জনগণই মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত করবে ॥ আন্দোলনে সফল হবোই: ফখরুল
- প্রকাশের সময় : ০৭:৩৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০১৬
- / ৯৩২ বার পঠিত
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের শত নির্যাতন-নিপীড়নেও বিএনপি হতাশ নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের আমলে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৫০০ নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। কয়েক হাজার মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার লাখ নেতা-কর্মীকে। তারপরও বিএনপি হতাশ নয়। এই অবস্থায়ও আমি আশাবাদী, শিগগিরই এই ধরনের অপশাসন ও দুঃশাসনের অবসান হবে। বিরাজমান পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে দেশকে উন্নয়নের ধারায় নিতে সরকারের প্রতি জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান তিনি। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুুর রহমানের কারাবন্দির তিন বছর উপলক্ষে ১০ এপ্রিল রোববার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘আমার দেশ পরিবার’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এই আহ্বান জানান। মাহমুদুর রহমান ইতিমধ্যে ৭২টি মামলায় জামিন পেলেও নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখালে তিনি মুক্তি পাননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড্যাব মহাসচিব ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আ ন ম আখতার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক নেতা প্রফেসর সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, আবদুল হাই শিকদার, এম আবদুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বক্তব্য দেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭২-৭৫’র পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ। ৭৫ পূর্ববর্তী সময়েও এরা রক্ষীবাহিনী বাবাকে দিয়ে ছেলের মাথা কেটে সেই মাথা দিয়ে ফুটবল খেলেছে। কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা অরুণ সেনকে নির্যাতনের কথা মনে হলে গা শিউরে উঠে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যেমন করেছিল পাকিস্তানের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। এ দেশের মানুষ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। আমরা এ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় অর্জন করবো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সত্য কথা বলায় মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। কারণ মাহমুদুর রহমান দীর্ঘ নির্যাতনেও হতাশ হননি। কারও সঙ্গে আপস করেননি। তিনি সত্য কথা বলতেন- এটাই তার অপরাধ। সরকারের অপকর্ম-দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরার কারণে তাকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। বাকশাল কায়েম করে আওয়ামী লীগ ৪টি পত্রিকা রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন আবার আওয়ামী লীগ সরকার একে একে টিভি ও পত্রিকা বন্ধ করে দিচ্ছে। কারও কথা বলার সুযোগ নেই। মির্জা আলমগীর তার বক্তব্যে অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ অনেক আগ থেকেই দাম্ভিকতার ব্যাধিতে ভুগছে। তারা কখনো কারও মত সহ্য করে না, সহিষ্ণুতার রাজনীতি করে না। একই ভাবে কারও কথাও আমলে নেয় না। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার তাতেও কর্ণপাত করেনি। এ সময় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আবার আহ্বান জানাবো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করুন।
সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, শেখ হাসিনার হাতে গণতন্ত্র নিহত হয়েছে। সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে লন্ডভন্ড করে ফেলেছে সরকার। আইনের শাসন ও সুবিচার বলতে কিছুই আর বাকি নেই। অন্যায়ের শিকার মানুষ সামান্যতম প্রতিবাদ করারও সুযোগ পাচ্ছে না। কথা বললেই গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। বাঁশখালীর ঘটনায় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা এ কেমন সমাজে বাস করছি? মানুষ তার পছন্দ-অপছন্দের কথাও বলতে পারছে না। মানুষ এ অবস্থার অবসান চায়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ইতিহাস বলে- স্বৈরাচার কোনো দেশেই বেশিদিন স্থায়ী হয় না। আমাদের দেশেও হবে না। আপনারা নিশ্চিত থাকেন। অতীতের স্বৈরাচারদের মতোই এ সরকারকে করুণভাবে বিদায় নিতে হবে। জনগণ সেই অপেক্ষায়ই রয়েছে। (আমার দেশ)