এক দেশপ্রেমিকের অকথিত কাহিনী : দূর থেকে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াই
- প্রকাশের সময় : ১১:৪৯:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
- / ৪৬ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বাংলাদেশের যুবসমাজকে অতিমাত্রায় সক্রিয় হতে দেখা গেছে। তারা দুর্নীতি ও অবিচারে নিমজ্জিত একটি শাসন ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে গোটা দেশ এমন এক কর্তৃত্ববাদী শাসকের অধীনে ছিল যিনি ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য দুর্নীতি, অন্যায়কে প্রাধান্য দিয়ে গেছেন। সেই সরকারের প্রতি মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা আন্দোলন সফলতার মুখ দেখে।
অগণিত ব্যক্তির আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ এই নতুন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে। বিশেষ করে ছাত্ররা, হাসিনার শাসনামলে চরম দুর্ভোগের শিকার। দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য অনেক সাহসী কণ্ঠকে নীরব করা হয়েছে- কাউকে হত্যা করা হয়েছে, কেউ আবার আহত হয়েছেন। বাংলাদেশে অনেকেই নিপীড়নের শিকার হয়েছেন সে সময়। যারা চ্যালেঞ্জ করার সাহস দেখিয়েছেন তারা নৃশংস প্রতিশোধের সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখা হয়েছে। এমন ভয়াল পরিস্থিতি থেকে দেশকে বাঁচাতে অনেকেই কাজ করেছেন। তাদের একজন ডা. মনজুর মোর্শেদ। যিনি নিউয়র্কের একজন কার্ডিওলজিস্ট।
জন্মভূমির প্রতি গভীর দায়িত্ববোধের কারণে, ডা. মোর্শেদ সর্বদা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে তাদেরকে হাসিনা সরকারের অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলার অনুরোধ করেছেন। এমনকি এবিসি বাংলা চ্যানেলের মতো প্ল্যাটফর্মে নিজের কণ্ঠস্বর তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন ডা. মোর্শেদ। সেখানে তিনি প্রাক্তন কূটনীতিক সাকিব আলী, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম যিনি বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর, এবিসি বাংলা চ্যানেলের লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ, আলাউর খন্দকার, ড. তাজ হাসমি এবং অন্যান্য ব্যক্তিত্বদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি টাইম টিভিতে সাংবাদিক আবু তাহের, সালাহউদ্দিন আহমেদ, হেলাল উদ্দিন রানা এবং অন্যান্যদের সাথে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি ‘ফেস দ্য পিপল’ অনুষ্ঠানেও কথোপকথনে উপস্থিত হয়েছেন। ন্যায়বিচারের পক্ষে সওয়াল করার জন্য ডা. মোর্শেদের অটল প্রতিশ্রæতি তুলে ধরেন যে, রাজনৈতিক বৃত্তে না থেকেও বাংলাদেশের একটি উন্নত ভবিষ্যত গড়ার লক্ষ্যে তিনি অবিচল।
বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের পক্ষে ওকালতি করার লক্ষ্যে ডা. মনজুর মোর্শেদ গণমাধ্যম ছাড়িয়েও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত¡দের সাথে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিউইয়র্কে কার্ডিওলজিস্ট হিসাবে তার ব্যস্ত কর্মসূচির মধ্যেও তিনি হোয়াইট হাউস, পররাষ্ট্র সচিব এবং বিভিন্ন সিনেটরকে চিঠি লিখে নিজের কথা জানিয়েছেন। কংগ্রেসম্যানরা অনেকেই তার উদ্বেগের কথা স্বীকার করে সেই চিঠির উত্তর দিয়েছেন। এমনকি জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের কাছেও তিনি তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উপরন্তু, তিনি দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস, দ্যা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের মতো প্রকাশনাগুলোতে অনেক নিবন্ধ পাঠিয়েছেন, যা পাঠকদের কাছে তার বার্তাকে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে।
দূরে থেকেও দেশকে যে গভীর ভালোবাসা যায়, তারই আদর্শ উদাহরণ হলেন ডা. মোর্শেদ। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিবাদী প্রবণতার বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। সাহসের সাথে তার দেশের নাগরিকদের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তার কথা বলার দৃঢ়তা, অন্যায়কে চ্যালেঞ্জ করার এবং পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করার মানসিকতা একজন ব্যক্তির দৃঢ় সংকল্পকে তুলে ধরে।
বাধার মুখোমুখি হয়েও, শেখ হাসিনার শাসনামলে অন্যায়ের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ডা. মোর্শেদের দৃঢ় সংকল্প সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি তার অঙ্গীকারকে তুলে ধরেন। গেøাবাল প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে, তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের কণ্ঠস্বরকে প্রসারিত করতে এবং জবাবদিহিতা ও সংস্কারের পক্ষে লড়ে যান। দেশের সংগ্রামের গল্পগুলিকে বিস্তৃত শ্রোতার কাছে পৌঁছে দিতে একটি সেতুর মতো কাজ করে চলেছেন ডা. মোর্শেদ, যারা পরিবর্তন চাচ্ছেন তাদের মধ্যে যাতে সংহতির অনুভূতি জেগে ওঠে।
এ মুহূর্তে, দেশ একটি নতুন বাংলাদেশের স্বাধীনতা উদযাপন করছে। অগণিত ব্যক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে যাদের গল্প প্রায়শই শোনা যায় না। যারা দেশের অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, নিপীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন, তাদের আজীবন মনে রাখবে জাতি। অপরদিকে যারা ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করে গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমাদের অবশ্যই এমন একটি ভবিষ্যত গড়তে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হতে হবে যেখানে অতীতের মতো কোনো স্বৈরাচার মসনদে ফিরে আসতে না পারে। (দৈনিক মানবজমিন)