নিউইয়র্ক ০৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অতিরাজনীতিই রাজনীতিকের মহাপাপ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুলাই ২০১৮
  • / ৬৪০ বার পঠিত

আবু জাফর মাহমুদ: রাষ্ট্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে কথা। বলছিলাম, অতি চালাকের গলায় ফাঁস, অতি রাজনীতিই রাজনীতিকের মহাপাপ। উপমহাদেশে ভূট্টো, ইন্দিরা, মুজিব, জিয়া সহ কয়েকজন রাজনীতিকের অসহায় পরিণতির সাক্ষী আমরা। বিদায়কালে এদের অসহায়ত্ব ছিলো সাধারণের কল্পনারও অতীত। ক্ষমতার দোর্দন্ড প্রতাপ তারা ফুটিয়ে তুলতেন বকৃতার উত্তাপে, প্রতিপক্ষ নির্মূলে নির্দয়ে।
বাংলাদেশে ক’বছর ধরে যে নির্দয়তা, তা কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, পুরো দেশবাসী, সমগ্র জাতিকেই করা হচ্ছে টার্গেট। রাজনীতির শিশু বয়সে প্রদেশকে সংগঠিত করতে পৃষ্টপোষক ছিলো রাজনীতি, সেই জনপদের সুসংগঠিত ও জনগণকে বিভেদ বিভক্ত ও পারস্পরিক হত্যাযজ্ঞের চাপে ফেলে বর্বর করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছে রাজনীতি। বিষাক্ত নেশা ও যৌন অশ্লীলতায় অসুস্থ করছে রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতা। অপরাধের এই বিছানো অন্ধকারের তলে চলছে লুন্ঠন ও সম্পদ পাচার। একা সরকারী দল ও সরকারের বিশেষ সুযোগপ্রাপ্তরা শুধু নয়, ছদ্মবেশী বিরোধী রাজনীতিকরাও ভাগাভাগি করে লুটছে দেশ,লুটছে মানুষ।
অতীতে রাজনৈতিক কৌশলের দূরন্তপনায় ক্ষমতাসীনরা ঐ নিষ্ঠুরতাকে যৌক্তিক বলে প্রমাণ করতেন, যুক্তির পারদর্শিতা দেখাতে ছিলেন দারুণ আবেগী। কেবল তা-ই নয়,উল্লেখিত রাজনীতিকরা তাদের জমানায় ছিলেন প্রবল আতœবিশ্বাসী নেতা। দেশ ও জাতির কাছে অসীম প্রভাবশালী। বিরোধীদলীয় দেশপ্রেমিক ও জনপ্রিয় নেতা কর্মীদেরকে নিষ্কৃয় ও নির্মূলে ছিলেন অদ্বিতীয়। বাংলাদেশে প্রধান লক্ষ্য ছিলো পাকিস্তানী আক্রমণকারী ও পরাজিত বাহিনীর অসমাপ্ত দায়িত্ব পালন করা। স্বাধীনতাযোদ্ধাদেরকে হত্যা করে জনগণকে লোভী ও ভুঁইফোঁড় রাজনীতিকদের উপর নির্ভরশীল করা। হানাদার, রাজাকার যাদের মুখোমুখী হয়ে টিকতে পারেনি। বাংলাদেশী সরকারী বাহিনীকে হুকুম দেবার রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করেই তাদেরকে করা হয়েছে নির্মূল।
অথচ এই রাজনীতিকের নিজের মৃত্যযাত্রা ঠেকানোর সামান্য ক্ষমতাও দেখা যায়নি সময়ের পরীক্ষাকালে। এই পরীক্ষায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতে একই ধারা দেখা গেছে কাকতালীয়ভাবে। শেখ মুজিবুর রহমান, জুলফিকার আলী ভূট্টো ও ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন এই উপমহাদেশে আঞ্চলিক পর্যায়ের রাজনীতিক, যারা তাদের সংশ্লিষ্ট অনুগতদের কাছে ছিলেন যাদুকর নেতা। দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদী প্রেরণায় একটা সময় পর্যন্ত তারা সবাই ছিলেন নিজ নিজ দেশে জনপ্রিয়।এদের পরিণতি
আমরা দেখেছি। এই নেতাদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে নিজ নিজ দেশে গণহত্যার পর এক অভিশপ্ত উদাহরণ রূপে।
