নিউইয়র্ক ০৫:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মুক্তিযুদ্ধে ছিলো কবরীর বিশেষ অবদান

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:০১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১
  • / ৯৫ বার পঠিত

ঢাকা ডেস্ক: কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর আসল নাম মিনা পাল। ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তার জন্ম। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অভিষেক হয় তার। ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন কবরী। তারপর একের পর এক সফল সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন গেড়েছেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে বছরের ১৯ এপ্রিল পরিবারের সদস্যদের সাথে ঢাকা থেকে প্রথমে গ্রামের বড়ি এবং পরে সেখান থেকে ভারতে পাড়ি জমান তিনি।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কবরী বলেছিলেন, ‘তখন তো আমি আওয়ামী লীগের কিংবা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে, সাধারণ মানুষ, একজন অভিনেত্রী এবং শিল্পী হিসেবে মানবতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। বাবা, মা, ভাই-বোন, সম্পদ, লোভ-লালসা সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে আমি ভাষণ দিয়েছিলাম এবং জনসম্মুখে কাঁদছিলাম এজন্য যে, পাকিস্তানী বাহিনী যেভাবে হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছিল আমাদের দেশের মানুষের ওপর তার হাত থেকে যেন আমার দেশের মানুষ অতি দ্রæত রক্ষা পায়। সেজন্য আমি মানুষের কাছে, বিশ্ববাসীর কাছে যে আহ্বান জানিয়েছিলাম তার পরিণতি যে কী হতে পারে তা একবারও আমার মনে আসেনি এবং ভাবার কোনও অবকাশও ছিল না।’
জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে কবরী জানান, কলকাতা গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অংশ নেন প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।
এ সময়ের একটি স্মৃতি তুলে প্রয়াত এ তারকা বলেছিলেন, ‘সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলাম। সেখানে আমি তুলে ধরি, কীভাবে আমি আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ছেড়ে এক কাপড়ে একেবারে কপর্দকহীন অবস্থায় পালিয়ে এসেছি। সেটা বলতে বলতে আমি বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করি আমার দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার মা-বোনকে বাঁচানোর জন্য। তারপর আমি কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞানহারা হয়ে পড়ি। আর কিছুই জানি না।’
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্র জগতে মনোনিবেশ করেন কবরী সারোয়ার। সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু তার। কাজ করেছেন শতাধিক ছবিতে। এমনকি করেছেন নির্মাণও। এরপর যুক্ত হয়েছেন রাজনীতিতে। হয়েছেন সংসদ সদস্যও। এই করোনাকালেও তিনি যুক্ত ছিলেন তার পরিচালিত নতুন সিনেমা ‘এই তুমি সেই তুমি’ নিয়ে। শেষ করেছেন এর শুটিং। (দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মুক্তিযুদ্ধে ছিলো কবরীর বিশেষ অবদান

প্রকাশের সময় : ১০:০১:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২১

ঢাকা ডেস্ক: কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর আসল নাম মিনা পাল। ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তার জন্ম। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে অভিষেক হয় তার। ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মাধ্যমে অভিনয় জীবন শুরু করেন কবরী। তারপর একের পর এক সফল সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মনে স্থায়ী আসন গেড়েছেন তিনি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে বছরের ১৯ এপ্রিল পরিবারের সদস্যদের সাথে ঢাকা থেকে প্রথমে গ্রামের বড়ি এবং পরে সেখান থেকে ভারতে পাড়ি জমান তিনি।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কবরী বলেছিলেন, ‘তখন তো আমি আওয়ামী লীগের কিংবা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে, সাধারণ মানুষ, একজন অভিনেত্রী এবং শিল্পী হিসেবে মানবতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। বাবা, মা, ভাই-বোন, সম্পদ, লোভ-লালসা সবকিছুর মায়া ত্যাগ করে আমি ভাষণ দিয়েছিলাম এবং জনসম্মুখে কাঁদছিলাম এজন্য যে, পাকিস্তানী বাহিনী যেভাবে হত্যা-নির্যাতন চালাচ্ছিল আমাদের দেশের মানুষের ওপর তার হাত থেকে যেন আমার দেশের মানুষ অতি দ্রæত রক্ষা পায়। সেজন্য আমি মানুষের কাছে, বিশ্ববাসীর কাছে যে আহ্বান জানিয়েছিলাম তার পরিণতি যে কী হতে পারে তা একবারও আমার মনে আসেনি এবং ভাবার কোনও অবকাশও ছিল না।’
জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে কবরী জানান, কলকাতা গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সভা-সমিতি ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অংশ নেন প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।
এ সময়ের একটি স্মৃতি তুলে প্রয়াত এ তারকা বলেছিলেন, ‘সেখানে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলাম। সেখানে আমি তুলে ধরি, কীভাবে আমি আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ছেড়ে এক কাপড়ে একেবারে কপর্দকহীন অবস্থায় পালিয়ে এসেছি। সেটা বলতে বলতে আমি বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করি আমার দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার মা-বোনকে বাঁচানোর জন্য। তারপর আমি কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞানহারা হয়ে পড়ি। আর কিছুই জানি না।’
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবারও চলচ্চিত্র জগতে মনোনিবেশ করেন কবরী সারোয়ার। সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু তার। কাজ করেছেন শতাধিক ছবিতে। এমনকি করেছেন নির্মাণও। এরপর যুক্ত হয়েছেন রাজনীতিতে। হয়েছেন সংসদ সদস্যও। এই করোনাকালেও তিনি যুক্ত ছিলেন তার পরিচালিত নতুন সিনেমা ‘এই তুমি সেই তুমি’ নিয়ে। শেষ করেছেন এর শুটিং। (দৈনিক ইত্তেফাক)