নিউইয়র্ক ০২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের জমজমাট চেহারাটা এখন নেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৫১:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০
  • / ৪৪ বার পঠিত

বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বেবী নাজনীন। ভালোবেসে তাকে বলা হয় ‘বø্যাক ডায়মন্ড’। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। ২৩ আগষ্ট, রোববার ছিলো তার জন্মদিন। তবে এ দিনে দেশে উপস্থিত নেই। রয়েছেন সুদূর আমেরিকায়। সেখান থেকে মুঠোফোনে দিনটি উদযাপন ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে দৈনিক যুগান্তর-এর আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এফ আই দীপু
* এবারের জন্মদিন কীভাবে উদযাপন করবেন?
** আর জন্মদিন? প্রতিদিন এখনও খারাপ খবর দিয়েই সকাল শুরু হয়। দেশ, অন্য দেশ কিংবা আমেরিকার অন্য শহর থেকেও কম-বেশি দুঃসংবাদ পাই সারা দিন। ফোন বাজলেই মনে হয় আবারও একই খবর হয়তো বা। বদলে গেছে পৃথিবীর চেহারা। এমনটি হতে পারে চিন্তা করতে পারিনি কোনো দিন। মাঝে মধ্যে টুকটাক বাজার-সদাই করা ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া হয় না। আমার সময় কাটে নিউজ দেখে, এটা-সেটা রান্না, নামাজ আর কোরআন শরিফ পড়ে। এছাড়াও পরিবার, বন্ধু, আপনজনদের খোঁজখবরও নিতে হয়। এসব করেই কাটছে গত কয়েক মাস। এ অবস্থায় নিজের জন্মদিন নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগই নেই। তবে এখানে ছেলে মহারাজ আছে, আমার ছোট বোন গায়িকা লিনি সাবরিন থাকে নিউজার্সিতে; সে আসবে। ওদের জন্য কিছু রান্নাবান্না হয়তো করব। এবারের জন্মদিনে এর বাইরে আর কিছু করার সম্ভাবনা বা চিন্তাও নেই।
* ছোটবেলার জন্মদিনের স্মৃতি মনে পড়ে?
** হুম.. অনেক জন্মদিনের কথাই মনে আছে। অনেকটা ঈদের আনন্দ অনুভব করার মতো ছিল। ঈদের দিনে বাড়ির বড় সদস্যরা যখন একে একে বাসায় আসতেন তখন দৌড়ে গিয়ে যেমন সালাম করে সালামি আদায় করতাম, জন্মদিনেও এরকম একটি বিষয় ছিল। জন্মদিনে পারিবারিকভাবে নানা আয়োজন করতেন বাবা-মা। আমাদের পরিবার ছিল অনেক বড়। দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি, ফুপু, মামা, খালা আর পুরো পরিবারের ভাইবোন মিলে বিশাল এক বাউন্ডারির ভেতরেই ভিন্ন ভিন্ন বাড়িতে বসবাস ছিল আমাদের। আর আমিই ছিলাম বাড়ির বড় মেয়ে। তাই আমার আদর ছিল সবচেয়ে বেশি। জন্মদিন এলে তো আমার আরেক ঈদ আসত। আমি অপেক্ষা করতাম কখন বিকাল হবে। বিকালের পর আত্মীয়স্বজন সবাই আসা শুরু করত। দরজায় টোকা পড়তেই দৌড়ে যেতাম দরজা খুলতে, আর কে এলো তার দিকে তাকাতাম না, তার হাতে থাকা জন্মদিনের উপহারটা আমার হাতে তুলে দেয়ার আগেই আমি এক রকম ছিনিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি খুলে দেখতাম উপহারটা কী। সবাই আমার কান্ড দেখে হাসতেন। এসব মধুর স্মৃতি কোনোভাবেই কি ভোলা যায়?
* এখন কেমন আছেন আমেরিকায়?