রাষ্ট্রক্ষমতাকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে তার অপব্যবহারে তারা হয়েছিলেন বেপরোয়া। তারা অবাধ্য হয়েছিলেন বিশ্বরাজনীতির নির্দেশনার। ভেবেছিলেন নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা বুঝি বিশ্বরাজনীতির ক্ষমতার সমকক্ষ হয়ে গেছে।বিভিন্ন পদক কোম্পানীর পদক হাতে পেয়ে গলায় ঝুলিয়ে ভাব করেছেন নিজেই একক ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন। এই রাজনীতিকরা জীবনের বিদায়কালে প্রমাণ দিয়ে গেছেন রাজনৈতিক পাপের উদাহরণ হয়ে। ব্যদনাদায়ক মৃত্যুই জুটেছে তাদের ভাগ্যে। তাদের রাজনৈতিক পাপের প্রায়শ্চিত্ত নির্দ্দিষ্ট হয়ে গেছে তাদেরই বংশধরদের জন্যে।
এটা আমার ধারণা, আমার মত। কোন জ্ঞানীজন আমার মতের সাথে ভিন্নমতে থাকলে সেই মতের প্রতি আমার সম্মান থাকলো। বোকাদের সাথে তর্ক করা আমার কাজ নয়। বর্তমান এবং ভবিষ্যতের রাজনীতিকরা যেনো অতীত থেকে শিক্ষা নেন। অতীতের তথ্যই জ্ঞানের উপকরণ। জ্ঞান ¯্রষ্টার দেয়া বিশেষ উপহার। জ্ঞান নিয়ে কৃপনতার অধিকার কাউকে ¯্রষ্টা দেননি। জ্ঞানের কৃপনতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, এর জবাবদিহি করতেই হবে ¯্রষ্টা কাছে। তবে বিতর্ক ও জ্ঞান এককথা নয়।
রাজনৈতিক বিপথগামিতা ভীষণ ভয়ানক।
রাজনৈতিক দায়িত্ব ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বাড়াবাড়ির সীমা দেশের ভেতরেই সীমিত। দেশ এবং মহাদেশ, মহাদেশ এবং দুনিয়ার ক্ষমতার চরিত্র না বুঝে সরকার গঠন করা যায়। তবে রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে মহাদেশ ও দুনিয়ার রাজনৈতিক ক্ষমতার ধারা বুঝে তার নিয়মের অনুগত থাকা না থাকার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আমার সীমিত ক্ষমতার উত্তাপ যদি আমিই সহ্য করতে না পারি এবং সেই ক্ষমতায় আমি অপরের জীবন বিপন্ন করি এবং প্রাণ হত্যা করি, এতে আমি কি অপরকে আমাকে হত্যা করার অধিকার স্বীকার করে নিলামনা? প্রাণের ¯্রষ্টা আল্লাহই প্রাণ হত্যার একমাত্র মালিক। আল্লাহ্ বলে রেখেছেন। পরিস্কার লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন,“আমি তোমাদের মৃত্যুর দিন নির্দ্দিষ্ট করে রেখেছি”(কোরআনঃ সুরা ওয়াক্কিয়া,৬০ নম্বর আয়াত)। নেতা প্রাণ সৃষ্টি করেননি, তিনি হত্যা করার অধিকারীও নন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধাদের যে রাজনীতিবিদ হত্যার আদেশ দিয়েছেন বা হত্যা করিয়েছেন সেই রাজনীতিকের অসম্মানের পরিস্থিতি আমরা দেখেছি। যারা স্বাধীনতাযোদ্ধাদের সরলতা ও পবিত্র দেশপ্রেমের অবমূল্যান ও অপমান করেছেন তাদের উপর আল্লাহর লা’নত আমরা দেখেছি। তাই, বিপথগামি ক্ষমতাধর রাজনীতিকরা যেনো সতর্ক হন।
