নিউইয়র্ক ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক সাপ্তাহিক প্রবাসের সম্পাদক গ্রেফতার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০১৭
  • / ৯৭৬ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক হতে প্রকাশিত এবং বিনামূুল্যে বিতরণকৃত ‘সাপ্তাহিক প্রবাস’ এর সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ (৪৯)কে অভিবাসন পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গত ২৪ মে ‘ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ (আইস) এর এজেন্টরা নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিং এলাকা থেকে সাঈদকে গ্রেফতার করেছে এবং তাকে রাখা হয়েছে নিউজার্সির হাডসন কাউন্টি কারাগারে। আইসের নিউইয়র্ক ফিল্ড অফিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা রাচায়েল ইয়ং ৩১ মে বুধবার এনআরবি নিউজের এ সংবাদদাতাকে এ তথ্য জানিয়ে আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক মোহাম্মদ সাঈদ যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনীভাবে প্রবেশ করেছেন অজানা সময় এবং দুর্গম সীমান্ত পথে। আইসের এজেন্টরা তাকে ২৪ মে গ্রেফতার করেছে অভিবাসনের আইন লংঘনের অভিযোগে। তাকে আইসের কাস্টডিতে রাখা হয়েছে ইমিগ্রেশন জজের সামনে হাজিরা প্রদানের অপেক্ষায়’। তবে কবে এবং কখন ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজির করা হবে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি বৃহস্পতিবার ভোর রাতে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত।
প্রায় দেড় যুগ যাবত নিউইয়র্কে বসবাসরত নারায়নগঞ্জের সন্তান সাঈদ নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে ইস্ট এলমহার্স্ট এলাকায় সপরিবারে বসবাস করছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবৈধ-অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপ শুরুর পরই সাঈদসহ নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আরো অন্তত: ৩টি বাংলাদেশী মিডিয়ার সম্পাদকসহ ৭ সাংবাদিক সন্ত্রস্ত জীবন-যাপন করছেন। এদের মধ্যে অন্তত: ৩ জন ২৫ বছরের অধিক সময় যাবত যুক্তরাষ্ট্রে বাস করলেও অভিবাসনের মর্যাদা লাভে সক্ষম হননি বলে প্রবাসীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। সাঈদ গ্রেফতারের পর অন্যসব অবৈধ অভিবাসীর মত এসব সাংবাদিক/সম্পাদকরাও অস্বস্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বলে জানা গেছে। তিন বছর আগে ‘সাপ্তাহিক প্রবাস’ প্রকাশের আগে সাঈদ ‘সাপ্তাহিক আজকাল’ পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
ইমিগ্রেশনের দপ্তর থেকে এ সংবাদদাতা আরো জানতে পেরেছেন যে, ‘অভিবাসনের আইন লংঘনকারিদের রেহাই দেয়া হবে না। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে শুরু হওয়া এ অভিযান এখন সঙ্গত কারণেই জোরদার করা হয়েছে। ৩০ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটি এবং এর আশপাশ থেকে ৮৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশীর সংখ্যা নিতান্তই কম বলেও সংশ্লিষ্টরা জানান। অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বক্তব্য অনুযায়ী কেবলমাত্র দাগী অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অনেক অসহায় ও নিরপরাধ ব্যক্তিরাও ধরা পড়েছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশী এই সাংবাদিক অভিবাসনের আইন ছাড়া অন্য কোন অপরাধে কখনো লিপ্ত ছিলেন বলে কেউ মনে করছেন না। পক্ষান্তরে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসসহ কুইন্সের বিভিন্ন স্থানে চিহ্নিত কিছু প্রবাসী রয়েছে, যারা গুরুতর অপরাধের দায়ে জেল-জুলুম খেটেছে কিংবা মামলায় ঝুলছে-তারা এখনও গ্রেফতার অভিযানে পড়েনি। অধিকন্তু এসব চিহ্নিত ব্যক্তিরা অভিবাসনের স্পর্শকাতর পরিস্থিতিকে পুঁজি করে অবৈধ অভিবাসীদের সাথে ধাপ্পাবাজির নানা ফন্দি-ফিকিড় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, ক্ষুব্ধ জনতার প্রতিরোধে পড়েছিলেন ইমিগ্রেশনের এজেন্টরা। