সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হেমা মালিনী

- প্রকাশের সময় : ১২:৫৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০১৫
- / ১১৫৬ বার পঠিত
কলকাতা: রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার দূরে দৌসায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন মধুরার বিজেপি সংসদ সদস্য তথা বলিউডের প্রবীণ অভিনেত্রী হেমা মালিনী। আগ্রা থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে হাইওয়েতে ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) রাত ৮.৫০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রায় ১২০ কিলোমিটার ঘন্টায় গতিতে চলা সংসদ সদস্যের মার্সিডিজ গাড়ির সঙ্গে একটি মারুতি অল্টো গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। হেমা মালিনীর ডানদিকের চোখের উপরে গভীর ক্ষত হয়েছে। মাথা এবং কোমরে গুরুতর চোট লাগে। অল্টো গাড়িতে থাকা এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে বলে দৌসার জেলাশাসক স্বরূপ পানোয়ার জানিয়েছেন। রাতেই হেমাকে জয়পুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে কপালে সেলাই করা হয়েছে। তবে শুক্রবার (৩ জুলাই) দুর্ঘটনায় শিশু মৃত্যুর জেরে গ্রেফতার হয়েছেন হেমা মালিনীর গাড়ি চালক মহেশ ঠাকুরকে। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে শিশু হত্যার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ।
হেমার গাড়ির চালক মহেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আগ্রা থেকে জয়পুর যাওয়ার পথে হাইওয়েতে প্রচন্ড গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎই পাশের রাস্তা থেকে আসা একটি অল্টো গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মার্সিডিজের। দুর্ঘটনায় হেমা মালিনীর ডানদিকের চোখের উপরে কপাল ফেটে যায়। গুরুতর চোট লাগে মাথা এবং কোমরে। জয়পুরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তার চোখের উপরে সেলাই করা হয়েছে। ৬৬ বছরের ‘ড্রিমগার্ল’-এর সেবায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা। রাতেই হেমা চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, অভিনেত্রী বিপদমুক্ত। চিন্তার কিছু নেই। ক্রমশ সুস্থ হচ্ছেন তিনি। কিন্তু কোমর ও মাথায় চোট থাকায় আপাতত হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে তাকে। দুর্ঘটনায় মায়ের গুরুতর জখম হওয়ার খবর পেয়েই জয়পুর চলে এসেছেন হেমা-ধর্মেন্দ্র কন্যা বলিউডের অভিনেত্রী এষা দেওল। মায়ের পাশেই আছেন তিনি। আসার কথা হেমার স্বামী ধর্মেন্দ্ররও। এদিন সকালেই হেমামালিনীকে দেখতে হাসপাতালে যান রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। তাদের মধ্যে কথাও হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরেই গাড়িচালক মহেশের বিরুদ্ধে ৩০৪, ৩৩৭ ও ৩৩৮ ধারায় এফআইআর দায়ের করেছিল রাজস্থান পুলিশ। হাইওয়ের ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে আরও দ্রুত গাড়ি চালাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন দৌসার সিনিয়র অফিসার রাজিন্দর ত্যাগী। পুলিশ আরও জানিয়েছে মৃত শিশুটি লালচকের বাসিন্দা। অল্টোর বাকি যাত্রীরা সবাই গুরুতর জখম হয়েছেন। আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে এক শিশু, দুই নারী ও চালককে স্থানীয় এসএমএস হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। সন্তান হারানোর শোকে মুহ্যমান অল্টোর চালক হর্ষ এখন ছ’বছরের আর এক সন্তানের আরোগ্য কামনায় ব্যস্ত। ছেলের দুটি পা-ই ভেঙে গিয়েছে। হর্ষেরও পা, কলার বোনে গুরুতর চোট লেগেছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে জানালেন সেই বীভৎস মুহূর্তের কথা। হর্ষের কথায়, ‘দৌসা বাইপাসের কাছে আমি গাড়ি ঘুরিয়ে হাইওয়েতে উঠছিলাম। হঠাৎই তীব্রগতিতে ছুটে আসা একটি বিশাল গাড়ি আমারে ধাক্কা দিল। এরপর কী হয়েছিল কিছু মনে নেই।’
দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে অল্টোটি। একই অবস্থা হেমার মার্সিডিজের সামনের অংশেরও। দৌসার দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। হেমাকে দ্রুত উদ্ধার করেন ডা. শিব শর্মা নামের একজন ফিজিওথেরাপিস্ট। কপাল থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল তার। রুমাল দিয়ে ক্ষত ঢেকে কোনো মতে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। অল্টো গাড়ির চালক বেআইনিভাবে হাইওয়েতে উঠছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। নিহত শিশুর আত্মীয়রা এদিন অভিযুক্ত চালকের শাস্তি দাবি করেছেন।
হেমামালিনীর আহত হওয়ার খবর শুনেই বৃহস্পতিবার রাতেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া মন্ত্রিসভার সদস্য রাজপাল সিং শেখাওয়াতকে জয়পুরের হাসপাতালে পাঠান। হেমার রক্তাক্ত মুখে ছবি মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তার ভক্ত থেকে বলিউডের সকলে। অন্যদিকে এদিন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর কনভয় পশ্চিম গোদাবরির একটি বাড়িতে ধাক্কা মেরেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কনভয়ের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে এক নারীর। যদিও অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের তরফে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। (দৈনিক যুগান্তর)