নাগরিকদের পবিত্র আমানতের খেয়ানত না করার রাজনীতিতে যত চাঞ্চল্য থাকুক, নাটকীয়তা থাকুক, এতে সাধারণ মানুষ কখনো সমর্থন দেয়না। তাই সন্ত্রাস বা উগ্রবাদে মানুষের সমর্থন দেখা যায়নি বাংলাদেশে। তা বিপ্লবের নামে হউক, আর ধর্মের নামে হউক। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলের প্রধান প্রধান রাজনীতিক নীরিহ মানুষ হত্যা করেছেন রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করে। তারা কেউই জনগণের ভরসায় আর রাজনীতি করতে সাহস পাননা। জনগনের সমর্থনহীন রাজনীতিতেই একমাত্র বিকল্প হচ্ছে, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। মুখে গণতন্ত্র এবং বাস্তবে গণবিচ্ছিন্ন হয়েও ক্ষমতাভোগের লিপ্সাটাই রাজনীতি বিদকে প্রতিপক্ষ হত্যায় প্ররোচিত করে আসছে। এই প্ররোচনাটাই শয়তানের কাজ। শয়তান মানুষকে বিপথগামি করে।
বিপথগামিতাতেই শয়তানের সফলতা এবং পাপী রাজনীতিকের সাময়িক বিজয়। এই বিজয় প্রকৃত বিজয় নয়, এটা আসলে আলেয়ার মতো আলো। ক্ষনিকের ধাঁধাঁ। এই ধাঁধাঁয় আমরা মানবজাতির রাজনীতিবিদদের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। যে শাসকের কাছে মানুষ নিরাপদ,আল্লাহর দেয়া সেরা সম্মান ও পুরস্কার তার জন্যেই। যে শাসক মানুষের উপর জুলুম করেন, তিনি মানুষ এবং ফেরেস্তাদের অভিশাপ কুড়িয়ে নেন। আল্লাহ্র শাস্তি তার জন্যে অবধারিত। যাদের আল্লাহ এবং বিচার দিনে বিশ্বাস নেই, তাদের কর্মকান্ড নিয়ে আমার বিশ্লেষণ এবং মন্তব্যেরও কাজ নেই। সব মানুষ আল্লাহর কৃপা দয়া স্বীকার কথা নয়। আমরা রাষ্ট্রচালক ও রাজনীতিবিদ নেতাদের প্রতি আল্লাহর পুরস্কার বৃদ্ধি চাই, শয়তানের পুরস্কার ও পদক নয়।
ইদানিং বেশী বেশী দেখা যায়, ক্ষমতাবান রাজনীতিকরা অর্থ সম্পদের লোভে মানুষকে সারাক্ষণ প্রতারণা করেন এবং রাষ্ট্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। বাংলাদেশে প্রথম কাতারের রাজনীতিবিদ সম্প্রদায়কে আলাদা শ্রেণীরূপে পাওয়া যায়। এই পরিচয় মিলে তাদের আচরণে।এরা দলকে নিজের অনুগতবাহিনী রূপে গড়েন। কোন রাজনৈতিক দল সরকারের উপরে আছে কি জনতার হাঁটুর কাছে আছে তাতে কোন প্রার্থক্য দেখিনা। এরা রাষ্ট্র লুণ্ঠনে অংশীদার তলে তলে। ক্ষমতায় থাকলে শেয়ারের পরিমাণ বেশী আর বাহিরে যারা আছেন, তারা আনুপাতিক হারে একটা ভাগ নেন বলে বিদেশী প্রভাবশালী গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।
তথ্যটি যদি ঠিক হয়, তাতে ধরে নেয়া যায়, দালাল রাজনীতিবিদদের আসল চেহারার একটা দিক তারা বললেন। বাংলাদেশে তৃতীয় কোন জোট হতে পারছেনা কেনো? এই তৃতীয় জোট বা ধারা করার প্রশ্নে প্রথম ও দ্বিতীয় জোটের মধ্যে রয়েছে সমঝোতা। তৃতীয় জোটের প্রস্তাবক রাজনীতিবিদরাও যে এদের একই চরিত্রের লূটেরা নন, তার প্রমাণ কি তারা দিতে পেরেছেন? তাও দেখা যায়নি। তবুও যত বেশী আলোচনা সমালোচনা ততো বেশী জবাবদিহিতার সুযোগ থাকে।
এতে কথা আসছে, এরা সমঝোতার মধ্যেই একে অপরকে সমর্থন করছেন এবং দেশের অনিবার্য্য ক্ষতিতে উভয় জোটই লাভ চুষে নিচ্ছেন এবং উভয় জোটই অপরাধী। বিদেশের সম্পদ কিনছে কেশ ডলারের বিনিময়ে মন্ত্রী ও সরকারী কর্মকর্তারা। বিরোধীদলীয় নেতারা। কথা হচ্ছে,এই তথ্যটি যেনো সত্য না হয়, তা প্রমাণ দেখার জন্যে মানুষ নজর রাখেন রাজনীতি বিদদের উপর। যেজন্যে সাধারণ মানুষের চোখে তা ধরা পড়ছে ব্যাপকহারে।