** মহান আল্লাহ এখনও ভালোই রেখেছেন। তবে নিউইয়র্কের জমজমাট সেই চেহারাটা এখন নেই। প্রথমদিকে শহরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ধীরে ধীরে একটু একটু করে সচল করার চেষ্টা করছে আমেরিকান সরকার। তবে আগের সেই জনবহুল এবং স্বাভাবিক গতির নিউইয়র্ক কবে দেখতে পাব এখনই তা বলা যাচ্ছে না।
* পেশাগত কাজকর্ম নিয়ে কোনো ব্যস্ততা আছে?
** না, কাজের সেই পরিবেশ এখনও আসেনি। তবে নিউইয়র্কে দুয়েকটা ভেন্যু খুলে দেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যদি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় তার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি।
* আমেরিকায় অবস্থান করা আমাদের দেশের অন্যান্য শিল্পী কুশলীরা কেমন আছেন?
** সবাই একই রকম। যার যার বাসাতেই প্রথম দিকে সবাই অবস্থান করেছেন নিয়মিত। তবে ফেসবুক অনেককে বাড়িতে থাকতে বড় ধরনের সাহায্য করেছে। অনেক শিল্পী ফেসবুক লাইভে একে অন্যের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করছেন দেখেছি। কেউ গল্প-স্বল্প করেছেন, কেউ কেউ গানও শুনিয়েছেন দেখেছি। ঈদের পর থেকে অবশ্য অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। দূরত্ব বজায় রেখে একে অন্যের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া শুরু করেছেন। আমিও দুয়েক দিন গিয়েছি, আর কতদিন এভাবে বাসায় কাটানো যায়!
* দেশে আসবেন কবে?
** একদমই বলতে পারছি না। বিমানের টিকিট তো গেল মার্চেই কেটেছিলাম। আর তখনই তো লকডাউন শুরু হল। আপনারা দোয়া করবেন এবং ভালো থাকবেন। মহান আল্লাহ চাইলে নিশ্চয়ই আমরা আগের পৃথিবী ফিরে পাব ইনশাআল্লাহ। জন্মদিনও পালন করতে পারব সবাইকে নিয়ে। (দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিউইয়র্কের জমজমাট চেহারাটা এখন নেই

প্রকাশের সময় : ০২:৫১:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২০

বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বেবী নাজনীন। ভালোবেসে তাকে বলা হয় ‘বø্যাক ডায়মন্ড’। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। ২৩ আগষ্ট, রোববার ছিলো তার জন্মদিন। তবে এ দিনে দেশে উপস্থিত নেই। রয়েছেন সুদূর আমেরিকায়। সেখান থেকে মুঠোফোনে দিনটি উদযাপন ও সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে দৈনিক যুগান্তর-এর আজকের ‘হ্যালো…’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এফ আই দীপু
* এবারের জন্মদিন কীভাবে উদযাপন করবেন?
** আর জন্মদিন? প্রতিদিন এখনও খারাপ খবর দিয়েই সকাল শুরু হয়। দেশ, অন্য দেশ কিংবা আমেরিকার অন্য শহর থেকেও কম-বেশি দুঃসংবাদ পাই সারা দিন। ফোন বাজলেই মনে হয় আবারও একই খবর হয়তো বা। বদলে গেছে পৃথিবীর চেহারা। এমনটি হতে পারে চিন্তা করতে পারিনি কোনো দিন। মাঝে মধ্যে টুকটাক বাজার-সদাই করা ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া হয় না। আমার সময় কাটে নিউজ দেখে, এটা-সেটা রান্না, নামাজ আর কোরআন শরিফ পড়ে। এছাড়াও পরিবার, বন্ধু, আপনজনদের খোঁজখবরও নিতে হয়। এসব করেই কাটছে গত কয়েক মাস। এ অবস্থায় নিজের জন্মদিন নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগই নেই। তবে এখানে ছেলে মহারাজ আছে, আমার ছোট বোন গায়িকা লিনি সাবরিন থাকে নিউজার্সিতে; সে আসবে। ওদের জন্য কিছু রান্নাবান্না হয়তো করব। এবারের জন্মদিনে এর বাইরে আর কিছু করার সম্ভাবনা বা চিন্তাও নেই।
* ছোটবেলার জন্মদিনের স্মৃতি মনে পড়ে?
