নাফিসের আবারও অস্কার জয় : রাজবাড়ীতে উৎসব
- প্রকাশের সময় : ০৭:১২:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ৮৭১ বার পঠিত
রাজবাড়ী: অস্কার অ্যাওয়ার্ডের ৮৬ বছরের ইতিহাসে ওয়ার্ল্ড মুভি জগতের সবচেয়ে সম্মানিত পদকের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্ত হচ্ছেন বাংলাদেশী কৃতী সন্তান কাজী নাফিস-বিন যাফর। তিনি হলেন রাজবাড়ীর কাজীকান্দা গ্রামের কাজী যাফর-বিন বাশারের একমাত্র পুত্র। মাতা সৈয়দা নাফিসা যাফর। বর্তমানে সপরিবারে বসবাস করছেন আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে। পিতা সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল। বর্তমানে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। নাফিস ২০০৮ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে অস্কার অ্যাওয়ার্ড পান। এবার তিনি পেতে যাচ্ছেন ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ক্যাটাগরিতে। ৭ ফেব্রুয়ারী ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়ার কথা।
নাফিসের এ কৃতিত্বের খবর জানার পর তার পৈত্রিক বাড়ি রাজবাড়ীর কাজীকান্দা গ্রামে চলছে উৎসবের আমেজ। ৪ ফেব্রুয়ারী বুধবার বিকালে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, ‘আমাদের ছেলে দ্বিতীয় বারের মতো অস্কার অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে এটা তো দেশের সুনাম, দেশেরই গৌরব।’ ২০০৮ সালের ৭ জানুুয়ারী প্রথমবারের মতো তার মায়ের সঙ্গে রাজবাড়ীতে পৈত্রিক ভিটায় পা দেয় নাফিস। তার চাচা কাজী আবদুল আলিম জানান, নাফিসের সঙ্গে তাদের টেলিফোনে কথা হতো। রাজবাড়ীতে আসার পর তাদের আনন্দ আরেক ধাপ বেড়ে গিয়েছিল। সে সময় নাফিস ভাঙা ভাঙা বাংলায় এই প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে তার ভবিষ্যতের কথা জানান। বাংলাদেশের নাটক ও সিনেমার বিষয়ে তার আগ্রহের কথাও জানান নাফিস। তবে বাংলাদেশের প্রযুক্তিকে আরও সময়োপযোগী করার কথা বলেছিলেন জোর দিয়ে। নাফিসের মামা সৈয়দ মেহেদী হোসেন লিটু জানান, আগামী মার্চ মাসে নাফিসের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
নাফিসের মায়ের পরিবারের রয়েছে বিশাল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। তার মামা একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত স্থপতি সৈয়দ মইনুল হোসেন (জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি)। নাফিসের নানা বিখ্যাত পাপেট শিল্পী টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মুস্তফা মনোয়ার, তার মায়ের নানা কবি গোলাম মোস্তফা এবং দাদা কবি সৈয়দ এমদাদ আলী।
নাফিস এবার অস্কার পাচ্ছেন ‘ড্রপ ডিসট্রাকশন টুলকিট ইন হলিউড মুভি ২০১২’ সিনেমার জন্য। এটি তার নিজস্ব সৃষ্টি। ড্রপ ডিসট্রাকশন টুলসের জন্য ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বিভাগের পুরস্কার এটি। এ আইডিয়াটি প্রথম ব্যবহার করেন ২০০৯ সালে। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ‘টু থাউজেন্ড টুয়েল্ব’ নামে এ ছবিতে ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট প্রয়োগ করে সিনেমা জগতে নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি করে সাড়া ফেলে দেন গোটা আমেরিকায়।
বাবার উচ্চশিক্ষার সুবাদে পারিবারিকভাবে ১১ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে তিনি পাড়ি জমান আমেরিকায়। সেখানে কলেজ অব চালুসট থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রী নেন। লেখাপড়া শেষে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন মেডিকেল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনায়। এর দু’বছর পর চলে যান স্পেশাল ইফেক্ট তৈরির জন্য বিখ্যাত জেমস ক্যামেরনের ডিজিটাল ডোমেইনে। ২০০০ সাল থেকে তিনি যুক্ত হন সিনেমা জগতের সঙ্গে। এরপর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি সাংহাইয়ে একটি বিখ্যাত এমিনেশন ওয়ার্কসের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। (দৈনিক যুগান্তর)