তবে অপরাধ প্রমাণিত হবার পরেও রাজনীতিবিদের তেমন কোন আপত্তি দেখা যায়না। এই ধরনের রাজনীতিবিদরা লজ্জা বিদায় দিয়েছেন বহু আগে। লজ্জাহীন রাজনীতি এই রাজনীতিবিদদের অলংকার। নির্লজ্জ হওয়াতে এরা বাহাদুরী অনুভব করেন এবং তা প্রকাশ প্রচারও করেন।
নির্লজ্জ রমনী যেমন প্রকাশ্যে যৌন আবেদনময়ীরূপে নিজেকে উপস্থাপন করে মজা ভোগ করেন, নিজের আকাক্সক্ষা পূরনে সফল হন, লোভী ও পাপী রাজনীতিবিদরাও নিজেদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করার সুযোগ নেন নিজের মতো করে। যদিও বিশেষ রমণীদের মতো বেশী প্রকাশ্য হতে এখনো পারেননি। তারা ভাব দেখান ওনারা গণতন্ত্রী এবং নীতিবাদী। গোপনে করেন লুটপাট এবং সকল অপরাধ-মহাঅপরাধের পৃষ্টপোষকতা। বাংলাদেশক আভ্যন্তরীন ও সীমান্তে নিরাপত্তাহীন করেছেন এই ধরনের রাজনীতিবিদরাই। প্রতিরক্ষাবাহিনীর দৃঢ় বাধা উপেক্ষা করেই ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদরা ধন সম্পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বিনিময়ে তা করে চলেছেন। বাংলাদেশের জন্মকাল এবং তার পথ চলার শুরু থেকে আমরা রাজনীতিবিদদেরকে অন্ধ আনুগত্য দেখানোর রীতি ও নীতিধারার সাথে পরিচিত হয়েছি। পাকিস্তানকে যুদ্ধে পরাজিত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়ে সকল বাংলাদেশীর সুখ ও সমৃদ্ধির রঙিন স্বপ্নে বিভোর থেকেছি। চোখের সামনে বাস্তবে দেখা অসঙ্গতিগুলো মুছে দিচ্ছে দেখেও বড় নেতার বক্তৃতা ও নির্দ্দেশে ঠোঁট চেপে নীরব থেকেছি, নেতার ভয়ে চুপসে গেছি। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের কোষাগার সহ অপরাপর অমূল্য সম্পদ লুট হবার খবর পেয়েছি। নিজেদের অনুভূতি ও আবেগের সৌন্দর্য্যগুলো বিনাশ করার নির্মমতা হজম করে চলেছি ব্যদনায় বুক চেপে চেপে।
আমরা আমাদের শৈশবকাল থেকে যেসব নেতাদেরকে আকাশের উচ্চতায় জনপ্রিয় করে তুলেছি এবং এমন উচ্চতায় সম্মানিত হতে দেখেছি তাদেরকে সমালোচনার উর্ধে ভেবেছি। তাই সরবে বিরোধীতা তো দূরের কথা, নেতার কোন দূর্বলতার দিকে উঁকি মেরে দেখাটাকেও রাষ্ট্রও সরকার সন্দেহের চোখে দেখেছে। এমনকি এরকম উঁকি মারার ঝোঁকগুলোকে উচিত শিক্ষা দিতে যেকোন ধরণের সামরিক নিষ্ঠুরতার প্রয়োগ করেছে বিশেষ নেতা এবং তার অধীনস্থরা। রাষ্ট্রযন্ত্র এবং সরকারী প্রশাসনের নির্মম দমন পীড়নের মাধ্যমে সামান্য সমালোচনাকেও কঠোর শাস্তি দেয়া হতো দেখে নিজের ভেতরে পরিবর্তনের লক্ষণ দেখেছি। দেশবাসী সাধারণ মানুষের সাথে সাথে আমরা ও নিজের মনোভাব পরিবর্তনের তৎপরতা প্রকাশ করেছি।
পৃথিবীর দেশে দেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নয়া ছক আসছে বলে ধারণা। তাই, ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশের সরকার এবং রাজনীতির দিকে নজর কেন্দ্রীভূত করে চলেছি। আগে দেখেছি বাংলাদেশী রাজনীতিক এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ী বীরের দৃষ্টিতে, এখন দেখছি বিশ্বনেতা আমেরিকার স্বার্থরক্ষায় শপথ নেয়ার অঙ্গিকার রক্ষাকারীর দৃষ্টি থেকে। দুনিয়ায় জীবন তো একটাই।
