একক সঙ্গীত সন্ধ্যায় নতুন করে আবিষ্কৃত হলেন রানো নেওয়াজ

- প্রকাশের সময় : ১১:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুলাই ২০২১
- / ৫৮ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): রানো নেওয়াজ। নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি নাম। সঙ্গীত-ই যার সাধনা। যার সাধনাবলে দ্বিতীয় একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কৃত করে গানে গানে দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করলেন। গত ২৬ জুন শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডস্থ কুইন্স প্যালেসে এই সঙ্গীত সন্ধ্যার অয়োজন করা হয়। গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলো শো-টাইম মিউজিক। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানে দেশত্ববোধক গান থেকে শুরু করে একে একে গাইলেন রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, ফোক, ক্লাসিক, লোকগীতি, গজল সহ পুরনো দিনের জনপ্রিয় বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয় গান, জনপ্রিয় হিন্দি, পাঞ্জাবী গান। আরো গাইলেন সিলেট ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান। সবমিলিয়ে ‘গানের শিল্পী’ হিসেবেই নিজেকে সমৃদ্ধ করে নতুন করে তুলে ধরলেন রানো নেওয়াজ। ফলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিপুল দর্শক-শ্রোতা তো বটেই স্বয়ং বাংলাদেশের ‘বø্যাক ডায়মন্ড’ খ্যাত জনপ্রিয় শিল্পী বেবী নাজনীন, আরেক জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভিন ও দিলরুবা খান শিল্পী রানো নেওয়াজের গানের প্রশংসা করলেন, তাকে শুভেচ্ছা জানালেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত দেশ ও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীদের মধ্যে নাজু আখন্দ, শেফালী সারগাম, মমো, শামীম সিদ্দিকী, চন্দ্রা রায়, সোহেল পারভেজ, লেমন চৌধুরী, প্রমি তাজ, রাইয়ান তাজ, নিপা জামান, অনিক রাজ প্রমুখ শিল্পীরাও রানো নেওয়াজের গানের প্রশংসা করলেন, শুভেচ্ছা জানালেন। অনুষ্ঠানে ফুলের তোড়া দিয়েও শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
চমৎকার আয়োজনে অনুষ্ঠানে শিল্পী রানো নেওয়াজ প্রায় দুই ডজনাধিক গান পরিবেশন করেন। মাতৃভূমি বাংলাদেশকে স্মরণ করে, দেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে শুরু করলেন ‘সূর্যদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি, ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভূমি’ গান দিয়ে। এরপর একে একে জনপ্রিয় বাংলা, হিন্দি, পাঞ্জাবী, আঞ্চলিক গান পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। সবশেষে চেন সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে রানো নেওয়াজ তার গান শেষ করেন এবং সূরের মূর্ছনায় ভড়িয়ে দেন দর্শক-শ্রোতাদের মনপ্রাণ। অনুষ্ঠানটি উপভোগ করারর পাশাপাশি দর্শক-শ্রোতারাও সময়ে সময়ে নেচে-গেয়ে জমিয়ে তুলেন পুরো অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে শিল্পী নিজের ও দর্শক-শ্রোতাদের পছন্দের গান গেয়ে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করেন। শিল্পী রানো নেওয়াজের এদিনের গান অনেক দিন দর্শকদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই অনুষ্ঠান।
প্রবাসের জনপ্রিয় উপস্থাপক আশরাফুল হাসান বুলবুলের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শো-টাইম মিউজিক-এর প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, গোলেন্ডন এজ হোমকেয়ারের প্রেসিডেন্ট/সিইও লায়ন শাহ নেওয়াজ। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাষেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলা হোম কেয়ারের প্রেসিডিন্ট/সিইও আবু জাফর মাহমুদ, বিশিষ্ট মর্গেজ বিশেষজ্ঞ জন ফাহিম, বাংলাদেশ সোসাইটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবীব, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন-জেবিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রনি, বাংলাদেশ ক্লাবের সভাপতি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শিল্পী রানো নেওয়াজের গানে মুগ্ধ হয়ে শিল্পীর হাতে একটি চেক তুলে দেন বিশিষ্ট চিকিৎসক, মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান। এছাড়াও নগদ অর্থ প্রদান করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ।
চট্টগ্রামের সন্তান রানো নেওয়াজ। ছোট বেলা থেকেই যার স্বপ্ন সঙ্গীত শিল্পী হওয়ার। আর স্বপ্ন পূরণ করতে সঙ্গীত সাধনায় মনোযোগী হন। মাত্র ৭ বছর বয়সে চট্টগ্রামে ওস্তাদ মিহির লালা’র হাত ধরে রানো নেওয়াজ-এর গানের সূচনা চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীতে। পরবর্তীতে তালিম নেন দেশের নামীদামী ওস্তাদের হাতে। সঙ্গীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বেতর, বিটিভি (বাংলাদেশ টেলিভিশন)-তে। সঙ্গীত সাধনায় আজ তিনি নিজেকে নতুন রূপে, নতুন করে তুলে ধরলেন একক সঙ্গীত সন্ধ্যায়। দর্শকদের উপস্থিতিতে নিজেকে আবিষ্কার করলেন গানের সকল শাখায়। তার এই শিল্পী হওয়ার নেপথ্যে যার অবদান তারা হলেন স্বামী লায়ন শাহ নেওয়াজ সহ তার পরিবার। ব্যক্তিগত জীবনে স্বামী, এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে শিল্পী রানো নেওয়াজ বাস করছেন নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স বরোর জ্যামাইকার হলিসে। সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ‘ঢালিউড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ লাভ সহ সম্মানিত হয়েছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। তার একাধিক মৌলিক গান রয়েছে এবং একক গানের সিডি প্রকাশিত হয়েছে। রানো নেওয়াজ পড়ালেখা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্তরাষ্ট্রে এসে কসমেটলজির ওপর গ্র্যাজুয়েশন করেন তিনি।