নিউইয়র্ক ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কোভিডে মৃত্যু? এ কষ্ট কখনোই ভুলার নয়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ৪০ বার পঠিত

বিশ্বজিত সাহা: সজীব সাহা। বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারার প্রধান পরিচালক ও বাংলা প্রকাশনা জগতের প্রবাদপ্রতীম পুরুষ চিত্তরঞ্জন সাহার প্রয়াণের পর যিনি হাল ধরেছিলেন, চিত্তরঞ্জন সাহার শ্যালক জহরলাল সাহার কনিষ্ঠ পুত্র সজীব সাহা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে অকালে চলে গেলেন। অনেক কষ্টের সংবাদ। একাত্তর-এর সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয় এর পোস্টটি তখনো আমার চোখে পড়েনি। গত কয়েকদিন ফেসবুকেও নিয়মিত যেতে মন সায় দিচ্ছে না। চট্টগ্রামে আমার ভাগ্নি জামাই কোভিড-এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতােলে। তার দু’দিন পর আমার ঘরেই কোভিড ঢুকে পড়লো। আমার বড় মেয়ে বহতা মার্চের শুরুতে যখন কোভিড-১৯ নিউইয়র্ককে লন্ডভন্ড করে দিচ্ছিলো তখন চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে protective head shield তৈরী করে। আমার সেই মেয়েটিরই কোভিড-১৯ পজেটিভ আমাকে বিমর্ষতায় ঠেলে দেয়।
সজীব সাহা

গত শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সজীব-এর মর্মান্তিক খবরটি আমাকে খুব ব্যথিত করে। তাই সঙ্গে সঙ্গে মাওলা ব্রাদার্সের আহমেদ মাহমুদুল হকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। সজীবের বাবা জহরলাল সাহা হলেন চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রীর ছোট ভাই। আমার ছাত্র-বয়সে যখন মুক্তধারার ৭৪ ফরাশগঞ্জের ঐতিহাসিক বাড়ীতে চাকুরী করতাম তখন সজীব খুব ছোট। তিন তলার বাসা থেকে নেমে এসে অজিত বাবুর পাশে আমার বসার জায়গার কাছে এসে ঘুরঘুর করতো। কত কথা বলতো, তারপর ওর বাবা অফিসে আসার সময় হলে দ্রæত অফিস থেকে বাসায় চলে যেত। আমি ১৯৮৭ সালে মোস্তফা জব্বার-এর আনন্দ পত্র পত্রিকায় খন্ডকালীন থেকে ফুলটাইম যোগ দেয়ায় মুক্তধারায় যাওয়া কমে যায়। ১৯৯১ সালে আমেরিকায় চলে আসা। সে সজীব কখন বড় হয়ে গেল। নিজে ছড়া লিখতে শুরু করলো। তার পিশেমশাই এর প্রতিষ্ঠানটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করলো।
গত বছর বইমেলায় সজীব-এর মার সাথে দেখা হয় বাংলা একাডেমীতে। সজীব এর মা-বাবা দু’জনেই আজ পুত্র হারিয়ে শোকাহত। তাদের প্রবোধ দেয়ার কোন ভাষা আমার জানা নেই। কোভিড-এ ৫০-৬০-৭০ উর্ধ্ব অনেক আপনজনই আমরা হারিয়েছি। সন্দেশ প্রকাশনার লুৎফুর রহমান চৌধুরী, সুবর্ণ প্রকাশনার জাহাঙ্গীর ভাই ও শিখা প্রকাশনীর বাহার ভাইকেও আমরা কোভিডে-ই হারিয়েছি। কিন্তু ঘুর্ণাক্ষরেও ভাবিনি একটি তরুণ প্রাণ কোভিড কেড়ে নেবে? এ কষ্ট কখনোই ভুলার নয়।

