। মাঝখান থেকে কতগুলো উদ্যোমী তরুন যুবকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে। একটি সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটবে।
এই বয়সী ছেলেদের আবেগ বেশী। তাদেরকে বোঝানো উচিত ছিল এখনই সময় না। তৈরী হও। গোছগাছ করো তারপর ভেবেচিন্তে পা ফেলো। প্রফেসর সাহেব তা না করে তাল দিয়ে রাজনীতিতে নামিয়ে দিয়েছেন। কিংস পার্টি দাড় করিয়েছেন। অথচ এই তরুন যুবকরাই সরাসরি দলীয় রাজনীতিতে না এসেও দেশ ঠিকভাবে চলতে হুইপিংয়ের ভুমিকা পালন করতে পারতো। সেটাই হতো জনগনের কাঙ্খিত এবং যোগ্য দায়িত্ব পালন। সরকারে যোগ দেওয়া দরকার ছিল না। দল করারও প্রয়োজন ছিল না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারেই একটা এ্যাকশন কমিটি বানিয়ে সরকারে, সমাজে, রাজনীতিতে যে কোন অন্যায় অসঙ্গতি তুলে ধরে তার প্রতিকারে চাপ সৃস্টি করতে পারতো, আন্দোলন করতে পারতো। এই এ্যাকশন কমিটি হতো দুরমুজ পার্টি। দলমতের উর্দ্ধে থেকে জুলাই-আগস্টকালীন ভাবমূর্তি বজায় রেখে যে কোন সরকারের জন্য হুইপিংয়ের ভুমিকা পালন করতো। দুরমুজ পার্টি হতো অন্যায় অপকর্মকারীদের জন্য যম। জনগন তাদের সাথে থাকতো। এই জনসমর্থনই হতো তাদের শক্তি। লেখাপড়াও করতো একই সাথে জাতির জন্য এই দায়িত্বও পালন করতো। আমাদের এই নস্ট সমাজে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সমর্থনধন্য এমনই একটা দুরমুজ পার্টির খুব দরকার ছিল। সব রাজনৈতিক দল বা সরকার তাদেরকে হিসাবে নিতে বাধ্য হতো। অন্তত: আমি তাদের কাছ থেকেই এই ভুমিকাটাই আশা করেছিলাম।
এখন তা আর সম্ভব না। দল গঠন করে রাজনীতির মাঠে নিজেরা একটা পক্ষ হয়ে গেছে। এরওর বিরুদ্ধে লাগামছাড়া কথা বলে প্রতিপক্ষ। কিংস পার্টি তকমা নিয়ে নিজেদেরকে সুবিধাবাদী বলে পরিচিত করিয়েছে। নানা শো ডাউন, চাঁদাবাজী, তোলাবাজী, এ অফিসে, ও অফিসে গিয়ে হুমকীধমকী তদ্বিরবাণিজ্য- সব মিলিয়ে সেই ভাবমূর্তি তারা হারিয়েছে। এখন রাজনীতির গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে বেড়ানো ছাড়া গত্যন্তর নেই।
আফসোস, একটা সম্ভাবনাময় প্রজন্ম সঠিক গাইডেন্সের অভাবে পথ হারালো। যে সব গুরু মেন্টর বা পৃষ্ঠপোষক শলা দিয়ে ছেলেগুলোকে এই পথে নামিয়েছেন তারা কাজটা ঠিক করেন নাই। খুবই অন্যায় করেছেন।
‘ওদের কাজ ওরা করছে’
বেগম জিয়ার প্রথম শাষনকাল। এরশাদ কারাবন্দী। নেতাকর্মীরা মাইরের ওপর। পুলিশ পেটায় ছাত্রদল পেটায় যুবদল পেটায়। জাতীয় পার্টিকে রাস্তায়ই নামতে দেয় না। তারপরও তারা মাঝেমাঝে মিটিং ডাকে মিছিল করে। সাধারণ নেতাকর্মীরা শ্লোগান দেয়, পিটুনী খায়, মারা যায় আহত হয় জেল খাটে। আমি একদিন এক সিনিয়র নেতা যিনি একজন সাবেক মন্ত্রীও, বললাম রাস্তায় এইযে ছেলেরা মিছিল করে মাইর খায়, আপনাকে কখনও দেখি না। আপনার মত নেতারা নামলে তো কর্মীরা সাহস পায়। তিনি বলেন ওদের কাজ ওরা করছে। আমি বলি, কি বলেন! মিটিং মিছিল করা মাইর খাওয়া জেলে যাওয়া শুধু কর্মীদের কাজ, তাহলে আপনার কাজ কি! তিনি বলেন, দল ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী হওয়া।
দল ক্ষমতায় যায়নি, তারপরও তিনি একদফা মন্ত্রী হয়েছিলেন! (লেখকের ফেসবুক থেকে)