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের রিচমন্ড হিল এলাকায় ৩০ মে মঙ্গলবার সকালে প্রতিরোধের মধ্য থেকেই এক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের এজেন্ট (আইস)রা। এ নিয়ে সর্বত্র আতংক দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহ থেকেই নিউইয়র্ক সিটি এবং লং আইল্যান্ড এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযানের কবলে বাংলাদেশীরাও রয়েছেন। আরো উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির পর সারা আমেরিকাতেই অবৈধদের ধরপাকড় জোরদার করা হয়েছে। সর্বত্র এক ধরনের সন্ত্রস্ত ভাব তৈরী হলেও এই প্রথম এজেন্টরা প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলেন।
এদিকে, লসএঞ্জেলেস সিটি এবং আশপাশে হানা দিয়ে গত সপ্তাহে কমপক্ষে ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইস। এর মধ্যে ১৮৮ জনই গুরুতর অপরাধী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের পর পুনরায় বেআইনীভাবে ঢুকেছিল বলে আইস উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এবং কোকেইন পাচারের মামলায় দন্ডিতরাও রয়েছে। অভিবাসন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জানুয়ারী থেকে অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের গ্রেফতারের হার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫% বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ হাজার ৮০০ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছর এই একই সময়ে গ্রেফতার হয় ৪২০০ জন। ট্রাম্পের আমলে মোট গ্রেফতার হয়েছে ৪১ হাজার ৩০০ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট। (এনআরবি নিউজ )

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

নিউইয়র্কে ইমিগ্রেশন পুলিশ কর্তৃক সাপ্তাহিক প্রবাসের সম্পাদক গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০২:০০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০১৭

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক হতে প্রকাশিত এবং বিনামূুল্যে বিতরণকৃত ‘সাপ্তাহিক প্রবাস’ এর সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ (৪৯)কে অভিবাসন পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গত ২৪ মে ‘ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ (আইস) এর এজেন্টরা নিউইয়র্ক সিটির ফ্লাশিং এলাকা থেকে সাঈদকে গ্রেফতার করেছে এবং তাকে রাখা হয়েছে নিউজার্সির হাডসন কাউন্টি কারাগারে। আইসের নিউইয়র্ক ফিল্ড অফিসের জনসংযোগ কর্মকর্তা রাচায়েল ইয়ং ৩১ মে বুধবার এনআরবি নিউজের এ সংবাদদাতাকে এ তথ্য জানিয়ে আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক মোহাম্মদ সাঈদ যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনীভাবে প্রবেশ করেছেন অজানা সময় এবং দুর্গম সীমান্ত পথে। আইসের এজেন্টরা তাকে ২৪ মে গ্রেফতার করেছে অভিবাসনের আইন লংঘনের অভিযোগে। তাকে আইসের কাস্টডিতে রাখা হয়েছে ইমিগ্রেশন জজের সামনে হাজিরা প্রদানের অপেক্ষায়’। তবে কবে এবং কখন ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজির করা হবে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি বৃহস্পতিবার ভোর রাতে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত।
