নিউইয়র্ক ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

স্কারলেট জোহানসন : এক লাস্যময়ী সুপার হিরোইনের গল্প

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৬৩ বার পঠিত

বিনোদন ডেস্ক : হলিউডের একাধারে লাস্যময়ী আবেদনময়ী কোনো নারীর কথা যদি বলতে হয়, তবে বলতে হবে স্কারলেট জোহানসনের কথা। এই নারী যেমন জয় করে নিয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়, তেমনই অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের সিনেমাগুলোতে সুপার হিরোইন হিসেবে আবির্ভূত হয়ে মাত করে দিয়েছেন সারা বিশ্বের অ্যাকশনধর্মী সিনেমা প্রেমিদের মন।

একাধারে অভিনেত্রী ও গায়িকা এই নারীর অভিনয় জগতে আসার কথা বলতে গেলে বলতে হবে রুপালি পর্দায় নাম লেখানোটা তার যেন ছিল জন্মগত অধিকার। কেননা স্কারলেটের পরিবারের দিকে চোখ মেললে দেখা যাবে তাদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে হলিউডের সঙ্গে যুক্ত।

তার দাদা ছিলেন হলিউডের একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, তার মা ছিলেন হলিউডের একজন প্রযোজক আবার তার বড় বোনও ছিলেন একজন হলিউড অভিনেত্রী। অতএব, এ কথা নির্দ্বিধায়ই বলা যায় যে, যার মা, বোন, দাদা সকলেই এই জগতের বাসিন্দা, হলিউডে তার না তো কার বাড়ি-ঘর হবে?

১৯৮৪ সালের ২২ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রী খুব ছোট বয়সেই নাম লেখান অভিনয়ে। আর্কিটেক্ট বাবা এবং প্রযোজক মায়ের সন্তান স্কারলেট জোহানসন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে শিশু বয়সেই পা রাখেন অভিনয়ের জগতে। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে হলিউডেও পথচলা শুরু হয় শিশু শিল্পী হিসেবেই।

১৯৯৪ সালে নর্থ নামক একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে হলিউডে অভিষেক ঘটে এই আবেদনময়ী নারীর। এই চলচ্চিত্রটিতে পর্দায় তাকে দেখা গিয়েছিল একজন শিশুশিল্পী হিসেবে। তবে শিশু শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি স্কারলেটকে। এর মাত্র দুই বছরের মাথায় অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে তিনি অভিনয় করেন ম্যানি অ্যান্ড ল নামক একটি চলচ্চিত্রে।

চলচ্চিত্রটিতে তাকে দেখা যায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে। দুই বোনকে নিয়ে গড়ে ওঠা লিসা ক্রুয়েগার পরিচালিত কমেডি ড্রামাধর্মী এই চলচ্চিত্রটিতে স্কারলেট অভিনয় করেন অ্যামান্ডা নামক একটি চরিত্রে। সিনেমাটিতে তুখোড় অভিনয় প্রতিভার কারণে এরপর থেকেই স্কারলেটের ব্যস্ততা যেমন দিন দিন বাড়তে থাকে তেমনি অভিনয়ে হতে থাকেন নিয়মিত।

এসময় বেশকিছু সিনেমায় তাকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও, তাকে পাদ প্রদীপের আলোয় নিয়ে আসে ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ঘোস্ট ওয়ার্ল্ড নামক একটি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিতে রেবেকা নামক একটি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। রেবেকা নামক এই চরিত্রটিতে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুড়ান স্কারলেট। তবে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করলেও তখনো তিনি অভিনয় করে যাচ্ছিলেন টিনএজ গার্ল হিসেবে।

স্কারলেট পূর্ণাঙ্গ নারীরূপে পর্দায় আবির্ভূত হন ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লস্ট ইন ট্রান্সলেশন নামক একটি চলচ্চিত্রে। এই সিনেমাটিতে তাকে এমন একটি নারীর চরিত্রে পাওয়া যায় যে কি-না তার জীবন ও বৈবাহিক জীবন নিয়ে ভীষণ বিরক্ত। এই চলচ্চিত্রটিও বেশ প্রশংসিত হয় পাশাপাশি স্কারলেটও ব্যস্ত থেকে হয়ে ওঠেন আরও ব্যস্ততম অভিনেত্রী। তার ফলস্বরূপ একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি পৌঁছে যান সব সিনেমা প্রেমীদের হৃদয়ে।