** হুম.. অনেক জন্মদিনের কথাই মনে আছে। অনেকটা ঈদের আনন্দ অনুভব করার মতো ছিল। ঈদের দিনে বাড়ির বড় সদস্যরা যখন একে একে বাসায় আসতেন তখন দৌড়ে গিয়ে যেমন সালাম করে সালামি আদায় করতাম, জন্মদিনেও এরকম একটি বিষয় ছিল। জন্মদিনে পারিবারিকভাবে নানা আয়োজন করতেন বাবা-মা। আমাদের পরিবার ছিল অনেক বড়। দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি, ফুপু, মামা, খালা আর পুরো পরিবারের ভাইবোন মিলে বিশাল এক বাউন্ডারির ভেতরেই ভিন্ন ভিন্ন বাড়িতে বসবাস ছিল আমাদের। আর আমিই ছিলাম বাড়ির বড় মেয়ে। তাই আমার আদর ছিল সবচেয়ে বেশি। জন্মদিন এলে তো আমার আরেক ঈদ আসত। আমি অপেক্ষা করতাম কখন বিকাল হবে। বিকালের পর আত্মীয়স্বজন সবাই আসা শুরু করত। দরজায় টোকা পড়তেই দৌড়ে যেতাম দরজা খুলতে, আর কে এলো তার দিকে তাকাতাম না, তার হাতে থাকা জন্মদিনের উপহারটা আমার হাতে তুলে দেয়ার আগেই আমি এক রকম ছিনিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি খুলে দেখতাম উপহারটা কী। সবাই আমার কান্ড দেখে হাসতেন। এসব মধুর স্মৃতি কোনোভাবেই কি ভোলা যায়?
* এখন কেমন আছেন আমেরিকায়?
** মহান আল্লাহ এখনও ভালোই রেখেছেন। তবে নিউইয়র্কের জমজমাট সেই চেহারাটা এখন নেই। প্রথমদিকে শহরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। ধীরে ধীরে একটু একটু করে সচল করার চেষ্টা করছে আমেরিকান সরকার। তবে আগের সেই জনবহুল এবং স্বাভাবিক গতির নিউইয়র্ক কবে দেখতে পাব এখনই তা বলা যাচ্ছে না।
* পেশাগত কাজকর্ম নিয়ে কোনো ব্যস্ততা আছে?
** না, কাজের সেই পরিবেশ এখনও আসেনি। তবে নিউইয়র্কে দুয়েকটা ভেন্যু খুলে দেয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যদি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় তার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি।
* আমেরিকায় অবস্থান করা আমাদের দেশের অন্যান্য শিল্পী কুশলীরা কেমন আছেন?
** সবাই একই রকম। যার যার বাসাতেই প্রথম দিকে সবাই অবস্থান করেছেন নিয়মিত। তবে ফেসবুক অনেককে বাড়িতে থাকতে বড় ধরনের সাহায্য করেছে। অনেক শিল্পী ফেসবুক লাইভে একে অন্যের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করছেন দেখেছি। কেউ গল্প-স্বল্প করেছেন, কেউ কেউ গানও শুনিয়েছেন দেখেছি। ঈদের পর থেকে অবশ্য অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। দূরত্ব বজায় রেখে একে অন্যের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া শুরু করেছেন। আমিও দুয়েক দিন গিয়েছি, আর কতদিন এভাবে বাসায় কাটানো যায়!
* দেশে আসবেন কবে?
** একদমই বলতে পারছি না। বিমানের টিকিট তো গেল মার্চেই কেটেছিলাম। আর তখনই তো লকডাউন শুরু হল। আপনারা দোয়া করবেন এবং ভালো থাকবেন। মহান আল্লাহ চাইলে নিশ্চয়ই আমরা আগের পৃথিবী ফিরে পাব ইনশাআল্লাহ। জন্মদিনও পালন করতে পারব সবাইকে নিয়ে। (দৈনিক যুগান্তর)