(লেখক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধা)।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

অতিরাজনীতিই রাজনীতিকের মহাপাপ

প্রকাশের সময় : ০৪:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুলাই ২০১৮

আবু জাফর মাহমুদ: রাষ্ট্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে কথা। বলছিলাম, অতি চালাকের গলায় ফাঁস, অতি রাজনীতিই রাজনীতিকের মহাপাপ। উপমহাদেশে ভূট্টো, ইন্দিরা, মুজিব, জিয়া সহ কয়েকজন রাজনীতিকের অসহায় পরিণতির সাক্ষী আমরা। বিদায়কালে এদের অসহায়ত্ব ছিলো সাধারণের কল্পনারও অতীত। ক্ষমতার দোর্দন্ড প্রতাপ তারা ফুটিয়ে তুলতেন বকৃতার উত্তাপে, প্রতিপক্ষ নির্মূলে নির্দয়ে।
বাংলাদেশে ক’বছর ধরে যে নির্দয়তা, তা কেবল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, পুরো দেশবাসী, সমগ্র জাতিকেই করা হচ্ছে টার্গেট। রাজনীতির শিশু বয়সে প্রদেশকে সংগঠিত করতে পৃষ্টপোষক ছিলো রাজনীতি, সেই জনপদের সুসংগঠিত ও জনগণকে বিভেদ বিভক্ত ও পারস্পরিক হত্যাযজ্ঞের চাপে ফেলে বর্বর করে তুলতে সচেষ্ট রয়েছে রাজনীতি। বিষাক্ত নেশা ও যৌন অশ্লীলতায় অসুস্থ করছে রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতা। অপরাধের এই বিছানো অন্ধকারের তলে চলছে লুন্ঠন ও সম্পদ পাচার। একা সরকারী দল ও সরকারের বিশেষ সুযোগপ্রাপ্তরা শুধু নয়, ছদ্মবেশী বিরোধী রাজনীতিকরাও ভাগাভাগি করে লুটছে দেশ,লুটছে মানুষ।
অতীতে রাজনৈতিক কৌশলের দূরন্তপনায় ক্ষমতাসীনরা ঐ নিষ্ঠুরতাকে যৌক্তিক বলে প্রমাণ করতেন, যুক্তির পারদর্শিতা দেখাতে ছিলেন দারুণ আবেগী। কেবল তা-ই নয়,উল্লেখিত রাজনীতিকরা তাদের জমানায় ছিলেন প্রবল আতœবিশ্বাসী নেতা। দেশ ও জাতির কাছে অসীম প্রভাবশালী। বিরোধীদলীয় দেশপ্রেমিক ও জনপ্রিয় নেতা কর্মীদেরকে নিষ্কৃয় ও নির্মূলে ছিলেন অদ্বিতীয়। বাংলাদেশে প্রধান লক্ষ্য ছিলো পাকিস্তানী আক্রমণকারী ও পরাজিত বাহিনীর অসমাপ্ত দায়িত্ব পালন করা। স্বাধীনতাযোদ্ধাদেরকে হত্যা করে জনগণকে লোভী ও ভুঁইফোঁড় রাজনীতিকদের উপর নির্ভরশীল করা। হানাদার, রাজাকার যাদের মুখোমুখী হয়ে টিকতে পারেনি। বাংলাদেশী সরকারী বাহিনীকে হুকুম দেবার রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করেই তাদেরকে করা হয়েছে নির্মূল।
অথচ এই রাজনীতিকের নিজের মৃত্যযাত্রা ঠেকানোর সামান্য ক্ষমতাও দেখা যায়নি সময়ের পরীক্ষাকালে। এই পরীক্ষায় বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতে একই ধারা দেখা গেছে কাকতালীয়ভাবে। শেখ মুজিবুর রহমান, জুলফিকার আলী ভূট্টো ও ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন এই উপমহাদেশে আঞ্চলিক পর্যায়ের রাজনীতিক, যারা তাদের সংশ্লিষ্ট অনুগতদের কাছে ছিলেন যাদুকর নেতা। দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদী প্রেরণায় একটা সময় পর্যন্ত তারা সবাই ছিলেন নিজ নিজ দেশে জনপ্রিয়।এদের পরিণতি
আমরা দেখেছি। এই নেতাদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে নিজ নিজ দেশে গণহত্যার পর এক অভিশপ্ত উদাহরণ রূপে।
