নিউইয়র্ক ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শেখ রহমান ও আবুল বি খান বিজয়ী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০
  • / ৮৯ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ষ্টেট সিনেটর পদে মঙ্গলবারের (৩ নভেম্বর) নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শেখ মোজাহিদুর রহমান চন্দন ও প্রতিনিধি পরিষদে আবুল বি খান বিজয়ী হয়েছেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত পাঁচজন প্রার্থী বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিভিন্ন পদে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এরা হলেন- টেক্সাসের অস্টিন থেকে ইউএস কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী ডোনা ইমাম, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল বি. খান ও পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের অডিটর জেনারেল পদপ্রার্থী ড. নীনা আহমেদ। এছাড়া ড. এমডি রাব্বি আলম মিশিগান স্টেট থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ চন্দন দ্বিতীয়বারের মতো ষ্টেট সিনেটর পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নরক্রস, লিলবার্ন ও লরেন্সভিল নিয়ে গঠিত ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এর আগে একই আসন থেকে তিনি প্রথমবারের মতো সিনেটর নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে শেখ রহমানের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের কোনো প্রার্থী না থাকলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরই তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে জর্জিয়া নির্বাচন বোর্ড।
১৯৫৫ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ মহকুমার বাজিতপুর থানার সরারচরে পৈতৃক বাড়িতে শেখ মোজাহিদুর রহমান চন্দন জন্মগ্রহণ করেন। মরহুম নজিবুর রহমান এবং সৈয়দা হাজেরা খাতুন দম্পতির চতুর্থ সন্তান তিনি। চন্দনের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। চন্দনের ছোট ভাই কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, বড় ভাইয়ের বিজয়ে পরিবার, আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার সবাই আনন্দিত। তিনি জানান, ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান চন্দন। ছাত্রজীবনেই তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।
অপরদিকে বৃহস্তর বরিশালের পিরোজপুরের সন্তান আবুল বি খান নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ইউএস কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চারবার নির্বাচিত হলেন এই রিপাবলিকান নেতা। আবুল খান বলেন, সব সময় বাংলাদেশ নিয়ে ভাবি। বাংলাদেশী আমেরিকানদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই সামনে এগোচ্ছি।
এছাড়া টেক্সাসের অস্টিন নিয়ে গঠিত ইউএস কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩১ থেকে প্রার্থী হন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ডোনা ইমাম। তবে তিনি হেরে গেছেন। ডেমোক্র্যাট দলীয় এই প্রার্থী ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৩৯৪টি বা ৪৪.৩ শতাংশ। বিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী জন কারটার পেয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার ৭৬৮ বা ৫৩.৫ শতাংশ ভোট।
অপরদিকে পেনসিলভানিয়া রাজ্যের অডিটর জেনারেল পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামেন আরেক বাংলাদেশী-আমেরিকান ড. নীনা আহমেদ। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার জয়-পরাজয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইতিপূর্বে দলীয় প্রাইমারতে তিনি বিজয়ী হন।
ড. নীনা ইতোমধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়াবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন। ফিলাডেলফিয়ার মতো বড় একটি শহরের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছেন। দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কাজের পাশাপাশি সততা ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসা ড. নীনার পক্ষে প্রবাসীদের মধ্যেও ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
বিজয়ের পর শেখ রহমানের প্রতিক্রিয়া: বিজয়ের পর শেখ রহমান সব প্রবাসী প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা এবং মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করায় তিনি সকল মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবার আশীর্বাদে বহুজাতিক একটি সমাজে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী হওয়ার মধ্যে অন্যরকমের একটি আনন্দ রয়েছে-যা আমাকে আরও সামনে এগোতে সহায়তা করবে। শেখ রহমান বলেন, স্টেট পার্লামেন্টে থাকলেও জাতীয়ভিত্তিক যে কানেকশন রয়েছে ইউএস সিনেট এবং ক্যাপিটল হিলে, তাকে অবশ্যই বাংলাদেশী আমেরিকান ও বাংলাদেশের সামগ্রিক কল্যাণে কাজে লাগানোর প্রয়াস অব্যাহত রাখব। উল্লেখ্য, তার নির্বাচনী এলাকার ভোটারের সংখ্যা ১৪,৯০৪। এর মধ্যে শখানেক বাংলাদেশী আমেরিকান রয়েছেন। অর্থাৎ ভিন্ন ভাষা, বর্ণ আর ধর্মের মানুষের প্রিয় একজনে পরিণত হওয়ায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন। কমিউনিটির ব্যাপারে শেখ রহমানের পরামর্শ হচ্ছে: বাঙালীত্ব হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিবেশী সব ভাষা-বর্ণ-ধর্মের মানুষের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলেই যে কোনো নির্বাচনে বিজয়ের পথ সুগম হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শেখ রহমান ও আবুল বি খান বিজয়ী

প্রকাশের সময় : ১১:৩২:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০

হককথা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ষ্টেট সিনেটর পদে মঙ্গলবারের (৩ নভেম্বর) নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত শেখ মোজাহিদুর রহমান চন্দন ও প্রতিনিধি পরিষদে আবুল বি খান বিজয়ী হয়েছেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত পাঁচজন প্রার্থী বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিভিন্ন পদে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এরা হলেন- টেক্সাসের অস্টিন থেকে ইউএস কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী ডোনা ইমাম, জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্যের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ আবুল বি. খান ও পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের অডিটর জেনারেল পদপ্রার্থী ড. নীনা আহমেদ। এছাড়া ড. এমডি রাব্বি আলম মিশিগান স্টেট থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের সন্তান শেখ চন্দন দ্বিতীয়বারের মতো ষ্টেট সিনেটর পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিসেবে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নরক্রস, লিলবার্ন ও লরেন্সভিল নিয়ে গঠিত ডিস্ট্রিক্ট-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন। এর আগে একই আসন থেকে তিনি প্রথমবারের মতো সিনেটর নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে শেখ রহমানের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের কোনো প্রার্থী না থাকলেও নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতার জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পরই তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে জর্জিয়া নির্বাচন বোর্ড।
১৯৫৫ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ মহকুমার বাজিতপুর থানার সরারচরে পৈতৃক বাড়িতে শেখ মোজাহিদুর রহমান চন্দন জন্মগ্রহণ করেন। মরহুম নজিবুর রহমান এবং সৈয়দা হাজেরা খাতুন দম্পতির চতুর্থ সন্তান তিনি। চন্দনের এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। চন্দনের ছোট ভাই কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল বলেন, বড় ভাইয়ের বিজয়ে পরিবার, আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার সবাই আনন্দিত। তিনি জানান, ১৯৮০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান চন্দন। ছাত্রজীবনেই তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।
অপরদিকে বৃহস্তর বরিশালের পিরোজপুরের সন্তান আবুল বি খান নিউ হ্যাম্পশায়ার অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে ইউএস কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চারবার নির্বাচিত হলেন এই রিপাবলিকান নেতা। আবুল খান বলেন, সব সময় বাংলাদেশ নিয়ে ভাবি। বাংলাদেশী আমেরিকানদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই সামনে এগোচ্ছি।
এছাড়া টেক্সাসের অস্টিন নিয়ে গঠিত ইউএস কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩১ থেকে প্রার্থী হন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ডোনা ইমাম। তবে তিনি হেরে গেছেন। ডেমোক্র্যাট দলীয় এই প্রার্থী ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৩৯৪টি বা ৪৪.৩ শতাংশ। বিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থী জন কারটার পেয়েছেন দুই লাখ ১০ হাজার ৭৬৮ বা ৫৩.৫ শতাংশ ভোট।
অপরদিকে পেনসিলভানিয়া রাজ্যের অডিটর জেনারেল পদে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ে নামেন আরেক বাংলাদেশী-আমেরিকান ড. নীনা আহমেদ। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার জয়-পরাজয়ের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইতিপূর্বে দলীয় প্রাইমারতে তিনি বিজয়ী হন।
ড. নীনা ইতোমধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়াবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন। ফিলাডেলফিয়ার মতো বড় একটি শহরের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্বও পালন করেছেন। দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কাজের পাশাপাশি সততা ও দক্ষতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসা ড. নীনার পক্ষে প্রবাসীদের মধ্যেও ব্যাপক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
বিজয়ের পর শেখ রহমানের প্রতিক্রিয়া: বিজয়ের পর শেখ রহমান সব প্রবাসী প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা এবং মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করায় তিনি সকল মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবার আশীর্বাদে বহুজাতিক একটি সমাজে বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিজয়ী হওয়ার মধ্যে অন্যরকমের একটি আনন্দ রয়েছে-যা আমাকে আরও সামনে এগোতে সহায়তা করবে। শেখ রহমান বলেন, স্টেট পার্লামেন্টে থাকলেও জাতীয়ভিত্তিক যে কানেকশন রয়েছে ইউএস সিনেট এবং ক্যাপিটল হিলে, তাকে অবশ্যই বাংলাদেশী আমেরিকান ও বাংলাদেশের সামগ্রিক কল্যাণে কাজে লাগানোর প্রয়াস অব্যাহত রাখব। উল্লেখ্য, তার নির্বাচনী এলাকার ভোটারের সংখ্যা ১৪,৯০৪। এর মধ্যে শখানেক বাংলাদেশী আমেরিকান রয়েছেন। অর্থাৎ ভিন্ন ভাষা, বর্ণ আর ধর্মের মানুষের প্রিয় একজনে পরিণত হওয়ায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে গৌরবের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছেন। কমিউনিটির ব্যাপারে শেখ রহমানের পরামর্শ হচ্ছে: বাঙালীত্ব হৃদয়ে ধারণ করে প্রতিবেশী সব ভাষা-বর্ণ-ধর্মের মানুষের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলেই যে কোনো নির্বাচনে বিজয়ের পথ সুগম হয়।