নিউইয়র্ক ১২:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাহিদ এফ সর্দার গ্রেফতার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৫৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০১৭
  • / ৯৬৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী জাহিদ এফ সর্দার সাদীকে গ্রেফতার করেছে এফবিআই। ক্রেডিট কার্ড মেশিনে ব্যাংকের সাথে অর্থ প্রতারনা ও চেক চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। জাহিদ এফ সর্দার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক ফেরারী হিসেবে ওয়ান্টেড ছিলেন। গত ১৭ মে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস ভবনের সামনে থেকে গ্রেফতার হন তিনি। পলাতক আসামী হিসেবে এফবিআই তাকে দীর্ঘদিন থেকে ওয়ান্টেড হিসেবে খুঁজছিল।
ঐদিন (১৭ মে) ক্যাপিটাল হিলে তিনি কি করছিলেন সেটা জানা যায়নি। তবে গ্রেফতারের পর পরই তাকে ফ্লোরিডার ওরলান্ডোতে অবস্থিত হাই সিকিউরিটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। জাহিদ এফ সর্দার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেও তার পাসপোর্টও জন্দ করা হয়েছে।
একটি সূত্রের মতে, জাহিদ সর্দার দীর্ঘদিন থেকে নিউ ইয়র্ক সহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অনেকের ঘরেই তিনি অতিথি হিসেবে অবস্থান করেছেন। তবে কাউকেই তার ব্যক্তিগত সমস্যা বা ফেরারী হওয়ার বিষয়টি জানাননি। সূত্র মতে জাহিদ এফ সর্দারকে গ্রেফতারের পেছনে কলকাঠি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন্দল কলহ।
ওয়াশিংটনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেতা জাহিদ এফ সর্দারের অবস্থান জানানোর পর পরই তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে। জানা যায়, জাহিদ এফ সর্দার ফ্লোরিডার ওলান্ডোতে অবস্থানকালীন সময়ে সেখানে গ্যাস স্টেশনের ব্যবসা করতেন। এ সময় ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড চেক মেশিনের সুবিধা নেন তিনি। ব্যাবসার নামে তিনি ৫৪টি প্রতারনামূলক লেনদেন  করেন।
ইউনাইটেড ষ্টেটস ডিষ্ট্রিক্ট কোর্ট মিডল ডিষ্ট্রিক্ট অব ফ্লোরিডা কর্তৃক আনীত ইনডাইক্টমেন্টে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জাহিদ এফ সর্দার সাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের চক্রান্ত ও চুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, বাংকোন পপুলার পর্টোরিকো, ব্যাংক অব আমেরিকা, ফিফথ থার্ড ব্যাংক, ওয়াকোবিয়া ব্যাংক, ওয়াশিংটন মিউচুয়্যাল ব্যাংক, সান ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট প্রায়রিটি ব্যাংক এবং আরবিসি সেন্টুরা ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মাধ্যমে ডিপোজিটকৃত চেক ও অর্থ ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন, ম্যাককোয় ফেডারেল ক্রেডিট ইউনিয়ন এবং সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা এডুকেটর ক্রেডিট ইউনিয়ন শেয়ার ইন্সুরেন্স ফান্ড কর্তৃক ইন্সুর করা ছিল। এর প্রেক্ষিতে যেকোন চেক জমা দিলেই তার বিপরীতে তাৎক্ষনিক অর্থ নগদ অর্থ উত্তোলন সম্ভব হতো।
২০০৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত এই সুবিধায় তিনি ৫৪টি লেনদেন করেছেন যার সবগুলোই ছিল প্রতারণামুলক। চেক জমা দিয়ে এর বিপরীতে তাৎক্ষনিকভাবে নগদ অর্থ উত্তোলন করলেও এসব একাউন্টে কোন অর্থ ছিল না। যে সব চেক জমা দেয়া হতো তার সবগুলো বাউন্স হয়েছে।