রাষ্ট্রক্ষমতাকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে তার অপব্যবহারে তারা হয়েছিলেন বেপরোয়া। তারা অবাধ্য হয়েছিলেন বিশ্বরাজনীতির নির্দেশনার। ভেবেছিলেন নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতা বুঝি বিশ্বরাজনীতির ক্ষমতার সমকক্ষ হয়ে গেছে।বিভিন্ন পদক কোম্পানীর পদক হাতে পেয়ে গলায় ঝুলিয়ে ভাব করেছেন নিজেই একক ক্ষমতাধর হয়ে গেছেন। এই রাজনীতিকরা জীবনের বিদায়কালে প্রমাণ দিয়ে গেছেন রাজনৈতিক পাপের উদাহরণ হয়ে। ব্যদনাদায়ক মৃত্যুই জুটেছে তাদের ভাগ্যে। তাদের রাজনৈতিক পাপের প্রায়শ্চিত্ত নির্দ্দিষ্ট হয়ে গেছে তাদেরই বংশধরদের জন্যে।
এটা আমার ধারণা, আমার মত। কোন জ্ঞানীজন আমার মতের সাথে ভিন্নমতে থাকলে সেই মতের প্রতি আমার সম্মান থাকলো। বোকাদের সাথে তর্ক করা আমার কাজ নয়। বর্তমান এবং ভবিষ্যতের রাজনীতিকরা যেনো অতীত থেকে শিক্ষা নেন। অতীতের তথ্যই জ্ঞানের উপকরণ। জ্ঞান ¯্রষ্টার দেয়া বিশেষ উপহার। জ্ঞান নিয়ে কৃপনতার অধিকার কাউকে ¯্রষ্টা দেননি। জ্ঞানের কৃপনতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, এর জবাবদিহি করতেই হবে ¯্রষ্টা কাছে। তবে বিতর্ক ও জ্ঞান এককথা নয়।
রাজনৈতিক বিপথগামিতা ভীষণ ভয়ানক।
রাজনৈতিক দায়িত্ব ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বাড়াবাড়ির সীমা দেশের ভেতরেই সীমিত। দেশ এবং মহাদেশ, মহাদেশ এবং দুনিয়ার ক্ষমতার চরিত্র না বুঝে সরকার গঠন করা যায়। তবে রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে মহাদেশ ও দুনিয়ার রাজনৈতিক ক্ষমতার ধারা বুঝে তার নিয়মের অনুগত থাকা না থাকার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। আমার সীমিত ক্ষমতার উত্তাপ যদি আমিই সহ্য করতে না পারি এবং সেই ক্ষমতায় আমি অপরের জীবন বিপন্ন করি এবং প্রাণ হত্যা করি, এতে আমি কি অপরকে আমাকে হত্যা করার অধিকার স্বীকার করে নিলামনা? প্রাণের ¯্রষ্টা আল্লাহই প্রাণ হত্যার একমাত্র মালিক। আল্লাহ্ বলে রেখেছেন। পরিস্কার লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন,“আমি তোমাদের মৃত্যুর দিন নির্দ্দিষ্ট করে রেখেছি”(কোরআনঃ সুরা ওয়াক্কিয়া,৬০ নম্বর আয়াত)। নেতা প্রাণ সৃষ্টি করেননি, তিনি হত্যা করার অধিকারীও নন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধাদের যে রাজনীতিবিদ হত্যার আদেশ দিয়েছেন বা হত্যা করিয়েছেন সেই রাজনীতিকের অসম্মানের পরিস্থিতি আমরা দেখেছি। যারা স্বাধীনতাযোদ্ধাদের সরলতা ও পবিত্র দেশপ্রেমের অবমূল্যান ও অপমান করেছেন তাদের উপর আল্লাহর লা’নত আমরা দেখেছি। তাই, বিপথগামি ক্ষমতাধর রাজনীতিকরা যেনো সতর্ক হন।