প্রায় দেড় যুগ যাবত নিউইয়র্কে বসবাসরত নারায়নগঞ্জের সন্তান সাঈদ নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে ইস্ট এলমহার্স্ট এলাকায় সপরিবারে বসবাস করছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবৈধ-অভিবাসন বিরোধী পদক্ষেপ শুরুর পরই সাঈদসহ নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আরো অন্তত: ৩টি বাংলাদেশী মিডিয়ার সম্পাদকসহ ৭ সাংবাদিক সন্ত্রস্ত জীবন-যাপন করছেন। এদের মধ্যে অন্তত: ৩ জন ২৫ বছরের অধিক সময় যাবত যুক্তরাষ্ট্রে বাস করলেও অভিবাসনের মর্যাদা লাভে সক্ষম হননি বলে প্রবাসীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। সাঈদ গ্রেফতারের পর অন্যসব অবৈধ অভিবাসীর মত এসব সাংবাদিক/সম্পাদকরাও অস্বস্তির মধ্যে দিনাতিপাত করছেন বলে জানা গেছে। তিন বছর আগে ‘সাপ্তাহিক প্রবাস’ প্রকাশের আগে সাঈদ ‘সাপ্তাহিক আজকাল’ পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।
ইমিগ্রেশনের দপ্তর থেকে এ সংবাদদাতা আরো জানতে পেরেছেন যে, ‘অভিবাসনের আইন লংঘনকারিদের রেহাই দেয়া হবে না। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে শুরু হওয়া এ অভিযান এখন সঙ্গত কারণেই জোরদার করা হয়েছে। ৩০ মে পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটি এবং এর আশপাশ থেকে ৮৯০ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশীর সংখ্যা নিতান্তই কম বলেও সংশ্লিষ্টরা জানান। অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বক্তব্য অনুযায়ী কেবলমাত্র দাগী অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অনেক অসহায় ও নিরপরাধ ব্যক্তিরাও ধরা পড়েছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশী এই সাংবাদিক অভিবাসনের আইন ছাড়া অন্য কোন অপরাধে কখনো লিপ্ত ছিলেন বলে কেউ মনে করছেন না। পক্ষান্তরে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসসহ কুইন্সের বিভিন্ন স্থানে চিহ্নিত কিছু প্রবাসী রয়েছে, যারা গুরুতর অপরাধের দায়ে জেল-জুলুম খেটেছে কিংবা মামলায় ঝুলছে-তারা এখনও গ্রেফতার অভিযানে পড়েনি। অধিকন্তু এসব চিহ্নিত ব্যক্তিরা অভিবাসনের স্পর্শকাতর পরিস্থিতিকে পুঁজি করে অবৈধ অভিবাসীদের সাথে ধাপ্পাবাজির নানা ফন্দি-ফিকিড় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, ক্ষুব্ধ জনতার প্রতিরোধে পড়েছিলেন ইমিগ্রেশনের এজেন্টরা। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের রিচমন্ড হিল এলাকায় ৩০ মে মঙ্গলবার সকালে প্রতিরোধের মধ্য থেকেই এক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন এ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের এজেন্ট (আইস)রা। এ নিয়ে সর্বত্র আতংক দেখা দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহ থেকেই নিউইয়র্ক সিটি এবং লং আইল্যান্ড এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে। এ অভিযানের কবলে বাংলাদেশীরাও রয়েছেন। আরো উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির পর সারা আমেরিকাতেই অবৈধদের ধরপাকড় জোরদার করা হয়েছে। সর্বত্র এক ধরনের সন্ত্রস্ত ভাব তৈরী হলেও এই প্রথম এজেন্টরা প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলেন।
এদিকে, লসএঞ্জেলেস সিটি এবং আশপাশে হানা দিয়ে গত সপ্তাহে কমপক্ষে ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইস। এর মধ্যে ১৮৮ জনই গুরুতর অপরাধী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের পর পুনরায় বেআইনীভাবে ঢুকেছিল বলে আইস উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এবং কোকেইন পাচারের মামলায় দন্ডিতরাও রয়েছে। অভিবাসন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জানুয়ারী থেকে অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের গ্রেফতারের হার আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫% বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ হাজার ৮০০ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছর এই একই সময়ে গ্রেফতার হয় ৪২০০ জন। ট্রাম্পের আমলে মোট গ্রেফতার হয়েছে ৪১ হাজার ৩০০ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট। (এনআরবি নিউজ )