লসএঞ্জেলেসে বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা মামলায় দুই যুবতী গ্রেফতার
- প্রকাশের সময় : ১০:৩৯:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০১৬
- / ৭৬৩ বার পঠিত
নিউইয়র্ক:ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লসএঞ্জেলেসের বাংলাদেশী আবুল কালাম রহীম (৬১)-কে গুলি করে হত্যার অভিযোগে রোজা ম্যানুয়েলা ব্যারিয়েন্টোস (২৩) এবং মারিয়া মিশেল ইনজুঞ্জা (২৫) নামের দুই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা দু’জনই স্প্যানিশ-আমেরিকান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে এই দুই যুবতীকে গ্রেফতার করার পর ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার উভয়কে লসএঞ্জেলেস ক্রিমিনাল কোর্টে সোপর্দ করা হয়। তাদেরকে জামিনহীন আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, অতি সম্প্রতি নিউইয়র্কের ওজনপার্কে ইমাম আকঞ্জিসহ দুই মুসল্লী এবং জ্যামাইকায় নাজমা খানম নামের তিন বাংলাদেশীকে হত্যার সাথে জড়িতরাও স্প্যানিশ। এছাড়া দু’বছর আগে নিউইয়র্কের ওজনপার্কে খুন হওয়া যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজমুল ইসলামের দুই ঘাতকও স্প্যানিশ।
লসএঞ্জেলেস থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় লসএঞ্জেলেস সিটির নর্থ হলিউডের ‘এ্যা এ্যান্ড ডি লিকার’ স্টোরে কর্মরত অবস্থায় দুর্বৃত্তের গুলিতে মোহাম্মদ আবুল কালাম রহীম (৬১) মারা যান। স্টোরের সিসিটিভি পর্যবেক্ষণের পর ঐ দুই যুবতীকে শনাক্ত করা হয় বলে মাননীয় আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। দোষ প্রমাণিত হলে উভয়ের মৃত্যুদন্ড অথবা আজীবন কারাদন্ড হতে পারে বলে ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী উল্লেখ করেছেন। যদিও, ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদন্ডের বিধি রয়েছে। এর আগে গত ২৫ মার্চ সকাল সাড়ে ৯টায় লসএঞ্জেলেস সিটির সান ফার্ণান্দো ভেলীতে অবস্থিত একটি ‘সেভেন/ইলেভেন স্টোর’-এ দুবৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বাংলাদেশী ওয়াসি আহমেদ (৪৮)। তাকে হত্যার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তকেও পুলিশ পাকড়াও করেছে।
পুলিশ বলেছে, বেলাইয়ার এভিনিউর নিকটে শারমেন ওয়ের ওপর ১২৬০০ ব্লকে অবস্থিত ‘এ এ্যান্ড ডি লিকার মার্ট’-এ মমার্ন্তিক এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। স্টোরের সিসি টিভিতে দেখা যায়, দুই যুবতীয় স্টোরে ঢুকে কিছু চাইছে, কিন্তু বাধা দিচ্ছেন বাংলাদেশী কালাম। সাথে সাথে তার বুকে গুলি লাগে এবং ঢাকার খিলগাঁয়ের সন্তান কালাম স্টোরের মেঝেয় লুটে পড়েন। পুলিশ অকুস্থলে পৌঁছার আগেই কালাম মারা যান বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আবুল কালাম গত ১৬ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছিলেন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক কালামের একমাত্র ছেলে ও ছোট মেয়ে থাকেন লসএঞ্জেলেসে। বাকি দুই মেয়ে বিবাহিত এবং তারা বাংলাদেশেই বসবাস করছেন। মাত্র ২ মাস পুর্বে তিনি বাংলাদেশ ভিজিট করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হওয়ার পুর্বে তিনি জাপানে ছিলেন। সুঠাম দেহাবয়ব ও আকর্ষণীয় ফিগারের অধিকারি আবুল কালাম রহীম একসময় বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে কাজ করতেন। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুসারে তার মরদেহ বাংলাদেশে দাফন করা হবে।
আবুল কালামের মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় ইসলামিক সেন্টার মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ অক্টোবর সোমবার রাতে আমিরাত এয়ালাইন্সে তার মরদেহ ঢাকার উদ্দেশ্যে লসএঞ্জেলেস থেকে প্রেরণ করা হবে বলে কম্যুনিটি লিডার মোমিনুল হক বাচ্চু জানিয়েছেন।