নাগরিকদের পবিত্র আমানতের খেয়ানত না করার রাজনীতিতে যত চাঞ্চল্য থাকুক, নাটকীয়তা থাকুক, এতে সাধারণ মানুষ কখনো সমর্থন দেয়না। তাই সন্ত্রাস বা উগ্রবাদে মানুষের সমর্থন দেখা যায়নি বাংলাদেশে। তা বিপ্লবের নামে হউক, আর ধর্মের নামে হউক। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলের প্রধান প্রধান রাজনীতিক নীরিহ মানুষ হত্যা করেছেন রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করে। তারা কেউই জনগণের ভরসায় আর রাজনীতি করতে সাহস পাননা। জনগনের সমর্থনহীন রাজনীতিতেই একমাত্র বিকল্প হচ্ছে, ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। মুখে গণতন্ত্র এবং বাস্তবে গণবিচ্ছিন্ন হয়েও ক্ষমতাভোগের লিপ্সাটাই রাজনীতি বিদকে প্রতিপক্ষ হত্যায় প্ররোচিত করে আসছে। এই প্ররোচনাটাই শয়তানের কাজ। শয়তান মানুষকে বিপথগামি করে।
বিপথগামিতাতেই শয়তানের সফলতা এবং পাপী রাজনীতিকের সাময়িক বিজয়। এই বিজয় প্রকৃত বিজয় নয়, এটা আসলে আলেয়ার মতো আলো। ক্ষনিকের ধাঁধাঁ। এই ধাঁধাঁয় আমরা মানবজাতির রাজনীতিবিদদের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে যাই। যে শাসকের কাছে মানুষ নিরাপদ,আল্লাহর দেয়া সেরা সম্মান ও পুরস্কার তার জন্যেই। যে শাসক মানুষের উপর জুলুম করেন, তিনি মানুষ এবং ফেরেস্তাদের অভিশাপ কুড়িয়ে নেন। আল্লাহ্র শাস্তি তার জন্যে অবধারিত। যাদের আল্লাহ এবং বিচার দিনে বিশ্বাস নেই, তাদের কর্মকান্ড নিয়ে আমার বিশ্লেষণ এবং মন্তব্যেরও কাজ নেই। সব মানুষ আল্লাহর কৃপা দয়া স্বীকার কথা নয়। আমরা রাষ্ট্রচালক ও রাজনীতিবিদ নেতাদের প্রতি আল্লাহর পুরস্কার বৃদ্ধি চাই, শয়তানের পুরস্কার ও পদক নয়।
ইদানিং বেশী বেশী দেখা যায়, ক্ষমতাবান রাজনীতিকরা অর্থ সম্পদের লোভে মানুষকে সারাক্ষণ প্রতারণা করেন এবং রাষ্ট্রের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। বাংলাদেশে প্রথম কাতারের রাজনীতিবিদ সম্প্রদায়কে আলাদা শ্রেণীরূপে পাওয়া যায়। এই পরিচয় মিলে তাদের আচরণে।এরা দলকে নিজের অনুগতবাহিনী রূপে গড়েন। কোন রাজনৈতিক দল সরকারের উপরে আছে কি জনতার হাঁটুর কাছে আছে তাতে কোন প্রার্থক্য দেখিনা। এরা রাষ্ট্র লুণ্ঠনে অংশীদার তলে তলে। ক্ষমতায় থাকলে শেয়ারের পরিমাণ বেশী আর বাহিরে যারা আছেন, তারা আনুপাতিক হারে একটা ভাগ নেন বলে বিদেশী প্রভাবশালী গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।
তথ্যটি যদি ঠিক হয়, তাতে ধরে নেয়া যায়, দালাল রাজনীতিবিদদের আসল চেহারার একটা দিক তারা বললেন। বাংলাদেশে তৃতীয় কোন জোট হতে পারছেনা কেনো? এই তৃতীয় জোট বা ধারা করার প্রশ্নে প্রথম ও দ্বিতীয় জোটের মধ্যে রয়েছে সমঝোতা। তৃতীয় জোটের প্রস্তাবক রাজনীতিবিদরাও যে এদের একই চরিত্রের লূটেরা নন, তার প্রমাণ কি তারা দিতে পেরেছেন? তাও দেখা যায়নি। তবুও যত বেশী আলোচনা সমালোচনা ততো বেশী জবাবদিহিতার সুযোগ থাকে।
এতে কথা আসছে, এরা সমঝোতার মধ্যেই একে অপরকে সমর্থন করছেন এবং দেশের অনিবার্য্য ক্ষতিতে উভয় জোটই লাভ চুষে নিচ্ছেন এবং উভয় জোটই অপরাধী। বিদেশের সম্পদ কিনছে কেশ ডলারের বিনিময়ে মন্ত্রী ও সরকারী কর্মকর্তারা। বিরোধীদলীয় নেতারা। কথা হচ্ছে,এই তথ্যটি যেনো সত্য না হয়, তা প্রমাণ দেখার জন্যে মানুষ নজর রাখেন রাজনীতি বিদদের উপর। যেজন্যে সাধারণ মানুষের চোখে তা ধরা পড়ছে ব্যাপকহারে।