তবে স্কারলেট নিজেকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে আসেন ২০১৮ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ডিজনি প্রোডাকশন হাউস কর্তৃক নির্মিত চলচ্চিত্র অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের ইনফিনিটি ওয়ার নামক সিনেমাটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রটিতে তিনি পর্দায় হাজির হন একজন সুপার হিরোইন হিসেবে। মুক্তির পরপরই সারা বিশ্বব্যাপী হৈ চৈ ফেলে দেয় সিনেমাটি। ফলস্বরূপ স্কারলেটও জায়গা করে নেন গোটা বিশ্বের চলচ্চিত্র প্রেমীদের হৃদয়ে।

পাশাপাশি ২০১৯ সালে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র অ্যাভেঞ্জার্স এন্ডগেম চলচ্চিত্রটিতে। এই চলচ্চিত্রটিও আগের মতোই ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের তকমা গায়ে মাখে পাশাপাশি স্কারলেটও সুপারহিরোইন হিসেবে নন্দিত হন সারাবিশ্বব্যাপী। একজীবনে অভিনয়ের মাধ্যমে যেমন স্কারলেট জায়গা করে নিয়েছেন গোটা বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে, তেমনি স্বীকৃতিও কম পাননি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে স্কারলেট ছিলেন হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকধারী অভিনেত্রীদের একজন।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে ফোবর্স সেলিব্রেটি ১০০ তকমাও গায়ে লাগিয়েছেন তিনি বেশ কয়েকবার। পাশাপাশি স্কারলেটের ঝুলিতে রয়েছে টনি এওয়ার্ড, ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম এঅ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

স্কারলেট জোহানসন : এক লাস্যময়ী সুপার হিরোইনের গল্প

প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২১

বিনোদন ডেস্ক : হলিউডের একাধারে লাস্যময়ী আবেদনময়ী কোনো নারীর কথা যদি বলতে হয়, তবে বলতে হবে স্কারলেট জোহানসনের কথা। এই নারী যেমন জয় করে নিয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়, তেমনই অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের সিনেমাগুলোতে সুপার হিরোইন হিসেবে আবির্ভূত হয়ে মাত করে দিয়েছেন সারা বিশ্বের অ্যাকশনধর্মী সিনেমা প্রেমিদের মন।

একাধারে অভিনেত্রী ও গায়িকা এই নারীর অভিনয় জগতে আসার কথা বলতে গেলে বলতে হবে রুপালি পর্দায় নাম লেখানোটা তার যেন ছিল জন্মগত অধিকার। কেননা স্কারলেটের পরিবারের দিকে চোখ মেললে দেখা যাবে তাদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে হলিউডের সঙ্গে যুক্ত।

তার দাদা ছিলেন হলিউডের একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা, তার মা ছিলেন হলিউডের একজন প্রযোজক আবার তার বড় বোনও ছিলেন একজন হলিউড অভিনেত্রী। অতএব, এ কথা নির্দ্বিধায়ই বলা যায় যে, যার মা, বোন, দাদা সকলেই এই জগতের বাসিন্দা, হলিউডে তার না তো কার বাড়ি-ঘর হবে?

