কার্গো বিমানে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে ফারুক

- প্রকাশের সময় : ০১:১৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
- / ৬৫ বার পঠিত
বিনোদন ডেস্ক: রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন ঢাকাই ছবির ‘মিয়াভাই’ খ্যাত অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। রক্তে সংক্রমণের কারণে ফারুকের শারীরিক অবস্থা ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী ফারহানা ফারুক। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নিতে চাইছিলেন। অবশেষে ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে রোববার জরুরীভাবে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়। তবে বিশেষ কোনো ফ্লাইট বা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নয়। পণ্যবাহী কার্গো বিমানে করেই তিনি রোববার সকালের একটি ফ্লাইটে দেশটিতে যান বলে নিশ্চিত করেছেন ফারুকের স্ত্রী ও তার ব্যক্তিগত সহকারী। রোববার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আšন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো বিমানের একটি ফ্লাইটে করে এ অভিনেতাকে দেশটির মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়। তার সঙ্গে স্ত্রীও যান।
এ প্রসঙ্গে ফারহানা ফারুক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে এখনও যাত্রীবাহী বিমানের ফ্লাইট নিয়মিত নয়। এদিকে অপেক্ষা করার মতো সময়ও আমাদের হাতে নেই। উনার শরীর বেশ অসুস্থ। তাই কার্গো বিমানে করেই সিঙ্গাপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, তারা অনুমতি দেয়ার পরই রওয়ানা দিচ্ছি।’
তবে কার্গো বিমানে করেই কেন সিঙ্গাপুর যেতে হচ্ছে, এয়ার এম্বুলেন্স নয় কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক বলেন, আমি তো বিশেষ কেউ নই। সারাজীবন অভিনয় করেছি। রাজনীতি করেছি দেশকে ভালোবেসে, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে। আমার সামর্থ অনুযায়ী আমি চলাফেরা করার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের খরচের বিষয়টিও দেখতে হবে। সিঙ্গাপুর গিয়ে কী পরিমান অর্থ লাগবে সেটার বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। তাই আগে থেকেই সব চিন্তার মধ্যে রাখছি। তাই কার্গো আর অন্য বিমানের সঙ্গে তফাৎ খুঁজছি না এখন। আমার যাওয়াটা জরুরি, তাই যেভাবে পারছি দ্রæত যাচ্ছি।
সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে কী কোনো সহায়তা করা হচ্ছে না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারী পর্যায় থেকে আমার চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ সচেতন রয়েছেন সবাই। সকাল-বিকাল খোঁজ নিচ্ছেন, শারীরিক অবস্থা জানতে চাইছেন। এমনটাও আমাকে বলা হয়েছে, আমার কিছু লাগবে কী না? কিন্ত যতক্ষণ আমার সামর্থ্য আছে ততক্ষণ কিছু নিতে চাই না। আমি সবার কাছে শুধু দোয়া চাই। যেন সুস্থ হয়ে আবারও যাতে মানুষের সেবায় ফিরতে পারি। যদি কখনও বিপদে পড়ে যাই তাহলে সেটা তখনই জানতে পারবেন। এখনই আমি হতাশ হতে চাই না।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ আগষ্ট শরীরে জ্বর নিয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন ফারুক। সেখানে তখন করোনাসহ নানাবিধ পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছিল। তবে শারীরিক সমস্যার কারণ কী সেটা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৬ আগস্ট বাসায় ফিরে যান। বাসায় গিয়ে আবার জ্বরে আক্রান্ত হন। ফের ৩১ আগস্ট আবারও একই হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ সময় আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং সেটাও নেগেটিভ আসে। একই সময় টাইফয়েড, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার নমুনাও পরীক্ষা করা হয়। এগুলোর ফলাফলও ছিল নেগেটিভ। কিন্তু জ্বর কিছুতেই কমছিল না। এরপর পারিবারিক সিদ্ধান্তে তাকে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ হাসপাতালেও পরীক্ষা নীরিক্ষা করে রোগ নিরূপণ এবং শারিরীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেখান থেকেই ডাক্তাররা তাকে সিঙ্গাপুর নেয়ার পরামর্শ দেন বলে জানা গেছে। সেই প্রেক্ষিতে আগামীকাল উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন এই অভিনেতা ও সংসদ সদস্য।