দীর্ঘ দুই বছরের এমন কর্মকান্ডে ৩৫ ডলার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার ডলারের প্রতারনামূলক লেনদেন হওয়ার তথ্য প্রমাণ এফবিআইয়ের হাতে রয়েছে। প্রতারনামূলক অর্থের পরিমান বিশাল না হলেও এর অপব্যবহারের আধিক্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশ্ন ও সন্দেহের উদ্রেক করে। যার প্রেক্ষিতে এফবিআই বিষয়টি তদন্তে শুরু করে তাকে গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। এ সময় ষ্টেটের বাইরে যেতে অনুমতি ছিলো তার। পরবর্তীতে এটাকে হালকা করে প্রতি তিনমাস অন্তর প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাত করার নির্দেশ দেয়া হয়।
জানা গেছে, এর পরই তিনি প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাতের বিধান মেনে চলতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। এর প্রেক্ষিতেই তাকে খুজছিল এফবিআই।
একটি সূত্রের মতে, জাহিদ এফ সর্দারের বোকামীর কারণেই তিনি বর্তমান পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একটি গ্রুপ তার বিরোধী ছিল। তারা দীর্ঘদিন থেকেই তার দুর্বল জায়গাটি প্রতিশোধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারে ওৎ পেতে ছিল। গত মাসে তিনি ওয়াশিংটনে গেলে প্রতিপক্ষ এই সুযোগে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করলে তাকে হাতে নাতে পাকড়াও করা হয়।
গ্রেফতারের পর পরই জাহিদ এফ সর্দার সাদিকে ওরলান্ডোতে হাই সিকিউরিটি কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তির ব্যাপারে কোন উদ্যেগ নেয়া হয়েছে কিনা জানা যায়নি। তবে তিনি কারাগার থেকেই বিভিন্ন মহলের সাথে যোগাযোগ করে আইনী সহায়তার আবেদন করেছেন বলে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে। (বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

জাহিদ এফ সর্দার গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০২:৫৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০১৭

নিউইয়র্ক: বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা পরিচয়দানকারী জাহিদ এফ সর্দার সাদীকে গ্রেফতার করেছে এফবিআই। ক্রেডিট কার্ড মেশিনে ব্যাংকের সাথে অর্থ প্রতারনা ও চেক চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করার অভিযোগ আনা হয়েছে। জাহিদ এফ সর্দার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক ফেরারী হিসেবে ওয়ান্টেড ছিলেন। গত ১৭ মে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস ভবনের সামনে থেকে গ্রেফতার হন তিনি। পলাতক আসামী হিসেবে এফবিআই তাকে দীর্ঘদিন থেকে ওয়ান্টেড হিসেবে খুঁজছিল।
ঐদিন (১৭ মে) ক্যাপিটাল হিলে তিনি কি করছিলেন সেটা জানা যায়নি। তবে গ্রেফতারের পর পরই তাকে ফ্লোরিডার ওরলান্ডোতে অবস্থিত হাই সিকিউরিটি ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। জাহিদ এফ সর্দার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হলেও তার পাসপোর্টও জন্দ করা হয়েছে।
একটি সূত্রের মতে, জাহিদ সর্দার দীর্ঘদিন থেকে নিউ ইয়র্ক সহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। অনেকের ঘরেই তিনি অতিথি হিসেবে অবস্থান করেছেন। তবে কাউকেই তার ব্যক্তিগত সমস্যা বা ফেরারী হওয়ার বিষয়টি জানাননি। সূত্র মতে জাহিদ এফ সর্দারকে গ্রেফতারের পেছনে কলকাঠি নেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন্দল কলহ।
