ডোরেইনের তান্ডব
![](https://hakkatha.com/wp-content/uploads/2024/05/hakkathafav.png)
- প্রকাশের সময় : ০৫:০৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
- / ৪৬৩ বার পঠিত
সুলতানা রহমান: হারিকেইন ডোরেইনের তান্ডবে একেবারে মাটিতে মিশে গেছে বাহামার ঘরবাড়ি, পুরো জনপদ। ধ্বংসস্তুপের নিচে কত মানুষ পরে আছে কারো জানা নেই। নিখোজের সংখ্যা কয়েক হাজার। সেখানে কত মানুষ মারা গেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এখন পর্যন্ত অর্ধশত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাহামার প্রধানমন্ত্রী মরদেহ রাখার দুই শ ‘বডি ব্যাগ’ চেয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সেখানো মৃতের সংখ্যা ‘অবিশ্বাস্য’ রকমের বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ। এদিকে, গেলো কয়েক বছরের হারিকেইন, টর্নেডোর ধরণ দুশ্চিন্তায় ফেলেছে আবহাওয়াবিদদের। তাদের আশংকা, জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে বদলে যাচ্ছে আটলান্টিকে সৃষ্ট হারিকেইন এর গতি প্রকৃতি।
প্রায় ৯ ঘন্টা ধরে তান্ডব চালিয়ে বাহামার এ্যাবাকাস শহরটি এেেকবারে লন্ড ভন্ড করে দিয়েছে ডোরেইন। সেখানে এখন গৃহহীন প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। খাদ্য পানিয়ের অভাবে তারা নিদারুন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। প্রায় ৬০ ভাগ বাড়িঘর মাটিতে মিশে গেছে।
পাঁচ মাত্রার হারিকেইন ডোরেইন বাতাসের গতি ঘন্টায় ১৮৫ মাইল বেগে গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রথম আঘাত করে বাহামায়। প্রায় নয় ঘন্টা চলে তান্ডব। ১২ থেকে ১৭ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায় বাহামা। বাতাসের তীব্রতা আর পানির ¯্রােতে অনেকই ভেসে যায় পানিতে। ডোরেইনের ধ্বংস থেকে যারা প্রাণে বেচে গেছেন তারা জানান, মুহুর্তেই ঘরের মেেধ্য পানি ঢুকে সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ঘর বাড়ির ছাদ পানি উঠে গেলে সাঁতরিয়ে পাইনগাছে আশ্রয় নেন কেউ কেউ। কিন্তু বাতাসের তীব্রতা আর পানির ¯্রােতে গাছের ডাল ধরে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পরে। অনেকেই ভেসে ¯্রােতে। কেউ কেউ নিজের সন্তানকে দেখেছেন ¯্রােতে তলিয়ে যেতে।
এদিকে, ডোরেইনের তান্ডব থামার আগেই আটলান্টিকে ঘনিভূত হচ্ছে আরো দুটি ঘুর্ণিঝড়। তবে গেলো কয়েক বছরের হারিকেইন, টর্নেডোর ধরণ দুশ্চিন্তায় ফেলেছে আবহাওয়াবিদদের। তাদের আশংকা, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বদলে যাচ্ছে আটলান্টিকে সৃষ্ট হারিকেইন এর গতি প্রকৃতি।
হারিকেইন ডোরেইন ১৮৫ মাইল বেগে আঘাত করে বাহামা উপকূলে। এ যাবতকালের সবেচেয়ে শক্তিশালী হারিকেইন ডোরেইন। ক্ষয়ক্ষতি আর প্রানহানীর পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পেলে এটি দেশের ‘ঐতিহাসিক ট্রাজেডি’ হয়ে উঠতে পারে বলে আশংকা।
সাধারণত জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আটলান্টিকে নি¤œচাপের সৃষ্টি হয়। বাতাসের গতিবেগের ভিত্তিতে নি¤œচাপের পাঁচটি ক্যাটাগরি রয়েছে। যে কারণে পাচ মাত্রার হারিকেইন মানে মহাবিপদের আশ;কা। ১৮৫১ সালের পর এখন পর্যন্ত ৩৫টি পাঁচ মাত্রার হারিকেইন আমেরিকায় আঘাত করেছে। এই ১৬৯ বছরের মধ্যে গত তিন বছরে পর পর পাঁচটি হারিকেইন আঘাত করে আমেরিকার মূল ভূখন্ডে। ২০১৬ সালের ম্যাথিউ ২০১৭ সালের ইরমা এবং মারিয়া, ২০১৮ সালে মাইকেল এবং বর্তমানের ডোরেইন। আবহাওয়া বিদরা বলছেন, হারিকেইনের তীব্রতা যে হারে বাড়ছে তাতে আরেকটি নতুন ক্যাটাগরি সৃষ্টি করা প্রয়োজন হয়ে উঠছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের স্েগ সঙ্গে বদলে যাচ্ছে হারিকেইনের গতি প্রকৃতি। বৈশ্বিক উষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আটলান্টিকের পানিরও উষ্ণতা।