তবে অপরাধ প্রমাণিত হবার পরেও রাজনীতিবিদের তেমন কোন আপত্তি দেখা যায়না। এই ধরনের রাজনীতিবিদরা লজ্জা বিদায় দিয়েছেন বহু আগে। লজ্জাহীন রাজনীতি এই রাজনীতিবিদদের অলংকার। নির্লজ্জ হওয়াতে এরা বাহাদুরী অনুভব করেন এবং তা প্রকাশ প্রচারও করেন।
নির্লজ্জ রমনী যেমন প্রকাশ্যে যৌন আবেদনময়ীরূপে নিজেকে উপস্থাপন করে মজা ভোগ করেন, নিজের আকাক্সক্ষা পূরনে সফল হন, লোভী ও পাপী রাজনীতিবিদরাও নিজেদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করার সুযোগ নেন নিজের মতো করে। যদিও বিশেষ রমণীদের মতো বেশী প্রকাশ্য হতে এখনো পারেননি। তারা ভাব দেখান ওনারা গণতন্ত্রী এবং নীতিবাদী। গোপনে করেন লুটপাট এবং সকল অপরাধ-মহাঅপরাধের পৃষ্টপোষকতা। বাংলাদেশক আভ্যন্তরীন ও সীমান্তে নিরাপত্তাহীন করেছেন এই ধরনের রাজনীতিবিদরাই। প্রতিরক্ষাবাহিনীর দৃঢ় বাধা উপেক্ষা করেই ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদরা ধন সম্পদ ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বিনিময়ে তা করে চলেছেন। বাংলাদেশের জন্মকাল এবং তার পথ চলার শুরু থেকে আমরা রাজনীতিবিদদেরকে অন্ধ আনুগত্য দেখানোর রীতি ও নীতিধারার সাথে পরিচিত হয়েছি। পাকিস্তানকে যুদ্ধে পরাজিত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়ে সকল বাংলাদেশীর সুখ ও সমৃদ্ধির রঙিন স্বপ্নে বিভোর থেকেছি। চোখের সামনে বাস্তবে দেখা অসঙ্গতিগুলো মুছে দিচ্ছে দেখেও বড় নেতার বক্তৃতা ও নির্দ্দেশে ঠোঁট চেপে নীরব থেকেছি, নেতার ভয়ে চুপসে গেছি। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের কোষাগার সহ অপরাপর অমূল্য সম্পদ লুট হবার খবর পেয়েছি। নিজেদের অনুভূতি ও আবেগের সৌন্দর্য্যগুলো বিনাশ করার নির্মমতা হজম করে চলেছি ব্যদনায় বুক চেপে চেপে।
আমরা আমাদের শৈশবকাল থেকে যেসব নেতাদেরকে আকাশের উচ্চতায় জনপ্রিয় করে তুলেছি এবং এমন উচ্চতায় সম্মানিত হতে দেখেছি তাদেরকে সমালোচনার উর্ধে ভেবেছি। তাই সরবে বিরোধীতা তো দূরের কথা, নেতার কোন দূর্বলতার দিকে উঁকি মেরে দেখাটাকেও রাষ্ট্রও সরকার সন্দেহের চোখে দেখেছে। এমনকি এরকম উঁকি মারার ঝোঁকগুলোকে উচিত শিক্ষা দিতে যেকোন ধরণের সামরিক নিষ্ঠুরতার প্রয়োগ করেছে বিশেষ নেতা এবং তার অধীনস্থরা। রাষ্ট্রযন্ত্র এবং সরকারী প্রশাসনের নির্মম দমন পীড়নের মাধ্যমে সামান্য সমালোচনাকেও কঠোর শাস্তি দেয়া হতো দেখে নিজের ভেতরে পরিবর্তনের লক্ষণ দেখেছি। দেশবাসী সাধারণ মানুষের সাথে সাথে আমরা ও নিজের মনোভাব পরিবর্তনের তৎপরতা প্রকাশ করেছি।
পৃথিবীর দেশে দেশে রাজনৈতিক কর্মকান্ডের নয়া ছক আসছে বলে ধারণা। তাই, ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশের সরকার এবং রাজনীতির দিকে নজর কেন্দ্রীভূত করে চলেছি। আগে দেখেছি বাংলাদেশী রাজনীতিক এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে বিজয়ী বীরের দৃষ্টিতে, এখন দেখছি বিশ্বনেতা আমেরিকার স্বার্থরক্ষায় শপথ নেয়ার অঙ্গিকার রক্ষাকারীর দৃষ্টি থেকে। দুনিয়ায় জীবন তো একটাই।
(লেখক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধা)।