লেখক: মুক্তধারা নিউইয়র্ক-এর কর্ণধার

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

কোভিডে মৃত্যু? এ কষ্ট কখনোই ভুলার নয়

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

বিশ্বজিত সাহা: সজীব সাহা। বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারার প্রধান পরিচালক ও বাংলা প্রকাশনা জগতের প্রবাদপ্রতীম পুরুষ চিত্তরঞ্জন সাহার প্রয়াণের পর যিনি হাল ধরেছিলেন, চিত্তরঞ্জন সাহার শ্যালক জহরলাল সাহার কনিষ্ঠ পুত্র সজীব সাহা কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে অকালে চলে গেলেন। অনেক কষ্টের সংবাদ। একাত্তর-এর সাংবাদিক পার্থ সঞ্জয় এর পোস্টটি তখনো আমার চোখে পড়েনি। গত কয়েকদিন ফেসবুকেও নিয়মিত যেতে মন সায় দিচ্ছে না। চট্টগ্রামে আমার ভাগ্নি জামাই কোভিড-এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতােলে। তার দু’দিন পর আমার ঘরেই কোভিড ঢুকে পড়লো। আমার বড় মেয়ে বহতা মার্চের শুরুতে যখন কোভিড-১৯ নিউইয়র্ককে লন্ডভন্ড করে দিচ্ছিলো তখন চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে protective head shield তৈরী করে। আমার সেই মেয়েটিরই কোভিড-১৯ পজেটিভ আমাকে বিমর্ষতায় ঠেলে দেয়।
সজীব সাহা

গত শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সজীব-এর মর্মান্তিক খবরটি আমাকে খুব ব্যথিত করে। তাই সঙ্গে সঙ্গে মাওলা ব্রাদার্সের আহমেদ মাহমুদুল হকের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। সজীবের বাবা জহরলাল সাহা হলেন চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রীর ছোট ভাই। আমার ছাত্র-বয়সে যখন মুক্তধারার ৭৪ ফরাশগঞ্জের ঐতিহাসিক বাড়ীতে চাকুরী করতাম তখন সজীব খুব ছোট। তিন তলার বাসা থেকে নেমে এসে অজিত বাবুর পাশে আমার বসার জায়গার কাছে এসে ঘুরঘুর করতো। কত কথা বলতো, তারপর ওর বাবা অফিসে আসার সময় হলে দ্রæত অফিস থেকে বাসায় চলে যেত। আমি ১৯৮৭ সালে মোস্তফা জব্বার-এর আনন্দ পত্র পত্রিকায় খন্ডকালীন থেকে ফুলটাইম যোগ দেয়ায় মুক্তধারায় যাওয়া কমে যায়। ১৯৯১ সালে আমেরিকায় চলে আসা। সে সজীব কখন বড় হয়ে গেল। নিজে ছড়া লিখতে শুরু করলো। তার পিশেমশাই এর প্রতিষ্ঠানটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার কাজ শুরু করলো।
গত বছর বইমেলায় সজীব-এর মার সাথে দেখা হয় বাংলা একাডেমীতে। সজীব এর মা-বাবা দু’জনেই আজ পুত্র হারিয়ে শোকাহত। তাদের প্রবোধ দেয়ার কোন ভাষা আমার জানা নেই। কোভিড-এ ৫০-৬০-৭০ উর্ধ্ব অনেক আপনজনই আমরা হারিয়েছি। সন্দেশ প্রকাশনার লুৎফুর রহমান চৌধুরী, সুবর্ণ প্রকাশনার জাহাঙ্গীর ভাই ও শিখা প্রকাশনীর বাহার ভাইকেও আমরা কোভিডে-ই হারিয়েছি। কিন্তু ঘুর্ণাক্ষরেও ভাবিনি একটি তরুণ প্রাণ কোভিড কেড়ে নেবে? এ কষ্ট কখনোই ভুলার নয়।

লেখক: মুক্তধারা নিউইয়র্ক-এর কর্ণধার