হককথা ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাইলো ফাইব্রোসেসে (রক্তে ক্যান্সার) আক্রান্ত ছিলেন। দু’দিন যাবত লাইফ সাপোর্টে থাকার পর মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকার গেন্ডারিয়ার আসগর আলী হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার ইন্তেকালের খবরে দেশ ও প্রবাসের সাংবাদিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উল্লেখ্য, জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আপন ছোটভাই। মুহম্মদ জাহাঙ্গীর সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম, রাজনীতি ও অন্যান্য বিষয়ে ২৭টি বইয়ের রচয়িতা। এগুলোর বেশিরভাগই সাংবাদিকতা নির্ভর। তিনি সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিনিউকেশনের নির্বাহী পরিচালক।
মরহুম মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের পুত্র অপূর্ব জাহাঙ্গীর জানান ‘বাবার মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে। সকালে বাসায় নেয়া হবে। এরপর জানাযা ও অন্যান্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১৯৫১ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মিডিয়া বিষয়ক একজন লেখক হিসেবে বাংলাদেশে সুপরিচিত। এ ছাড়াও রাজনীতি ও বিভিন্ন সমসাময়িক বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম লিখতেন। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি সকলের কাছে একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হয়ে উঠেন। ঢাকার জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’ ও চট্টগ্রামের দৈনিক ‘আজাদীতে তিনি নিয়মিত লিখতেন।
তিনি চট্টগ্রাম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি সক্রিয় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১৯৭০ সালে দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। ১৯৮০ সালে তিনি সক্রিয় সাংবাদিকতা ছেড়ে প্রেস ইনষ্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এ সাংবাদিক প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন।
১৯৯৫ সালে তিনি সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট কম্যুনিকেশন নামে একটি বেসরকারি মিডিয়া সংস্থা গঠন করে এর নির্বাহী পরিচালকর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে বেতার ও ১৯৭৬ সাল থেকে টিভি মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত। চলতি বিষয়ধর্মী টক শো’র সফল মডারেটর হিসেবে তিনি বিশেষ পরিচিতি অর্জন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ এম এ ও সাংবাদিকতায় এম এ ডিগ্রী লাভ করেছেন। তিনি ঢাকার ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউল্যাব)-এর মিডিয়া স্টাডিজ এ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের খন্ডকালীন অধ্যাপক ছিলেন। তার লেখা ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা সাতাশটি।