১৯৮৪ সালের ২২ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনে জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রী খুব ছোট বয়সেই নাম লেখান অভিনয়ে। আর্কিটেক্ট বাবা এবং প্রযোজক মায়ের সন্তান স্কারলেট জোহানসন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে শিশু বয়সেই পা রাখেন অভিনয়ের জগতে। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে হলিউডেও পথচলা শুরু হয় শিশু শিল্পী হিসেবেই।

১৯৯৪ সালে নর্থ নামক একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে হলিউডে অভিষেক ঘটে এই আবেদনময়ী নারীর। এই চলচ্চিত্রটিতে পর্দায় তাকে দেখা গিয়েছিল একজন শিশুশিল্পী হিসেবে। তবে শিশু শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি স্কারলেটকে। এর মাত্র দুই বছরের মাথায় অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে তিনি অভিনয় করেন ম্যানি অ্যান্ড ল নামক একটি চলচ্চিত্রে।

চলচ্চিত্রটিতে তাকে দেখা যায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে। দুই বোনকে নিয়ে গড়ে ওঠা লিসা ক্রুয়েগার পরিচালিত কমেডি ড্রামাধর্মী এই চলচ্চিত্রটিতে স্কারলেট অভিনয় করেন অ্যামান্ডা নামক একটি চরিত্রে। সিনেমাটিতে তুখোড় অভিনয় প্রতিভার কারণে এরপর থেকেই স্কারলেটের ব্যস্ততা যেমন দিন দিন বাড়তে থাকে তেমনি অভিনয়ে হতে থাকেন নিয়মিত।

এসময় বেশকিছু সিনেমায় তাকে অভিনয় করতে দেখা গেলেও, তাকে পাদ প্রদীপের আলোয় নিয়ে আসে ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ঘোস্ট ওয়ার্ল্ড নামক একটি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটিতে রেবেকা নামক একটি চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। রেবেকা নামক এই চরিত্রটিতে অভিনয় করে বেশ প্রশংসা কুড়ান স্কারলেট। তবে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করলেও তখনো তিনি অভিনয় করে যাচ্ছিলেন টিনএজ গার্ল হিসেবে।

স্কারলেট পূর্ণাঙ্গ নারীরূপে পর্দায় আবির্ভূত হন ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লস্ট ইন ট্রান্সলেশন নামক একটি চলচ্চিত্রে। এই সিনেমাটিতে তাকে এমন একটি নারীর চরিত্রে পাওয়া যায় যে কি-না তার জীবন ও বৈবাহিক জীবন নিয়ে ভীষণ বিরক্ত। এই চলচ্চিত্রটিও বেশ প্রশংসিত হয় পাশাপাশি স্কারলেটও ব্যস্ত থেকে হয়ে ওঠেন আরও ব্যস্ততম অভিনেত্রী। তার ফলস্বরূপ একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি পৌঁছে যান সব সিনেমা প্রেমীদের হৃদয়ে।

তবে স্কারলেট নিজেকে সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে আসেন ২০১৮ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ডিজনি প্রোডাকশন হাউস কর্তৃক নির্মিত চলচ্চিত্র অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের ইনফিনিটি ওয়ার নামক সিনেমাটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রটিতে তিনি পর্দায় হাজির হন একজন সুপার হিরোইন হিসেবে। মুক্তির পরপরই সারা বিশ্বব্যাপী হৈ চৈ ফেলে দেয় সিনেমাটি। ফলস্বরূপ স্কারলেটও জায়গা করে নেন গোটা বিশ্বের চলচ্চিত্র প্রেমীদের হৃদয়ে।

পাশাপাশি ২০১৯ সালে তিনি পুনরায় ফিরে আসেন অ্যাভেঞ্জার্স সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র অ্যাভেঞ্জার্স এন্ডগেম চলচ্চিত্রটিতে। এই চলচ্চিত্রটিও আগের মতোই ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের তকমা গায়ে মাখে পাশাপাশি স্কারলেটও সুপারহিরোইন হিসেবে নন্দিত হন সারাবিশ্বব্যাপী। একজীবনে অভিনয়ের মাধ্যমে যেমন স্কারলেট জায়গা করে নিয়েছেন গোটা বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে, তেমনি স্বীকৃতিও কম পাননি। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে স্কারলেট ছিলেন হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকধারী অভিনেত্রীদের একজন।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে ফোবর্স সেলিব্রেটি ১০০ তকমাও গায়ে লাগিয়েছেন তিনি বেশ কয়েকবার। পাশাপাশি স্কারলেটের ঝুলিতে রয়েছে টনি এওয়ার্ড, ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম এঅ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার।