পাউবো অফিসে তথ্য আনতে যাওয়া সাংবাদিককে মারধর
- প্রকাশের সময় : ০৯:৩২:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ মে ২০২২
- / ৩৯ বার পঠিত
বাংলােদশ ডেস্ক : খাল ও বেতনা নদী খননের তথ্য আনতে গিয়ে সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হামলার শিকার হয়েছেন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের নিকট গিয়ে কথা বলার জন্য সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন ভিজিডিং কার্ড পাঠাতেই তার ওপর হামলা হয়। আগে থেকেই বাইরে থেকে নিয়ে রাখা লাঠি দিয়ে অফিস চত্বরে প্রকাশ্যে তাকে পেটানো হয়।
খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইয়ারবকে উদ্ধার করেন। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেটেই পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও তার প্রত্যাহারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন সাংবাদিকরা। বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে মানববন্ধন ও সমাবেশ।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিনিধি সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম. কামরুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদ আসাদুজ্জামান আসাদ, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, সাংবাদিক রেজাউল ইসলাম, মশিউর রহমান ফিরোজ, বেলাল হোসাইন, তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আকরামুল ইসলাম, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস বাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিএম আব্দুর রাজ্জাক, জেলা গণফোরামের সভাপতি আলী নুর খান বাবুল, জাতীয় ছাত্রসমাজ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন খান বাপ্পি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের একজন দুর্নীতিবাজ অফিসার। কোনো সাংবাদিক তথ্য জানতে ও আনতে তার অফিসে গেলেই চেতে ওঠেন। রোববার সাতক্ষীরার খাল খনন ও বেতনা নদী খননের তথ্য জানতে তার রুমের সামনে গেলেই দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন হোসেনের ওপর পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে আহত করে।
তারা বলেন, নদী খননের নামে সাতক্ষীরায় চলছে অনিয়ম ও দর্নীতি। চলছে কোটি কোটি টাকা লুটপাট।
বক্তারা এ সময় আগামী সাতদিনের মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আবুল খায়েরকে অপসারণসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
এছাড়া ৭২ ঘণ্টা পর থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
এদিকে আহত সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন বলেন, বেতনা নদী খনন কাজ চলমান রয়েছে। সেখানে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আমি এই খনন বিষয়ে কিছু তথ্য নেয়ার জন্য অফিসে আসি। প্রকৌশলী আবুল খায়েরের রুমের সামনে আসার ২-৩ মিনেটের মধ্যেই তিনি রুম থেকে বেরিয়ে সিকিউরিটিদের লাঠি নিয়ে আসার ইশারা দেন। মুহূর্তের মধ্যেই লাঠি নিয়ে আমার ওপর হামলে পড়ে সিকিউরিটি গার্ডরা।
‘এরপর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন, উপ-সহকারী কর্মকর্তা তন্ময় কুমার, সিকিউরিটি গার্ড প্রধান শহিদুল ইসলামসহ অফিসের ১০-১৫ জন এতে যোগ দেন। লাঠি দিয়ে মারপিট, চড়, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আমার মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেন তারা।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আরও জানান, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর জেলার দায়িত্বরত সাংবাদিকরা ছুটে আসেন। এরপর কোনো কিছু না জানিয়েই তিনি (প্রকৌশলী আবুল খায়ের) অফিস থেকে সটকে পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সদর থানা পুলিশের একটি দল।
সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই মিনাজ বলেন, খবরটি পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। থানায় অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। খবর বাংলাদেশ জার্নাল
হককথা/এমউএ