ওয়াশিংটনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেতা জাহিদ এফ সর্দারের অবস্থান জানানোর পর পরই তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা গেছে। জানা যায়, জাহিদ এফ সর্দার ফ্লোরিডার ওলান্ডোতে অবস্থানকালীন সময়ে সেখানে গ্যাস স্টেশনের ব্যবসা করতেন। এ সময় ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড চেক মেশিনের সুবিধা নেন তিনি। ব্যাবসার নামে তিনি ৫৪টি প্রতারনামূলক লেনদেন  করেন।
ইউনাইটেড ষ্টেটস ডিষ্ট্রিক্ট কোর্ট মিডল ডিষ্ট্রিক্ট অব ফ্লোরিডা কর্তৃক আনীত ইনডাইক্টমেন্টে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জাহিদ এফ সর্দার সাদি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া এবং ক্ষতিগ্রস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের চক্রান্ত ও চুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, বাংকোন পপুলার পর্টোরিকো, ব্যাংক অব আমেরিকা, ফিফথ থার্ড ব্যাংক, ওয়াকোবিয়া ব্যাংক, ওয়াশিংটন মিউচুয়্যাল ব্যাংক, সান ট্রাস্ট ব্যাংক, ফার্স্ট প্রায়রিটি ব্যাংক এবং আরবিসি সেন্টুরা ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মাধ্যমে ডিপোজিটকৃত চেক ও অর্থ ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন, ম্যাককোয় ফেডারেল ক্রেডিট ইউনিয়ন এবং সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা এডুকেটর ক্রেডিট ইউনিয়ন শেয়ার ইন্সুরেন্স ফান্ড কর্তৃক ইন্সুর করা ছিল। এর প্রেক্ষিতে যেকোন চেক জমা দিলেই তার বিপরীতে তাৎক্ষনিক অর্থ নগদ অর্থ উত্তোলন সম্ভব হতো।
২০০৬ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত এই সুবিধায় তিনি ৫৪টি লেনদেন করেছেন যার সবগুলোই ছিল প্রতারণামুলক। চেক জমা দিয়ে এর বিপরীতে তাৎক্ষনিকভাবে নগদ অর্থ উত্তোলন করলেও এসব একাউন্টে কোন অর্থ ছিল না। যে সব চেক জমা দেয়া হতো তার সবগুলো বাউন্স হয়েছে।
দীর্ঘ দুই বছরের এমন কর্মকান্ডে ৩৫ ডলার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার ডলারের প্রতারনামূলক লেনদেন হওয়ার তথ্য প্রমাণ এফবিআইয়ের হাতে রয়েছে। প্রতারনামূলক অর্থের পরিমান বিশাল না হলেও এর অপব্যবহারের আধিক্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রশ্ন ও সন্দেহের উদ্রেক করে। যার প্রেক্ষিতে এফবিআই বিষয়টি তদন্তে শুরু করে তাকে গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে প্যারোলে মুক্তি পান তিনি। এ সময় ষ্টেটের বাইরে যেতে অনুমতি ছিলো তার। পরবর্তীতে এটাকে হালকা করে প্রতি তিনমাস অন্তর প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাত করার নির্দেশ দেয়া হয়।
জানা গেছে, এর পরই তিনি প্যারোল অফিসারের সাথে সাক্ষাতের বিধান মেনে চলতে ব্যর্থ হন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। এর প্রেক্ষিতেই তাকে খুজছিল এফবিআই।
একটি সূত্রের মতে, জাহিদ এফ সর্দারের বোকামীর কারণেই তিনি বর্তমান পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একটি গ্রুপ তার বিরোধী ছিল। তারা দীর্ঘদিন থেকেই তার দুর্বল জায়গাটি প্রতিশোধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারে ওৎ পেতে ছিল। গত মাসে তিনি ওয়াশিংটনে গেলে প্রতিপক্ষ এই সুযোগে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করলে তাকে হাতে নাতে পাকড়াও করা হয়।
গ্রেফতারের পর পরই জাহিদ এফ সর্দার সাদিকে ওরলান্ডোতে হাই সিকিউরিটি কারাগারে রাখা হয়েছে। তার মুক্তির ব্যাপারে কোন উদ্যেগ নেয়া হয়েছে কিনা জানা যায়নি। তবে তিনি কারাগার থেকেই বিভিন্ন মহলের সাথে যোগাযোগ করে আইনী সহায়তার আবেদন করেছেন বলে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে। (বাংলা পত্রিকা)