বিশেষ প্রতিনিধিঃ আসাহি হোসেন প্রবাসে থাকলেও পরিচিতির শেকড় যাদের বাংলাদেশে প্রোথিত তারা যখন শিক্ষা কিংবা কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের দৃষ্টান্ত রাখেন তখন শুধু পরিবারের সদস্যরাই নন, বাংলাদেশও গর্ববোধ করে। তাদেরই একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকান আসাহি হোসেন। তুলনামূলকভাবে আমেরিকায় সর্বকনিষ্ঠা ডাক্তার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী আসাহি হোসেন হাই স্কুল শেষ করে সরাসরি সাত বছরের মেডিকেল প্রোগ্রামে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ফ্লোরিডা থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডক্টর অব মেডিসিন এমডি (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তার বয়স মাত্র চব্বিশ বছর (সাধারণত আমেরিকায় ডাক্তার হবার সর্বনিম্ন বয়স সাতাইশ বছর)। তিনি ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডাতে আরও ৩ বছরের ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগে রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে যোগদান করবেন।
মা-বাবা ও বোনের সাথে ডা. আসাহি হোসেন। ছবি সংগৃহীত
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী আসাহি হোসেন তার মেধাভিত্তিক রেজাল্টের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ এঁষভনৎববুব ঐরময ঝপযড়ড়ষ থেকে ভ্যালেক্টরিয়ান উপাধী অর্জন করেন। হাইস্কুলে থাকতেই তিনি অ্যাডভান্স পেন্টসমেন্ট এবং কলেজের ডুয়েল প্রোগ্রাম শেষ করে ২০১৪-তে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ফ্লোরিডাতে সরাসরি সাত বছরের মেডিকেল প্রোগ্রামে ভর্তি হন। যুক্তরাষ্ট্রে এধরনের সাফল্য বিরল। মেডিকেলে পড়াকালীন তিনি অতিরিক্ত মাইনর সাবজেক্ট হিসাবে অস্ত্রোনোমির উপরও পড়ালেখা করেন। তার স্বপ্ন অবৎড়ংঢ়ধপব গবফরপরহব বিশেষজ্ঞ হয়ে নভোচারীদের সেবায় নাসাতে যোগদান করতে চান। তিনি চারটি ভাষায় যথাক্রমে ইংরেজী, বাংলা, জাপানীজ ও স্প্যানিশ ভাষায় পারদর্শী।
ডাক্তার আসাহি হোসেনের জন্ম ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে জাপানের আসাহি কাওয়াতে। তার মাতা ডাক্তার শরীফা দিনারা বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পরই জাপান সরকারের পাঁচ বছররের জন্য মনবসু বৃত্তি নিয়ে স্বামী ডাক্তার আকতার ও বড় মেয়ে আনিকা সহ ১৯৯৬ সনে জাপান চলে যান। সেখান থেকে ডাক্তার শরীফা দিনারা টেস্ট টিউব বেবির উপর ২০০১ সনে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চলে আসেন। পিতা ডাক্তার আকতার জামান এখানে ‘ইউএসএমএলই পরীক্ষা’ সম্পন্ন করে এমডি ডিগ্রী লাভ করেন এবং তিন বছরের ইন্টারনাল মেডিসিনে ট্রেনিং সম্পন্ন করে সপরিবারে ফ্লোরিডা চলে যান। তাদের বড় মেয়ে আনিকা বর্তমানে ফ্লোরিডার নোভা ইউনিভার্সিটিতে ডক্টর অফ অপটোমেট্রিতে শেষ পর্বে অধ্যনরত আছেন।
ডাক্তার আকতারের পৈত্রিক বাড়ী টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি তার গ্রামের বাড়ীতে সেবামূলক দাতব্য প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন অওয়ার্নেস প্রোগ্রাম পরিচালনা করছেন।